বক্ররেখা

সরল ভাষায় সরল নয় এমন রেখাকে অঙ্কে বক্ররেখা বলা হয়। ইউক্লিড তার দ্য এলিমেন্টস গ্রন্থে আজ থেকে প্রায় ২০০০ বছর আগে লিখেন "The [curved] line[a] is […] the first species of quantity, which has only one dimension, namely length, without any width nor depth, and is nothing else than the flow or run of the point which […] will leave from its imaginary moving some vestige in length, exempt of any width.""[১] অর্থাৎ কোনো চলমান বিন্দু দ্বারা অঙ্কিত পথই হল বক্ররেখা। বর্তমানে উচ্চতর গনিতে বক্ররেখা বলতে বাস্তব সংখ্যার ইনটারভালকে কোনো টপলজিকাল স্পেস-এ চিত্রিত করে এমন কোনো সন্তত অপেক্ষকের প্রতিবিম্বকে বোঝায়।
ইতিহাস
[সম্পাদনা]মানব সভ্যতার বহু প্রাচীনকাল থেকেই বিভিন্ন শিল্পকর্মে বক্ররেখার অস্তিত্ব পাওয়া যায়, গণিতের জন্মেরও আগের বিভিন্ন কারিগরিতে এর অস্তিত্ব পরিলিক্ষিত হয়।[২] পুর্বে রেখা বলতে মূলত বক্ররেখাকেই বোঝানো হত। তাই সরলরেখা শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ইউক্লিড তার দ্য এলিমেন্টস (book 1) এ রেখা বলতে বলেন "প্রস্থবিহীন দৈর্ঘ্য", সরলরেখা বলতে বুঝান "একটি রেখা যার উপর সকল বিন্দু সমভাবে বন্টিত"। তিনি আরও বলেন "সরলরেখার দুই প্রান্ত বিন্দু"[৩]। পরবর্তীকালে প্রাচীন পণ্ডিতরা রেখাকে আরও কতগুলি ভাগে বিভক্ত করেন। যথা [৪]
- যৌগিক রেখা (যে সকল রেখা একটি কোনের দুটি বাহু গঠন করে)
- অযৌগিক রেখা
- সসীম (এমন কিছু রেখা যাদের দু'দিকে অসীম পর্যন্ত বর্ধিত করা যায় না, যেমন বৃত্ত)
- অসীম (এমন কিছু রেখা যাদেরকে অসীম পর্যন্ত বর্ধিত করা যায়, যেমন পরাবৃত্ত)
গ্রিক জ্যামিতিবিদরা বিভিন্ন ধরনের বক্ররেখা নিয়ে গবেষণা শুরু করেন।
টপোগণিতীয় বক্র
[সম্পাদনা]যদি হয় যেখানে হল বাস্তব সংখ্যার সেটের একটি অন্তরাল, হল টপগণিতীয় স্পেস এবং হল সন্তত অপেক্ষক তবে এর প্রতিবিম্বকে বক্র নামে ডাকা হয়। যদিও অনেক সময়ই কেই বক্ররেখা বলা হয়।
বক্ররেখার এই সংজ্ঞার ক্ষেত্র বিপুল পরিমানে বিস্তৃত, কারণ এই সংজ্ঞা অনুযায়ী অনেক অবজেক্ট বক্রের সংজ্ঞাভুক্ত হয় যারা সাধারণ বক্ররেখার ধারণার উর্ধ্বে। যেমন পিয়ানো বক্র বা ফ্রাক্টাল বক্র।
কে একটি বদ্ধ বক্র বলা হবে যদি এবং হয়। যে সকল বক্ররেখা বদ্ধ নয় তাদের মুক্ত বক্র বলা হয়।
যদি কোনো বক্রের ক্ষেত্র হয় তবে তাকে পথ বা টপগণিতীয় চাপ বলা হয়।

একটি বক্ররেখাকে সাধারণ বলা হয় যদি এটি একটি বৃত্তের বা ইনটারভালের উপর সন্তত অন্তঃচিত্রণ হয়। সহজ ভাবে বলতে গেলে যদি বক্রটি নিজেকে নিজেই ছেদ না করে (কেবল ইনটারভালের প্রান্তবিন্দু ছাড়া) তবে তাকে সাধারণ বক্ররেখা বলা হয়। [৫]
যদি ইউক্লিডিয় তল হয় হয় তবে তাকে তলীয় বক্র বলা হয়, যেমন অভিক্ষেপ তল। যদি ত্রিমাত্রিক হয় তবে বক্রটিকে স্পেস বক্র বলা হয়। যদি কোনো বক্র কোনো নির্দিষ্ট তলে অবস্থান না করে তবে তাকে স্কিউ বক্র বলে।
একটি বক্র যদি তলীয় ও বদ্ধ হয় তবে তাকে জর্ডন বক্র বলা হয়। জর্ডন বক্র বলতে স্ব-চ্ছেদী নয় এমন সন্তত বদ্ধ বক্রকে বোঝায়।[৬] জর্ডন বক্র উপপাদ্য অনুযায়ী এই ধরণের বক্ররেখা কোনো তলকে দুটি অঞ্চল এ ভাগ করে। জর্ডন বক্রের অন্ততস্থ অঞ্চলটিকে জর্ডন অঞ্চল বলা হয়।
টপগণিতীয় বক্রের সংজ্ঞা এমন কিছু আকৃতিকে বক্রের আওতায় আনে যাদের কে সাধারণত বক্র বলে ধরা হয় না। এর সর্বৎকৃষ্ট উদাহরণ হল ফ্রাক্টাল বক্র। এই ধরণের বক্রের হসডর্ফ মাত্রা ১ এর অধিক হয়ে থাকে। কশ স্নোফ্লেক বা ড্রাগন বক্র এর কতগুলি উদাহরণ।
অন্তরকলযোগ্য বক্র
[সম্পাদনা]যদি একটি অন্তরকলযোগ্য অন্তঃচিত্রণ হয় , যেখানে বাস্তব সংখ্যার একটি অন্তরাল এবং একটি অন্তকলযোগ্য ম্যানিফোল্ড (বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ) তবে এর প্রতিবিম্বকে অন্তরকলযোগ্য বক্র বলা হবে।
অন্যভাবে বলতে গেলে, একটি অন্তকলযোগ্য বক্র হল এমন যার প্রতিটি সন্নিহিত অঞ্চল এর জন্য একটি ডিফিওমর্ফিসম। এক কথায় একমাত্রিক অন্তরকলযোগ্য ম্যানিফল্ডকে অন্তরকলযোগ্য বক্র বলা হয়।
অন্তরকলযোগ্য চাপ
[সম্পাদনা]ইউক্লিডীয় জ্যামিতিতে অন্তরকলযোগ্য বক্রের সংযুক্ত উপসেটকে অন্তরকলযোগ্য চাপ বলে।
কোনো সরলরেখার চাপকে সরলরেখাংশ বলে।
বৃত্তের চাপকে বৃত্তচাপ বলা হয়। একই ভাবে গোলকের মহাবৃত্তের চাপকে মহাচাপ বলে।
বক্ররেখার দৈর্ঘ্য
[সম্পাদনা]যদি একটি মাত্রিক ইউক্লিডীয় স্পেস এবং একটি সন্তত অন্তঃচিত্রণ হয় তবে এর দৈর্ঘ্য হবে যদি অন্তরালে সংজ্ঞায়িত কোনো সন্তত অন্তরকলযোগ্য অপেক্ষক এর গ্রাফের দৈর্ঘ্য s হয় তবে কোনো বক্র অতিক্ষুদ্র অসংখ্য সরলরেখার সমষ্টি হিসেবে বিচার করে তাতে পিথাগোরাসের উপপাদ্য প্রয়োগ করলে এই ফল পাওয়া যাবে।[৭]
আরও সূক্ষ বিচারে যদি , মেট্রিক যুক্ত একটি মেট্রিক স্পেস হয় তবে এর দৈর্ঘ্য হবে কোনো বক্রের দৈর্ঘ্য সসীম হলে তাকে রেক্টিফাইয়েবল বক্র বলা হয়। কোনো বক্র কে স্বাভাবিক বলা হবে যদি এবং হলে যদি একটি লিপশিজ সন্তত অপেক্ষক হয় তবে এর প্রতিবিম্ব অর্থাৎ বক্ররেখাটি অবশ্যই রেক্টিফাইয়েবল হবে এবং এক্ষেত্রে কোনো বিন্দু গতিবেগ (মেট্রিক অন্তরকলজ) হবে, এর থেকে প্রমাণ করা যায়,
বীজগাণিতিক বক্র
[সম্পাদনা]আরও দেখুন
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ফরাসিতে: "La ligne est la première espece de quantité, laquelle a tant seulement une dimension à sçavoir longitude, sans aucune latitude ni profondité, & n'est autre chose que le flux ou coulement du poinct, lequel […] laissera de son mouvement imaginaire quelque vestige en long, exempt de toute latitude." Pages 7 and 8 of Les quinze livres des éléments géométriques d'Euclide Megarien, traduits de Grec en François, & augmentez de plusieurs figures & demonstrations, avec la corrections des erreurs commises és autres traductions, by Pierre Mardele, Lyon, MDCXLV (1645).
- ↑ Lockwood p. ix
- ↑ Heath p. 153
- ↑ Heath p. 160
- ↑ "Jordan arc definition at Dictionary.com. Dictionary.com Unabridged. Random House, Inc"। Dictionary.reference.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৩-১৪।
- ↑ Sulovský, Marek (২০১২)। Depth, Crossings and Conflicts in Discrete Geometry (ইংরেজি ভাষায়)। Logos Verlag Berlin GmbH। পৃষ্ঠা 7। আইএসবিএন 9783832531195।
- ↑ Davis, Ellery W.; Brenke, William C. (১৯১৩)। The Calculus (ইংরেজি ভাষায়)। MacMillan Company। পৃষ্ঠা 108। আইএসবিএন 9781145891982।