ফ্রেঞ্চ ডিউক

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

ফ্রেঞ্চ ডিউক
French duke
ডানা বন্ধ অবস্থায়
ডানা খোলা অবস্থায়
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ: Animalia
পর্ব: Arthropoda
শ্রেণী: Insecta
বর্গ: Lepidoptera
পরিবার: Nymphalidae
গণ: Euthalia
প্রজাতি: E. franciae
দ্বিপদী নাম
Euthalia franciae
প্রতিশব্দ
  • Adolias franciae Gray, 1846
  • Bassarona franciae

ফ্রেঞ্চ ডিউক (বৈজ্ঞানিক নাম: Euthalia franciae(Gray)) এক প্রজাতির মাঝারি আকারের প্রজাপতি। এরা নিমফ্যালিডি পরিবার এবং লিমেনিটিডিনি উপগোত্রের সদস্য। ভারতের বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ আইন অনুসারে এই প্রজাতি তফ্‌সিল ২ এর তালিকার অন্তর্ভুক্ত।

আকার[সম্পাদনা]

ফ্রেঞ্চ ডিউক এর প্রসারিত অবস্থায় ডানার আকার ৭৫-৯০মিলিমিটার দৈর্ঘ্যের হয়।[১]

উপপ্রজাতি[সম্পাদনা]

ভারতে প্রাপ্ত ফ্রেঞ্চ ডিউক এর উপপ্রজাতিসমূহ হল-[২]

  • Euthalia franciae franciae Gray, 1846 – Himalayan French Duke
  • Euthalia franciae raja Felder & Felder, 1859 – Rajah French Duke

বিস্তার[সম্পাদনা]

ভারতএ (পশ্চিমবঙ্গ, সিকিম[৩], আসাম, অরুণাচল প্রদেশ[৪][৫], মনিপুর, মেঘালয়, নাগাল্যান্ড), এছাড়া নেপাল[৬], ভুটান, মায়ানমার এর বিভিন্ন অঞ্চলে এদের দেখা যায়।[৭]

বর্ণনা[সম্পাদনা]

প্রজাপতির দেহাংশের পরিচয় বিষদ জানার জন্য প্রজাপতির দেহ এবং ডানার অংশের নির্দেশিকা দেখুন:-

ডানার উপরিতল : ডানার উপরিতল সবজে- নীল বর্নের। উভয় ডানা জুড়ে চওড়া, তীর্যক, উজ্জ্বল-সাদা ডিসকাল বন্ধনী এবং ইষদ অস্পষ্ট সাব টার্মিনাল সাদা ছোপের সারি বর্তমান। সামনের ডানায় ডিসকাল বন্ধনীটি দুটি সংযুক্ত অংশে গঠিত; প্রথমে কোস্টাল শিরার নিচ থেকে শুরু হয়ে ৪ নং শিরামধ্য অবধি বিস্তৃত ছোট ডিসকো-সেলুলার বন্ধনী এবং তার সংযুক্ত ৩ নং শিরামধ্য থেকে ডরসাম অবধি বিস্তৃত ডিসকাল বন্ধনী। সামনের ডানায় সম্পূর্ণ বন্ধনীটি কালো শিরা দ্বারা সুস্পষ্টভাবে খন্ডিত। পোস্ট-ডিসকাল অংশে ৫ এবং ৬ নং শিরামধ্যে দুটি বড়, নীলচে সাদা ছোপ স্পষ্ট ভাবে দৃশ্যমান। সেল এর মধ্যভাগে দুইপাশে পুরু, কালো রেখা দ্বারা বেষ্টিত দুটি লম্বা সবজে নীল পটি লক্ষ্য করা যায়। টার্মেন অথবা প্বার্শপ্রান্তরেখা পর্যায়ক্রমে সাদা এবং কালো বর্নের হয়।[১]

পিছনের ডানার ডিসকাল বন্ধনীটি কোস্টাল শিরার নিচ থেকে শুরু হয়ে ডরসাম অবধি বিস্তার লাভ করেছে এবং ২ নং শিরা থেকে ডরসাম পর্যন্ত অংশ খানিক অস্পষ্ট হয়। সাবটার্মিনাল সাদা অস্পষ্ট ছোপের সারিটির ভিতরের প্রান্তে লাগোয়া অস্পষ্ট কালচে ছোপের একটি সারি বিদ্যমান। উক্ত সাদা এবং কালো উভয় ছোপের সারি অ্যাপেক্স (শীর্ষভাগ) থেকে টর্নাস পর্যন্ত বিস্তৃত এবং প্রতিটি শিরামধ্যেই উভয় ছোপ বর্তমান। টার্মেন সাদা, কমবেশী খাঁজকাটা এবং প্রতিটি খাঁজ শীর্ষে কালো শিরা দ্বারা খন্ডিত।[১]

ডানার নিম্নতল: ডানার নিম্নতল চকচকে এবং ফ্যাকাশে সবজে নীল বর্ণের। উভয় ডানা জুড়ে থাকা ডিসকাল বন্ধনীটি উপরিতলেরই অনুরূপ এবং সুস্পষ্ট। অন্যান্য দাগ-ছোপ এবং উপরিপৃষ্ঠের সদৃশ্য। পিছনের ডানায় অস্পষ্ট, সাদা একটি সাব-টার্মিনাল অথবা সাব-মার্জিনাল বন্ধনী দৃশ্যমান। পোস্টডিসকাল বন্ধনীটি সরলরৈখিক এবং সাবটার্মিনাল বন্ধনীটি বক্র। উভয় বন্ধনী কোস্টাল শিরার নিচ থেকে উৎপন্ন হয়ে টর্নাস পর্যন্ত বিস্তৃত এবং ফ্যাকাশে সবজে নীল শিরা দ্বারা খন্ডিত। পিছনের ডানায় সেল অথবা প্রকোষ্ঠ মোটামুটি স্পষ্ট কালোরেখা দ্বারা খন্ডিত এবং রেখাগুলি সেল ছড়িয়ে উপরের দিকে উঠে গিয়ে মিশেছে।[১]

আচরণ[সম্পাদনা]

ভারতবর্ষে দুষ্প্রাপ্য এই প্রজাতি বৃহদাকার, সুগঠিত এবং দ্রুত ও শক্তিশালী উড়ানযুক্ত। ইউথেলিয়া বর্গভুক্ত অন্যান্য প্রজাতির ন্যায়, ফ্রেঞ্চ ডিউক, স্ত্রী-পুরুষ নির্বিশেষে, পচা ফল, গাছ এবং পাতা নিঃসৃত রস, মৃত ব্যাঙ ইত্যাদির প্রতি আকৃষ্ট হয়। তবে এদের ফুলের মধু পান করতে দেখা যায় না। স্ত্রী-পুরুষ উভয় প্রকারই ডানা বন্ধ, আংশিক মেলা অথবা পুরো ডানা মেলে পাতা, গাছের মাথায় এবং মাটিতে এবং পাথরে অথবা পাথুরে দেওয়ালে অবস্থান করে রোদ পোহায়। এই প্রজাতিকে প্রায়শই ভিজা মাটি, পাথরের ভেজা ছোপ এবং পাহাড়ি জঙ্গলের নালার ধারে মাড্‌-পাডল করতে দেখা যায়। ১৩৭০ মিটার থেকে ১৯৫০ মিটার উচ্চতার মধ্যে ঘন আর্দ্রতর বনাঞ্চল এদের বিশেষ পছন্দের বাসস্থান। সাধারনত এপ্রিল থেকে নভেম্বর পর্যন্ত উপযুক্ত পরিবেশে এদের দর্শন মেলে। সিকিমএ মে মাসে ১৫১৫ মিটার উচ্চতায়, নাগা পাহাড়ে এপ্রিল থেকে আগস্ট এবং আসামে আগস্ট মাসে এদের উপস্থিতি এবং সক্রিয়তা চোখে পড়ে।[৭]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Wynter-Blyth, Mark Alexander (১৯৫৭)। Butterflies of the Indian Region। Bombay, India: Bombay Natural History Society। পৃষ্ঠা 169। আইএসবিএন 978-8170192329 
  2. "Euthalia franciae (Gray, 1846) – French Duke"। ১৩ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ এপ্রিল ২০২০ 
  3. Varshney, R.K.; Smetacek, Peter (২০১৫)। A Synoptic Catalogue of the Butterflies of India। New Delhi: Butterfly Research Centre, Bhimtal & Indinov Publishing, New Delhi। পৃষ্ঠা 203। আইএসবিএন 978-81-929826-4-9ডিওআই:10.13140/RG.2.1.3966.2164 
  4. Gogoi, M.J. (2012). Butterflies (Lepidoptera) of Dibang Valley, Mishmi Hills, Arunachal Pradesh, India. Journal of Threatened Taxa 4(12): 3137–3160.https://doi.org/10.11609/JoTT.o2975.3137-60
  5. Singh, A.P. (2017). BUTTERFLIES ASSOCIATED WITH MAJOR FOREST TYPES IN ARUNACHAL PRADESH (EASTERN HIMALAYA), INDIA: IMPLICATIONS FOR ECOTOURISM AND CONSERVATION PLANNING. Journal of Threatened Taxa 9(4): 10047–10075; http://doi.org/10.11609/jott.2765.9.4.10047-10075
  6. Khanal, B., M.K. Chalise & G.S. Solanki(2013). Threatened butterflies of central Nepal. Journal of Threatened Taxa 5(11): 4612–4615; http://dx.doi.org/10.11609/JoTT.o2825.4612-5
  7. Isaac, Kehimkar (২০০৮)। The book of Indian Butterflies (ইংরেজি ভাষায়) (1st সংস্করণ)। নতুন দিল্লি: অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস। পৃষ্ঠা ৩৮৪। আইএসবিএন 978 019569620 2 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]