দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন ফ্রান্সের সামরিক ইতিহাস

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

১০ই মে ১৯৪০ একসাথে চারটি দেশ (ফ্রান্স, বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ড, লুক্সেমবার্গ আক্রমণ করে ভুয়া যুদ্ধের ইতি টানল জার্মানি । ঐদিন জার্মান প্যারাশ্যুটিস্টরা নেদারল্যান্ডের বিভিন্ন শহরের গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলি দখল করে নিল। একই দিনে বেলজিয়ামের প্রতিরক্ষার কেন্দ্র এবেন এমেল দুর্গ ও আলবার্ট খালের সেতুর ওপর অবতরণ করলো গ্লাইডাররা যুদ্ধের ইতিহাসে প্রথম। ফরাসিরা ভেবেছিল আক্রমণ আসবে ফ্রান্স জার্মানি সীমান্তের রণরেখা ম্যাগিনোট লাইনের ওপর অথবা বেলজিয়ামের ভিতর দিয়ে আমুর হয়ে। তারা ভেবেছিল জার্মানির প্যানজার বাহিনী আরদেনের জঙ্গল ভেদ করে আসতে পারবে না। ১৪ই মে নেদারল্যান্ডের পতন ঘটলো। রাণী উইলহেলমিনা লন্ডনে নির্বাসিত সরকারের দপ্তর বসালেন। বেলজিয়ামের রণরেখা পীল লাইনের পতন হবার পর মিত্রবাহিনী অ্যান্টওয়ার্প নামুর লাইনে থেকে লড়ছিল কিন্ত ১৪ই মে আরদেন থেকে জার্মান বাহিনী বেরিয়ে এসে প্রবল বেগে এগোতে থাকায় তাদের ফ্রান্সে ডেকে নেয়া হলো। ফ্রান্সে দিশেহারা মিত্র সেনাদের দুভাগ করে ঘিরে ফেলল শত্রু। একদল আটকা পড়ল ডানকার্কে ।ইউরোপ থেকে ফরাসি ও BEF [british expiditionary force] সেনা প্রত্যাহারের একমাত্র বন্দর তখন ডানকার্ক। জার্মানরা পৌছাঁবার আগে তড়িঘড়ি পশ্চাদপসরণ শুরু হলো। ২৬শে মে থেকে ৪ঠা জুন ব্রিটিশ বিমানবাহিনীর ছত্রছায়ায় ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে ইতিহাসের বৃহত্তম সেনা অপসারণের কাজ শেষ হলো ।তবে ফেলে আসতে হলো বেশীরভাগ যন্ত্রাদি। এরমাঝে ২৭শে মে বেলজিয়ামের পতন হলো। ৫ই জুন জার্মানি somme থেকে নতুন করে আক্রমণ শুরু করল। ৯ই জুন aisne এর পতন ঘটল । মাগিনোট রেখা ফেলে রেখে তারা সুইস সীমান্তের দিকে চলে গেল। ১০ই জুন ইতালিও যুদ্ধ ঘোষণা করল। তবে তারা আক্রমণ শুরু করে ২০শে জুন থেকে। ফরাসি সরকার প্রথমে তুর ও পরে বোর্দোতে সরে গেল। ১৪ই জুন প্যারিসের পতন ঘটল। ১৬ই জুন প্রধানমন্ত্রী রেনো পদত্যাগ করলেন ও তার বদলে এলেন প্রথম বিশ্বযুদ্ধের নায়ক পেত্যাঁ। ২২শে জুন জার্মান-ফরাসি এবং ২৪শে জুন জার্মান-ইতালীয় শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এদিকে শার্ল দো গল লন্ডন থেকে ফরাসিদের প্রতি প্রতিরোধের আবেদন জানাতে থাকেন। অল্প কিছু ফরাসি উপনিবেশ তাতে যোগদান করে। ফ্রান্সের বেশিরভাগ এলাকা জার্মানি নিয়ে নেয় ।অল্প কিছু জায়গা জুড়ে পেঁত্যা একটি নিরপেক্ষ কিন্তু জার্মানির প্রভাবাধীন সরকার গঠন করেন। এটি ভিশি ফ্রান্স নামে পরিচিত হয়। ফরাসি নৌ ও বিমান বাহিনীর হাতবদল না হলেও তাদের নিরপেক্ষ রাখা হয়। কিন্তু ফরাসি নৌ বহর একসময় জার্মানির হাতে চলে যেতে পারে এই আশঙ্কায় ৩রা জুলাই ব্রিটেন নামমাত্র বাধায় ব্রিটিশ নিয়ন্ত্রাধহীন বন্দরে থাকা জাহাজগুলি দখল করে নিল। তবে আলজেরীয় বন্দরের জাহাজগুলি বাধা দিল ও গোলাগুলি হলো। ফলে পরদিন পেত্যাঁর সরকার ব্রিটেনের সাথে সম্পর্কচ্ছেদ করল।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]