ফিলিপাইন এয়ারলাইন্স
ফিলিপাইন এয়ারলাইন্স (পিএএল) (বাণিজ্যিক নাম হলো পিএএল হোল্ডিংস্ ইনক.) (পিএসই:পিএএল) ঐতিহাসিকভাবে ফিলিপাইন এয়ারলাইন্স নামেও পরিচিত, যা ফিলিপাইনের পতাকা বহনকারী বিমান সংস্থা। পাসেই সিটি’র[১] পিএনবি ফাইনান্সিয়াল সেন্টারে এটার সদর দপ্তর অবস্থিত। এই বিমানসংস্থাটি ১৯৪১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং বর্তমানে এটি হচ্ছে এশিয়াতে চালু থাকা প্রথম এবং সর্বপ্রাচীন বাণিজ্যিক বিমানসংস্থা যা কিনা পূর্বের মূল নামেই চালু আছে।[২] এটার মূল কেন্দ্র হিসাবে ম্যানিলার নিনোই একুইনো ইন্টারন্যাশনাল এ্যায়ারপোর্ট এবং চিবু নগরীর মাকটান-চিবু ইন্টারন্যাশনাল এ্যায়ারপোর্ট থেকে ফিলিপাইন এয়ারলাইন্স ৩১ টি স্থানীয় গন্তব্যে ফিলিপাইন এবং ৩৬ টি বিদেশী গন্তব্যে দক্ষীন-পূর্ব এশিয়া, পূর্ব এশিয়া, মধ্য প্রচ্য, ওশেনিয় এলাকা, উত্তর আমেরিকা এবং ইউরোপে চলাচল করে।[৩]
এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ সাবেক এয়ারলাইন হিসাবে পিএএল ১৯৯৭ সালে এশিয়ান অর্থনৈতিক দুরবস্থার শিকার হয়েছিল। ফিলিপাইনের অনত্যম বড় বাণিজ্যিক ব্যর্থতার নজির হিসাবে, পিএএল কে তখন বাধ্য করা হয়েছিল এটার ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যর সকল আন্তর্জাতিক কার্যক্রম বন্ধ করে দিতে। বিমানসংস্থাটিকে ১৯৯৮ সালে তত্তাবধায়কের অধীনে থাকতে হয়েছিল, পরবর্তিতে যদিও তাদের কার্যক্রম পুনরায় শুরু করা হয়েছিল বিভিন্ন গন্তব্যে। পিএএল ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়কের নিয়ন্ত্রণ থেকে অবমুক্তকৃত হয়, এবং পরবর্তিতে সান মিগুইল গোষ্ঠীকে এটার ব্যবস্থাপনার দ্বায়িত্ব ২০১২ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত হস্তান্তর করা হয়, যারা পরবর্তিতে এটাকে এশিয়ার প্রধানতম বিমান হিসাবে পুনপ্রতিষ্ঠিত করার কার্যক্রম গ্রহণ করে।
২য় বিশ্বযুদ্ধ পূর্ব যুগ
[সম্পাদনা]১৯৩৫ সালের ১৪ই নভেম্বর ফিলিপাইন কংগ্রেস দেশটির লুজন দ্বীপপুঞ্জতে চিঠি, মালামাল এবং যাত্রী পরিবহন সেবা প্রদানের জন্য ফিলিপাইন এ্যারিয়াল টেক্সি কোম্পানি ইন্কোর্পোরেটেড (পিএটিসিও) এর সাথে অংশিদারীত্বের চুক্তি অনুমোদন করে। পরবর্তিতে যা ম্যানিলা-বাগুইনা এবং ম্যানিলা-পারাকেলি পথে যাত্রা শুরু করে। কোম্পানীটি ছয বছরের জন্য চালু পথ সমূহে তফসিলভুক্ত যাত্রী পরবহন সুপ্ত রেখেছিল।[৪]
২য় বিশ্বযুদ্ধ সময়কালীন
[সম্পাদনা]১৯৪১ সালের ২৬ শে ফেব্রুয়ারি ফিলিপাইন এয়ারলাইন্স ইনক. ফিলিপাইনের তৎকালীন সময়ে দেশের অন্যতম বিশিষ্ট শিল্প গোষ্ঠী আন্দ্রেজ সরিয়ানো সি: এর নজরে আসে, যিনি জেনারেল ম্যানেজার হিসাবে এবং সাবেক সিনেটর রেমন ফার্নানডেজ যিনি চেয়ারম্যান এবং প্রেসিডেন্ট হিসাবে উক্ত কোম্পানিতে দ্বায়িত পালন রত ছিলেন পরে তারা অংশিদারী প্রতিষ্ঠান হিসাবে ফিলিপাই এ্যারিয়ার টেক্সি কোম্পানীকে কিনে নেন এবং এভাবে জন্মলাভ করে ফিলিপাইন এয়ারলাইন্স।
১৯৪১ সালে ১৫ই মার্চ বিমানসংস্থাটির প্রথম বিমান হিসাবে একটি মাত্র বিচক্রাফ্ট মোডেল ১৮ এনপিসি-৫৪প্রতিদিন ম্যানিলা (ন্যালসন ফিল্ড থেকে) এবং বাগুইয়ো স্থান দুটির মধ্যে উড্ডয়ন শুরু করে। ২২ শে জুলাই বিমানসংস্থাটি ফিলিপাইন এ্যারিয়াল টেক্সি কোম্পানীকে অধিগ্রহণ করে নেয়। পরবর্তিতে সেপ্টেম্বর মাসে সরকারের বিনিয়োগ এটাকে জাতীয়করনের দিকে ধাবিত করে।
২য় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী যুগ
[সম্পাদনা]পিএএল এর সেবা কার্যক্রম দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্যহত হয়েছিল, যে যুদ্ধ ফিলিপাইনে ১৯৪১ থেকে ১৯৪৫ পর্যন্ত স্থায়ী হয়েছিল। ১৯৪৬ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারি পিএএল তাদের কার্যক্রম পুনরায় আরম্ভ করে। ১৯৪৬ সালের ৩১ শে জুলাই প্রথম বিমানসংস্থা হিসাবে পিএএল প্রসান্ত মহাসাগর পারি দেয় যখন কিনা তাদের ভাড়া করা ডগলাস ডিসি০৪ বিমান নেইলসন এ্যায়ারপোর্ট খেকে গুয়াম, ওয়েক দ্বীপ, জন্সটন এটোল এবং হনুলুলু তে বিরতী দিয়ে ৪০ জন আমেরিকান চাকুরীজীবিকে ওকল্যাণ্ড, ক্যালিফোর্নিয়াতে পৌছে দিয়েছিল। ১৯৪৬ সালের ডিসেম্বর মাসে বিমান সংস্থাটি ম্যানিলা থেকে সান ফ্রান্সিস্কোতে নিয়মিত সেবা প্রদান শুরু হয়। এই সময়ে, এই বিমানসংস্থাটি দেশের পতাকাবাহী বিমান সংস্থা হিসাবে মর্যাদাপ্রাপ্ত হয়।
পিএএল তাদের ইউরোপে কার্যক্রম আরম্ভ করে ১৯৪৭ সালে। ১৯৬০ সালে পিএএল একটি বোয়িং৭০৭ ধার নেয়, যা কিনা পরবর্তীতে ডগলাস ডিসি-৮ দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয় এবং যার ফলে সংস্থাটি অধুনিক যুগে প্রবেশ করে। ১৯৯২ সালের জানুয়ারি মাসে যথন সরকার পিএএল এর ৬৭% মালিকানা একটি হোল্ডিং কোম্পানী পিআর হোল্ডিংস এর নিকট বিক্রয় করে দেয় তখন তা বেসরকারী প্রতিষ্ঠান হয়ে যায়। পরবর্তিতে তাদের দ্বারা নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে বিমান সংস্থাটিকে নতুন প্রজন্মের প্রচুর এ্যায়ারবাস পরিপূর্ণ একটি পুরোদস্তুর প্রতিষ্ঠান হিসাবে বিশ্বের দারবারে প্রতিষ্ঠা লাভ করে।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "About PAL ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৭ জুলাই ২০১১ তারিখে." Philippine Airlines. Retrieved on May 19, 2009. "PNB Financial Center Pres. Diosdado Macapagal Avenue CCP Complex, Pasay City Retrived On 2015-08-18 "
- ↑ Donohue, Ken (এপ্রিল ২০১২)। "Philippine Airlines: Asia's first, striving to shine"। Airways (Sandpoint, Idaho)। Sandpoint, Idaho: Airways International, Inc.। 19 (2): 26–33।
- ↑ "Information About Philippine Airlines"। cleartrip.com। ২০১৪-০৭-০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-০৮-১৮।
- ↑ Philippine Airlines International Winter Timetable ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৭ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে, Philippine Airlines. Retrieved 2015-08-18.
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- ফিলিপাইন এয়ারলাইন্স - অফিসিয়াল সাইট।