বিষয়বস্তুতে চলুন

ফিউচার বয় কোনান

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

মিরাই শোনেন কোনান জাপানি: 未来少年コナン জাপানি ভাষায় ( রোমাজি ভাষায় : Mirai Shonen Conan) যার অর্থ "ভবিষ্যত বালক কোনান" ।[] সিরিজটি দুটি প্রধান নায়কের নাম অনুসারে আরবীতে আদনান এবং লিনা নামে পরিচিত, তবে এর আনুষ্ঠানিক নাম হলো " আদনানের অ্যাডভেঞ্চারস " এবং এটি একটি জাপানি অ্যানিমে সিরিজ যা আরবি ভাষায় ডাব করা হয়েছে, নিপ্পন অ্যানিমেশন দ্বারা নির্মিত, ২৬টি পর্ব নিয়ে গঠিত। [][][] এটি ১৯৮১ সালে আরব পর্দায় দেখানো হয়েছিল এবং এখনও অনেক চ্যানেলে বারবার দেখানো হচ্ছে। এটি 1978 সালে জাপানের অন্যতম সেরা অ্যানিমেশন পরিচালক এবং অ্যানিমেটর হায়াও মিয়াজাকি দ্বারা পরিচালিত হয়েছিল। এটি আলেকজান্ডার কী-এর দ্য ইনক্রেডিবল টাইড উপন্যাসের উপর ভিত্তি করে রচিত এবং সিরিজটি পোস্ট-অ্যাপোক্যালিপ্টিক, সাইন্স ফিকশন ও এডভেঞ্চার কাঠামোর মধ্যে পড়ে।

তিন বছর পর, ১৯৮১ সালে, আরব উপসাগরীয় রাজ্যগুলির জন্য যৌথ প্রোগ্রাম প্রোডাকশন কর্পোরেশন সিরিজটিকে দ্য অ্যাডভেঞ্চারস অফ আদনান নামে অভিহিত করে। আরবি ডাবিংয়ে বেশ কিছু উপসাগরীয় শিল্পী অংশগ্রহণ করেছিলেন, যেমন আদনানের ভূমিকায় ইরাকি শিল্পী ফালাহ হাশেম, (লিনার ভূমিকায়) ইরাকি শিল্পী সানা আল-তাকমাজি, আবসি ভূমিকায় কুয়েতি শিল্পী আবদুল রহমান আল-আকল। আঙ্কেল ফারিস চরিত্রে শিল্পী আলী আল-মুফিদি, ক্যাপ্টেন নামিকের ভূমিকায় শিল্পী জসিম আল-নাভান এবং আমের চরিত্রে শিল্পী দাউদ হুসেন। অন্যান্য ভাষার তুলনায় আরবিতে এটি তুমুল জনপ্রিয়তা অর্জন করে । এটি বিশ্বের প্রায় ৩০টি ভাষায় ডাবিং করা হয়েছে। চলতি শতাব্দীতে মাল্টিমিডিয়া পিসি বাংলা ভাষায় এটিকে একটি ইসলামিক কার্টুন হিসেবে ডাবিং করে। তবে এটি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জনে সমর্থ হয়নি।

সিরিজের ঘটনাবলি

[সম্পাদনা]

সিরিজের ঘটনাগুলো ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের বিশ বছর পরে বিশ্বের অবস্থা এবং শেষ অবধি পৃথিবীতে ঘটে যাওয়া যুদ্ধ এবং ধ্বংস সম্পর্কে আবর্তিত হয়। তারপরে আদনানকে তার দাদার সাথে একা দেখা যায় যে যুদ্ধের পরে ২০১৬ সালে জন্মেছিল এবং অবশিষ্ট দ্বীপে তার সাথে বসবাস করেছিল। যদিও সে তখনও ছোট ছিল কিন্ত সে সাঁতার কাটতে এবং ডাইভিংয়ে খুব দক্ষ ছিল। একদিন লিনাকে দেখা যায় যে বয়সে আদনানের মতোই এবং হোপ আইল্যান্ডে জন্মেছিল (তার দূরত্বে টেলিপ্যাথি করার ক্ষমতা রয়েছে এবং আদনান তাকে খুঁজে পেয়েছে লস্ট আইল্যান্ডের তীরে অচেতন অবস্থায়)। আদনান এবং তার দাদা তার যত্ন নেন। পরদিন লিনার সাথে আদনানের বন্ধুত্ব হয় এবং লিনার কাছ থেকে সে জানতে পারে যে তার দেশে আরো অনেক মানুষ রয়েছে। কিন্তু দুর্গের লোকজন শীঘ্রই লিনার অবস্থান শনাক্ত করতে সক্ষম হয় এবং লস্ট আইল্যান্ডে এসে লিনাকে নিয়ে যায়। আদনানের দাদা একজন সৈন্যের গুলিতে আহত হন যখন তিনি লিনাকে তাদের থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন। তারপর তিনি মারা যান, কিন্তু তিনি আদনানকে লিনাকে সাহায্য করতে ও তাকে খুঁজে বের করতে বলেন। হারিয়ে যাওয়া দ্বীপে তার দাদাকে কবর দেওয়ার পর, আদনান একটি নৌকা তৈরি করে দ্বীপ ছেড়ে চলে যায়, তার নৌকাটি আরেকটি ছোট দ্বীপের তীরে এসে পড়ে এবং সেখানে সে একাকী বসবাসকারী আবসির সাথে দেখা করে এবং তারা বন্ধু হয়। আদনান লিনাকে দুর্গের লোকজন থেকে উদ্ধার করার সিদ্ধান্ত নেয়, তাই সে দুর্গ অভিমুখী বারাকুডা জাহাজে তার বন্ধু আবসির সাথে অনুপ্রবেশ করে। জাহাজে অনুপ্রবেশ করার পর আদনান ও আবসি ক্যাপ্টেন এর হাতে বন্দি হয় তাদের উভয়কে ২০টি করে বেত্রাঘাত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু আবসি ক্লান্ত থাকায় ও জ্ঞান হারিয়ে ফেলার কারণে আদনান নিজেকে তার বন্ধুর জন্য উৎসর্গ করে। ফলে সে ৪০টি বেত্রাঘাত সহ্য করে নেয়। পরদিন থেকে ক্যাপ্টেন আদনান ও আবসিকে তার জাহাজের কর্মচারী হিসেবে নিয়োগ দেন। (বারাকুডা জাহাজের ক্যাপ্টেন নামিককে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল লিনার দাদা ডক্টর রমিকে খুঁজে বের করতে কিন্তু তিনি তাকে না পেয়ে তার নাতনি লিনাকে ধরে নিয়ে আসেন। পরে লিনা জাহাজ থেকে ঝাঁপ দেয়। সাঁতার কেটে সে লস্ট আইল্যান্ডের তীরে এসে পতিত হয়, যা সিরিজ শুরুর আগে ঘটেছিল।) আদনান লিনার জায়গায় পৌঁছাতে সক্ষম হয় এবং তাকে উদ্ধার করে। উদ্ধার করতে গিয়ে তারা দুজন বন্দি হয়। দুজনকে দুই স্থানে বন্দি করে রাখা হয়। পরদিন ক্যাপ্টেন নামিক লিনাকে সেখান থেকে গোপনে নিয়ে (দুর্গ প্রশাসনের ভাষায় অপহরণ) ল্যান্ড অব হোপের দিকে যাত্রা শুরু করে। দুর্গের সহকারী পরিচালক সামিরা তার ফালকো নামক সীপ্লেন নিয়ে এবং আল্লাম তার গানবোট নিয়ে ক্যাপ্টেনের জাহাজকে ধরতে বের হয়। আদনান গোপনে ফালকোতে অনুপ্রবেশ করে। বহু বাধা পেরিয়ে আদনান লিনাকে পুনরায় উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। সাঁতার কাটতে কাটতে তারা মরুভূমিতে এসে পড়ে। সেদিন রাতে লিনা টেলিপ্যাথি ক্ষমতার মাধ্যমে তার দাদার কণ্ঠস্বর শুনতে পায়। আদনান লিনাকে নিয়ে বিশাল মরুভূমিতে যাত্রা শুরু করে। এক পর্যায়ে ক্লান্ত হয়ে তারা মরুভূমিতে অচেতন হয়ে পড়ে থাকে । এ অবস্থায় বদর নামক একজন ইঞ্জিনিয়ার তাদেরকে সেখান থেকে নিয়ে তার কর্মস্থলে নিয়ে আসেন এবং তার অধীনে তাদেরকে কাজ করতে নির্দেশ দেন। তার অধীনে আরো কিছু কর্মচারী ছিল। তিনি সেখানে পানির নিচে নিমজ্জিত একটি জাহাজ মেরামত করার কাজ করতেন। বদর নামক লোকটি আর কেউ নন, তিনিই ছিলেন লিনার দাদা ডক্টর রমি। যিনি মহাকাশে প্রেরিত সোলার প্যানেল স্যাটেলাইট পরিচালনা করতে সক্ষম একমাত্র বিজ্ঞানী এবং যাকে দুর্গের প্রধান আল্লাম খুঁজছিল সৌরশক্তি পুনরুদ্ধারের জন্য। লিনা সহ অন্য কেউই তাকে চিনতে পারেনি কারণ দুই বছর আগে তিনি যখন দুর্গ ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন তার ফ্লাইং মেশিনের উপর আগুনের গোলা নিক্ষেপ করা হয়। দুর্ঘটনায় পতিত হওয়ায় তার চেহারা বিকৃত হয়ে যায়, এক চোখ অন্ধ হয়ে যায় এবং মাথার অধিকাংশই টাক হয়ে যায়। উপরন্তু তিনি তার কন্ঠ ও নাম পরিবর্তন করে ছদ্মবেশ ধারণ করেন। ফলে আল্লাম তাকে খুঁজে পাচ্ছিল না যদিও দুর্গের লোকজন তাকে চিনত। দুর্ঘটনায় পতিত হওয়াটা ছিল ডক্টর রমির জন্য আশীর্বাদস্বরূপ। একদিন পানির নিচে জাহাজ মেরামতের কাজ করার সময় তিনি জাহাজের নিচে চাপা পড়ে যান। কিন্তু তার কর্মচারীরা তিনি আর বেঁচে নেই ভেবে তাকে উদ্ধারের জন্য তেমন প্রচেষ্টা চালাচ্ছিল না বলে তিনি বাধ্য হয়ে লীনার সাথে টেলিপাথির মাধ্যমে যোগাযোগ করেন আর তখনই লীনা তার দাদাকে চিনে ফেলে এবং তাকে উদ্ধারের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করে। অবশেষে আদনান তাকে উদ্ধার করে। ইঞ্জিনিয়ার বদরের প্রকৃত পরিচয় এভাবে ফাঁস হয়ে যায়। তার অধীনস্থ আমেরের মাধ্যমে দুর্গ এ সংবাদ পৌঁছে যায়। ডক্টর রমি আদনান ও লিনাকে নিয়ে ফ্লাইং মেশিনে চড়ে দুর্গে গমন করেন কেননা তার ফ্লাইং মেশিনের নতুন ব্যাটারি প্রয়োজন ছিল যা কেবল দুর্গতেই মজুদ ছিল। সেদিন বারাকুডা জাহাজ আটক করার পর আল্লাম জাহাজের নাবিক সহ সমস্ত কর্মচারীকে দুর্গের কারাগারে আটকে রাখে, যাদের মধ্যে আবসিও ছিল। আর ক্যাপ্টেন নামেককে মরুভূমিতে শুইয়ে বেঁধে রাখে। ডক্টর রমি দুর্গে গমনের সময় ক্যাপ্টেনকে এ অবস্থায় দেখে তাকে উদ্ধার করে তাকেও তাদের সঙ্গে দুর্গে যাবার অনুমতি প্রদান করেন। দুর্গে পৌঁছার পর ড. রমি দুর্গের আন্ডারগ্রাউন্ডে লীনাকে নিয়ে ব্যাটারি খুঁজতে যান। আর আদনান ও ক্যাপ্টেন আবসীসহ জাহাজের কর্মচারীদের উদ্ধার করে। এরপর ক্যাপ্টেন তার নাবিকদের নিয়ে জাহাজে চলে যান। আর আদনান দুর্গের কারাগারে বন্দি অন্যান্য সদস্যদের মুক্ত করে তাদের সাহায্যে অ্যাবসিকে নিয়ে ড. রমিকে উদ্ধারের জন্য দুর্গে প্রবেশ করে। ততক্ষণে আল্লামের লোকজন ড. রমিকে গ্রেফতার করে ফেলে। দুর্গের আন্ডারগ্রাউন্ডে পৌঁছার পর লিনার সাথে আদনান ও আবসির পুনর্মিলন হয় এবং তাদের তিনজনের প্রচেষ্টায় ড. রমি আল্লামের লোকজনের হাত থেকে রক্ষা পান। ফ্লাইং মেশিনে চড়ে তারা চারজন সদ্যমুক্ত বন্দীদের দিকনির্দেশনা অনুসরণ করে একটি গোপন পথ দিয়ে দুর্গ থেকে বের হয়ে যান, যে পথ সম্পর্কে আল্লাম জানতো না। আদনান, লিনা ও আবসীর চোখে মুখে ছিল মুক্তির আনন্দ, যা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। ওদিকে ক্যাপ্টেন তার জাহাজ নিয়ে ইতোমধ্যেই রওনা হয়ে গেছেন, তবে গন্তব্য ঠিক করেননি। ডক্টর রমী জাহাজটিকে দেখতে পেয়ে তার ওপর অবতরণ করেন এবং তাদের তিনজনকে জাহাজে রেখে ক্যাপ্টেনকে ল্যান্ড অফ হোপে তাদের নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব দিয়ে আবার দুর্গে ফিরে আসেন। তিনি গবেষণা করে বুঝতে পেরেছিলেন যে দুর্গ অতি সত্ত্বর পানির নিচে তলিয়ে যাবে। ভূগর্ভস্থ বাসিন্দাদের বাঁচানোর উদ্দেশ্যে তিনি ঝুঁকি নিয়ে এ কাজটি করেন। আদনান, লিনা ও আবসী ক্যাপ্টেন নামিকের সাথে ল্যান্ড অফ হোপ এ গমন করে, যেটি একটি সুন্দর দ্বীপ এবং লিনার দেশ ও তার স্বজনরা সেখানে বাস করে। অবশেষে বহুদিনের বহু সংগ্রাম শেষে লীনা স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করে। দ্বীপে গিয়ে সর্বপ্রথম লিনার চাচা ফারিসের সাথে তাদের দেখা হয়। লিনা তার বন্ধুদ্বয়কে তার দেশ দেখাতে থাকে। একে একে সমস্ত স্মৃতি লিনার চোখের সামনে ভেসে ওঠে। ল্যান্ড অফ হোপের গাছপালা, পুকুর, জলাশয়, দিকহারা মাঠ, বিস্তৃত গমখেত, ফুলে-ফলে সুশোভিত বাগান, ঘরবাড়ি দেখে সে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়ে এবং আদনান ও আবসীকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানায়। লিনা আদনান ও আবসিকে নিয়ে তার আত্মীয় ও পাড়া প্রতিবেশীদের সাথে দেখা করতে যায়। তারা লীনাকে ও তার বন্ধুদেরকে স্বাগত জানায়। এরপর লিনা তার বাড়িতে যায়, যেখানে সে তার ফুফু ও ফুফার সাথে থাকতো। লিনার ফুফু লিনাকে দেখে বিস্ময় হতবাক হয়ে যান। লীনা আদনান ও আফসির সাথে তার ফুফুকে পরিচয় করিয়ে দেয়। লিনার ফুপু তাদেরকে লিনাকে সাহায্য করার জন্য আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। এরপর লিনা তার ফুফার সাথে দেখা করতে যায়। তিনি আদনান ও আবসিকে তার বাড়ির মেহমান হিসেবে বরণ করে নেন । লীলার প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে সেদিন রাতে তারা একটি পার্টির আয়োজন করেন, যাতে লীনার আত্মীয়, প্রতিবেশী ও বন্ধুবান্ধব উপস্থিত ছিল । রাতে আদনান ও আবসীকে তাদের বাড়িতে একটি আলাদা রুম দেওয়া হয়। জীবনে প্রথমবারের মতো তারা নরম ও আরামদায়ক বিছানায় একটি শান্তিময় নিদ্রা যাপন করে। পরদিন সকালে লিনা তাদেরকে নিয়ে গ্রামে ঘুরতে যায় লিনা তাদেরকে উইন্ডমিল দেখায়। উইন্ডমিলের দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তি আদনান ও আব্সীকে রুটি উৎপাদন কেন্দ্রে নিয়ে যান । সেখানে তারা দেখতে পায় যে জাহাজের বাবুর্চি রুটি প্রস্তুত করছেন। অন্যদিকে ক্যাপ্টেন নামেক ও নাবিক আমরুসকে দেখা যায় কামারের কাজ করতে। আর লিনা তার বান্ধবীদের সাথে কাপড় বুনতে যায়। সবাইকে বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকতে দেখে আদনানও কাজ করার সিদ্ধান্ত নেয়। সে আবসীকে তার সিদ্ধান্তের কথা জানায়। আবসী এতে রাজি হয়। আদনান হারপুন নিয়ে সাগরে মাছ শিকার করতে যায় । আর আবছি তীর ধনুক নিয়ে পাহাড়ে পশু শিকার করতে যায়। সেখানে একটি বিশাল সার অবসীকে তাড়া করে। কিন্তু তাড়া করতে গিয়ে সারটি পাহাড় থেকে নিচে পড়ে মারা যায় । এরপর আবসি শারটির চামড়া ছাড়িয়ে রান্না করে কিছু অংশ খায়। বিকালে বাড়িতে এসে আদনান তাকে খুজে না পেয়ে পাহাড়ের দিকে যায়। গিয়ে দেখে আবছি একটি বিশাল শার শিকার করেছে । তখন তারা দুজন সার্টিকে বাড়িতে নিয়ে আসে। মূলত অবসির শিকার করা সেই সারটি ছিল পাহাড়ের অন্যপাশের জমির মালিক নিমরুর । নিমরো তার ষাঁড় খুঁজে না পেয়ে লীনাদের গ্রামে খোঁজ করতে আসে। সে লিনাদের গ্রামের মেয়রকে বলে যদি এই গ্রামের কেউ আমার ষাঁড় চুরি করে থাকে তাহলে আমাকে ৫০ গমের বস্তা দিতে হবে। আদনান ও আবসি যখন সারের বাকি অংশটুকু নিয়ে বাড়িতে আসলো তখন লিনার পরিবার ও মেয়র হতাশ হয়ে গেলেন। সেই রাতে আদনান ও আবছি বাড়ি থেকে বের হয়ে নিমরুর সাথে দেখা করতে গেল। কিন্তু তারা নিমরুর এলাকায় যাওয়ার পর নিমরুর পাহারাদার লোকজন তাদেরকে চোর ভেবে বন্দী করে নিমরোর কাছে নিয়ে আসে। আদনান ও আবসি নিমরুকে জানায় যে আমরা ভুলবশত আপনার ষাঁড় খেয়ে ফেলেছি। আবছি একাই এত বড় সার শিকার করেছে এ কথাটি নিমরো বিশ্বাস করল না। তাই সে চ্যালেঞ্জ করে বলল যদি তোমরা দুজন আগামীকাল একটি বড় শুকর শিকার করতে পারো তাহলে আমি এই সারের কথা ভুলে যাব। সে রাতে আদনান ও আবছি আর বাড়ি ফিরে যায়নি। নিমরুর কাছেই ছিল । সকালবেলা নিমরো একটি শুকর উপস্থাপন করল এবং আদনান ও আবসিকে এটি শিকার করতে বলল। নিমরোর লোকজন দর্শক হিসেবে উপস্থিত ছিল। আদনান ও আবসি দুজনে মিলে শুকরটি শিকার করতে সক্ষম হয় । তা দেখে নিমরো ও অন্যরা হতবাক হয়ে যায়। নিমরো আদনান ও আবশিকে তাদের গ্যাং বাহিনীতে যোগদানের আমন্ত্রণ জানায়। আদনান সঙ্গে সঙ্গে এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলেও আবসি উন্নত খাবারের লোভে নিমরুর বাহিনীতে যোগদানের ইচ্ছা পোষণ করে। ফলে সে তাকে তার এলাকার অন্যতম প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেয়। প্রতিটি প্রশাসকের নিজস্ব ঘোড়া থাকে। নিমরুর বোন আমিরা আবসিকে নিয়ে একটি ঘোড়ায় উঠলো। তাকে ঘোড়া চালানো শেখাবার জন্য। ঘোড়ায় চড়ে আবসি বেশ মজাই পেল। ঘোড়ায় চড়তে চড়তে আবসি একটি আকর্ষণীয় পশু দেখতে পেল । সে ঘোড়া থেকে নেমে পশুটিকে কোলে নিল। সেই পশুটি ছিল পাশের গ্রামের শরীফের। শরীফ ছুটে এসে আবসিকে জানালো যে এই পশুটি তার। আমিরা জানালো যে আবছি এখন থেকে এই এলাকার নতুন প্রশাসক। আ বসি এটি নিয়েছে সুতরাং এই পশুটি এখন তার। সে এটি নিয়ে এখন যা খুশি তাই করতে পারে । এই বলে আমিরা পশুটিকে জবাই করতে প্রস্তুত হলো। কিন্তু আবসি তাকে বাধা দিয়ে বলল যে এই পশুটির মালিক শরীফ। সুতরাং এটি আমাকে এখন তার কাছেই ফিরিয়ে দিতে হবে। আমিরা চেয়েছিল আবছি তার ক্ষমতার দাপট দেখাক। কিন্তু আবছি তা না করায় আমিরা ক্ষুব্ধ হয় এবং সে দৌড়ে তার ভাইয়ের কাছে গিয়ে বিষয়টি জানায়। শরিফ আদনান ও আবসিকে নিয়ে তার গ্রাম দেখায়। শরীফ একজন অনাথ। তার গ্রামের অন্যান্য অনেক সদস্যই রয়েছে যারা তার মতই অনাথ। তারা অপরিসীম পরিশ্রম করে একটি সুন্দর গ্রাম নির্মাণ করেছে। শরিফদের এই পরিশ্রম আদনানকে আরো কর্মঠ ও পরিশ্রমী হতে উৎসাহিত করে। এরপর আদনান ও আবসি বাড়ি ফিরে যাচ্ছিল। পথিমধ্যে নিমরোর গ্যাং বাহিনী তাদেরকে ঘেরাও করে ফেলে। নিমরো তাদেরকে বলে যদি তোমরা আমাদের বাহিনীতে যোগ না দাও তাহলে আমি সারা গ্রামে তোমাদেরকে চোর হিসেবে আখ্যায়িত করে সবার কানে লাগিয়ে দিব। নিমরো তাদের উপর আক্রমণ করতে উদ্ধত হয়। ঠিক তখনই লিনা এসে তাদের দুজনের সামনে ঢাল হয়ে দাঁড়ায়। লিনা নিমরোকে বলে, "এটি হচ্ছে ল্যান্ড অব হোপ। এখানে আমরা কোনো ধরনের সংঘাতকে প্রশ্রয় দিব না। তোমাকে আমি আমার মায়ের স্মৃতি চিহ্ন গলার হার দেব। বিনিময়ে তুমি ওদেরকে ছেড়ে দাও।" কিন্তু আদনান চায়নি যে লিনা তাকে বাঁচানোর জন্য তার প্রয়াত মায়ের স্মৃতিচিহ্ন গলার হার বিলিয়ে দিক। সে তাকে গলার হার দিতে নিষেধ করছিল। অপরদিকে লিনা সংঘাত এড়াতে যে কোনো কিছু বিসর্জন দিতে প্রস্তুত। তাই সে আদনানের কথা শুনছিল না। ঘটনাক্রমে আদনান লিনাকে ধাক্কা দিয়ে বসে।পরিস্থিতি বুঝে উঠতে না পেরে ভুলবশত লিনা আদনানকে থাপ্পড় দিয়ে ফেলে। হঠাৎ পরিবেশ শান্ত হয়ে যায়। পিন পতন নীরবতা বিরাজ করে। কেননা আদনান ও লিনার মাঝে যে দৃঢ় বন্ধুত্ব, সে আলোকে এ ধরনের দৃশ্য দেখবার জন্য আশেপাশের লোকজন প্রস্তুত ছিল না। তাদের পরিস্থিতি বুঝে উঠতে সময় লাগছিল। পরিস্থিতি বুঝে উঠার পর লিনার প্রস্তাবে নিমরো রাজি হয় এবং তাদেরকে ছেড়ে দেয়। এরপর তারা তিনজন বাড়ি ফিরে যেতে থাকে। কিন্তু মাঝপথে হঠাৎ লীনা কাঁদতে শুরু করে। যে কোনো দর্শকের দেখে মনে হবে প্রয়াত মায়ের মূল্যবান স্মৃতিচিহ্ন বিসর্জন দিতে হয়েছে বলে মন খারাপ করে সে কাদঁছে। কিন্তু ঘটনা মূলত তা নয়। লীনা কাদঁছিল কারণ যে মানুষটি তাকে এত বড় বড় বিপদ থেকে রক্ষা করল, যার কারণে সে আজ স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করার সৌভাগ্য অর্জন করলো, যে তাকে নিঃস্বার্থভাবে ভালোবাসলো, তাকে ন্যায়ের উপর অটল থাকতে সব রকমের সহযোগিতা করল, তাকেই কিনা সে আজ থাপ্পড় দিয়ে ফেলেছে। সে আদনানের কাছে এর জন্য ক্ষমা চাইলো। আদনানও লিনার কাছে ক্ষমা চাইলো। আদনান বলল, ওই গলার হারটি তো খুব মূল্যবান ছিল। লীনা বলল, "তোমরা দুজন আমাকে বাঁচাতে সব সময় সংগ্রাম করেছ, যেকোনো বিপদ ও কষ্ট মাথা পেতে নিয়েছো, তাই তোমরা আমার কাছে অধিক গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের এই ল্যান্ড অব হোপ আমার জানামতে পৃথিবীতে অবশিষ্ট সবচেয়ে বড় দ্বীপ যা সমুদ্রে তলিয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা পেয়েছে। তাই আমাদের উচিত আমাদের এই দেশকে ভালোবাসা, বহিরাগত শত্রুদের থেকে একে বাঁচিয়ে রাখা এবং আমাদের দেশের অভ্যন্তরে কোনো ধরনের সংঘাত, হিংসা বিদ্বেষ, কলহ বিবাদ ও হানাহানিকে স্থান না দেওয়া। আর তা করতে এবং তোমাকে রক্ষা করতে এই স্মৃতিচিহ্ন বিসর্জন দেওয়া মোটেই আমার দুঃখের কারণ নয়।" এরপর আদনান আবসিকে বলে আমরা একটি ঘর নির্মাণ করব। শরিফদের গল্প শোনার পর আমি আরো উদ্যমতার সাথে কাজ করতে উৎসাহিত হয়েছি। আবসি এতে সম্মত হয়। লিনা এ পরিকল্পনাকে স্বাগত জানায়। এরপর তারা বাড়ি ফিরে যায়। একদিন শেষ রাতে লীনা স্বপ্ন দেখে তাদের গ্রামে দুর্গের লোকজন আক্রমণ করেছে। আর তার দাদা আগুনে জ্বলন্ত ফ্লাইং মেশিনে দাঁড়িয়ে লিনাকে বলছেন ল্যান্ড অব হোপ কে রক্ষা করো। এরপর তার ঘুম ভেঙ্গে যায়। সে বাড়ি থেকে বের হয়ে একটি পাহাড়ের উপর দাঁড়িয়ে তার দাদার সাথে টেলিপ্যাথির মাধ্যমে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে। কিন্তু তাতে তার দাদা সাড়া দেননি। তখন সকাল হয়ে গেছে। আদনান লিনার চাচার সাথে তার নৌকায় করে শরীফের গ্রামের দিকে যাচ্ছিল। সাগর পাড়ি দিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্য হলো যাতে নিমরো তাদেরকে দেখে না ফেলে।আদনান লিনাকে পাহাড়ের উপর দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে সেখানে গিয়ে লিনাকে নৌকায় নিয়ে আসে। তাদের সাথে লিনার চাচাতো ভাইও ছিল । শরীফের গ্রামে পৌঁছার পর লিনা শরীফের সাথে দেখা করে। আদানান লীনাকে বলে গ্রামের ভিতরে যেতে। সেখানে তার জন্য সারপ্রাইজ রয়েছে। লিনা গ্রামের ভিতর হাঁটতে শুরু করে। কিছুদূর গিয়ে দেখে আবসি কৃষকের জামা পরে কতগুলো পশু নিয়ে হাঁটছে। সে লিনাকে জানায় যে সে পশু শিকার করার পরিবর্তে পশুকে লালন পালন করছে। হঠাৎ একটি পশু দৌড়ে অন্য দিকে চলে যেতে থাকে আবছি সেটাকে ধরতে গিয়ে নিমরুর জমিতে চলে যায়। আমিরা এটি দেখে ফেলে। এ কারণে আবসির সাথে আমিরার বাকবিতণ্ড হয়। সে নিমরকে গিয়ে খবর দেয়। নিমরো তখন ক্যাপ্টেন নামিকের সাথে তার জাহাজ সংস্কার করা নিয়ে আলোচনা করছিল। ক্যাপ্টেন তাকে বলছিল যদি তুমি আমার জাহাজ সংস্কার করতে সাহায্য কর তাহলে আমি তোমাকে নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে ঘুরতে যাব। ওদিকে আদনান ও আবসি লিনাকে নিয়ে তাদের বানানো নতুন ঘর দেখায়, যেটি তারা সাগরের পাড়ে একটি গাছের উপর বাঁশ দিয়ে নির্মাণ করেছিল। চমৎকার এই ঘরটি দেখে লীনা অভিভূত হয়ে যায়। ঘরটির নিচে আবসির পশু রাখার জন্য জায়গা তৈরি করা হয়েছিল লিনাকে নিয়ে আদনান ঘরে প্রবেশ করে। আদনানের দ্বীপে আদনান যেমন তার ঘর থেকে সাগর দেখতে পেত, তেমনি এই ঘরটি থেকেও সাগর দেখা যায়। আদনান লিনাকে বলল, "কোনো একদিন আমি আমার দেশে ফিরে যাব। তুমি বলেছিলে আমার দ্বীপেও গম চাষ করা সম্ভব। তাই আমি গম চাষ করা শিখে সেখানে গিয়ে গম চাষ করব। আর আবছি পশু পালন করবে। সেখানে আমরা নতুন এবং সুন্দর গ্রাম নির্মাণ করব। আমি খুশি হব যদি তুমি আমাকে সঙ্গ দাও।"[] লিনা এত সম্মত হয় এবং সে প্রতিশ্রুতি দেয় যে সে আদনানের চেয়েও বেশি কাজ করবে। সেই রাতে ক্যাপ্টেন নিমরোকে নিয়ে তার জাহাজ দেখাতে যায়। সে তাকে ও তার লোকজনকে তার রোবোনয়েড দেখায় (যেটিতে আরোহন করে দ্রুত দৌড়ানো যায় এবং এই যন্ত্রটির হাত দিয়ে অনেক শক্ত জিনিসও ভাঙ্গা যায়)। নিমরো ক্যাপ্টেনকে বলে যদি আপনি আদনান ও আবসির বানানো ঘরটি পুড়িয়ে দেন তাহলে আমি আপনার জাহাজ সংস্কারের উদ্যোগ নিব। ক্যাপ্টেন প্রথমে এই জঘন্য কাজটি করতে অস্বীকৃতি জানালেও পরবর্তীকালে নিমরর হুমকি ও তার জাহাজের কথা চিন্তা করে এতে রাজি হয়। অপরদিকে আমিরা আবসির প্রেমে পড়ে গিয়েছিল। যদিও তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব বিদ্যমান, কিন্তু প্রকৃত কথা হলো আমীরা মনে মনে আব্বসিকে ভালোবেসে ফেলেছে। তাই যখন সে শুনল আদনান ও আবসির ঘর পুড়িয়ে দেওয়া হবে, তখন সে আবসির জন্য খুব চিন্তিত হয়ে উঠলো। তবে সে নিশ্চিত ছিল না যে আবসি তার ঘরে নাকি লিনার বাড়িতে। আবছি তার ঘরে কিনা তা বুঝতে না পেরে সে লীনার বাড়িতে গেল। সেখানে সে আবসির খোঁজ করলো কিন্তু পেল না। সে আবার ফিরে গেল। ওদিকে ক্যাপ্টেন আদনানের ঘর পুড়িয়ে দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন এমন সময় তিনি এক অদ্ভুত আওয়াজ শুনতে পেলেন। এটি ছিল দুর্গ থেকে আগত গান বোটের আওয়াজ। তাই তিনি দ্রুত স্থান ত্যাগ করলেন। নিমরুই এসে ঘরটি পুড়িয়ে দিল। গানবোটটি নিমরুর এলাকার দিকেই আসছিল। তাই সে তার অশ্বারোহী বাহিনীকে প্রস্তুত করে। গানবোট থেকে সৈন্যরা অবতরণ করে। আর তখনই নিমরুর বাহিনী সৈন্যদের আক্রমণ করে। শুরু হয দ্বিমুখী সংঘর্ষ। গানবোট থেকে তাদের উপর বোমাবর্ষণ করা হয়। এতে সকলেই আহত হয় যাদের মধ্যে আমিরাও ছিল। আদনান ও আবসি আমিরাকে তুলে নিয়ে আসে। আমিরাকে লিনার বাড়িতে রাখা হয়। জাহাজের শব্দ শুনে ততক্ষণে গ্রামবাসী ঘর থেকে বের হয়ে আসে। আবসি লিনা ও গ্রামের মেয়রকে ঘটনা বিস্তারিত খুলে বলে। এরপর মেয়র আবেদীন গ্রামবাসীর উদ্দেশ্যে বলেন, "দুর্গ থেকে যুদ্ধ জাহাজ আগমন করেছে। নিমরুর বাহিনীর সাথে তাদের সংঘাত হয়েছে এবং এতে তার বাহিনী পরাজিত হয়েছে। আমাদের এখন সিদ্ধান্ত নিতে হবে আমাদের করণীযের ব্যাপারে। সম্ভবত তারা আমাদের গ্রাম দখল করতে এসেছে। আমরা অপরিসীম পরিশ্রম করে এই গ্রামটি নির্মাণ করেছি। আজ থেকে পাঁচ বছর আগেও আমাদেরকে গমের অভাবে ক্ষুধার যাতনা ভোগ করতে হয়েছিল। আজ আমরা পরস্পরের সহযোগিতায় একটি সুন্দর ও বাসযোগ্য গ্রাম নির্মাণ করেছি । তাই আমাদের কর্তব্য হলো একে রক্ষা করা। তোমরা কি আত্মসমর্পণ করতে চাও নাকি আত্মসমর্পণ গ্রহন করতে চাও? আত্মসমর্পণ করার চেয়ে দেশের জন্য জীবন দেওয়া উত্তম। আমরা আমাদের যার কাছে যা আছে তাই দিয়ে তাদেরকে প্রতিরোধ করব। তোমরা প্রস্তুত আছো তো?" মেয়রের উদ্দীপনায় সকলে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হয়। সকালবেলা লিনা আবসিকে আমিরার কাছে নিয়ে যায়। সে তার ভাই নিমরো মারা গেছে ভেবে কাঁদছিল। লীনা আবসিকে জানায় যে সে গতরাতে এসেছিল এবং তাকে খুঁজছিল। তাই সে তাকে বলে আমিরাকে সান্ত্বনা দিতে। আব্ব্সী তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করে। অপরদিকে দুর্গের লোকজন গ্রামে তাবু স্থাপন করে। সৈন্যরা নিমরোকে সামিরার কাছে ধরে আনে। নিমরু তাকে বলে, আমি আপনাদের সাহায্য করতে চাই, আপনাদের দলে যোগ দিতে চাই। সামিরা প্রথমে তা বিশ্বাস না করলেও পরবর্তীকালে তাকে তাদের দলে নেন। এরপরই শুরু হয় নিমরুর বিশ্বাসঘাতকতা ও দেশের বিরুদ্ধে কাজ করা। অপরদিকে গ্রামবাসী পাহাড়ের উপর যুদ্ধাস্ত্র নিয়ে শত্রুদের মোকাবেলা করার জন্য প্রস্তুত থাকে। লিনা ও গ্রামের নারীরা মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য খাবার নিয়ে আসে। কিছুক্ষণ পর শত্রুবাহিনী তাদের উপর ঝটিকা আক্রমণ চালায়। তবে গ্রামবাসীর সাহসিকতায় ও প্রবল প্রতিরোধের মুখে তারা পিছু হটতে বাধ্য হয়। এরপর নিমরুকে তার বোনের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। ভাইকে জীবিত দেখে আমিরা খুব খুশি হয়। অন্যদিকে আদনান চলে যায় লিনার চাচা ও বোমা মেকার ফারিসের কাছে। তারা দুজনে মিলে গানবোট বোমা দিয়ে উড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু তাদেরকে গানবোট ক্যাপ্টেন দেখে ফেলে এবং তাদের উপর গোলা নিক্ষেপ করে। এতে ফারিস আঘাতপ্রাপ্ত হন। তাদের পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়। এরপর পরপরই গানবোট থেকে গ্রামের দিকে একাধিক গোলা নিক্ষেপ করা হয়। একটি গোলা লীনাদের বাড়িতে পড়ে কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কিছু গোলা পড়ে গমক্ষেতে এবং অন্যান্য জায়গায়। লিনা গ্রামের পথে দৌড়াতে থাকা অবস্থায় তার খুব কাছে একটি গোলা নিক্ষিপ্ত হয়। এতে সে অজ্ঞান হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এতক্ষণ নিমরো গ্রামবাসীর সাথে থাকার ভান করেছিল। কিন্তু গোলানিক্ষেপ শুরু হওয়ার পর সে তার আসল পরিচয় প্রকাশ করে। সে গ্রামবাসীকে শত্রুদের বিরোধিতা না করতে হুমকি দেয়। তার একজন লোক একটি উঁচু বাড়ির উপর উঠে সাদা পতাকা ওড়াতে থাকে, যা গ্রামবাসীর আত্মসমর্পণকে নির্দেশ করে। গ্রাম ইতোমধ্যেই দুর্গের লোকজনের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে জানতে পেরে মুক্তিযোদ্ধারা অত্যন্ত ব্যথিত হন। লিনার কাছে আবসির একটি পশু ছিল। কিন্তু সে যখন অজ্ঞান হয়ে যায় তখন পশুটি তার কাছ থেকে সরে গিয়ে বনে ঘুরতে থাকে। পশুটি আদনানের নজরে আসে। তখন সে বুঝতে পারে লিনার কিছু একটা হয়েছে। সে দৌড়ে গিয়ে লিনাকে খুঁজতে বের হয় এবং পেয়ে যায়। লিনাকে তখন সৈন্যরা ধরে নিয়ে যাবার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। আদনান তাদেরকে পরাজিত করে লীনাকে উদ্ধার করে। কিন্তু পালানোর পথে আদনান সৈন্যদের দ্বারা আঘাতপ্রাপ্ত হয় এবং জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। আদনানকে নিয়ে লিনা গমক্ষেতে লুকিয়ে থাকে। আদনানকে লীনা মাটি খুঁড়ে গর্ত করে সেখানে শুইয়ে রাখে। এরপর মাটি ও ঘাস দিয়ে তাকে ঢেকে রাখে। এরপর সে দৌড়ে পালাতে থাকা অবস্থায় সৈন্যরা তাকে ধরে ফেলে এবং তাদের গানবোটে নিয়ে যায়। রাতে ফারিস আদনানকে খুঁজে পান। আদনানের জ্ঞান ফিরে আসে। লিনা কোথায় আদনান তা জিজ্ঞেস করে তিনি বলেন যে তিনি জানেন না। আদনান বাড়ির দিকে যায়। ততক্ষণে শত্রুরা পুরো গ্রাম নিজেদের দখলে নিয়ে ফেলেছে । গ্রামের সকল লোককে এক জায়গায় একত্র করে সামিরা ঘোষণা দেয় যে ল্যান্ড অব হোপ এখন দুর্গের অধীনস্থ। এরপর সে নিমরোকে গ্রামের নতুন নেতা হিসেবে ঘোষণা করে। এমন সময় আদনান একটি উঁচু বাড়ির উপর উঠে নিমরুকে সতর্কবাণী দেয়। এরপর তখন সামিরার নির্দেশে আদনানের উপর গুলি বর্ষণ করা হয়। তখন সে বিল্ডিং থেকে ঝাঁপ দিয়ে সাগরে পড়ে। এবার সে চলে যায় ফারিস আঙ্কেলের গুহায়। তিনি সেখানে তার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। আদনান তাকে বলে, আমাকে লীনা কোথায় তা খুঁজে বের করে তাকে উদ্ধার করা উচিত। সৈন্যরা তাকে কেল্লায় নিয়ে যাবে। তখন ফারিস বললেন, বোমাই হচ্ছে এ সমস্যার সমাধান। শুধু লীনা নয়, আমরা সমগ্র গ্রামবাসীকেই উদ্ধার করব। আর তা করতে হলে আমাদের তাদেরকে পরাজিত করতে হবে। আর তাদেরকে পরাজিত করতে হলে তাদের গানবোটটা ডুবিয়ে দিতে হবে। এরপর তিনি বোমা প্রস্তুত করেন এবং তা একটি ড্রামে ঢুকিয়ে দেন। বোমার ড্রামটি নিয়ে আদনান গুহা থেকে বের হয়ে জাহাজের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। সে জাহাজের নিচে বোমাটি রশি দিয়ে বাঁধে। কিন্তু তখন জাহাজের সৈন্যদের আলাপচারিতায় সে জানতে পারে লীনা জাহাজের ভেতর রয়েছে। এতে সে ভয় পেয়ে যায় এবং বোমাটি খুলে ফেলার চেষ্টা করে। কিন্তু জাহাজ তখন চলতে আরম্ভ করায় সে তা পারেনি । তাই সে জাহাজের উপরে উঠে। তখনই সৈন্যরা এসে তার ওপর ঝাপিয়ে পড়ে। ফলে সে অজ্ঞান হয়ে যায়। যে রুমে লিনাকে রাখা হয়েছিল তার পাশের রুমেই আদনানকে রাখা হয়। দুই রুমের মাঝে ছোট গ্লাস ছিল। লিনাকে সুযোগ দেওয়া হয় আদনানের সেবা করার জন্য। জ্ঞান ফেরার পর আদনান জরুরি বিষয়ে ক্যাপ্টেনের সাথে কথা বলার জন্য তাকে বের হতে দেওয়ার অনুরোধ করে। সৈন্যরা তাকে রুম থেকে বের করে ক্যাপ্টেন এর কাছে হাজির করে। সে ক্যাপ্টেনকে বলে, শীঘ্রই জাহাজটি পানিতে ডুবতে যাচ্ছে কেননা জাহাজের নিচে আমি একটি বোমা ফিট করেছি। ক্যাপ্টেন প্রথমে তা বিশ্বাস করেননি। এরপর তিনি একটি লোক পাঠান জাহাজের নিচ থেকে বোমাটি খুলে আনার জন্য। লোকটি বোমার ড্রাম খুলে নিয়ে আসে। কিন্তু ক্যাপ্টেন সেটি ফেলে না দিয়ে তা খোলেন। আর তাতেই তারা নিজের পায়ে নিজেরাই কুড়াল মারে। ড্রামের ঢাকনা খোলার কিছুক্ষণ পরই বোমাটি বিস্ফোরণ হয় এবং অল্প সময়ের মধ্যেই জাহাজটি পানির নিচে তলিয়ে যায়। লীনা যে রুমে ছিল সেই রুমের ভিতর আস্তে আস্তে পানি ঢুকতে আরম্ভ করে। পানির চাপে রুমের দরজা ভেঙ্গে যায়। তখন আদনান সে রুমে প্রবেশ করে লীনাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে। ফারিস তাকে তার গুহায় লুকিয়ে রাখেন। সকাল হওয়ার পর সামিরা সৈন্যদের নির্দেশ দেন তারা বারাকুডা জাহাজের লোকজন ও গ্রামের লোকজন যারা জাহাজ সংস্কার করতে জানে তাদেরকে যেন বারাকুডা জাহাজটি সংস্কার করতে বাধ্য করে। বিশ্বাসঘাতক নিমরো আদনানকে খুঁজে বের করে হত্যা করার দায়িত্ব নেয়। আদনান ও ফারিস আঙ্কেল তখন বারাকুডা জাহাজটিও বোমা বিস্ফোরণ করে ধ্বংস করে দেওয়ার পরিকল্পনা করছিলেন। সৈন্যরা গ্রামের লোকদেরকে বন্ধক হিসেবে কেল্লায় নিয়ে যাওয়ার জন্য সাগরের পাড়ে উপস্থিত করে। ক্যাপ্টেন মানিক ঘুরতে ঘুরতে লিনার গুহায় চলে যায়। এ সময় লীনা লক্ষ করে সাগরের পানিগুলো দূরে সরে গিয়েছে, সাগরের পাখি টিকিও দেখা যাচ্ছে না, পানির কলকল ধ্বনি শোনা যাচ্ছে না। সবকিছু শান্ত হয়ে গেছে। সে বুঝতে পারে যে সুনামি আসতে যাচ্ছে। তাই সে উদ্বিগ্ন হয়ে গ্রামের লোকদের সতর্ক করতে যায়। তখন নিমরো ও তার লোকজন পথেই তাকে ঘেরাও করে ফেলে। নিমরো তাকে জিজ্ঞেস করে আদনান কোথায়। লিনা তাকে বোঝানোর চেষ্টা করে যে সুনামি আসছে, গ্রামের লোকজনকে বাঁচাতে হবে। কিন্তু নিমরো কোনো পাত্তাই দিচ্ছিল না। তখন সে আদনানের সাথে টেলিপ্যাথির মাধ্যমে যোগাযোগ করে। সে তাকে সাগরের দিকে তাকাতে বলে। নিমরোদের হাত থেকে ক্যাপ্টেন লিনাকে উদ্ধার করে দৌড়াতে থাকে। লিনার নির্দেশ পেয়ে আদনান জাহাজের নিচ থেকে জাহাজের চূড়ায় উঠে পড়ে। এরপর সাগরের দিকে তাকিয়ে দেখতে পায় দূর থেকে বিশাল ঢেউ আসছে। সে জাহাজের উপর থেকে চিৎকার করে বলতে থাকে, "বিশাল ঢেউ আসছে। তোমরা পালিয়ে যাও, উঁচু স্থানে গিয়ে আশ্রয় নাও। " একথা শুনে সমস্ত লোক ভয় পেয়ে যায়। কিন্তু সামিরা তাকে বিশ্বাস করেনি। আদনান উপর থেকে নিচে নেমে আসে। শেষ পর্যন্ত সামিরা বিশ্বাস করে যে আদনান সত্যবাদী। সে অবাক হয়ে অপলক দৃষ্টিতে ধেয়ে আসা ঢেউয়ের দিকে চেয়ে থাকে। সৈন্যদের অধিকাংশই অস্ত্রশস্ত্র ফেলে দিয়ে গ্রামবাসীর সাথে পালাতে শুরু করলেও সামিরা স্বস্থানে দাঁড়িয়ে থাকে। অপরদিকে নিমরো ক্যাপ্টেন ও লিনাকে ধাওয়া করতে করতে সামিরার কাছে চলে আসে। আদনান আবসিকে দায়িত্ব দেয় লিনাকে নিয়ে এবং ক্যাপ্টেনকে দায়িত্ব দেয় সামিরাকে নিয়ে জাহাজে উঠার জন্য। সুনামির দিকে কোনো ভ্রুক্ষেপ না করে মূর্খ নিমরো আদনানের সাথে লড়াইয়ে লিপ্ত হয়। নিমরো লড়াইয়ে পরাজিত হয়। নিমরোকে নিয়ে আদনান জাহাজে উঠে পড়ে। এরপর সুনামির বিশাল ঢেউ ল্যান্ড অব হোপ এ আছড়ে পড়ে। তবে তেমন কোনো ক্ষয়ক্ষতি ছাড়াই ঢেউ পুনরায় সরে যায় এবং সাগরের পানি স্বাভাবিক হয়ে যায়। সকলে আল্লাহর প্রশংসা করে। সৈন্যরা সাধারণ মানুষের মাঝেই প্রায় নিরস্ত্র অবস্থায় মিশে ছিল। সুনামির পানি সরে গেলে লোকজন সৈন্যদেরকে হাতেনাতে ধরে ফেলে। যে কয়জনের অল্প কিছু অস্ত্র ছিল সেগুলো তারা কেড়ে নেয়। ফলে সৈন্যরা আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। সামিরাও পরাজয় স্বীকার করে নেয়। আদনান, আবসি ও লিনা জাহাজ থেকে নেমে খুশি মনে গ্রামের দিকে যায়। সেদিন রাতে সমস্ত সৈন্যকে একটি ঘরের বন্দী করে রাখা হয়। সে রাতে গ্রামের মেয়র মারওয়ান আঙ্কেল সহ গ্রামের কিছু নেতৃত্বস্থানীয় ব্যক্তিবর্গের সাথে আলোচনায় বসেছিলেন। তাদের আলোচনা ছিল সৈন্যদের পরিণতির ব্যাপারে। বৈঠকে তারা সিদ্ধান্ত নেন সমস্ত সৈন্যকে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করা হবে। পরদিন সকালে গ্রামের নারীরা সৈন্যদের জন্য খাবার রান্না করে নিয়ে যান। গ্রামের মেয়র ও গত রাতের বৈঠকের অন্যান্য সদস্যরা স্বর্ণদের উদ্দেশ্যে বলেন, "গতরাতে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি তোমাদেরকে ক্ষমা করে দেওয়ার। তোমাদেরকে আমরা আমাদের সমাজের সদস্য হিসেবে বরণ করে নিচ্ছি। তোমরা আমাদের গ্রামে নিজেরাই গম চাষ করে খাবে। অস্ত্র ফেলে দিয়ে আজই তোমরা গমচাষীদের সাথে যোগ দাও এবং কাজে লেগে যাও।" নাস্তা খেতে খেতে আদনান আবসিকে বলে আমি আবার কেল্লায় যাব। কিন্তু আবসি তার সাথে যেতে অস্বীকৃতি জানায়। কিন্তু কিছুক্ষণ পর সে আবার তাকে জিজ্ঞেস করে, তুমি কি সুনামির কারণে চিন্তিত? আদনান হ্যাঁ সূচক জবাব দিলে এবার আবসি যেতে রাজি হয়। নাস্তা শেষে আবসি তার নিয়মিত কাজের অংশ হিসেবে শরীফের গ্রামে যায়। যাওয়ার পথে আমিরার সাথে তার দেখা হয়। আমিরা তাকে লীনার সেই গলার হারটি দিয়ে বলে, এটি লীনাকে দিও। অপরদিকে সৈন্যরা কৃষকের সাজ সেজে গম চাষের কাজে লেগে যায়। কিন্তু সামিরা তার ঘরে একা একা বিষন্ন মনে বসে ছিলেন। মেয়র এর নির্দেশে গ্রামের কিছু নারী তার ঘরে গিয়ে তার ইউনিফর্ম খুলে নিয়ে অন্য পোশাক পরিয়ে দিয়ে আসে। আর আদনান গানবোটের গোলার আঘাতে বিধ্বস্ত হওয়া ফারিসের নৌকা সংস্কারের কাজে ফারিসকে সাহায্য করছিল। কথা প্রসঙ্গে ফারিস বললেন, সুনামি যখন এসেছিল, সুনামির পানি ফিরে যাওয়ার সময় তার মাছের খামারের মাছগুলো সব পালিয়ে গেছে। এ কথা শুনে আদনান মাছের খামারে থাকা উড়োজাহাজটির ব্যাপারে চিন্তিত হয়ে যায়। তাই সে কাজ রেখে ফ্লাইং মেশিনটি ঠিকমত আছে কিনা তা দেখতে যায়। এরপর সে সামিরার ঘরে যায়। তাকে সে বলে যে, আমি আপনাকে একটি জিনিস দেখাবো। সামিরাকে নিয়ে আদনান ফ্লাইং মেশিনটি দেখাতে নিয়ে যায়। সে তাকে জিজ্ঞেস করে এটি কি উড়তে সক্ষম কিনা। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সামিরা জানান যে এটি উড়তে সক্ষম। আদনান তাকে বলে যে এটিতে জোরে আমি আপনার সাথে দুর্গে যাব। সামিরা বললেন, তুমি কেন আমার সাথে দূর্গে যেতে চাও? আদনান বলল, সুনামির কারণে আমি দুর্গের বাসিন্দাদের নিয়ে চিন্তিত। সামিরা বললেন, তুমি দুর্গে গেলে আর ফিরে আসতে পারবে না। কিন্তু আদনান বলল, না, আমি ফিরে আসবো। সামিরা বললেন, আমি তোমার শত্রু; সুতরাং তুমি এই আশা করতে পারো না। আদনান বলল, সেটা কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। আদনান তাকে বিশ্বাস করছে বলে সামিরা খুব অবাক হন। বিকেলে আদনান গ্রামের মেয়র ও মারওয়ান আঙ্কেলকে দুর্গে যাওয়ার বিষয়টি জানায়। মারওয়ান আঙ্কেল বললেন, "দুর্গের বাসিন্দাদের বিষয়টি ডক্টর রমিই দেখবেন। কেননা তিনি সবসময়ই তাদের ব্যাপারে চিন্তা করেন।" এ কথা বলার পর লিনাও আদনানের সাথে যাবার ইচ্ছা পোষণ করে। মারওয়ান আঙ্কেল বললেন, শান্ত হও।দুই বছর পূর্বে ড. রমি বলেছিলেন, দুর্গের অধিবাসীদের ভবিষ্যৎ দুর্গের অধিবাসীদের উপরই নির্ভর করবে। তিনিই এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।" অতঃপর তিনি আদনানকে উদ্দেশ্য করে বলেন, "এ ব্যাপারে তোমার দুশ্চিন্তার কারণ নেই। তুমি ল্যান্ড অব হোপ এর সংরক্ষণে মনযোগ দাও।" আদনান আবারো আবসির সাথে দুর্গে যাওয়ার অনুমতি প্রদানের জন্য অনুরোধ করে। কিন্তু মেয়র আবারো কড়া ভাবে না বলে দেন। তিনি বলেন, "সামিরার সাথে দুর্গে গমন আত্মহত্যারই নামান্তর। কেননা সে আমাদের শত্রু। সে আমাদের আক্রমণ করেছে।" আদনানকে হতাশ করে দিয়ে মারোয়ান আঙ্কেল যোগ করেন, "যে বিমানে করে তোমরা যেতে চাইছ তা সেখানে নিয়ে গেলে দুর্গের লোকেরা তোমাদের ধরবে এবং এর ফলে হতে পারে তাদের আরেকটি বাহিনী এসে আমাদের গ্রামে আবারো আক্রমণ করবে।" সেই রাতে আদনান লিনার ঘরে আসে। তাকে সে জানায় যে সামিরার সাথে তার কথা হয়েছে। সে আজ রাতেই গোপনে আবসিসহ তার সাথে দুর্গে যাবে। তখন লিনাও তার সাথে যেতে চায়। কিন্তু আদনান তাকে বলে, "আমি দুঃখিত, এটা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। আমি জানি তোমার দাদা তোমাকে দেখলে খুশি হবেন। কিন্তু যদি কিছু একটা হয়ে যায় তখন কী হবে?" এভাবে সে তাকে বোঝানোর চেষ্টা করে। এমন সময় মারওয়ান আঙ্কেল তাকে ডাক দিয়ে বলেন তুমি কি এখনই বের হবে নাকি? তিনি এতক্ষণ তাদের কথোপকথন শুনছিলেন। তিনি তাদের দুজনকে নিচে নেমে আসতে বলেন। মারওয়ান আঙ্কেল তাদের দুইজনকে নিয়ে আলোচনায় বসেন। তিনি বলেন, "আমি তখন থেকেই এ বিষয়টি নিয়ে চিন্তা করছিলাম। যদি দুর্গে কিছু ঘটে যায় তবে আমাদের গ্রামে তার একটি বড় প্রভাব পড়বে। শান্তির প্রতি আমাদের ভালোবাসা আমাদেরকে ভীতুতে পরিণত করেছে। তুমি জানো, নিমরো আমাদের ধোঁকা দিয়েছে। তাই আমাদের এখন থেকেই পারস্পরিক ভালবাসার ভিত্তিতে সম্মিলিতভাবে এই গ্রাম নির্মাণের জন্য কাজ করতে হবে। তাই এর জন্য যা করা দরকার তা করার অধিকার আমি তোমাকে দিচ্ছি।" তার শেষ বক্তব্যটির মাধ্যমে তাদের দুর্গে যাবার প্রচ্ছন্ন অনুমতি পাওয়া যায় দুর্গে যাবার অনুমতি পেয়ে আদনান খুশি হয় কিন্তু তিনি আদনান ও আফসোকে যেতে অনুমতি দিলে লীনাকে কোনভাবেই যেতে দিতে রাজি নন। লেনা আদনানকে বলে যেন সে তার দাদার কাছে তার সালাম পৌঁছে দেয়। পরদিন সকালবেলা লিনা আদনান ও আবসীকে বলে, গ্রামের মেয়র তোমাদের দুর্গে যাবার পরিকল্পনায় সম্মত হয়েছেন। এরপর লীনা তাদের যাত্রাপথে লাঞ্চের জন্য খাবার রেডি করে দেয়। এরপর সেই ফ্লাইং মেশিনে তাদের যাত্রা শুরু হয়। গ্রামবাসীদের অনেকেই সমুদ্রপাড়ে এসে তাদের বিদায় জানাতে আসে। মারওয়ান আঙ্কেল সামিরাকে বলে দেন যেন সে আদনানকে ধোঁকা না দেয়। উল্লেখ্য, তাদের মাঝে লীনা উপস্থিত ছিল না। বরং সে সমুদ্রের অন্য পাড়ে মন খারাপ করে দাঁড়িয়ে থাকে। সামিরা যখন যাত্রা শুরু করলেন লীনা সেখান থেকে তাদেরকে দেখছিল। এটি জানালা থেকে আদনান খেয়াল করে। বিমানটি উড্ডয়নের পূর্বেই আদনান সামিরাকে বিমান থামাতে বলে। এরপর আদনান নেমে লীনাকে নিয়ে আসে। মূলত সে লিনার বিষন্ন চেহারা সহ্য করতে পারছিল না। গ্রামবাসী এই কান্ড দেখে বিস্মিত হয়। মারওয়ান আঙ্কেল বললেন, "তারা ইতপূর্বে অনেক দুর্যোগ অতিক্রম করেছে। আমরা আশা করি এবারও তারা সফল হবে।" উড়োজাহাজের ভেতরে ক্যাপ্টেন নামিক গতরাত থেকে লুকিয়ে ছিলেন। যাত্রাপথে তিনি হঠাৎ করেই উদয় হন। সামিরা তাকে নামিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আদনানের সুপারিশে তিনি তাকে সাথে নেন। যাত্রাপথে লাঞ্চের সময় হয়ে এলে লীনা খাবারের ব্যবস্থা করে। উড়োজাহাজটিতে একটি ছোট কিচেন ছিল। দুর্গের কাছাকাছি চলে আসার পর ফালকো বিমান তাদের ফ্লাইং মেশিনটি দেখতে পায়। তাতে দুর্গের দুজন সৈন্য ছিল যারা অভিযানে যায়নি। তারা ফ্লাইং মেশিনটি দেখে চিনতে পারে যে এটি ডক্টর রমির ছিল। বিমানের ভেতরে কে আছে তা না দেখে তারা বিমানটিকে তাড়া করা শুরু করে। তারা ভেবেছিল বিমানটির আরোহীরা হয়তো ল্যান্ড অব হোপ এরই কেউ হবে।তারা যেহেতু আকাশপথে নিজেদের আধিপত্য ধরে রাখতে চায় তাই দুর্গের বহিরাগত কোনো বিমানকে তারা আকাশে উড়তে দিতে চাইনি। তারা চেয়েছিল ওই ফ্লাইং মেশিনকে ধ্বংস করে দিতে। প্রথমে সর্বোচ্চ ৭৫০ কিমি/ঘণ্টা গতিতে বিমান চালানোর ফলে আদনান ও অন্যরা রক্ষা পেয়ে গেলেও দুর্গের কাছে পৌঁছার পর শেষ রক্ষা হয়নি। সামিরা ক্যাপ্টেন, লীনা ও আবসিকে একটি স্থানে নামিয়ে দেন। এরপর তিনি যখন ফ্লাইং মেশিনটিকে পানির নিচে লুকিয়ে রাখার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তখনই ফালকো বিমানটি আবারও দৃশ্যমান হয় এবং আদনান ও সামিরাকে বহনকারী ফ্লাইং মেশিনটিকে তাড়া করতে শুরু করে। ফ্লাইং মেশিনটি আবার উড্ডয়ন করে। এসময় বিমানটি থেকে তাদের উপর গোলাবর্ষণ করা হয়। ফলে ফ্লাইং মেশিনটি দুর্গের সামনে বিধ্বস্ত হয়। বিস্ফোরণের আগেই আহত সামিরাকে নিয়ে আদনান বের হয়। এরপর পরপরই বিমানটি বিস্ফোরণ হয়। ওদিকে লিনা বিমান বিস্ফোরণ হওয়া দেখে আদনানের চিন্তায় ব্যাকুল হয়ে পড়ে। তাই সে সেখানে ছুটে যেতে চায়। কিন্তু ক্যাপ্টেন তাকে বাধা দিয়ে বলেন, "আদনান কখনো এভাবে মারা যেতে পারে না।" এরপর তারা সুরঙ্গ পথ দিয়ে দুর্গের আন্ডারগ্রাউন্ডে প্রবেশ করে। ফালকো বিমানটি তাদেরকেও খুঁজতে থাকে। তারা দুর্গে খবর পাঠায়। আল্লামের কাছে তাদের আগমনের সংবাদ পৌঁছে যায়। সে তাদেরকে ধরতে নির্দেশ দেয়। লিনা এখানে এসেছে শুনে সে খুব খুশি হয়ে যায়। সে ভাবে এইবার আমরা সৌরশক্তি অর্জন করতে পারব। তার পরিকল্পনা ছিল আমরা লীনাকে চাপ দিব সে যেন তার দাদাকে সৌরশক্তি অর্জনের পথ দেখিয়ে দেবার দিতে চাপ দেয়। নাতনির কষ্ট দেখে দাদা হয়তো আমাদের সাথে কাজ করতে সম্মত হবেন। কিন্তু আল্লাম জানতো না যে বিষয়টি এতো সহজ নয়। ড . রামি কিংবা লিনা কখনোই অন্যায়ের কাছে মাথা নত করবে না, তাদেরকে যতই নির্যাতন করা হোক।

সিরিজের ভূমিকা

[সম্পাদনা]

এই ক্লিপ দিয়ে প্রতিটি পর্বে সিরিজের গল্প শুরু হয়।

  • দুই হাজার আট সালে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ লেগে যায়।

যুদ্ধকারীরা চুম্বকীয় অস্ত্র ব্যবহার করত। যার ক্ষমতা প্রচলিত অস্ত্রকে ছাড়িয়ে গিয়েছে।

  • ফলস্বরূপ, স্থল এবং সমুদ্রে ধ্বংসযজ্ঞ ঘটেছে।
  • পৃথিবীর অক্ষ ঘুরে গেছে এবং পৃথিবী একটি ভয়াবহ বিপর্যয়ের সম্মুখীন হচ্ছে।
  • বিপর্যয়ের পর এখন বিশ বছর কেটে গেছে এবং শুধুমাত্র তারাই এই দ্বীপে রয়ে গেছে।
  • যুদ্ধ পৃথিবীর বেশিরভাগ অংশকে প্রভাবিত করেছিল।
  • এখন গাছপালা এবং ঘাস আবার বেড়ে উঠছে, মাছগুলো সমুদ্রের জলকে পূর্ণ করছে। ভূমি আবার প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছে এবং নতুন জীবন শুরু হয়েছে।

আদনান ও লিনা পর্বের তালিকা

[সম্পাদনা]

আদনান এবং লিনা পর্বের তালিকা, 26টি পর্ব নিয়ে গঠিত।

পর্ব সংখ্যা প্রিমিয়ারের তারিখ বাংলায় নাম জাপানি ভাষায় নাম
প্রথম 4/4/1978 হারিয়ে যাওয়া দ্বীপের বেঁচে থাকা のこされ島
দ্বিতীয় 11/4/1978 ভ্রমণ 旅立ち
তৃতীয় 4/18/1978 প্রথম বন্ধু はじめての仲間
চতুর্থ 4/25/1978 বারাকুডা জাহাজ バラクーダ号
পঞ্চম 9/5/1978 দুর্গ インダストリア
ছয় 5/16/1978 নামিকের বিদ্রোহ ダイスの反逆
সাত 5/23/1978 ধাওয়া 追跡
আট 5/30/1978 পালিয়ে যাওয়া 逃亡
নয় 6/6/1978 উদ্ধার জাহাজ サルベージ船
দশম ৬/১৩/১৯৭৮ ড. রমি ラオ博士
একাদশ 6/20/1978 পলায়ন 脱出
দ্বাদশ 6/27/1978 কার্নেল ব্লক コアブロック
ত্রয়োদশ 4/7/1978 ল্যান্ড অব হোপ ハイハーバー
চৌদ্দ 7/11/1978 দ্বীপে একটি দিন 島の一日
পনের 7/18/1978 অনুর্বর জমি 荒地
ষোল 1/8/1978 কুটির 二人の小屋
সতের 8/8/1978 যুদ্ধ 戦闘
অষ্টাদশ 8/15/1978 গানবোট ガンボート
উনিশ 8/29/1978 বিশাল জোয়ার আসছে 大津波
বিংশতম 9/12/1978 আবার দুর্গে গমন 再びインダストリアへ
একুশ 9/19/1978 ভূগর্ভস্থ বাসিন্দারা 地下の住民たち
বাইশ 9/25/1978 উদ্ধার 救出
তেইশ 10/3/1978 সোলার টাওয়ার 太陽塔
চব্বিশতম 10/17/1978 জুমানা যুদ্ধবিমান ギガント
পঁচিশ 10/24/1978 দুর্গের অন্ত インダストリアの最期
ছাব্বিশতম 10/31/1978 সামিরার বিয়ে ও আদনানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন 大団円

স্থানসমূহ

[সম্পাদনা]
  • দ্য লস্ট আইল্যান্ড: যেটিতে আদনান এবং তার দাদা প্রথম পর্বে থাকতেন এবং যেটিতে আদনান লিনাকে খুঁজে পেয়েছিলেন। তারপরে তারা শেষ পর্বে ফিরে এসেছে।
  • নামিকের জাহাজ: জাপানি সিরিজের (এক ধরনের মাছ) Barracuda এর নাম "Barracuda"।
  • হারিকেনের সাগর: (যেমন নামিক একে বলে)।
  • আবসির দ্বীপ: (এটি সেই দ্বীপ যেখানে আদনান এবং আবসির দেখা হয়েছিল) যেখানে নামিক নোঙ্গর এবং এর বাসিন্দারা অর্থের বিনিময়ে নামিকের জাহাজে স্ক্র্যাপ এবং ধাতু পরিবহনের জন্য কাজ করে এবং সে তাদের দুর্গে নিয়ে যায়।
  • দুর্গ।
  • হোপ আইল্যান্ড: এটি ছিল লিনার আসল বাসস্থান, এবং এতে লিনার সমস্ত পরিচিতরা রয়েছে আদনান এবং আবসির সাথে সেখানে পৌঁছানোর পর, সামিরা একটি জাহাজ নিয়ে তাকে আক্রমণ করে। ফারেস শক্তি নির্মূল করতে এবং জাহাজটি উড়িয়ে দিতে সক্ষম হয়, এবং তারপর সামিরার মতামত পরিবর্তিত হয় এবং সে হয়ে যায়... আদনান এবং তার সঙ্গীরা তাদের সাহায্য করে।

আরবি ও বাংলা ডাবিং

[সম্পাদনা]
বিশ্বের প্রথম ভাষা হিসেবে আরবি ভাষায় এটি ১৯৮১ সালে কুয়েতের স্টুডিওতে ডাবিং হয়। ডাবিং কার্যের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা হলেন-
  • আদনানের চরিত্রে ফালাহ হাসেম
  • লিনা চরিত্রে সানা আল-তাকামজি
  • নামিক চরিত্রে জসিম আল-নাভান
  • ড. রামি, নিমরো এবং অন্যান্য চরিত্রে মুসাফের আবদেল করিম
  • আবসি চরিত্রে আব্দুর রহমান আল-আকল
  • সামিরা চরিত্রে ফওজিয়া ইজ্জাত
  • দাউদ হুসেন আমেরের ভূমিকায় যিনি ডক্টর রামির সহকারী। ডক্টর মারওয়ান এবং বেশ কিছু বৈচিত্র্যময় চরিত্রে অভিনয় করেছেন
  • সালেম হুসাইন আল-আমির
  • আল্লাম হিসেবে ফখরি ওদেহ
  • আদনানের দাদার চরিত্রে সালেম আল-জাহাউশি, অন্যান্য চরিত্রতেও কণ্ঠ দিয়েছেন।
  • কানান হামাদ, মেয়র আবদীন
  • আলী ফারিজ
  • সামির ইয়াসিন
  • হোপ আইল্যান্ডে ফরিস চরিত্রে আলী আল-মুফিদি
  • সুলেমান দাউদ আল-হাজামি
  • আলী ইয়াহিয়া ফদল
  • আবদেল নাসের আল জায়ের
  • আমনা দাউদ সাবরি
  • মারিয়াম হুসাইন
  • রেদা মাহদী
  • সিরিজের ভূমিকাটি উপস্থাপন করেছিলেন সালেম আল-জাহাউশি
  • অনুবাদকঃ মাহমুদ কাদ্দৌরা
  • গীতিকার: ফাখরি ওদেহ
  • কম্পোজ করেছেন: আবদেল নাসের আল-জায়ের
  • পরিবেশন: আরব উপসাগরীয় রাজ্যগুলির জন্য যৌথ প্রোগ্রাম উত্পাদন ফাউন্ডেশন

চলতি শতাব্দীর শুরুতে এই সিরিজটিকে বাংলায় ডাবিং করে ১১টি ডিস্ক আকারে প্রকাশ করে মাল্টিমিডিয়া পিসি।

থিয়েটার শো

[সম্পাদনা]

2024 সালে, সিরিজটিকে একটি নাটকে রূপান্তরিত করা হয়েছিল এবং 2024 সালের মে এবং জুন মাসে টোকিও মেট্রোপলিটন থিয়েটার প্লেহাউসের মঞ্চে পরিবেশিত হয়েছিল। থিয়েটার শোটি ইনবাল পিন্টো এবং ডেভিড মাম্বুশ সহ-পরিচালনা করেছিলেন। পিন্টো কোরিওগ্রাফি (অভিনয় নৃত্য) এবং শিল্পকলায়ও কাজ করেন। এরপর জাপানের বিভিন্ন স্থানে শো ট্যুর শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। []

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. Ankit, Ahmed (২০১৩)। "Motives of Arabic Speaking Viewers for Watching English or Dubbed TV Programs"Journal of Mass Communication & Journalism04 (02)। আইএসএসএন 2165-7912ডিওআই:10.4172/2165-7912.1000174 
  2. "معلومات عن عدنان ولينا على موقع vgmdb.net"। vgmdb.net। 2 يوليو 2019 তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |আর্কাইভের-তারিখ= (সাহায্য)
  3. "معلومات عن عدنان ولينا على موقع animenewsnetwork.com"। animenewsnetwork.com। 5 مايو 2019 তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |আর্কাইভের-তারিখ= (সাহায্য)
  4. "معلومات عن عدنان ولينا على موقع antoniogenna.net"। antoniogenna.net। 27 مارس 2017 তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |আর্কাইভের-তারিখ= (সাহায্য)
  5. https://www.crunchyroll.com/ar/news/latest/2023/12/30/hayao-miyazaki-future-boy-conan-stage-play-spring-2024 ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২০২৩-১২-৩১ তারিখে

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]