ফাতেমা জিন্নাহ পার্ক
| ফাতেমা জিন্নাহ পার্ক | |
|---|---|
| فاطمہ جناح پارک | |
![]() | |
| ধরন | সর্বজনীন |
| অবস্থান | ইসলামাবাদ, পাকিস্তান |
| স্থানাঙ্ক | ৩৩°৪২′০৭″ উত্তর ৭৩°০১′২২″ পূর্ব / ৩৩.৭০২০৭৬৩° উত্তর ৭৩.০২২৭৪৫১° পূর্ব |
| আয়তন | ৩০৪ হেক্টর (৭৫০ একর) |
| খোলা হয় | ১৯৯২ |
| নকশাকারী | মাইকেল জাপেরো |
| ব্যুত্পত্তি | মাদারে মিল্লাত ফাতেমা জিন্নাহ, মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ-র বোনের নামানুসারে |
| শাসিত | ক্যাপিটাল ডেভেলপমেন্ট অথরিটি |
| খোলা | বছরব্যাপী; সকাল ১০:৩০ থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত |
| অবস্থা | সক্রিয় |
| পার্কিং | উপলব্ধ |
ফাতিমা জিন্নাহ পার্ক (উর্দু: فاطمہ جناح پارک),যা ক্যাপিটাল পার্ক বা এফ-৯ পার্ক নামেও পরিচিত, পাকিস্তানের ইসলামাবাদের এফ-৯ সেক্টরের পুরো এলাকা জুড়ে বিস্তৃত একটি সর্বজনীন বিনোদনমূলক পার্ক। এটির নামকরণ পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা মুহাম্মদ আলী জিন্নাহর ছোট বোন মাদার-ই মিল্লাত ফাতিমা জিন্নাহর নামে করা হয়েছে।
৩০৪ হেক্টর (৭৫০ একর), এটি চেয়ে ছোট। ৩০৪ হেক্টর (৭৫০ একর) আয়তনের ফাতেমা জিন্নাহ পার্ক নিউ ইয়র্কের সেন্ট্রাল পার্কের তুলনায় একটু ছোট। [১] মাইকেল জাপেরো এই পার্কের নকশা তৈরি করেন এবং ১৯৯২ সালে পার্কটির উদ্বোধন করা হয়। [২] পার্কের মূল পরিকল্পনা জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি(জাইকা) দ্বারা প্রস্তুত করা হয়েছিল, যা ২০০৫ সালে পাকিস্তানি স্থপতি নাইয়ার আলি দাদা দ্বারা সংশোধিত হয়। [৩]
ফাতেমা জিন্নাহ পার্কের বিশাল এলাকা প্রধানত সবুজে আচ্ছাদিত, যেখানে কিছু কৃত্রিম স্থাপনা দিয়ে দৃশ্যপট তৈরি করা রয়েছে। আবাসিক জেলার কাছাকাছি অংশ বাদ দিয়ে, র্কের বেশিরভাগ অংশ কার্যত বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। পার্কটি চারদিকে একটি স্টিলের বেষ্টনী দ্বারা পরিবেষ্টিত, যেখানে নির্দিষ্ট দূরত্বে প্রবেশদ্বার রয়েছে, যদিও কেবল কয়েকটি নিয়মিত খোলা থাকে এবং ব্যবহার করা হয়। বেষ্টনীর বাইরের জমির একটি অংশে হাঁটার পথ তৈরি করা হয়েছে। পার্কের ভেতরে একটি সুপরিকল্পিত পায়ে হাঁটার পথ রয়েছে, যেখানে পরিচ্ছন্ন ঘাস এবং কয়েকটি ভাস্কর্য দেখা যায়।
বিন্যাস
[সম্পাদনা]
পার্কটি চারদিকে স্টিলের বেষ্টনী দ্বারা ঘেরা থাকায় শুধুমাত্র প্রবেশদ্বারগুলির মাধ্যমেই প্রবেশ করা সম্ভব, প্রতিটি দিকে অন্তত একটি প্রবেশদ্বার রয়েছে।
- প্রবেশদ্বার ১: মেহরান গেট, দক্ষিণ পাশে জিন্নাহ অ্যাভিনিউতে অবস্থিত, যা জি-৯ সেক্টরের দিকে অভিমুখ করে আছে।[৪]
- প্রবেশদ্বার ২: বোলান গেট, পশ্চিম পাশে অবস্থিত, যা এফ-১০ সেক্টরের দিকে মুখ করে আছে। [৫]
- প্রবেশদ্বার ৩: খাইবার গেট, উত্তর পাশে অবস্থিত, যা ই-৯ সেক্টরের দিকে মুখ করা।
- প্রবেশদ্বার ৪: রবি গেট, পূর্ব পাশে অবস্থিত, যা এফ-৮ সেক্টরের দিকে মুখ করা।
- প্রবেশদ্বার ৫: পূর্ব পাশে অবস্থিত, যা সিটিজেন ক্লাব ভ্যাকসিনেশন সেন্টারে নিয়ে যায়।
উপরোক্ত প্রবেশদ্বারগুলো একটি জগিং ট্র্যাকের নেটওয়ার্ক দ্বারা সংযুক্ত। এছাড়াও, প্রতিটি প্রবেশপথে একটি মসজিদ, পার্কিং এলাকা এবং জনসাধারণের জন্য শৌচাগার রয়েছে।
জনসাধারনের ব্যবহার
[সম্পাদনা]ফাতেমা জিন্নাহ পার্কের কেবল কিছু এলাকা মনুষ্যসৃষ্ট, যেখানে অনেক ব্যস্তভবন রয়েছে, আর অন্যান্য এলাকায় খুব কমই মানুষের কার্যকলাপ দেখা যায়। পার্কের খোলা জায়গাগুলো সাধারণত বিনোদনমূলক হাঁটাহাঁটি এবং আউটডোর খেলাধুলার জন্য ব্যবহৃত হয়। মাঝে মাঝে এগুলো গাড়ি চালনার প্রশিক্ষণের জন্যও ব্যবহার করা হয়। মাঝে মাঝে, তারা ড্রাইভিং পাঠের জন্য ব্যবহার করা হয়। [৬] পার্কের ভিতরে নিম্নলিখিত মনুষ্যসৃষ্ট ভবন রয়েছে:
অবসরযাপন এলাকা
[সম্পাদনা]মূলত মেগা জোন নামে পরিচিত, এই কমপ্লেক্সটি ২০১৯ সালের ২১ ডিসেম্বর পুনর্নির্মাণ করে লিজার এরেনা নামে উদ্বোধন করা হয়। [৭] এর মধ্যে একটি ক্রীড়া অঞ্চল রয়েছে, যেখানে একটি স্ট্যান্ডার্ড সাইজের সুইমিং পুল, শারীরক্রীড়াঙ্গন, এবং টেবিল টেনিস ও স্নুকারের টেবিল আছে। কমপ্লেক্সে বোলিং, আর্কেড গেমস, লেজার ট্যাগ এবং অন্যান্য গেমসের সুবিধা রয়েছে; এছাড়াও ঝটপট খাবার ও খাবার এলাকা এবং জামাকাপড়, ডিভিডি ও অন্যান্য পণ্য বিক্রির দোকান রয়েছে।
ম্যাকডোনাল্ডস
[সম্পাদনা]পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট ফাতেমা জিন্নাহ পার্কের ভেতরে চলমান একটি ম্যাকডোনাল্ডের ফাস্ট-ফুড রেস্তোরাঁ এবং কিছু ক্লাব, যেমন একটি অ্যারোমডেলিং ক্লাব, বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিল। [৮] তবে, ২০২৩ সালেও এই প্রতিষ্ঠানগুলো চালু রয়েছে।
সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র
[সম্পাদনা]২০১৭ সালে, ফাতেমা জিন্নাহ পার্ককে সৌরশক্তিতে রূপান্তরিত করা হয়, যেখানে ৭৫০ একর (৩০০ হেক্টর) পার্কের ভেতরে পাঁচ একর জমিতে ৩,৪০০টি সৌর প্যানেল স্থাপন করা হয়, যার খরচ ছিল ৪.৮ মিলিয়ন ডলার। চীনা সরকারের পক্ষ থেকে অনুদান হিসেবে এই প্রকল্পটির জন্য তহবিল সরবরাহ করা হয়েছিল। এই প্যানেলগুলো প্রায় ০.৮৫ মেগাওয়াট (৮৫০ কিলোওয়াট) শক্তি উৎপাদন করে এবং সড়ক বাতির শক্তি সরবরাহের জন্য একটি ব্যাকআপ সুবিধা রয়েছে। সিস্টেমটি পার্কের জল পাম্প এবং ফোয়ারা চালায়, এবং পার্কের মধ্যে অবস্থিত ইসলামাবাদ মেট্রোপলিটন কর্পোরেশন ও ক্যাপিটাল ডেভেলপমেন্ট অথরিটির অফিসগুলোর জন্য শক্তি সরবরাহ করে। [৯]
গণ টিকাদান কেন্দ্র
[সম্পাদনা]২০১১ সালের মে মাসে, পার্কের ভিতরে সিটিজেন ক্লাব ভবনে একটি সর্বজনীন করোনভাইরাস টিকা কেন্দ্র খোলা হয়েছিল। এখানে ৭৫টি কাউন্টার রয়েছে এবং প্রতিদিন ৭,০০০ জনকে টিকাদানের সুবিধা রয়েছে। [১০] ছাড়াও, জুন ২০২১ সালে, পার্কে একটি টিকাদান কেন্দ্র চালু হয়, যা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, ক্যাপিটাল ডেভেলপমেন্ট অথরিটি এবং পাঞ্জাব ব্যাংকের সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠিত হয়। [১১]
অবৈধ কাঠচালান
[সম্পাদনা]গত কয়েক বছর ধরে, বেড়ার দক্ষিণ-পূর্ব দিকের মেরামতের অভাবের কারণে অবৈধভাবে গাছ কাটা এবং চালান করা হচ্ছে। [১২]
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
[সম্পাদনা]পার্কটি পরিচালনাকারী ক্যাপিটাল ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (সিডিএ) এর জন্য এই স্থানটির জন্য বড় পরিকল্পনা রয়েছে, যেটিকে কখনও কখনও ইসলামাবাদের "ঘুমন্ত হৃদয়" বলা হয়। পার্কের উন্নয়নের বিষয়টি আরও জরুরি হয়ে উঠেছে, কারণ ইসলামাবাদের মানুষ এখন বিনোদনমূলক কার্যকলাপে গভীর আগ্রহ দেখাচ্ছে। সিডিএ’র প্রস্তাবিত ভবিষ্যত পরিকল্পনায় পার্কে হ্রদ, পাথর বাগান, অ্যাকুয়ারিয়াম এবং ফোয়ারাগুলি অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
গ্যালারি
[সম্পাদনা]- আইওয়ান-ই-কায়েদ
- পটভূমিতে মার্গাল্লা পাহাড় সহ পার্কের মধ্যে একটি হাঁটার পথ
- শীতকালে ভোরের দৃশ্য
- ভিত্তি প্রস্তর
- ভিত্তি প্রস্তর
- বড়দরি
- তিনটি গম্বুজ
- পার্কের মধ্যে একটি পুকুর
- পার্কের পশ্চিম দিকের বায়বীয় দৃশ্য
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ Hussain, Danish (২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬)। "Fatima Jinnah Park to have its own Ferris wheel"। The Express Tribune। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মে ২০২০।
Fatima Jinnah Park is spread over 750 acres.
- ↑ "Fatima Jinnah Park"। Dawn (ইংরেজি ভাষায়)। ১৩ অক্টোবর ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ৩০ মার্চ ২০১৯।
- ↑ Shakeel, Madiha (২৬ এপ্রিল ২০১৮)। "Fatima Jinnah Park known as F-9 park attracts visitors, tourists"। Business Recorder (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জানুয়ারি ২০২২।
- ↑ Junaidi, Ikram; Yasin, Aamir (২৫ এপ্রিল ২০১৬)। "PTI's foundation day event a crowd puller"। Dawn (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জানুয়ারি ২০২২।
- ↑ "Festival to promote home-based entrepreneurship kicks off today"। The Nation (ইংরেজি ভাষায়)। ২৮ নভেম্বর ২০২১। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জানুয়ারি ২০২২।
- ↑ Mumtaz, Hajrah (২২ নভেম্বর ২০২১)। "Sneer of cold command"। Dawn (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জানুয়ারি ২০২২।
- ↑ "National Assembly of Pakistan"। National Assembly of Pakistan। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জানুয়ারি ২০২২।
- ↑ "McDonald`s comeback in danger"। Dawn (ইংরেজি ভাষায়)। ৩১ ডিসেম্বর ২০১০। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জানুয়ারি ২০২২।
- ↑ "Faced with blackouts, Islamabad's F-9 park goes solar"। Dawn (ইংরেজি ভাষায়)। ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জানুয়ারি ২০২২।
- ↑ "Asad Umar inaugurates mass coronavirus vaccination centre in Islamabad"। The News International (ইংরেজি ভাষায়)। ১৯ মে ২০২১। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জানুয়ারি ২০২২।
- ↑ "Drive through vaccination centre at ICT's F-9 Park set up"। The News International (ইংরেজি ভাষায়)। ২১ জুন ২০২১। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জানুয়ারি ২০২২।
- ↑ Junaidi, Ikram (১ মার্চ ২০২০)। "Tree cutting continues with impunity in F-9 Park"। Dawn (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জানুয়ারি ২০২২।
