বিষয়বস্তুতে চলুন

ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতাল

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতাল
ফরিদপুর সদর হাসপাতাল
হাসপাতালের প্রধান ফটক
মানচিত্র
ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতাল বাংলাদেশ-এ অবস্থিত
ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতাল
ভৌগোলিক অবস্থান
অবস্থানমুজিব সড়ক, ফরিদপুর,  বাংলাদেশ
স্থানাঙ্ক২৩°৩৬′২১″ উত্তর ৮৯°৫০′১৮″ পূর্ব / ২৩.৬০৫৮৮৫° উত্তর ৮৯.৮৩৮২২০° পূর্ব / 23.605885; 89.838220
সংস্থা
ধরনসরকারি হাসপাতাল
অধিভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ
পরিষেবা
শয্যা২৫০
ইতিহাস
নির্মাণ শুরু১৯১৭; ১০৮ বছর আগে (1917)
সংযোগ
ওয়েবসাইটhospital.faridpur.gov.bd

ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতাল বাংলাদেশের ফরিদপুরে অবস্থিত একটি সরকারি হাসপাতালে। হাসপাতালটি "ফরিদপুর সদর হাসপাতাল" নামেও পরিচিত।[] বৃহত্তর ফরিদপুর অঞ্চলে প্রাতিষ্ঠানিক স্বাস্থ্যসেবার যাত্রা এই হাসপাতালের মাধ্যমেই শুরু হয়েছিল।[] এটি শুধু ফরিদপুর শহর নয়, পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন উপজেলা থেকেও আসা রোগীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্যসেবার কেন্দ্র।

প্রতিষ্ঠা ও প্রাথমিক ইতিহাস

[সম্পাদনা]

ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতাল ১৯১৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।[] এই প্রতিষ্ঠা বৃহত্তর ফরিদপুর অঞ্চলে প্রাতিষ্ঠানিক স্বাস্থ্যসেবার প্রারম্ভিক পর্যায়কে চিহ্নিত করে। হাসপাতালটির মূল ভবন ব্রিটিশ আমলে নির্মিত হয়েছিল এবং এটি এক শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে দাঁড়িয়ে আছে, যা এটিকে অঞ্চলের প্রাচীনতম স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে একটি করে তুলেছে।[]

হাসপাতালের প্রাথমিক ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা হল উনিশ শতাব্দীর তিরিশ দশকের শেষের দিকে এখানে প্রথম এক্স-রে মেশিনের প্রবর্তন। তৎকালীন বাংলার স্বাস্থ্যমন্ত্রী, ফরিদপুর জেলার কৃতি সন্তান মৌলভী তমিজ উদ্দিন খানের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এটি সম্ভব হয়েছিল।[] এই সংযোজন হাসপাতালটিকে রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে, যা সে সময়ের প্রেক্ষাপটে একটি বড় অগ্রগতি ছিল।  

ভারত বিভাগের পর, পূর্ব পাকিস্তান সরকারের সমাজকল্যাণ ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মরহুম আবদাল্লাহ জহীর উদ্দিন লাল মিয়া এই অঞ্চলের স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। তিনি হোমিওপ্যাথি এবং আয়ুর্বেদ শাস্ত্রকে সরকারি স্বীকৃতি দিয়েছিলেন, যা দেশের স্বাস্থ্যসেবায় একটি তাৎপর্যপূর্ণ পদক্ষেপ ছিল।[]

অবস্থান ও অবকাঠামো

[সম্পাদনা]

ফরিদপুর সদর হাসপাতাল ফরিদপুর সদরে অবস্থিত।[] এটি শহরের কেন্দ্রস্থলে, নিলটুলী মুজিব সড়কের পাশে অবস্থিত।[][] এই কেন্দ্রীয় অবস্থান এটিকে শহরের এবং পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের মানুষের জন্য সহজে প্রবেশযোগ্য করে তোলে।  

হাসপাতালের অবকাঠামোর দিকে তাকালে দেখা যায়, মূল ভবনটি ব্রিটিশ আমলে নির্মিত, যা শতবর্ষের প্রাচীন।[] ডিসেম্বর ২০২২ পর্যন্ত এই হাসপাতালে ১২৫টি শয্যা রয়েছে।[] তবে, রোগীর বিপুল চাহিদার তুলনায় এই সংখ্যা যথেষ্ট নয় বলে মনে করা হয়।[]

তুলনামূলকভাবে, ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল) একটি আধুনিক অবকাঠামো নিয়ে গঠিত। এর নতুন ক্যাম্পাসটি পশ্চিম খাবাসপুরে অবস্থিত এবং এখানে ৫০০ শয্যা রয়েছে । ২০১৩ সালে এই হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা ২৫০ থেকে ৫০০-তে উন্নীত করা হয়েছিল।[] মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এই আধুনিক সুবিধা এবং বৃহত্তর ধারণক্ষমতা ফরিদপুর সদর হাসপাতালের উপর কিছু চাপ কমাতে সহায়ক হতে পারে।  

তবে, ফরিদপুর সদর হাসপাতাল বেশ কিছু অবকাঠামোগত চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। মার্চ ২০২১ পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, হাসপাতালের একমাত্র এক্স-রে মেশিনটি ছয় মাস ধরে বিকল ছিল এবং সেটি মেরামতের জন্য কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এছাড়াও, একটি সচল আলট্রাসনোগ্রাম মেশিন ডাক্তারের অভাবে ব্যবহার করা যাচ্ছে না।[] এই ধরনের সরঞ্জামগুলির অভাব হাসপাতালের রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসা প্রদানের ক্ষমতাকে সীমিত করে।

চিত্রশালা

[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "ফরিদপুর জেলার স্বাস্থ্য সেবা"priofaridpur.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৫-০৪-০৩ 
  2. বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম"ফরিদপুরের হাসপাতাল: তেল নেই, তাই চলে না অ্যাম্বুলেন্স"ফরিদপুরের হাসপাতাল: তেল নেই, তাই চলে না অ্যাম্বুলেন্স (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৫-০৪-০৩ 
  3. "Faridpur General Hospital"সেবাঘর (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৫-০৪-০৩ 
  4. "Faridpur General Hospital plagued by myriad problems"ঢাকা ট্রিবিউন (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৫-০৪-০৩ 
  5. "কাগজে আছে, কাজে নেই ফরিদপুরের স্বাস্থ্যসেবা!"banglanews24.com। ২০১২-০৯-২৪। সংগ্রহের তারিখ ২০২৫-০৪-০৩ 
  6. "ENVIRONMENTAL MANAGEMENT PLAN" (পিডিএফ)