ফণীন্দ্রনাথ গুপ্ত

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ফণীন্দ্রনাথ গুপ্ত
ছবিটি প্রবাসী পত্রিকায় তার মৃত্যু সংবাদের সাথে প্রকাশিত হয়েছিল
জন্ম
মৃত্যুচৈত্র ১৩৪১ বঙ্গাব্দ
জাতীয়তাভারতীয়
নাগরিকত্বভারত
পেশাবাঙালি ব্যবসায়ী, স্বদেশী আন্দোলনকারী
পরিচিতির কারণস্বদেশী আন্দোলনে যোগ দিয়ে ভারতে প্রথম দেশীয় প্রযুক্তির ঝর্ণা কলমের কারখানা স্থাপন করেন
উল্লেখযোগ্য কর্ম
  • এফ এন গুপ্ত কোম্পানি স্থাপন
  • স্বদেশী আন্দোলন

ফণীন্দ্রনাথ গুপ্ত (মৃত্যু: চৈত্র ১৩৪১ বঙ্গাব্দ) বাংলার অন্যতম দেশভক্ত ব্যবসায়ী। তাঁকে ভারতের শিল্পস্থাপনার অধিনায়কও বলা হয়।[১] তিনি ভারতে দেশি প্রযুক্তিতে ঝর্ণা কলম তৈরির কারখানার পথপ্রদর্শক। তিনিই প্রথম দেশি প্রযুক্তিতে ঝর্ণা কলম তৈরির কারখানা করে ব্যবসা শুরু করেন।[২] পরবর্তীতে এটি এফ এন কোম্পানি এন্ড পেন্সিল ফ্যাক্টরি নামে বিখ্যাত হয়।[২][৩][৪]

প্রথম জীবন[সম্পাদনা]

ফণীন্দ্রনাথ কলকাতার বিখ্যাত গুপ্তু বা গুপ্ত পরিবারের সন্তান ছিলেন। তাঁর পিতামহ দ্বারকানাথ গুপ্ত ছিলেন কলকাতা মেডিকাল কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র, আধুনিক ভারতের প্রথম শব ব্যবচ্ছেদে মধুসূদন গুপ্তের সহকারী ও ম্যালেরিয়ার বিখ্যাত স্বনামধন্য ওষুধ 'ডি গুপ্তু'র আবিষ্কারক। তাঁর পিতা গোপালচন্দ্র গুপ্ত ছিলেন শিল্পপতি। ফণীন্দ্রনাথ গুপ্ত প্রেসিডেন্সী কলেজে বি.এ. পড়েন।[২][৫]

কর্ম জীবন[সম্পাদনা]

পড়াশোনা শেষ করে তিনি প্রসিদ্ধব্যবসায়ী ডি. গুপ্তের কোম্পানীতে কিছুদিন ব্যবসায়ে শিক্ষানবীশী করেন।[৫] এরপর ১৯০৫-০৬ খ্রী.স্বদেশী আন্দোলনের সময় দেশী কলম, নিব ও পেন্সিলের কারখানা স্থাপন করে এই ব্যবসায়ে উন্নতি করেন।[৪] ভারতবর্ষে ফাউন্টেন পেন তৈরির কাজে তাঁকে পথপ্রদর্শক বলা যায়।[৫] তিনি এফ. এন.গুপ্ত নামে বেশি প্রসিদ্ধ ছিলেন।[২][৪] ১৯০৮ সালে তিনি বাংলার শিল্পপতি, সরকারী আমলা, শিক্ষাবিদ ও চিন্তবিদদের নিয়ে বাংলার উন্নতিকল্পে বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ নামে একটি মঞ্চ গঠন করেন।[৬] তাতে সদস্য ছিলেন আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়দাদাভাই নৌরজী[৬]

স্বদেশী আন্দোলন[সম্পাদনা]

ফণীন্দ্রনাথ গুপ্ত অন্যান্য বিপ্লবীদের মতো সরাসরি স্বদেশী আন্দোলনে না নেমে একটু অন্যভাবে স্বদেশী আন্দোলনে নিজেকে আত্মনিয়োগ করেন।[১] বাংলাকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করার কথা ভেবে বাংলায় দেশীয় কারখানা স্থাপন করার প্রয়োজন অনুধাবন করেন। প্রথমে পেন-পেন্সিল, নিবের কারখানা স্থাপন করেন এবং ১৯০৫ সালে মাত্র কুড়ি বছর বয়সে নিজের বাড়িতেই পেনের কারখানা স্থাপন করেন। পরে ১৯১০ সালে বেলেঘাটায় আরো বৃহৎ আকারে কারখানা গড়ে তোলেন।[২] ১৯২৫ সালে মহাত্মা গান্ধী কলকাতায় থাকাকালীন তাঁর কারখানা পরিদর্শন করেন এবং তাঁর স্বদেশী আন্দোলনের ভাবমূর্তির জন্য ভূয়সী প্রশংসা জানান।[১]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Landholders Journal Vol.3 No.5-8(feb-may)1935 (ইংরেজি ভাষায়)। ১৯৩৫। পৃষ্ঠা ৬২১। 
  2. বসু, অঞ্জলি; গুপ্ত, সুবোধ চন্দ্র সেন (২০১০)। সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান: প্রায় চার সহস্রাধিক জীবনী-সংবলিত আকর গ্রণ্থ. প্রথম খন্ড। সাহিত্য সংসদ। আইএসবিএন 9788179551356 
  3. Large Industrial Establishments in India (ইংরেজি ভাষায়)। Manager of Publications। ১৯৫৮। 
  4. "পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১৪১ - উইকিসংকলন একটি মুক্ত পাঠাগার"bn.m.wikisource.org। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০১-১৪ 
  5. "পাতা:জীবনীকোষ-ভারতীয় ঐতিহাসিক-পঞ্চম খণ্ড.pdf/১০৭ - উইকিসংকলন একটি মুক্ত পাঠাগার"bn.wikisource.org। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০১-১৪ 
  6. বিশ্বাস, এস. (৩০ এপ্রিল ১৯৯৫)। "Calcutta's elite revive a peer group to usher in change"ইন্ডিয়া টুডে। লিভিং মিডিয়া। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জানুয়ারি ২০১৯