প্রথম বিশ্বযুদ্ধের বিরোধিতা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের বিরোধিতা
যুদ্ধবিরোধী আন্দোলন-এর অংশ
১৯১৫ সালে হেগে মহিলা শান্তি সম্মেলনে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ
তারিখ১৯১৪-১৯১৮
কারণপ্রথম বিশ্বযুদ্ধ
লক্ষ্যসমূহপ্রথম বিশ্বযুদ্ধে যে কোনও অংশগ্রহণের সমাপ্তি
ফলাফল

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের বিরোধিতায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিল সমাজতান্ত্রিক, নৈরাজ্যবাদী, সিন্ডিকবাদী, এবং মার্কসবাদীদের মত বামপন্থী সংগঠনগুলি। এছাড়াও খ্রিস্টান শান্তিবাদী সংগঠন, কানাডীয় ও আইরিশ জাতীয়তাবাদী দল, মহিলাদের সংগঠন, বুদ্ধিজীবী এবং গ্রামীণ ব্যক্তিবর্গ এই বিরোধের অংশ ছিল।

সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনকারীরা যুদ্ধের আগে নিজেদের যুদ্ধ বিরোধী বলে ঘোষণা করেছিল, তারা যা বলেছিল তার অর্থ হল শ্রমিকরা কেবল তাদের মালিকদের স্বার্থে একে অপরকে হত্যা করতে পারে। কিন্তু যুদ্ধ ঘোষণা হওয়ার পরে বেশিরভাগ সমাজতান্ত্রিক দল এবং ট্রেড ইউনিয়নগুলি তাদের নিজেদের দেশের সরকারকে সহায়তা এবং যুদ্ধকে সমর্থন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। উদাহরণস্বরূপ, ১৯১৪ সালের ২৫শে জুলাই সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টি অফ জার্মানির (এসপিডি) কার্যনির্বাহী তার সদস্যদের আগামী যুদ্ধের বিরুদ্ধে প্রদর্শন করার জন্য একটি আবেদন জারি করেছিল, কিন্তু ৪ঠা আগস্ট তারিখে তারা জার্মান সরকারের চাওয়া [যুদ্ধের ঋণপত্রের পক্ষে মতপ্রকাশ করেছিল। একইভাবে ফরাসী সমাজতান্ত্রিক দল এবং তার ইউনিয়ন, সিজিটি, বিশেষত শান্তিবাদী জিন জরাসের হত্যার পরে, যুদ্ধ শুরু না হওয়া পর্যন্ত গণ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করে গিয়েছিল, কিন্তু যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরে তারা বলেছিল যে যুদ্ধের সময় সমাজতান্ত্রিকদের উচিত অন্যান্য দেশের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে নিজের দেশকে সমর্থন করা। তারাও যুদ্ধের ঋণপত্রের পক্ষে মত দিয়েছিল।[১]

যুদ্ধবিরোধী গোষ্ঠীগুলির মধ্যে ছিল রাশিয়ান বলশেভিক, আমেরিকান সমাজতান্ত্রিক দল, ইতালীয় সমাজতান্ত্রিক দল, এবং জার্মানিতে কার্ল লাইবেনশটরোসা লুক্সেমবুর্গের নেতৃত্বে সমাজতান্ত্রিক দল (পরে সেটি জার্মানির কমিউনিস্ট পার্টি হয়ে উঠেছিল)। সুইডেনে, যুদ্ধবিরোধী প্রচারের জন্য সমাজতান্ত্রিক যুবনেতা জেথ হগল্যান্ডের জেল হয়েছিল, যদিও সুইডেন যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেনি।

নারীরা[সম্পাদনা]

নারীরা সাধারণভাবে যুদ্ধকে সমর্থন করেনি।[২][৩] গির্জার মহিলারা বিশেষত যুদ্ধবিরোধী ছিল। তবে, বিভিন্ন দেশে ভোটাধিকারের দাবীতে আন্দোলনকারী নারীরা যুদ্ধের প্রচেষ্টাকে সমর্থন জানিয়েছিল, সেই সমর্থনের পুরস্কার হিসাবে তারা ভোটাধিকার চেয়েছিল।

ফ্রান্সে, শ্রমজীবী ​​সমাজতান্ত্রিক মহিলা সংগঠন এবং মধ্যবিত্ত ভোটাধিকার আন্দোলনকারী মহিলা কর্মী, উভয়ে, যুদ্ধের বিরোধিতা করার জন্য তাদের নিজস্ব গোষ্ঠী গঠন করেছিল। তবে শ্রেণি ও রাজনৈতিক পার্থক্যের কারণে পারস্পরিক সন্দেহের বশে তারা তাদের প্রচেষ্টাটির সমন্বয় সাধন করতে পারেনি। ১৯১৫ সালের পরে, এই গোষ্ঠীগুলি দুর্বল হয়ে সম্পূর্ণরূপে ভেঙে গিয়েছিল যেহেতু তাদের শীর্ষস্থানীয় নেতারা যুদ্ধবিরোধী নারীবাদ-বিরোধী সংগঠনের সঙ্গে কাজ করতে চলে গিয়েছিল।[৪]

ব্রিটেনে মহিলাদের ভোটাধিকার আন্দোলন যুদ্ধের বিতর্কে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে গিয়েছিল। প্রধান সরকারী দলগুলি যুদ্ধকে সমর্থন করেছিল তবে বেশ কয়েকটি বিশিষ্ট মহিলা অধিকার প্রচারকারীরা এর বিরোধিতা করেছিলেন, যাদের মধ্যে ছিলেন হেলেনা সোয়ানউইক, মার্গারেট অ্যাশটন, ক্যাথরিন মার্শাল, মড রয়ডেন, ক্যাথলিন কোর্টনি ক্রিস্টাল ম্যাকমিলান,[৫] এবং সিলভিয়া পানখুর্স্ট। এটি ছিল শান্তিবাদের সাথে মহিলাদের প্রচারণার একটি প্রাথমিক জোট যেটি থেকে ১৯১৫ সালে নারী ও আন্তর্জাতিক স্বাধীনতার জন্য মহিলা সংগঠন গঠিত হয়েছিল।

আরো দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Prelude to Revolution: Class Consciousness and the First World War ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৮ জুন ২০১৯ তারিখে by Megan Trudell
  2. Anne Wiltsher, Most Dangerous Women: Feminist Peace Campaigners of the Great War. (Routledge, 1985).
  3. Claire M. Tylee, "'Maleness run riot'—The great war and women's resistance to militarism." Women's Studies International Forum 11#3 (1988)
  4. Charles Sowerwine, "Women Against the War: A Feminine Basis for Internationalism and Pacifism? Proceedings of the Annual Meeting of the Western Society for French History 6#363. (1978).
  5. Wiltsher, Anne (১৯৮৫)। Most dangerous women: feminist peace campaigners of the Great Warবিনামূল্যে নিবন্ধন প্রয়োজন (1. publ. সংস্করণ)। London: Pandora Press। পৃষ্ঠা 2আইএসবিএন 0863580106 

আরো পড়ুন[সম্পাদনা]

  • Chatfield, Charles. For peace and justice: pacifism in America, 1914-1941 (University of Tennessee Press, 1971).
  • Farrar Jr, Lancelot L. Divide and Conquer: German Efforts to Conclude a Separate Peace, 1914–1918 (London: East European Quarterly, 1978).
  • Jarausch, Konrad H. "Armageddon Revisited: Peace Research Perspectives on World War One." Peace & Change 7.1‐2 (1981): 109-118.
  • Moorehead, Caroline. Troublesome People: The Warriors of Pacifism (1987) covers Britain 1914 to 1945.
  • Patterson, David S. The Search for Negotiated Peace: Women's Activism and Citizen Diplomacy in World War I (Routledge. 2008).
  • Tylee, Claire M. "'Maleness run riot'—The great war and women's resistance to militarism." Women's Studies International Forum 11#3 (1988) online
  • Wiltsher, Anne. Most Dangerous Women: Feminist Peace Campaigners of the Great War. (Routledge, 1985).

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]

টেমপ্লেট:Anti-war