প্রথম আব্বাস হিলমি পাশা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
প্রথম আব্বাস হিলমি
মিশর ও সুদানের ওয়ালি
Abbas I1.png
রাজত্ব১০ নভেম্বর ১৮৪৮ – ২ আগস্ট ১৮৪৯ (মিশর ও সুদানের অভিভাভক হিসেবে)
২ আগস্ট ১৮৪৯ – ১৩ জুলাই ১৮৫৪ (মিশর ও সুদানের ওয়ালি হিসেবে)[১][২]
পূর্বসূরিইবরাহিম পাশা
উত্তরসূরিসাইদ পাশা
জন্ম১ জুলাই ১৮১২
জেদ্দা, হেজাজ
মৃত্যু১৩ জুলাই ১৮৫৪(1854-07-13) (বয়স ৪২)
বানহা, মিশর
স্ত্রীগণ
  • মাহিভিচ
  • চাজদিল
  • হাওয়াআ
  • হামদাম
  • পিরলানিত
বংশধরইবরাহিম ইলহামি
মুস্তাফা
হাভা
মুহাম্মদ সাদিক
আইশা সাদিকা
আরবিعباس حلمي الأول
রাজবংশমুহাম্মদ আলি রাজবংশ
পিতাতুসুন পাশা
মাতাবামবাকাদিন

প্রথম আব্বাস (আরবি: عباس الأول‎‎, তুর্কি: I. Abbas Hilmi Paşa, ১ জুলাই ১৮১২ – ১৩ জুলাই ১৮৫৪),[৩] (প্রথম আব্বাস হিলমি পাশা বা আব্বাস পাশা নামেও পরিচিত) ছিলেন মিশর ও সুদানের ওয়ালি। তিনি তুসুন পাশার পুত্র ও মুহাম্মদ আলি পাশার নাতি।

প্রারম্ভিক জীবন[সম্পাদনা]

আব্বাস ১৮১২ সালের ১ জুলাই জেদ্দায় জন্মগ্রহণ করেন। এরপর তাকে কায়রোতে নিয়ে আসা হয়।[৪] ১৮৪৮ সালে তার চাচা ইবরাহিম পাশার উত্তরসুরি হিসেবে তিনি মিশর ও সুদানের শাসক হন।[৫][৬]

তৎকালীন নেতৃস্থানীয় ইতিহাসবিদ আল-জাবারতির মতে আব্বাস কায়রোতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং এসময় তার পিতা তুসুন পাশা হেজাজে ওয়াহাবি পন্থিদের বিরুদ্ধে লড়াই করছিলেন।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] তরুণ বয়সে আব্বাস তার চাচা ইবরাহিম পাশার অধীনে লেভান্টে সিরিয়ান যুদ্ধে লড়াই করেছেন।[৭] মুহাম্মদ আলি পাশার পরে তার পুত্র ইবরাহিম পাশা মিশর ও সুদানের অভিভাবক হিসেবে শাসন করেন। ইবরাহিম পাশা মারা যাওয়ার পর আব্বাস এই পদ লাভ করেন।[৫]

মিশরের শাসক[সম্পাদনা]

আব্বাসকে অনেক সময় নেতিবাচক হিসেবে তুলে ধরা হলেও নুবার পাশা তাকে সত্যিকার ভদ্রজন হিসেবে বর্ণনা করেছেন।[৫] তাকে প্রতিক্রিয়াশীল ও স্বল্পভাষী হিসেবে দেখা হয়। অধিকাংশ সময় তিনি প্রাসাদে অতিবাহিত করতেন।[৩] তিনি একচেটিয়া ব্যবসা বাতিল করেছিলেন, কারখানা ও বিদ্যালয় বন্ধ করেন এবং সেনাবাহিনীর সদস্য সংখ্যা কমিয়ে ৯,০০০ করেন।[৫] তিনি বদ্বীপ বাধ নির্মাণ বন্ধ করেন ও সুয়েজ খাল খননের বিরোধিতা করেছিলেন।[৩][৭]

ব্রিটিশ সরকারের চাপের কারণে আব্বাস ব্রিটিশদেরকে আলেক্সান্দ্রিয়া থেকে কায়রো পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণের অনুমতি দেন। এর বিনিময়ে ব্রিটিশরা উসমানীয়দের বিরুদ্ধে মিশরকে সহায়তা করে।[৩][৮] তার মৃত্যুর পর মিশরে ইউরোপীয়দের সংখ্যা বহুগুণে বৃদ্ধি পায়। ১৮৫০ সালে মিশরে ৩,০০০ ইউরোপীয় ছিল। ১৮৮২ সালে এই সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে ৯০,০০০ পৌছায়। ১৯০০ সালে এই সংখ্যা দাঁড়ায় ২,০০,০০০।[৯]

ক্রিমিয়ার যুদ্ধের সময় তিনি উসমানীয় সুলতানকে তার নৌবহর ও ১৫,০০০ সৈনিক দিয়ে সহায়তা করেছিলেন।[৮]

ব্যক্তিগত আগ্রহ[সম্পাদনা]

আরবীয় ঘোড়া উৎপাদনে তার ব্যক্তিগতভাবে আগ্রহ ছিল। মুহাম্মদ আলি পাশা ইতিপূর্বে এই কর্মসূচি চালু করেছিলেন। সেসময় মিশর ঘোড়া উৎপাদনের জন্য পরিচিত ছিল না। মিশরের শাসকরা কর হিসেবে ঘোড়া পেতেন। মুহাম্মদ আলি ও আব্বাস উভয়েই বেদুইনদের উৎপাদিত ঘোড়ার স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য স্বীকার করতেন।

মৃত্যু[সম্পাদনা]

১৮৫৪ সালের ১৩ জুলাই[৮] বিনহা প্রাসাদে দুইজন দাসের হাতে আব্বাস নিহত হন।[৩] এরপর তার চাচা সাইদ পাশা তার উত্তরসুরি হন।[৫][১০]

আব্বাসের মৃত্যুর পর তার আঠারোবছর বয়সী পুত্র ইবরাহিম ইলহামি পাশা তার আরবীয় ঘোড়াগুলো উত্তরাধিকার সূত্রে লাভ করেন। ইবরাহিম এই বিষয়ে বেশি আগ্রহী ছিলেন না। তিনি কিছু ঘোড়া রেখে অবশিষ্ট ঘোড়াগুলো নিলামে বিক্রি করে দেন। ১৮৬১ সালে তার এক দূরবর্তী আত্মীয় আলি পাশা শরিফ আব্বাসের মূল মজুদ থেকে প্রায় ৩০টি ঘোড়া কিনে নেন এবং ঘোড়া উৎপাদন শুরু করেন।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

সম্মাননা[সম্পাদনা]

বছর নাম রাষ্ট্র রিবন
অর্ডার অফ দ্য অগাস্ট পোর্ট্রেট উসমানীয় সাম্রাজ্য
১৮৪৯ অর্ডার অফ গ্লোরি উসমানীয় সাম্রাজ্য Order of Glory (Ottoman Empire) - ribbon bar.png
১৮৫৩ অর্ডার অফ নোবিলিটি, প্রথম শ্রেণী উসমানীয় সাম্রাজ্য
অর্ডার অফ সেইন্টস মরিস এন্ড লাজারাস, গ্র্যান্ড ক্রস কিংডম অফ সার্ডিনিয়া Cavaliere di gran Croce Regno SSML BAR.svg

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Williams 1999, পৃ. 248
  2. Williams 1999, পৃ. 253
  3. Hoiberg 2010, পৃ. 8
  4. Goldschmidt, Jr. 2000, পৃ. 2
  5. Chisholm 1911, পৃ. 9
  6. Anon 2009
  7. Magnusson ও Goring 1990, পৃ. 2
  8. Vucinich 1997, পৃ. 7
  9. Stearns 2001, পৃ. 543
  10. Stearns 2001, পৃ. 542
  • Anon (২০ জুলাই ২০০৯)। "14-Mohamed Ali's Dynasty"Egypt: State Information Service। ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ 
  • Chisholm, Hugh, সম্পাদক (১৯১১)। "Abbas I"Encyclopædia Britannica। I: A – Androphagi (11th সংস্করণ)। New York, NY: The Encyclopedia Britannica Company। এলসিসিএন 16000592 
  • Goldschmidt, Jr., Arthur (২০০০)। Biographical Dictionary of Modern Egypt। Boulder, CO: Lynne Rienner Pub.। আইএসবিএন 1-5558-7229-8   – via Questia (সদস্যতা প্রয়োজনীয়)
  • Hoiberg, Dale H., সম্পাদক (২০১০)। "Abbas I (Egypt)"। Encyclopædia Britannica। I: A–Ak - Bayes (15th সংস্করণ)। Chicago, IL: Encyclopedia Britannica, Inc.। আইএসবিএন 978-1-59339-837-8 
  • Magnusson, Magnus; Goring, Rosemary, সম্পাদকগণ (১৯৯০)। "Abbas Pasha"। Cambridge Biographical Dictionary। Cambridge, UK: Cambridge University Press। আইএসবিএন 0-521-39518-6 
  • Stearns, Peter N., সম্পাদক (২০০১)। "The Middle East and Egypty, 1796-1914: e. Egypt"। The Encyclopedia of World History: Ancient, Medieval, and Modern Chronologically Arranged (6th সংস্করণ)। Boston, MA: Houghton Mifflin Company। আইএসবিএন 0-395-65237-5এলসিসিএন 2001024479 
  • Thorne, John, সম্পাদক (১৯৮৪)। Chambers Biographical Dictionary। Edinburgh, UK: Chambers Ltd.। আইএসবিএন 0-550-18022-2 
  • Vucinich, Wayne S. (১৯৯৭)। "Abbas I"। Johnston, Bernard। Collier's Encyclopedia। I: A to Ameland (1st সংস্করণ)। New York, NY: P. F. Collier। এলসিসিএন 96084127 
  • Williams, Neville, সম্পাদক (১৯৯৯)। The Hutchison Chronology of World History। III: The Changing World: 1776–1900। Oxford, UK: Helicom Publishing Limited। আইএসবিএন 1-85986-283-7 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]

প্রথম আব্বাস হিলমি পাশা
জন্ম: ১ জুলাই ১৮১২ মৃত্যু: ১৩ জুলাই ১৮৫৪
পূর্বসূরী
ইবরাহিম পাশা
মিশরসুদানের ওয়ালি
১৮৪৮–১৮৫৪
উত্তরসূরী
সাইদ পাশা