সের্গেই প্যারাজনভ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
(প্যারাজনভ থেকে পুনর্নির্দেশিত)
সের্গেই প্যারাজনভ
জন্ম
সার্কিস হোভসেপি প্যারাজানিয়ান্টস

(১৯২৪-০১-০৯)৯ জানুয়ারি ১৯২৪
তিবিলিসি, জর্জিয়া
মৃত্যু২০ জুলাই ১৯৯০(1990-07-20) (বয়স ৬৬)
ইয়েরেভান, আর্মেনিয়া
সমাধিকমিটাস গোরস্তান, ইয়েরেভান
পেশাচলচ্চিত্র পরিচালক, চিত্রনাট্যকার, শিল্প নির্দেশক, নির্মাণ পরিকল্পক
কর্মজীবন১৯৫১–১৯৯০
উল্লেখযোগ্য কর্ম
  • ডালিমের রং (১৯৬৯)
  • ভুলে যাওয়া পূর্বপুরুষদের ছায়া (১৯৬৪)
দাম্পত্য সঙ্গীনিগ্যার কেরিমোভা (১৯৫০–১৯৫১)
সভেতলানা তসচেবাটিউক (১৯৫৬–১৯৬২)
সন্তানসুরেন প্যারাজনভ (১৯৫৮–)
ওয়েবসাইটwww.parajanov.com

সের্গেই প্যারাজনভ (আর্মেনীয়: Սերգեյ Փարաջանով; রুশ: Серге́й Ио́сифович Параджа́нов; জর্জীয়: სერგო ფარაჯანოვი; ইউক্রেনীয়: Сергій Йо́сипович Параджа́нов; কখনো কখনো প্যারাঝনভ বা প্যারাজানভ লেখা হয়; ৯ জানুয়ারি ১৯২৪ – ২০ জুলাই ১৯৯০) একজন আর্মেনীয় বংশোদ্ভূত সোভিয়েত চলচ্চিত্র পরিচালক ও শিল্পী ছিলেন যিনি ইউক্রেনীয়, জর্জীয় ও আর্মেনীয় চলচ্চিত্রে অবদান রাখার মাধ্যমে সোভিয়েত চলচ্চিত্রাঙ্গনকে সমৃদ্ধ করেছেন।[১] তিনি চলচ্চিত্রে তার নিজস্ব ধারা সৃষ্টি করেছিলেন যা ছিল সোভিয়েত ইউনিয়নের সমাজতান্ত্রিক ধারার (সোভিয়েত ইউনিয়নের একমাত্র অনুমোদিত শিল্পধারা) বাইরে। এরসাথে তার বিতর্কিত জীবনযাপন ও ব্যবহারের দরুন সোভিয়েত কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে বারবার তাকে নির্যাতিত ও কারান্তরীণ হতে হয়েছিল। তার চলচ্চিত্রও হয়েছিল দমনের শিকার।

১৯৫৪ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে চলচ্চিত্র নির্মাণ শুরু করলেও ১৯৬৫ সালের পূর্বে তার নির্মিত সকল চলচ্চিত্রকে "আবর্জনা" বলে অভিহিত করেছিলেন তিনি। ভুলে যাওয়া পূর্বপুরুষদের ছায়া (বাইরের অধিকাংশ দেশে বুনো আগুনের ঘোড়া নামে মুক্তি পায়) মুক্তি পাবার পর তিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কিছুটা পরিচিতি লাভ করেন ও প্রশাসনের আক্রমণের শিকার হন। প্রায় কোনো আলোচনা ছাড়াই ১৯৬৫ সাল থেকে ১৯৭৩ সাল পর্যন্ত তার সব প্রকল্প এবং পরিকল্পনা স্থানীয় (কিয়েভ ও ইয়েরেভান) এবং রাষ্ট্রীয় (গোস্কিনো) ক্ষেত্রে নিষিদ্ধ, বাতিল বা বন্ধ করে দেয় সোভিয়েত চলচ্চিত্র প্রশাসন। ১৯৭৩ সালে তিনি ধর্ষণ, সমকামিতা ও ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে গ্রেফতার হবার পর এই 'অবস্থা'র অবসান ঘটে। সোভিয়েত শিল্পীরা তার মুক্তি প্রদানের আবেদন জানালেই ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত তিনি কারান্তরীণ ছিলেন। এমনকি মুক্তিলাভের পর (১৯৮২ সালে তিনি তৃতীয় ও শেষবারের মত গ্রেফতার হন) তিনি সোভিয়েত চলচ্চিত্রাঙ্গনের পার্সোনা নন গ্রাটা ছিলেন। আশির দশকের মাঝামাঝি পর্যন্ত এই অবস্থা চলতে থাকে। এরপর রাজনৈতিক পরিবেশ শিথিল হতে থাকে যার দরুন তিনি পুনরায় চলচ্চিত্র পরিচালনা শুরু করেন। তারপরও প্রভাবশালী জর্জীয় অভিনেতা ডোডো আবাশিজে ও তার অন্যান্য বন্ধুরা তার শেষ চলচ্চিত্রটি মুক্তি পেতে কাজ করেছিলেন। তিবিলিস শ্রমিক ক্যাম্প ও কারাগারে যথাক্রমে চার বছর ও নয় মাস থাকার দরুন তার স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটে। প্রায় বিশ বছরের দমন পীড়ন সহ্য করা পর ১৯৯০ সালে মৃত্যু ঘটে তার। তার চলচ্চিত্রগুলো বিভিন্ন বিদেশি চলচ্চিত্র উৎসবে দেখানো হয়েছে। ১৯৮৮ সালের জানুয়ারি মাসে তিনি এক সাক্ষাৎকারে বলেন, "সবাই জানে যে আমার তিনটা মাতৃভূমি। আমি জন্মেছি জর্জিয়ায়, কাজ করেছি ইউক্রেনে এবং আমি মরব আর্মেনিয়ায়।"[২] সের্গেই প্যারাজনভকে ইয়েরেভানের কমিটাস গোরস্তানে সমাহিত করা হয়।[৩]

মার ডেল প্লাটা চলচ্চিত্র উৎসব, ইস্তানবুল আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব, নিকা পুরস্কার, রোটেরডাম আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসভ, সিটগেস - কাতালান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব, সাউ পাউলো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবসহ বিভিন্ন আসরে পুরস্কার জিতেছে প্যারাজনভের চলচ্চিত্র।

প্রারম্ভিক জীবন ও চলচ্চিত্র[সম্পাদনা]

তিবিলিসিতে প্যারাজনভের পারিবারিক বাড়িতে থাকা স্মৃতিফলক (৭ কোতে মেসখি স্ট্রিট)

প্যারাজনভ জর্জিয়ার তিবিলিসির শিল্পমনস্ক আর্মেনীয় পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম লোসিফ প্যারাজনভ ও মায়ের নাম সিরানুশ বেজানোভা। জন্মের সময় সের্গেই প্যারাজনভের নাম ছিল সারকিস হোভসেপি প্যারাজানিয়ান্টস (Սարգիս Հովսեփի Փարաջանյանց) (তার নামে প্যারাজানিয়ান্টস থাকার বিষয়টি ইয়েরেভানের সের্গেই প্যারাজনভ যাদুঘরের ঐতিহাসিক দলিলপত্র দ্বারা যাচাইকৃত)।[৪] তিনি শিশুকাল থেকে শিল্প গ্যালারিতে গমন করতেন। ১৯৪৫ সালে তিনি গেরাসিমভ চলচ্চিত্রবিদ্যা প্রতিষ্ঠানের চলচ্চিত্র পরিচালনা বিভাগে ভর্তি হবাত জন্য মস্কো গমন করেন। প্রতিষ্ঠানটি ইউরোপের অন্যতম প্রাচীন ও প্রসিদ্ধ চলচ্চিত্রবিদ্যা প্রতিষ্ঠান ছিল। তিনি সেখানে ইগোর সাভচেঙ্কো ও আলেকজান্ডার ডোভঝেঙ্কোর মত পরিচালকের নিকট থেকে চলচ্চিত্রবিদ্যা সম্পর্কে জ্ঞান আহরণ করেন।

১৯৪৮ সালে তিনি তিবিলিসিতে সমকামিতার (সে সময় সোভিয়েত ইউনিয়নে সমকামিতা অবৈধ ছিল) দায়ে অভিযুক্ত হন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন সোভিয়েত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্মকর্তা নিকোলাই মিকাভা। বিচারে তার পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হলেও তিনি তিন মাস কারাভোগেত পর বিশেষ বিবেচনায় মুক্তি পান।[৫] বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে তার বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়স্বজন এই অভিযোগের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে তার এই শাস্তি ছিল তার প্রথাবিরোধী মনমানসিকতার প্রতিক্রিয়া।

১৯৫০ সালে মস্কোতে প্যারাজনভ তার প্রথম স্ত্রী নিগিয়ার কেরিমোভার সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। নিগিয়ার ছিলেন তাতার মুসলমান ও প্যারাজনভের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হবার জন্য তিনি পূর্ব অর্থোডক্সীয় খ্রিষ্ট ধর্মে দীক্ষিত হয়েছিলেন। তার ধর্মান্তরিত হবার দরুন তিনি পরবর্তীতে তার আত্মীয়স্বজন তাকে হত্যা করে। তার মৃত্যুর পর প্যারাজনভ রাশিয়া ত্যাগ করে ইউক্রেনের কিয়েভ গমন করেন। সেখানে তিনি দুমকা, সোনার হাতনাতালিয়া উঝভি র মত প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করেছিলেন। এছাড়া, তিনি আন্দ্রেইশ (মলদোভীয় লেখক এমিলিয়ান বুকভ রচিত রূপকথার গল্প অবলম্বনে নির্মিত), সেরা মানুষ (কলখজ সঙ্গীতধর্মী চলচ্চিত্র), ইউক্রেনীয় মহাকাব্য (যুদ্ধের সময়কালীন গীতিনাট্য ) ও প্রসূনে প্রস্তর (ডোনেটস বেসিনের এক খনির শহরে এক ধর্মীয় বিশ্বাসের অনুপ্রেবেশ নিয়ে নির্মিত) কল্পকাহিনীভিত্তিক চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। তিনি এসময়ে ইউক্রেনীয় ভাষায় দক্ষ হয়ে ওঠেন ও ১৯৫৬ সালে সভিতলানা ইভানিভনা শ্চেরবাতিউকের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তার দ্বিতীয় স্ত্রী সভেতলানা শেরবাতিউক বা সভেতলানা প্যারাজনভ বামেও পরিচিত। তাদের সংসারে ১৯৫৮ সালে সুরেন নামের এক পুত্রসন্তানের জন্ম হয়।[৬]

সোভিয়েত বস্তুবাদ থেকে বিরতি[সম্পাদনা]

প্যারাজনভের চলচ্চিত্রের দৃশ্য, ডালিমের রং চলচ্চিত্রে জর্জীয় অভিনেত্রী সোফিকো চিয়াউরেলি

আন্দ্রেই তার্কভ্‌স্কির প্রথম চলচ্চিত্র আইভানের শৈশব চলচ্চিত্রনির্মাতা হিসেবে প্যারাজনভের গড়ে ওঠার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। এরপর তারা দুজন দুজনের দ্বারা প্রভান্বিত হন এবং তিনি ও আন্দ্রেই তার্কভ্‌স্কি ঘনিষ্ঠ বন্ধুতে পরিণত হন। ১৯৬৫ সালে তিনি সমাজতান্ত্রিক বস্তুবাদকে নাকচ করে ভুলে যাওয়া পূর্বপুরুষদের ছায়া শিরোনামের একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। কাব্যধর্মী এই চলচ্চিত্রটি হল প্রথম চলচ্চিত্র, যাতে তার সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটেছিল। চলচ্চিত্রটি বহু আন্তর্জাতিক পুরস্কার জিতেছিল। তার পরবর্তী চলচ্চিত্র ডালিমের রং তুলনামূলকভাবে সোভিয়েত কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে সুদৃষ্টি অর্জন করলেও আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্রাঙ্গনে পূর্বের মত পুরস্কার জেতে নি। গোস্কিনোর ইউক্রেন শাখার পাণ্ডুলিপি সম্পাদয়া বোর্ড এম. কোটিসিউবিনস্কির গল্পের দার্শনিক গভীরতা ও কাব্যিক গুণকে সেলুলয়েডের ফিতায় আবদ্ধ করার জন্য চলচ্চিত্রটির প্রশংসা করে ও এটিকে ডোভঝেঙ্কো স্টুডিওর অসাধারণ সৃষ্টিশীল কর্ম বলে অভিহিত করে। মস্কো গোস্কিনোর ইউক্রেন শাখার আবেদনে সাড়া দিয়ে মূল ইউক্রেনীয় ভাষায় চলচ্চিত্রটি মুক্তি দেবার সিদ্ধান্তে সম্মত হয় কেননা রুশ ভাষায় ডাবিং করে সোভিয়েত জুড়ে চলচ্চিত্রটি মুক্তি দেওয়া হলে এর ইউক্রেনীয় স্বাদ পাওয়া নাও যেতে পারত।[৭] (তখন সোভিয়েত ইউনিয়নে রুশ ভাষায় নির্মিত নয় এমন চলচ্চিত্র সোভিয়েত ইউনিয়ন জুড়ে মুক্তি দেওয়া হলে তাতে রুশ ভাষায় ডাবিং করা হত।)

এর অল্পদিন পর তিনি তার পূর্বপুরুষের দেশ আর্মেনিয়ায় পাড়ি জমান। ১৯৬৯ সালে তার সায়াত নোভা শিরোনামের চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায়। খুব অল্প বাজেটে ও তুলনামূলক নিম্ন পারিপার্শ্বিকতায় চলচ্চিত্রটি নির্মিত হলেও অনেকে চলচ্চিত্রটিকে প্যারাজনভের শ্রেষ্ঠ কর্ম বলে অভিহিত করেন।[৮] সোভিয়েত সেন্সর বোর্ড জ্বালাময়ী বিষয়বস্তু থাকার অভিযোগে চলচ্চিত্রটিতে হস্তক্ষেপ করে ও চলচ্চিত্রটিকে নিষিদ্ধ করে। প্যারাজনভ পুনরায় চলচ্চিত্রটির দৃশ্য সম্পাদনা করেন ও এর শিরোনাম পরিবর্যন করে ডালিমের রং রাখেন। সমালোচক আলেজেই কোরোতিউকভ বলেছেন, "প্যারাজনভের চলচ্চিত্রে শুধু কোনো জিনিস কেমন সেটা ফুটে উঠেনি, ফুটে উঠেছে তিনি শাসক হলে সে সব কেমন হত।" [তথ্যসূত্র প্রয়োজন] মিখাইল ভারতানভ ১৯৬৯ সালে লেখেন, "গ্রিফিথ ও এইসেন্সটাইনকে আলাদা রাখলে বিশ্ব চলচ্চিত্রাঙ্গন ডালিমের রং চলচ্চিত্রের আগে বিপ্লবী নতুন কিছু দেখে নি..."।[৯]

কারান্তরীণ হওয়া ও পরবর্তী কর্ম[সম্পাদনা]

তিবিলিসিতে প্যারাজনভের মূর্তি
প্যারাজনভ যাদুঘরের সামনে প্যারাজনভের মূর্তি

১৯৭৩ সালের ডিসেম্বর মাসের দিকে প্যারাজনভের প্রতি সোভিয়েত কর্তৃপক্ষের সন্দেহ ব্যাপক বৃদ্ধি পায়। তার নিজের "সমকামী" দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে অনুসন্ধান চালাতে থাকে সোভিয়েত কর্তৃপক্ষ এবং তাকে "সমাজতন্ত্রী দলের এক সদস্যকে ধর্ষণ করার ও পর্নোগ্রাফির সাথে যুক্ত থাকার" অভিযোগে ৫ বছরের জন্য সাইবেরিয়ার এক কঠিন পরিশ্রম ক্যাম্পে পাঠানো হয়।[১০] তার দণ্ডিত হবার তিন দিন পূর্বে আন্দ্রেই তার্কভ্‌স্কি ইউক্রেনের সমাজতন্ত্রী দলের কেন্দ্রীয় কমিটির নিকট পাঠানো একটি চিঠিতে লেখেন, "বিগত দশ বছরে সের্গেই প্যারাজনভ মাত্র দুইটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেনI: আমাদের ভুলে যাওয়া পূর্বপুরুষদের ছায়া এবং ডালিমের রং। এই চলচ্চিত্রগুলো প্রথমে ইউক্রেনে প্রভাব বিস্তার করেছে, তার গোটা দেশে, এবং সবশেষে গোটা বিশ্বে প্রভাব বিস্তার করেছে। শৈল্পিক মানে গোটা দুনিয়ায় অল্পকিছু ব্যক্তি প্যারাজনভের সমতুল্য। সে দোষী – সে নিজের একাকিত্বে দোষী। আমরা নিয়মিত তার কথা মনে না করার জন্য ও তার শৈল্পিক ক্ষমতার গুরুত্ব আবিষ্কার না করার জন্য দোষী।" অল্পকিছু উদারমনা শিল্পী, চলচ্চিত্রনির্মাতা ও কর্মী প্যারাজনভের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ করেন। তাদের মাঝে ইয়ভেস সেন্ট লরেন্ট, ফ্রাঙ্কোইসে সাগান, জঁ-লুক গদার, ফ্রঁসোয়া ত্রুফো, লুইস বুনুয়েল, ফেদেরিকো ফেল্লিনি, মিকেলাঞ্জেলো আন্তোনিওনি, আন্দ্রেই তার্কভ্‌স্কি ও মিখাইল ভারতানিভের মত ব্যক্তিরা ছিলেন।

প্যারাজনভ তার পাঁচ বছরের দণ্ডের চার বছর অতিবাহিত করার পর ফরাসি পরাবাস্তববাদী কবি ও ঔপন্যাসিক লুই আরাগঁ, রুশ কবি এলসা ট্রিওলেট (আরাগঁর সহধর্মিণী) ও মার্কিন লেখক জন আপডাইকের প্রচেষ্টায় তিনি মুক্তি পান।[৮] সাজার মেয়াদ শেষ হবার পূর্বে তার এই মুক্তি সোভিয়েত সমাজতন্ত্রী দলের সাধারণ সম্পাদক লিওনিদ ব্রেজনেভের তত্ত্বাবধায়নে হয়েছিল। ব্রেজনেভের সাথে আরাগঁ ও ট্রিওলেটের মস্কোর বোলশোই থিয়েটারে কাকতালীয়ভাবে দেখা হয়েছিল। যখন ব্রেজনেভ তাদের কোন সাহায্য লাগবে কি না জিজ্ঞেস করেছিলেন তখন আরাগঁ তাকে প্যারাজনভকে মুক্তি দিতে অনুরোধ করেন যেটি ১৯৭৭ সালের ডিসেম্বরে প্যারাজনভের মুক্তির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।[১০]

দণ্ডকালীন সময়ে প্যারাজনভ বহু পুতুল আকৃতির ক্ষুদ্র মূর্তি তৈরি করেছিলেন (এর মাঝে কিছু হারিয়ে গিয়েছে) এবং ৮০০ টি ছবি ও কোলাজ এঁকেছিলেন যেগুলো বর্তমানে ইয়েরেভানের প্যারাজনভ যাদুঘরে প্রদর্শনীর জন্য রাখা হয়েছে।[১১] (যাদুঘরটি ১৯৯১ সালে প্যারাজনভের মৃত্যুর এক বছর পর জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। এতে তার ২০০টি কর্ম ও তিবিলিসির বাড়ি থেকে পাওয়া তার কারুকর্ম বিদ্যমান।) ক্যাম্পে তার কাজ বারংবার রক্ষীদের নিকট পরিহাসের বিষয় হত এবং তারা তাকে প্রয়োজনীয় সামগ্রী ঠিকমত দিত না ও তাকে পাগল বলে অভিহিত করত। তাদের এই দৃষ্টিভঙ্গি মস্কো থেকে আসা এই বার্তার মাধ্যমে পরিবর্তিত হয় যাতে লেখা ছিল, "এই পরিচালক অনেক মেধাবী"।[৮]

দণ্ড থেকে মুক্তি পেয়ে তিবিলিসিতে ফিরে আসার পর তিনি চলচ্চিত্রে আর না জড়ানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। তৎকালীন সোভিয়েত সেন্সর বোর্ডের দৃষ্টিভঙ্গি তাকে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে প্রভাবান্বিত করেছিল। তিনি দণ্ডকালীন সময়ে তৈরি করা সৃষ্টিকর্মের মাঝে নিজেকে নিয়োজিত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলেন। তিনি অনেক জটিল কোলাজ ছাড়াও বহু বিমূর্ত চিত্র এঁকেছিলেন। এছাড়াও তিনি অন্যান্য ধারার চিত্রকর্ম, পুতুল নির্মাণ ও কিছু অদ্ভুত কোট তৈরি করেছিলেন।

১৯৮২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তাকে পুনরাত ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে কারান্তরীণ করা হয়। তিনি ট্যাগানাকা থিয়েটারে ভ্লাদিমির ভ্যোসোতস্কির স্মরণে নির্মিত একটি মঞ্চনাটক দেখে মস্কো আসার পর গ্রেফতার হন। এছাড়া তার বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ আনা হয়। তার স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটলে তিনি এক বছরের মাঝে মুক্তি পান।[১০]

১৯৮৫ সালে সোভিয়েত কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিভঙ্গি কিছুটা উদার হলে তিনি চলচ্চিত্রাঙ্গনে ফেরার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। বহু জর্জীয় সুশীল সমাজের ব্যক্তিদের অনুরোধ তার এই সিদ্ধান্তে প্রভাব বিস্তার করেছিল। তিনি সুরাম দুর্গের কিংবদন্তি শিরোনামের একটি চলচ্চিত্র তৈরি করেন যেটি একাধিক চলচ্চিত্র পুরস্কার জিতেছিল। এর মাধ্যমে সায়াত নোভা নির্মাণের ১৫ বছর পর তিনি নতুন চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। ১৯৮৮ সালে তিনি পাগল প্রেমিক শিরোনামের একটি চলচ্চিত্র তৈরি করেন। এটিও জিতেছিল একাধিক পুরস্কার। চলচ্চিত্রটি নির্মিত হয়েছিল মিখাইল লেরমন্তভের গল্প অবলম্বনে। চলচ্চিত্র এক পাগল প্রেমিকের গল্প অবলম্বনে আজেরি সংস্কৃতিতে নির্মিত হয়েছিল। তিনি চলচ্চিত্রটি তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু আন্দ্রেই তার্কভ্‌স্কি ও "বিশ্বের সকল শিশু"র প্রতি উৎসর্গ করেছিলেন।

এরপর তিনি তার পরবর্তী চলচ্চিত্র প্রকল্প শেষ করার চেষ্টা করেছিলেন। তার অসমাপ্ত শেষ কর্মের নাম ছিল জবানবন্দি। তিনি তার কাজ অসমাপ্ত রেখে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ১৯৯০ সালের ২০ জুলাই ৬৬ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। এটি পরবর্তীতে প্যারাজনভ: শেষ বসন্ত চলচ্চিত্রে তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু মিখাইল ভারতানভ কর্তৃক অন্তর্ভুক্ত হয়। ফেদেরিকো ফেল্লিনি, তোনিনো গেরেরা, ফ্রান্সিসকো রোসি, অ্যালবার্তো মোরাভিয়া, গিউলিয়েত্তা মাসিনা, মার্সেলো মাস্ত্রোইয়ান্নি ও বেরনার্দো বেরতোলুচ্চির মত ব্যক্তিরা তার মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছিলেন।[৯] তারা রাশিয়ায় পাঠানো এক টেলিগ্রামে লেখেছিলেন, "বিশ্ব চলচ্চিত্রাঙ্গন এক যাদুকরকে হারাল।"[৯]

প্রভাব ও স্মৃতি[সম্পাদনা]

ইয়েরভানে প্যারাজনভের কবর

গেরাসিমভ চলচ্চিত্রবিদ্যা প্রতিষ্ঠানে চলচ্চিত্রবিদ্যা নিয়ে পড়াশোনা করলেও আন্দ্রেই তার্কভ্‌স্কির প্রথম চলচ্চিত্র আইভানের শৈশব দেখার পর তার মাঝে শৈল্পিক দৃষ্টিভঙ্গির বিকাশ ঘটে। প্যারাজনভ আন্দ্রেই তার্কভ্‌স্কি কর্তৃক সময়ে যাত্রা চলচ্চিত্রে খুব প্রশংসিত হন ("সবসময় খুব সম্মান ও আনন্দের সাথে আমি মনে করি থাকি যে সের্গেই প্যারাজনভের চলচ্চিত্র আমি খুব ভালোবাসি। তার চিন্তার ধারা, প্রথাবিরুদ্ধ, কাব্যিক... কাজ সুন্দরকে ভালোবাসতে ও নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গিতে নিজেকে মুক্ত হতে শেখায়"), এবং মিকেলাঞ্জেলো আন্তোনিওনি, ফ্রান্সিস ফোর্ড কোপলা, জঁ-লুক গদার ("চলচ্চিত্র মন্দিরে ছবি, আলো ও বাস্তবতা থাকে। সের্গেই প্যারাজনভ এই মন্দিরের রাজা"), মার্টিন স্কোরসেজি, মিখাইল ভারতানভ ("গ্রিফিথ ও এইসেন্সটাইনকে আলাদা রাখলে বিশ্ব চলচ্চিত্রাঙ্গন ডালিমের রং চলচ্চিত্রের আগে বিপ্লবী নতুন কিছু দেখে নি।"), ফেদেরিকো ফেল্লিনি, তোনিনো গেরেরা, ফ্রান্সিসকো রোসি, অ্যালবার্তো মোরাভিয়া, গিউলিয়েত্তা মাসিনা, মার্সেলো মাস্ত্রোইয়ান্নি তার কাজের প্রশংসা করেন।[১২]

তার শিল্পের অনেক প্রশংসাকারী থাকলেও তার দৃষ্টিভঙ্গি অনেককে আকৃষ্ট করত না। তিনি বলেছেন, "যারা আমাকে বিদ্রূপ করেছে, তারা হারিয়ে গিয়েছে।"[১৩] যাই হোক, থিও অ্যাঞ্জেলোপৌলস, বেলা তার ও মোহসেন মাখ্মলবফ মনে করেন যে, প্যারাজনভ চলচ্চিত্রে কাহিনির চেয়ে দেখার মাধ্যম হিসেবে পরিণত করার ক্ষেত্রে গুরুত্ব আরোপ করেছেন।[১৪]

২০১০ সালে হলিউডে প্যারাজনভ-ভারতানভ ইন্সটিটিউট প্রতিষ্ঠিত হয়। এর উদ্দেশ্য হল সের্গেই প্যারাজনভ ও মিখাইল ভারতানভের স্মৃতি নিয়ে গবেষণার করার পাশাপাশি তা সংরক্ষণ করা ও তা ছড়িয়ে দেওয়া।[১৫]

চলচ্চিত্র তালিকা[সম্পাদনা]

বছর চলচ্চিত্র মূল শিরোনাম বাংলা হরফে লেখা শিরোনাম টীকা
১৯৫১ মলদোভীয় গল্প (রুশ) Молдавская сказка মলদাভস্কায়া স্কাজকা স্নাতককালীন স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র; হারিয়ে গিয়েছে
১৯৫৪ আন্দ্রেইশ (রুশ) Андриеш আন্দ্রেইশ ইয়াকভ বাজেলয়ানের সাথে যৌথভাবে নির্মিত, মলদোভীয় ছোটগল্প এর পূর্ণদৈর্ঘ্য পুনঃনির্মাণ
১৯৫৮ দুমকা (ইউক্রেনীয়) Думка দুমকা প্রামাণ্যচিত্র
১৯৫৮ সেরা মানুষ (সেরা তরুণ নামেও পরিচিত) (রুশ) Первый парень পেরভিজ পারেন
১৯৫৯ নাতালিয়া উঝভিজ (রুশ) Наталия Ужвий নাতালিয়া উঝভিজ প্রামাণ্যচিত্র
১৯৬০ সোনার হাত (রুশ) Золотые руки জোলোতয়ে রুকি প্রামাণ্যচিত্র
১৯৬১ ইউক্রেনীয় মহাকাব্য (রুশ) Украинская рапсодия ইউক্রেন্সকায়া র‍্যাপসোদিয়া
১৯৬২ প্রসূনে প্রস্তর (রুশ) Цветок на камне তসভেতক না কামনে
১৯৬৫ ভুলে যাওয়া পূর্বপুরুষদের ছায়া (ইউক্রেনীয়) Тіні забутих предків তিনি জাবুতিখ প্রেদকিভ
১৯৬৫ কিয়েভের দেয়ালচিত্র (রুশ) Киевские фрески কিয়েভস্কি ফ্রেস্কি নির্মাণ পূর্ববর্তী সময়ে নিষিদ্ধ; ১৫ মিনিটের মহড়া শুধু টিকে আছে
১৯৬৮ হাকব হোভান্তানিয়ান (আর্মেনীয়) Հակոբ Հովնաթանյան হাকব হোভান্তানিয়ান স্বল্পদৈর্ঘ্য প্রামাণ্যচিত্র
১৯৬৮ কোমিতাসের শিশুদের প্রতি (আর্মেনীয়) Երեխաներ Կոմիտասին ইয়েরেখানের কোমিতাসিন ইউনিসেফের জন্য নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র; হারিয়ে গিয়েছে[১৬]
১৯৬৯ ডালিমের রং (আর্মেনীয়) Նռան գույնը ন্রান গাইনে
১৯৮৪ সুরাম দুর্গের কিংবদন্তি (জর্জিয়) ამბავი სურამის ციხისა আমবাভি সুরামিস তসিখিসা
১৯৮৫ পিরোজমানি ধারার আরবীয় নকশা (রুশ) Арабески на тему Пиросмани আরবেস্কি না তেমু পিরোজমানি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র
১৯৮৮ পাগল প্রেমিক (জর্জিয়) აშიკი ქერიბი আশিকি কেরিবি
১৯৮৯–১৯৯০ জবানবন্দি (আর্মেনীয়) Խոստովանանք খোস্তোভানানাক অসমাপ্ত; অসমাপ্ত অংশ মিখাইল ভারতানভের প্যারাজনভ: শেষ বসন্ত শিরোনামের চলচ্চিত্রে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।[১৭][১৮]

চিত্রনাট্য[সম্পাদনা]

পুরোপুরি ও আংশিকভাবে লেখা চিত্রনাট্য[সম্পাদনা]

  • ভুলে যাওয়া পূর্বপুরুষদের ছায়া (Тіні забутих предків, ১৯৬৫, আইভান চেন্দেইয়ের সাথে যৌথভাবে লেখা, মিখালিও কোতিসিউবিনস্কির উপন্যাসিকা অবলম্বনে)
  • কিয়েভের দেয়ালচিত্র (Киевские фрески, ১৯৬৫)
  • সায়াতনোভা (Саят-Нова, ১৯৬৯, এটি পরবর্তীতে ডালিমের রং চলচ্চিত্রে ব্যবহৃত হয়)
  • জবানবন্দি (Исповедь, ১৯৬৯–১৯৮৯)
  • ভ্রুবেল সম্পর্কে গবেষণা (Этюды о Врубеле, ১৯৮৯, মিখাইল ভ্রুবেলের কিয়েভ থাকাকালীন সময়ের কাহিনি অবলম্বনে নির্মিত, তিনি ছাড়াও লিওনিদ ওসিকা কর্তৃক যৌথভাবে লিখিত ও পরিচালিত)
  • মরালের হ্রদ: এলাকা (Лебедине озеро. Зона, ১৯৮৯, ১৯৯০ সালে চিত্রায়িত, ভুলে যাওয়া পূর্বপুরুষদের ছায়ার চিত্রনাট্যকার ইউরিয় ইল্লিয়েঙ্কো কর্তৃক পরিচালিত)

নির্মিত না হওয়া চিত্রনাট্য ও প্রকল্প[সম্পাদনা]

  • সুপ্ত প্রাসাদ (Дремлющий дворец, ১৯৬৯, আলেকজান্ডার পুশকিনের বাখচিসারের ঝর্ণা কবিতা অবলম্বনে)
  • সংক্ষিপ্ত সঙ্গীতালেখ্য (১৯৭২, মিখাইলো কোতসিউবিনস্কির ছোটগল্প অবলম্বনে)
  • ইকারুস (Икар, ১৯৭২)
  • সোনার প্রান্ত (Золотой обрез, ১৯৭২)
  • সুন্দরী আরা (Ара Прекрасный, ১৯৭২, বিংশ শতাব্দীর আর্মেনীয় কবি নাইরি জারিয়ানের সুন্দরী আরা কবিতা অবলম্বনে)
  • দানব (Демон, ১৯৭২, মিখাইল লেরমন্তভের মহাকাব্যিক কবিতা অবলম্বনে)
  • অডেনিসের আশ্চর্য (Чудо в Оденсе, ১৯৭৩, হ্যান্স ক্রিস্টিয়ান অ্যান্ডারসনের কর্মের ছায়া অবলম্বনে)
  • সাসুনের ডেভিড (Давид Сасунский, আশির দশকের মাঝামাঝি, আর্মেনীয় মহাকাব্যিক কবিতা সাসুনের ডেভিড অবলম্বনে)
  • শুশানিকের আত্মত্যাগ (Мученичество Шушаник, ১৯৮৭, ইয়াকভ তসুরতাভেলির জর্জীয় উপাখ্যান অবলম্বনে)
  • আরাফাত পাহাড়ের গুপ্তধন (Сокровища у горы Арарат)

এছাড়াও তার হেনরি ওয়েডসওয়ার্থ লংফেলোর দ্য সং অব হিয়াথা, উইলিয়াম শেকসপিয়রের হ্যামলেট, ইয়োহান ভোলফগাং ফন গ্যোটের ফাউস্ট ও প্রাচীন পূর স্লাভীয় কবিতা দ্য টেল অব ইগোরস ক্যাম্পেইন নিয়ে কাজ করার ইচ্ছা ছিল কিন্তু, তিনি খসড়া পাণ্ডুলিপি তৈরি করে যেতে পারেন নি।

জনপ্রিয় মাধ্যমে উপস্থিতি[সম্পাদনা]

মার্কিন লেখক জেমস চাপম্যানের স্টেট (২০০৬) উপন্যাসে সের্গেই প্যারাজনভের জীবনী আংশিক বর্ণনা করা হয়েছে।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Sergei Parajanov, Biography at IMDB
  2. Parajanov Interview
  3. Parajanov's memorial tombstone at Komitas Pantheon
  4. Sergei Paradzhanov and Zaven Sarkisian, Kaleidoskop Paradzhanov: Risunok, kollazh, assambliazh (Yerevan: Muzei Sergeiia Paradzhanova, 2008), p.8
  5. Segodnya.ua
  6. Suren Parajanov
  7. RGALI (Russian State Archive of Art and Literature), Goskino production and censorship files: f. 2944, op. 4, d. 280.
  8. "Sergei Parajanov – Interview with Ron Holloway, 1988"। ২০০৭-১২-০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৮-২২ 
  9. Parajanov.com
  10. "Осужден за изнасилование члена КПСС (in Russian), Moskovskiy Komsomolets, 2004"। ২০০৭-০৮-১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৮-২৩ 
  11. "Frieze Magazine, Paradjanov the Magnificent"। ২০০৮-০৪-১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৮-২৩ 
  12. See official page.
  13. The Moscow Times
  14. Parajanov Influence
  15. "Parajanov-Vartanov Institute"। ২০১৪-১০-২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৯-০৯ 
  16. Parajanov's lost film
  17. Parajanov: The Last Spring
  18. Schneider, Steven. "501 Movie Directors" London: Cassell, 2007, আইএসবিএন ৯৭৮১৮৪৪০৩৫৭৩১

গ্রন্থপঞ্জি[সম্পাদনা]

সের্গেই প্যারাজনভকে নিয়ে রচিত বই ও গবেষণামূলক নিবন্ধ হল:

ইংরেজি ভাষার উৎস[সম্পাদনা]

  • ডিক্সন, হুইলার, ও ফস্টার, গোয়েন্ডোলিন। "আ শর্ট হিস্ট্রি অব ফিল্ম" নিউ ব্রান্সউইক, এনজে: রাটগারস ইউনিভার্সিটি প্রেস, ২০০৮। আইএসবিএন ৯৭৮০৮১৩৫৪২৬৯০
  • কুক, ডেভিড এ.। "শ্যাডোজ অব ফরগটেন অ্যানসেস্টরস: ফিল্ম অ্যাজ রিলিজিয়াস আর্ট" পোস্ট স্ক্রিপ্ট ৩, নং ৩ (১৯৮৪): ১৬–২৩।
  • নেসবিও, বোহডান "শ্যাডোজ অব ফরগটেন অ্যানসেস্টরস: স্টোরিটেলিং ইন দ্য নভেল অ্যান্ড দ্য ফিল্ম" লিটারেচার/ফিল্ম কোয়ার্টারলি ২২, নং ১ (১৯৯৪): ৪২–৪৯।
  • অয়েলার, কার্লা। "আ কালেকটিভ ইনটেরিয়র মনোলগ: সের্গেই প্যারাজনভ অ্যান্ড এইসেনস্টেইনস জয়েস-ইন্সপায়ার্ড ভিশন অব সিনেমা" দ্য মডার্ন ল্যাঙ্গুয়েজ রিভিউ ১০১, নং ২ (এপ্রিল ২০০৬): ৪৭২–৪৮৭।
  • অয়েলার, কার্লা। "'ন্রান গাইন/দ্য কালার অব পমেগ্রানেটস: সের্গেই প্যারাজনভ, ইউএসএসআর, ১৯৬৯" ইন দ্য সিনেমা অব রাশিয়া অ্যান্ড দ্য ফরমার সোভিয়েত ইউনিয়ন, ১৩৯–১৪৮। লন্ডন, ইংল্যান্ড: ওয়ালফ্লাওয়ার, ২০০৬। [বইয়ের অধ্যায়]
  • পাপাজিয়ান, এলিজাবেথ এ.। "এথনোগ্রাফি, ফেয়ারিটেল অ্যান্ড ‘পারপেচুয়াল মোশন’ ইন সের্গেই প্যারাজমভস আশিক- কেরিব।" লিটারেচার/ফিল্ম কোয়ার্টারলি ৩৪, নং ৪ (২০০৬): ৩০৩–১২।
  • প্যারাজনভ, সের্গেই। সেভেন ভিশনস গালিয়া আকেরম্যান কর্তৃক সম্পাদিত, গাই বেনেট কর্তৃক অনূদিত। লস অ্যাঞ্জেলেস: গ্রিন ইন্টেজার, ১৯৯৮। আইএসবিএন ১৮৯২২৯৫০৪০, আইএসবিএন ৯৭৮১৮৯২২৯৫০৪০
  • প্যারাজনভ সের্গেই, ও জাভেন সারকিসিয়ান। প্যারাজনভ কালেইডোস্কোপ: ড্রইংস, কোলাজেস, অ্যাসেম্বেলেজেস ইয়েরেভান: সের্গেই প্যারাজনভ যাদুঘর, ২০০৮ আইএসবিএন ৯৭৮৯৯৯৪১২১৪৩৪
  • স্টিফেন, জেমস। দ্য সিনেমা অব সের্গেই প্যারাজনভ ম্যাডিসন: ইউনিভার্সিটি অব উইসকনসিন প্রেস, ২০১৩ আইএসবিএন ৯৭৮০২৯৯২৯৬৫৪৪
  • স্টিফেন, জেমস, সম্পাদিত সের্গেই প্যারাজনভ বিশেষ সংখ্যা। আর্মেনিয়ান রিভিউ ৪৭/৪৮, নস. ৩–৪/১–২ (২০০১/২০০২)। ডাবল ইস্যু; প্রকাশকের ওয়েবসাইট
  • স্টিভেন, জেমস। "কিয়েভ ফ্রেস্কোয়েস: সের্গেই প্যারাজনভস আনরিয়েলাইজড ফিল্ম প্রোজেক্ট" কিনোলাচারা বিশেষ সংখ্যা ৯: ইউক্রেনীয় চলচ্চিত্র (ডিসেম্বর ২০০৯), অনলাইন ইউআরএল: http://www.kinokultura.com/specials/9/steffen.shtml
  • স্খেনেইডার, স্টিভেন যে। "৫০১ মুভি ডিরেকটরস" লন্ডন: হ্যাচেট/ক্যাসেল, ২০০৭। আইএসবিএন ৯৭৮১৮৪৪০৩৫৭৩১

অন্যান্য ভাষার উৎস[সম্পাদনা]

  • বুলোঁ, এরিক। সায়াত নোভা ডি সের্গেই প্যারাজনভ: লা ফেস এট লে প্রোফিল ক্রিসনি, বেলজিয়াম: এডিশনস ইয়োলো নাউ, ২০০৭ (ফরাসি ভাষায়) আইএসবিএন ৯৭৮২৮৭৩৪০২১২৯
  • ক্যাজালস, প্যাট্রিক। সের্গেই প্যারাজনভ, প্যারিস, কাহিয়েরস ডু সিনেমা। (ফরাসি ভাষায়) আইএসবিএন ৯৭৮২৮৬৬৪২১৩৩৫
  • চের্নেঙ্কো, মিরন। সের্গেই প্যারাজনভ: তভরচেস্কি পোর্ট্রেট মস্কোভা: "সয়ুজিনফির্মকিনো" গোস্কিনো এসএসএসআর, ১৯৮৯ (রুশ ভাষায়) অনলাইন সংস্করণ
  • গ্রিগোরিয়ান, লেভন। প্যারাজনভ মস্কো: মলোদাইয়া গভারদিয়া, ২০১১ (রুশ ভাষায়) আইএসবিএন ৯৭৮৫২৩৫০৩৪৩৮৯,
  • গ্রিগোরিয়ান, লেভন। ত্রি তসভেতা অদনোই স্ত্রাস্তি: ত্রিপ্তিখ সের্গেইয়া প্যারাজনভা মস্কো: কিনোতসেন্ত্র, ১৯৯১ (রুশ ভাষায়)
  • কালান্তার, কারেন। ওচেরকি ও প্যারাজনভে ইয়েরেভান: গিতুতিউন এনএএন আরএ, ১৯৯৮ (রুশ ভাষায়)
  • কাতানিয়ান, ভাসিলি ভাসিলেভিচ। প্যারাজনভ: তসেনা ভেচনোগো প্রাজদনিকা নিঝনি নভোগোরদ: দেকম, ২০০১ (রুশ ভাষায়) আইএসবিএন ৯৭৮৫৮৯৫৩৩০৪২৫
  • লিয়েম, আন্তোনিন যে, সম্পাদিত সের্গেই প্যারাজনভ: টেস্টিমোনিয়াঞ্জ এ ডকুমেন্টি সু লোপেরা এ লা ভিটা ভেনিস: লা বিয়েন্নাকে ডি ভেনেজিয়া/মার্সিলিও, ১৯৭৭ (ইতালীয় ভাষায়)
  • মেচিতভ, ইউরি। সের্গেই প্যারাজনভ: খ্রোনিকা ডায়ালগা তিবিলিসি: গ্যামস- প্রিন্ট, ২০০৯। (রুশ ভাষায়) আইএসবিএন ৯৭৮৯৯৪১০১৭৫৪৪
  • প্যারাজনভ, সের্গেই ইস্পোভড’ কোরা তসেরেতেলি কর্তৃক সম্পাদিত, সেন্ট পিটার্সবার্গ: আজবুকা, ২০০১। (রুশ ভাষায়) আইএসবিএন ৯৭৮৫২৬৭০০২৯২৯
  • প্যারাজনভ, সের্গেই, অ্যান্ড গারেগিন জাকোইয়ান। পিজমা ইজ জনি ইয়েরেভান: ফিলমাদারান, ২০০০ (রুশ ভাষায়) আইএসবিএন ৯৭৮৯৯৯৩০৮৫১০২
  • স্খেনেইডার, স্টিভেন জে। "৫০১ ডিরেক্টরস ডি সিনে" বার্সেলোনা, স্পেন: গ্রিজালবো, ২০০৮ আইএসবিএন ৯৭৮৮৪২৫৩৪২৬৪৬
  • তসেরেতেলি, কোরা, সম্পাদিত কোলাঝ না ফোনে আভতোপোর্ত্রেতা: ঝিজন’–ইগরা দ্বিতীয় সংস্করণ নিঝনি নভগরদ: দেকম, ২০০৮ (রুশ ভাষায়) আইএসবিএন ৯৭৮৫৮৯৫৩৩০৯৭৫
  • ভারতানভ, মিখাইল। "সের্গেই প্যারাজনভ" ইন "ইল সিনেমা ডেল্লে রিপাবলিচে ট্রান্সকাউকাসিচে সোভিয়েতিচে" ভেনিস, ইতালি: মারসিলো এদিতোরি, ১৯৮৬ (ইতালীয় ভাষায়) আইএসবিএন ৮৮৩১৭৪৮৯৪৭
  • ভারতানভ, মিখাইল। "লেস সাইমস দু মন্দে" কাহিয়েরস দু সিনেমা" নং ৩৮১, ১৯৮৬ (ফরাসি ভাষায়) আইএসএসএন 0757-8075

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]