প্যারাচৌম্বক পদার্থ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
যখন একটি বিকার থেকে তরল অক্সিজেনকে একটি শক্তিশালী চুম্বকের ওপর ঢালা হয় তখন তা এর প্যারাচুম্বকত্বের জন্য অস্থায়ী ভাবে চুম্বকটির চৌম্বক ক্ষেত্র দ্বয়ের মাঝে অবস্থান করে।

প্যারাচুম্বকত্ব হলো চুম্বকত্বের একটি ধরন যেখানে কিছু পদার্থ বাহ্যিক ভাবে প্রযুক্ত চৌম্বক ক্ষেত্রের দিকে দুর্বলভাবে আকর্ষীত হয় এবং প্রযুক্ত চৌম্বক ক্ষেত্রের দিকে একটি প্রণোদিত চুম্বক ক্ষেত্র উৎপন্ন করে। এমন বৈশিষ্টের বিপরীতে, ডায়াচৌম্বক পদার্থগুলি চৌম্বক ক্ষেত্র কর্তৃক বিকর্ষীত হয় এবং প্রযুক্ত চৌম্বক ক্ষেত্রের বিপরীত দিকে একটি প্রণোদিত চুম্বক ক্ষেত্র উৎপন্ন করে।[১] বেশীরভাগ মৌলিক পদার্থ ও যৌগ প্যারাচুম্বকীয়;[২] এদের ১ এর থেকে সামান্য বেশি (অর্থাৎ একটি ক্ষুদ্র ধনাত্মক চৌম্বকীয় সংবেদনশীলতা) আপেক্ষিক চৌম্বকীয় ব্যাপ্তিযোগ্যতা রয়েছে এবং তাই এরা চৌম্বক ক্ষেত্র দ্বারা আকর্ষীত হয়। প্রযুক্ত চৌম্বক ক্ষেত্র প্রবর্তিত চৌম্বক মুহূর্ত, ক্ষেত্র প্রাবল্যে রৈখিক এবং অধিকতর দুর্বল। সাধারণত এমন ক্রিয়া শনাক্ত করতে একটি সংবেদনশীল বিশ্লেষণাত্মক সমতার প্রয়োজন হয়। আধুনিক কালে প্যারাচুম্বক সংক্রান্ত হিসাব-নিকাশ করতে প্রায়শই স্কুইড (ম্যাগনেটোমিটার) ম্যাগনেটোমিটার ব্যবহৃত হয়।

কোনো পদার্থে বিজোড় ইলেক্ট্রনের উপস্থিতিই প্যারাচুম্বকত্বের কারণ। এদের স্পিনের কারণে, বিজোড় ইলেক্ট্রনগুলির একটি চৌম্বক দ্বিমেরু মুহূর্ত থাকে এবং একটি ক্ষুদ্র চুম্বকের মত ব্যবহার করে। একটি চৌম্বক ক্ষেত্র, ইলেক্ট্রনগুলির স্পিনকে এর সমান্তরালে সাজায় যা একটি নিট আকর্ষণের জন্ম দেয়। রসায়নে কোনো ডায়াচৌম্বক কণা (পরমাণু, আয়ন বা অনু) শনাক্তকরণে একটি সাধারণ চলতি পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়ঃ[৩] যদি কণাটির সকল ইলেক্টন জোড় থাকে তবে তা ডায়াচৌম্বকীয় এবং অন্যথায় তা প্যারাচৌম্বকীয়। ফেরোচৌম্বক পদার্থের মত, এরা বাহ্যিক চৌম্বক ক্ষেত্রের অনুপস্থিতিতে চুম্বকত্ব ধরে রাখেনা কেননা তাপমাত্রিক গতি স্পিনের এই ঝোঁককে এলোমেলো করে দেয়। (কিছু প্যারাচৌম্বক পদার্থ পরম শূন্যতেও স্পিনের এই বিশৃঙ্খলা ধরে রাখে, যার মানে, এরা শুধু ভূমি দশায়ই প্যারাচৌম্বকীয়; অর্থাৎ তাপমাত্রিকা গতির অনুপস্থিতিতে) তাই, চৌম্বক ক্ষেত্র সরিয়ে নিলে এর সমস্ত চৌম্বকত্বই হারিয়ে যায়। এমনকি, চৌম্বক ক্ষেত্রের উপস্থিতেও সেখানে অল্প কিছু চুম্বকত্বের সৃষ্টি হয়, কেননা এই ক্ষেত্রের সাহায্যে স্পিনের একটি ক্ষুদ্রাংশই পাওয়া যায়। এই ক্ষুদ্রাংশটি ক্ষেত্র প্রাবল্যের সাথে আনুপাতিক এবং এটি রৈখিক বশ্যতার বর্ণনা দেয়। অন্যদিকে, ফেরোচৌম্বক পদার্থের আকর্ষণ অ-রৈখিক এবং অধিক শক্তিশালী হওয়ায় এদের খুব সহজেই শনাক্ত করা যায়।

প্যারাচৌম্বকের উদাহরণ[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Miessler, G. L. and Tarr, D. A. (2010) Inorganic Chemistry 3rd ed., Pearson/Prentice Hall publisher, আইএসবিএন ০-১৩-০৩৫৪৭১-৬.
  2. paramagnetism ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৫ নভেম্বর ২০১৩ তারিখে. Encyclopædia Britannica
  3. "Magnetic Properties"Chemistry LibreTexts (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৩-১০-০২। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০১-২১ 
  4. উচ্চ মাধ্যমিক পদার্থবিজ্ঞান। ৫ম অধ্যায়: শাহাজাহান তপন। পৃষ্ঠা ২১৫।