পোয়ামক্কা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
পোয়ামক্কা

পোয়ামক্কা (অসমীয়া: পোৱামক্কা) আসামের কামরূপ জেলার হাজোর গরুড়াচল পাহাড়ে অবস্থিত ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র স্থান [১]। সুফি সাধক শ্বেখ জালালুদ্দিন ওরফে গিয়াসুদ্দিন আউলিয়াই কয়েকজন আউলিয়ার সহিত ইসলাম ধর্মের বাণী প্রচার করেছিলেন । তাঁর মৃত্যুর পর সেখানেই মাজার প্রতিষ্ঠা করা হয় । এখানে প্রাপ্ত একটি ফার্সি লিপির মতে মোগল সম্রাট শ্বাহজাহানের রাজত্বকালে ১৬৫৭ সালে লুৎফুল্লা শ্বিরাজী পোয়ামক্কা মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন [২]

নামাকরণ[সম্পাদনা]

কথিত আছে যে মক্কা থেকে এক পোয়া মাটি এনে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছিল তাই পোয়ামক্কা নামকরণ হয়েছে[৩] । কথিত আছে যে এই মসজিদ দর্শন করিলে পবিত্র মক্কা দর্শনের এক চতুরাংশ পুণ্য অর্জন হয় । এটি হাজোর পঞ্চতীর্থের অন্যতম ও উত্তর-পূর্ব ভারতের সর্বোচ্চ পবিত্র ইসলামিক উপাসনাস্থল ।

ইতিহাস[সম্পাদনা]

১১৯৩ সালে ইরানের তাবৃজ নামক স্থানে সুলতান গিয়াসুদ্দিন ওরফে শ্বেখ জালালুদ্দিন জন্মগ্রহণ করেন[৪] । তিনি তাব্রিজের বাদশাহ ছিলেন । পরবর্তী সময়ে তিনি সুফীবাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে নিজ পুত্রকে সিংহাসনে বসিয়ে বাগদাদে গমণ করেন ।তারপর তিনি পীর শ্বেখ সাহাবুদ্দিন সহরওয়াৰ্দীর আউলিয়া হিসেবে থাকেন । এরপর তিনি সায়দ তাবৃজি ও আজমিরে গিয়ে খাজা ময়নুদ্দিন সিদ্দির সঙ্গে যোগদান করেন । পরবর্তী সময়ে তিনি কয়েজকন আউলীয়াকে একত্রে করে ইসলাম ধর্ম প্রবর্তনের জন্য আসামে আসেন । ১৩৮৮ সালে গিয়াসুদ্দিনের মৃত্যুর পর গরুড়াচল পাহাড়ে ইসলাম ধর্ম প্রচার পূর্ব হইতে অধিক বৃদ্ধি পায় [৪]। দরগাহ দেখাশুনা করার জন্য পাইক ও ফকিরদের এখানে স্থাপন করা হয় । ফকিরদের এই অঞ্চলটি বর্তমানে ফকিরটোলা নামে পরিচিত । এক ফার্সী লিপি অনুসারে শ্বাহজাহানের রাজত্বকালে ১৬৫৭ সালে লুৎফুল্লা শ্বিরাজী পোয়ামক্কা মসজিদ নির্মাণ করেন । ১৬৮২ সালে আহোম স্বর্গদেউ মোঘল থেকে গুয়াহাটি অধিকার করে তিনি এই মসজিদের দেখাশুনা করেছিলেন । হাজোর পোয়ামক্ক অসমের সর্বপ্রথম মসজিদ[৪]

পর্যটন[সম্পাদনা]

হাজোর পোয়ামক্কা অসমের একটি উল্লেখযোগ্য পর্যটনস্থল[৫] । ইসলাম ধর্মাবলম্বী ব্যক্তির জন্য এই স্থান অত্যন্ত পবিত্র যদিও অন্যান্য ধর্মাবলম্বী ব্যক্তিরা এই স্থান পবিত্র রূপেই জ্ঞান করেন[৬]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Powa Mecca - Hajo"  line feed character in |title= at position 13 (সাহায্য)
  2. "Powa Mecca" 
  3. কাকতি, দীনেশ। "হাজো হেন নাম" 
  4. Mumtaz, Nahida (২০১০)। SUFIS AND THEIR CONTRIBUTION TO THE CULTURAL LIFF OF MEDIEVAL ASSAM IN 16-17"' CENTURY। আলিগড়, উত্তৰ প্ৰদেশ: আলিগড় মুছলিম বিশ্ববিদ্যালয়। পৃষ্ঠা ৮৩–৮৮।  line feed character in |title= at position 37 (সাহায্য)
  5. বৰুৱা, প্ৰিয়াংকু নাৰায়ণ। "অসমৰ ঐতিহাসিক সমলসমূহৰ সু-সংৰক্ষণ হোৱা উচিত" [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  6. হুছেইন, জাকিৰ। "অসমীয়াৰ সাম্প্ৰদায়িক সম্প্ৰীতি"। ১০ আগস্ট ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ মে ২০২০