পোন্নানী জুমা মসজিদ
পোন্নানী জুমা মসজিদ অথবা পোন্নানী ভালিয়া জুমুয়াত পল্লী হলো ভারতের কেরালা রাজ্যের অন্তর্গত মালাপ্পুরাম জেলায় অবস্থিত একটি মসজিদ। মসজিদটি কেরালার মুসলিম সমাজের মসজিদগুলোর মধ্যে ঐতিহাসিক গুরুত্ব বহন করে। এক সময় মালাবরের "ছোট মক্কা" নামে পরিচিত, পোন্নানী জুমা মসজিদ পোন্নানীর বুদ্ধিবৃত্তিক সমাজে গুরুত্ববহ অবদান রেখেছিল। সে সময় মসজিদটি ছিল পোন্নানীতে জ্ঞান অন্বেষণকারীদের সদর দপ্তর। [১][২][৩][৪]
ইতিহাস
[সম্পাদনা]মালাবরের কালেক্টর উইলিয়াম লোগানের লেখা মালাবর ম্যানুয়েল বইতে উল্লেখ আছে যে, পোন্নানী গ্র্যান্ড জুমা মসজিদ ১৫১০ (৯২৫ হিজরি) সালে শেখ জইনুদ্দিন নির্মাণ করেন। [৫] অনেকে মনে করেন মসজিদটির নির্মাণকাজ হয়ত ১৫১৯ সালে শুরু হয় কারণ এই সালটি আরবি ৯২৫ হিজরি সালের সমসাময়িক। শেখ জইনুদ্দিন ইবনে আলি ইবনে আহমেদ মাবারি যিনি মহান জইনুদ্দিন মাখদুম নামেও পরিচিত, ছিলেন এই মসজিদটির নির্মাতা। তিনি ১৫২২ সালের জুলাই মাসে মৃত্যুবরণ করেন। তাই ধারণা করা হয় মসজিদটির নির্মাণ কাজ তার মৃত্যুর আগে সম্পন্ন হয়েছিল। পোন্নানী গ্র্যান্ড জুমা মসজিদের অভ্যন্তর ৯০ ফুট লম্বা ও ৬০ ফুট চওড়া। [৫]
মসজিদটির নির্মাণকাজ শেষ হলে, শেখ জইনুদ্দিন মাখদুম নিজেই মসজিদটিতে শিক্ষকতার কাজ শুরু করেন। ধারণা করা হয় মালাবরের পল্লিদার ব্যবস্থার সুত্রপাত এই মসজিদের হাত ধরেই শুরু হয়। [৫]
বাতির সামনে বসা
[সম্পাদনা]এই মসজিদটির ভেতরে স্থাপন করা তেলের চেরাগের সামনে বসে ধর্ম নিয়ে লেখাপড়া করার একটি ঐতিহ্য ছিল। যারা এই কাজটি করত তারা মাখদুমের কাছ থেকে মুসলিয়ার খেতাব পেত। এই খেতাব অর্জনের উদ্দেশ্যে সারা মালাবর হতে ছাত্ররা মসজিদটিতে আসত। এভাবে তেলের বাতির পাশে বসে ধর্মীয় শিক্ষা নিয়ে লেখাপড়া করা ও মুসলিয়ার খেতাব অর্জন করাকে 'বাতির সামনে বসা' হিসেবে অভিহিত করা হয়। [৬]
উইলিয়াম লোগানের মালাবর ম্যানুয়ালে উল্লেখ আছে ১৮৮৭ সালে বাইরের বিভিন্ন জায়গা হতে ৪০০ মানুষ পোন্নানী গ্র্যান্ড মসজিদে লেখাপড়া করার উদ্দেশ্যে এসেছিল। এদের মধ্যে যারা মসজিদের ঘনিষ্ট ছিলেন তাদের একজন হলেন কুনজায়ান মুসলিয়ার। তিনি উত্তর মালাবরের অধিবাসী ছিলেন এবং ২০০ বছর আগে বসবাস করতেন। তিনি নুলমুহাম্মাদ ও কাপ্পাপাত নামক দুটি বই লিখেন। আরেকজন হলেন উমের খাজি। তিনি একজন কবি ও সাহসী ব্যক্তি ছিলেন এবং ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করেন। মামবুরান থানগাল ছিলেন মসজিদটির পরিদর্শক।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ Pilgrim Centres in Kerala, Category। "Ponnani Juma Masjid"। keralatourism.org। keralatourism। সংগ্রহের তারিখ ৭ সেপ্টেম্বর ২০২১।
- ↑ Youtube, Asianetnews। "സ്പെഷ്യല്Ponnani Valiya Juma Masjid :Ramadan Special റംസാന്"। Asianetnews। Asianetnews। সংগ্রহের তারিখ ৭ সেপ্টেম্বর ২০২১।
- ↑ K I, ABIN। "Symbol of a glorious past"। asianage.com। THE ASIAN AGE। সংগ্রহের তারিখ ৭ সেপ্টেম্বর ২০২১।
- ↑ Marakkara, Subair। "Emergence and evolution of Mahal system in Kerala"। muslimheritage.in। Kerala Muslim Heritage Foundation। সংগ্রহের তারিখ ৭ সেপ্টেম্বর ২০২১।
- ↑ ক খ গ Abdurahman, Prof. KV (১৯৯৮)। Mappila Charithra Shakalangal। Ponnani: Muslim Service Society।
- ↑ Manorama, Correspondent। "Why Ponnanni is the 'Mecca' of Malabar"। onmanorama.com। Malayala Manorama। সংগ্রহের তারিখ ৭ সেপ্টেম্বর ২০২১।