পূর্ব পাকিস্তান হেলিকপ্টার সেবা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
হেলিকপ্টার সেবার একটি পোস্টার

পূর্ব পাকিস্তান হেলিকপ্টার সেবা বলতে ১৯৬০-এর দশকে পূর্ব পাকিস্তানে পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স (পিআইএ) দ্বারা পরিচালিত নির্ধারিত হেলিকপ্টার পরিষেবাকে বোঝায়। এটি ছিল বিশ্বের প্রথম দিকের বিমান পরিষেবাগুলোর মধ্যে ও ইতিহাসের সবচেয়ে বিস্তৃত হেলিকপ্টার নেটওয়ার্কগুলোর মধ্যে একটি।[১][২]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

হেলিকপ্টার রুটের মানচিত্র

১৯৫০-এর দশকে পূর্ব পাকিস্তানের প্রত্যন্ত অঞ্চলে মার্কিন তেল ও গ্যাস অনুসন্ধানের সময় বেসামরিক বিমান চলাচলের জন্য হেলিকপ্টারে প্রতি পাকিস্তানের আগ্রহ শুরু হয়।[১] ১৯৬৩ সালে জাতীয় বিমান সংস্থা পিআইএ (যেটি কলকাতা-ভিত্তিক ওরিয়েন্ট এয়ারওয়েজ থেকে উদ্ভূত হয়েছিল) ঢাকা ও আঞ্চলিক শহরগুলোর মধ্যে নির্ধারিত হেলিকপ্টার ফ্লাইট চালু করেছিল। পূর্ব পাকিস্তানের ব-দ্বীপ অঞ্চলে স্বল্প দূরত্বের অপারেশনের জন্য পিআইএ সিকোরস্কি এস-৬১ এনএস ব্যবহার করে নির্ধারিত হেলিকপ্টার রুটের একটি নেটওয়ার্ক স্থাপন করে। এর প্রথম বাণিজ্যিক ফ্লাইট ২৫ নভেম্বর ১৯৬৩ সালে হয়েছিল। পূর্ব পাকিস্তানি পাট শিল্পের কেন্দ্র ঢাকা ও খুলনা; এবং ঢাকা ও ফরিদপুরের মধ্যে প্রথম রুট ছিল।[৩]

পিআইএ এস-৬১এনএস চারজন ক্রু সদস্য ও ১,৮০০ পাউন্ড কার্গো সহ মোট ২৪ জন যাত্রী বহন করার জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছিল। প্রথম পাঁচজন পাইলটকে ব্রিটিশ ইউরোপিয়ান এয়ারওয়েজ (বিইএ)-এর সাথে ইংল্যান্ডের কিডলিংটনের একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল, যেখানে তারা ব্রান্টলি বি-২ হালকা হেলিকপ্টারটি চালাতে শিখেছিল। এরপর তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কানেকটিকাটে সিকোরস্কির কারখানায় এস-৬১এনতে রূপান্তরিত হয়। তারা এস-৬১এনের বিতরণের আগে হিলার ইউএইচ-১২ই৪ রুটে উড্ডয়নের জন্য পাকিস্তানে ফিরে আসে।[৩]

খুলনায় হেলিকপ্টার রুট আকাশপথে ২১ ঘন্টার ওভারল্যান্ড ভ্রমণকে ৩৭ মিনিটে কমিয়ে দেয়।[৩] নেটওয়ার্কের আওতাভুক্ত ২০টি শহর ও নগর ছিলো,[১] যথা বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, চট্টগ্রাম, মংলা, কুষ্টিয়া, বরিশাল, চাঁদপুর, সন্দ্বীপহাতিয়া উপজেলা। একটি টিকিটের গড় মূল্য ছিল ২৫ টাকা। এটি সেই সময়ে বিশ্বের বৃহত্তম বাণিজ্যিক হেলিকপ্টার নেটওয়ার্ক ছিল।[১]

পাকিস্তান আন্তর্জাতিক এয়ারলাইন্স ফ্লাইট ১৭ সেবার একমাত্র বিমান দুর্ঘটনায় জড়িত ছিল।[৪]

পিআইএ ১৯৬০-এর দশকের শেষের দিকে অভ্যন্তরীণ কার্যকলাপের জন্য ফিক্সড উইং এয়ারক্রাফ্টে কাজ করা শুরু করে। আধুনিক বাংলাদেশে অনেক এয়ারলাইন্স অভ্যন্তরীণ কার্যক্রমের জন্য টার্বোপ্রপ প্লেন ব্যবহার করে।

বিমানবহর[সম্পাদনা]

পূর্ব পাকিস্তানে পিআইএ হেলিকপ্টার বহর
আকাশযান বহর ক্রম যাত্রী রুট টীকা
এম মোট
সিকোরস্কি এস-৬১ ২৪ দেশীয়
মোট

দুর্ঘটনা[সম্পাদনা]

২ ফেব্রুয়ারী ১৯৬৬ তারিখে, একটি সিকরস্কি এস-৬১ হেলিকপ্টার দ্বারা পরিচালিত ফ্লাইট ১৭, প্রধান গিয়ারবক্স ব্যর্থ হওয়ার পরে পূর্ব পাকিস্তানে একটি নির্ধারিত অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটে বিধ্বস্ত হয়, এতে ২৪ জন যাত্রী ও ক্রু-এর মধ্যে ২৩ জন নিহত হয়।[৪]

চিত্রশালা[সম্পাদনা]

আরো দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. । ১৩ ডিসেম্বর ১৯৬৩ http://content.time.com/time/magazine/article/0,9171,875483,00.html  |শিরোনাম= অনুপস্থিত বা খালি (সাহায্য)
  2. "1965 – 50 years ago today: PIA has become efficient"Dawn। ১৪ মার্চ ২০১৫। 
  3. "Aircraft of Old Days"History of PIA - Pakistan International Airlines 
  4. UK CAA Document CAA 429 World Airline Accident Summary