পূর্ব তুর্কিস্তান স্বাধীনতা আন্দোলন
পূর্ব তুর্কেস্তান স্বাধীনতা আন্দোলন, বা জিংজিয়াং (শিনচিয়াং) স্বাধীনতা আন্দোলন অথবা উইঘুর স্বাধীনতা আন্দোলন এমন একটি রাজনৈতিক ও সামাজিক আন্দোলন যার প্রধান লক্ষ্য চীনের শিংচিয়াং স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলকে উইঘুর জাতির জন্য এক স্বাধীন দেশে পরিণত করা যার নাম হবে "পূর্ব তুর্কেস্তান"। ১৯৪৯ সালে গণচীন এই অঞ্চলটিকে চীনের শিংচিয়াং প্রদেশ বলে ঘোষণার পর থেকেই অঞ্চলটি চীনের নিয়ন্ত্রণে আছে।

উইঘুররা প্রধানত তারিম অববাহিকা এবং তাকলামাকান মরুভু্মির নানা মরুদ্দ্যানে বসবাসকারী তুর্কি বংশোদ্ভুত কৃষিজীবী মানুষ।কিছু উইঘুর উৎস মতে,তারা খ্রিস্টাব্দ নবম ও দশম শতক থেকেই ইসলাম ধর্মের অনুসারী।এসব উৎস এটাও দাবি করে যে উইঘুররা পূর্ব তুর্কেস্তানে ৪০০০ বছর ধরে বসবাস করে আসছে।এই দাবির পেছনে মূল ভিত্তি তথাকথিত "তারিম মমি" (এক ৩৮০০ বছরের পুরনো মমি) যা তারিম অববাহিকায় পাওয়া গিয়েছিল।

চীন,পূর্ব তুর্কেস্তান স্বাধীনতা আন্দোলনের পক্ষে যেকোন সমর্থনকে "জঙ্গীবাদ,সন্ত্রাসবাদ ও বিচ্ছিন্নতাবাদের" অংশ বলে মনে করে।বর্তমানে এই আন্দোলন যারা সমর্থন করে তাদের মধ্যে আছে সন্ত্রাসবাদী "তুর্কিস্তান ইসলামিক পার্টি" যা মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন জঙ্গী সংগঠনের (আইএস এবং আল কায়েদা সহ নানা সংগঠন) সাথে যুক্ত।যাইহোক, বর্তমানে 'বিশ্ব উইঘুর কংগ্রেসের' মত উইঘুর সমর্থক দলগুলোকেও (যাদের সাথে সন্ত্রাসবাদীদের যোগসাজশ পাওয়া যায় না) চীন সরকার "জঙ্গী সংগঠন" হিসেবে আখ্যা দিয়ে থাকে।
সম্প্রতি,চীনের বিরুদ্ধে শিনচিয়াং এর উইঘুরদের আটকে রাখা ও "পুনঃশিক্ষাদান" এর নামে উইঘুর সম্প্রদায়ের ধর্ম,সংস্কৃতি,ভাষা এবং পরিচিতিকে মুছে ফেলার অভিযোগ ওঠায় পূর্ব তুর্কেস্তানের স্বাধীনতা আন্দোলনের বিষয়টি আন্তর্জাতিক মহলে গুরুত্বের সাথে আলোচিত হচ্ছে।শিংজিয়াং (জিংজিয়াং) চীনের এমন একটি বহুজাতিক প্রদেশ যেখানে কোন একটি সম্প্রদায়কে সংখ্যাগরীষ্ঠ বলা যায় না।উইঘুররা এই প্রদেশের মোট জনসংখ্যার ৪৫%,যেখানে হান চাইনীজ (যারা সমগ্র চীনে সবচেয়ে বড় ভাষাভাষী সম্প্রদায়) এর সংখ্যা প্রায় ৪০%।
পূর্ব তুর্কেস্তানের স্বাধীনতার বৈধ ভিত্তি[সম্পাদনা]
পূর্ব তুর্কেস্তানের স্বাধীনতার পক্ষে যুক্তি[সম্পাদনা]
শিংচিয়াং(পূর্ব তুর্কেস্তান) এর স্বাধীনতাকে সমর্থনকারীরা সাধারণত দুটি পথ বেছে নেন।এদের মধ্যে বিতর্কিত পথটি হল - জঙ্গিবাদ,যার অর্থ চীনের বিভিন্ন স্থানে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করা, বিশেষ করে শিংচিয়াংকে স্বাধীন করার উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে হান চাইনীজ বংশোদ্ভুত লোকদেরকে আক্রমণ করা । সাধারণত সকল সার্বভৌম রাষ্ট্র ও আন্তঃসরকারি সংগঠনগুলি সন্ত্রাসবাদকে নিন্দা জানায়।অন্যদিকে,দ্বিতীয় পথটি হল শান্তিপূর্ণ আন্দোলন ।শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে সক্রিয় ও সর্বাধিক পরিচিত দুটি সংগঠন হল "বিশ্ব উইঘুর কংগ্রেস" যেটা জার্মানিতে অবস্থিত,এবং "উইঘুর আমেরিকান এসোসিয়েশান" যেটা যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত।
উন্নতবিশ্বের দেশগুলির কাছে শিংচিয়াং এর স্বাধীনতার পক্ষে সক্রিয়দের মধ্যে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলনকারীরাই বেশি গ্রহণযোগ্য।এর সপক্ষে বেশ কিছু কারণ রয়েছে।যেহেতু শিংচিয়াংকে ঘিরে বিচ্ছিনতাবাদীদের নানা ঐতিহাসিক দাবির বৈধতা নিয়ে উন্নত বিশ্বের বেশিরভাগ দেশই সন্দীহান,সেহেতু বিচ্ছিনতাবাদীরা শিংচিয়াং এ চীন সরকার দ্বারা উইঘুরদের মানবাধিকার লঙ্ঘন ও তা নিরসনে স্বাধীনতার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন।
শিংচিয়াং এর স্বাধীনতার পক্ষে বিচ্ছিনতাবাদীদের ঐতিহাসিক একটি যুক্তি রয়েছে, এই যুক্তি অনুসারে শিংচিয়াং চীনের অংশ হবার পরিবর্তে - চীনকে শিংচিয়াঙে এক ঔপেনিবেশিক দখলদার শক্তি হিসেবে দেখানো হয়।এই যুক্তির ভিত্তি হচ্ছে ,গণচীন ১৯৪৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং এই নতুন সরকারব্যবস্থা ঐতিহাসিক চৈনিক সাম্রাজ্য(যেমন, চিং রাজবংশ) বা চীন প্রজাতন্ত্র (যা বর্তমানে তাইওয়ানে) নয়।তাই গণচীন বৈধভাবে শিংচিয়াংকে তার অংশ দাবি করতে পারেনা।যেহেতু চিং রাজবংশের শাসনামলে চৈনিক সাম্রাজ্যে বহু অঞ্চল সংযুক্ত ছিল যারা মূলত নামে সাম্রাজ্যভুক্ত হলেও প্রকৃতপক্ষে স্বাধীনভাবে পরিচালিত হত (এমনকি আবাদযোগ্য ভূমি ইত্যাদির বিচারে একটি ভৌগোলিক রেখা টেনে হান চাইনিজদের থেকে অন্যদের আলাদা করে দেখা হত,যে রেখাটি বর্তমানে হেইহে-টেংচং রেখা নামে পরিচিত),সেহেতু এই যুক্তি অনুযায়ী শুধু হান চাইনীজরাই চীনের প্রকৃত নাগরিক, বাকিরা নয়।
উইঘুরদের সমর্থক কিছু দল;এটা বলে যে,শিংচিয়াঙে উইঘুরদের ৪০০০ বছরের ইতিহাস আছে,যেটি সত্য বা মিথ্যা কোনটাই প্রমাণিত হয় নি।তারা দাবি করে চাইনিজ কমিউনিস্ট পার্টি বা তার পূর্বসূরী চিং রাজবংশ কেউই চীনের বৈধ শাসক নয় (এমনকি অনেকে দাবি করে তারা চীনাই নয়)।তারা আরো দাবি করে চীনের "মহাপ্রাচীর" এর অন্যপাশে (পশ্চিমপাশে) যেসব অঞ্চল আছে সেগুলো চীনের নয়।এই যুক্তি অবশ্য সন্দেহজনক কারণ গত ২০০০ বছরে শিংচিয়াং এ চীনের নিয়মিত উপস্থিতি ছিল।তাছাড়া সেসময় "দেশের সীমানা"র ধারনাও অন্যরকম ছিল।
পূর্ব তুর্কেস্তানের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে যুক্তি[সম্পাদনা]
পূর্ব তুর্কেস্তানের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে যারা আছে তাদের মধ্যে প্রধান হল গণচীন সরকার এবং তার সমর্থকগোষ্ঠী।চীন দাবি করে খ্রিস্টপূর্ব ৬০ সাল থেকেই শিনচিয়াং চীনের একটি অংশ এবং হান রাজবংশের শাসনামলে "পশ্চিমাঞ্চলের একটি অংশ" হিসেবে এটিকে চীনের ভেতর আনা হয়।তাছাড়া ঐতিহাসিক যেসব সময় শিনচিয়াং চীনের শাসনে ছিল না সেসময়েও চীন শিংচিয়াংকে তার অংশ হিসেবে দাবি করেছে,তার প্রমাণ হিসেবে দেখানো হয় শিংচিয়াং যতবারই অন্য কোন শক্তি থেকে চীনের শাসনে ফিরে এসেছে সেটাকে চীনে "পূনর্বার জয় করা" বা "মুক্ত করা" বলে অভিহিত করা হয়েছে।
তাছাড়া যদি সাম্প্রতিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা হয়, ১৯১২ সালে চিং রাজবংশের পতনের পর চীন প্রজাতন্ত্রের সূচনা হয়,ও তার,পর গণচীনের জন্ম হয়।এক্ষেত্রেও শিনচিয়াং এর উপর গণচীনের অধিকার আছে বলা যায়।সাধারণত কোন স্থানে কোন দেশের সার্বভৌমত্ব বিচার করা হয় কীভাবে আন্তর্জাতিকভাবে সেটিকে দেখা হয় তার বিচারে।চিং রাজবংশের সময় থেকেই শিনচিয়াং এর উপর চীনের সার্বভৌমত্ব পৃথিবীর বেশিরভাগ দেশ স্বীকার করেছিল।চীন প্রজাতন্ত্র ,প্রতিষ্ঠিত হবার পর সেই মর্যাদা গ্রহণ করে।যেহেতু গণচীন, সেই চীন প্রজাতন্ত্রের উত্তরসূরী হিসেবে পৃথিবীর বেশিরভাগ দেশের কাছে স্বীকৃত সেহেতু শি্নচিয়াং এর উপর সার্বভৌমত্ব হওয়া উচিত গণচীনের।
তাছাড়া,বিংশ শতাব্দিতে চীনের শাসনব্যবস্থা দূর্বল হয়ে পড়লে শিনচিয়াং এর অনেক স্থান স্বাধীন হয়ে পড়লেও বিংশ ও একবিংশ শতাব্দি জুড়ে পৃথিবীর বেশিরভাগ দেশ শিনচিয়াং কে চীনের একটি অংশ হিসেবে বিবেচনা করে এসেছে, সেটা চিং রাজবংশ হোক, বা চীন প্রজাতন্ত্র বা গণচীন যেটিই হোক না কেন।
প্রস্তাবিত স্বাধীন দেশের নাম[সম্পাদনা]
সরকারিভাবে,অঞ্চলটিকে জিংজিয়াং বা শিনচিয়াং নামে ডাকা হয় (উইঘুর: شىنجاڭ; ইংরেজি: Xinjang; চাইনীজ: 新疆; পিনিন: Xīnjiāng ,এছাড়াও ডাকা হয় সিনকিয়াং "Sinkiang")।এই নামটি মূলত চাইনীজ ম্যান্ডারিন থেকে এসেছে যার অর্থ "নতুন সীমান্ত"।নামটির সূত্রপাত হয় ১৮৮৪ সালে চিং রাজবংশের সময়,যখন শিনচিয়াং কে "চীনের একটি প্রদেশ" হিসেবে ঘোষণা করা হয়।তার পূর্বে এই জায়গাটি "ঝুনবু" (準部) এবং "হুইজিয়াং" নামে পরিচিত ছিল যার অর্থ "মুসলিম-অঞ্চল"।১৯৫৫ সালের ১লা অক্টোবর ,গণচীন শিনচিয়াং এর প্রশাসনিক অবস্থার কিছু পরিবর্তন ঘটায় ও একে "প্রদেশ" থেকে "স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল" ঘোষণা করে।সরকারি নামে "স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল" কথাটা যোগ করার সাথে সাথে "উইঘুর" নামটিও যোগ করা হয়।এ অঞ্চলের ৪৫.৮৪% উইঘুর অধিবাসীদের কথা ভেবেই এই পরিবর্তন করা হয়।
শিংচিয়াং এর স্বাধীনতার সমর্থকরা পূর্ব তুর্কেস্তান (বা পূর্ব তুর্কিস্তান) নামটিই পছন্দ করে।নামটি উইঘুর এবং তুর্কি বংশোদ্ভুত জনপদ - দুইয়েরই প্রতিনিধিত্ব করে বলে তারা মনে করে।বর্তমানে, কোন দেশ বা আন্তঃসরকারি সংস্থা "পূর্ব তুর্কেস্তান" নামটি ব্যবহার করেনা।
উইঘুর স্বাধীনতাকামীদের জাতিগত পরিচয়[সম্পাদনা]
অতীতে বিভিন্ন সময়ে শিনচিয়াং এ নানা স্বাধীনতা আন্দোলন হয়েছে, যেমন পূর্ব তুর্কেস্তান বা অন্য নানা জাতিগোষ্ঠীর লোকদের জন্য স্বাধীনতার দাবি।বর্তমানে যে আন্দোলনটি চলছে সেটি মূলত উইঘুর জাতি কেন্দ্রিক,তাই একে কখনো কখনো 'উইঘুর স্বাধীনতা আন্দোলন' ও বলা হয়ে থাকে।যেহেতু ঐতিহাসিকভাবে উইঘুরদের কোন নির্দিষ্ট সীমানাজুড়ে কোন সার্বভৌম রাষ্ট্র ছিল না,তাই নানা সময়ে চীন,রাশিয়া,মঙ্গোলিয়া,ম্যানচুরিয়া,তিব্বত,ইরান,মধ্য এশিয়া ও দক্ষিণ এশিয়ার নানা দেশ বা জাতিসত্তার দ্বারা তাদের 'সংস্কৃতি' প্রভাবিত হয়েছে ।
সাম্প্রতিককালের উইঘুর স্বাধীনতা আন্দোলন আর শিনচিয়াং এর ঐতিহাসিক স্বাধীনতা আন্দোলনগুলির মধ্যে কোন সংযোগ আছে কি না তা বিতর্কের বিষয়।গণচীন উইঘুর জনগোষ্ঠীকে 'শিয়াংনু কনফেডারেশন' (ঐতিহাসিকভাবে চীনের একটি প্রদেশ) এর উত্তরসূরী মনে করে এবং দাবি করে এরা 'ইসলাম দ্বারা বিষাক্ত' হয়ে নিজেদের জাতীয় পরিচয় নিয়ে সন্দিহান হয়ে পড়েছে।অন্যদিকে, পূর্ব তুর্কেস্তানের স্বাধীনতাকামীরা অভিযোগ করে, চীনের দেয়া 'উইঘুরের সংজ্ঞা' দেয়া হয়েছে শিনচিয়াং এর তুর্কি বংশোদ্ভূত ও অন্যান্য জনপদের মধ্যে সমস্যা সৃষ্টির উদ্দেশ্য।গবেষকরা ধারণা করে থাকেন উইঘুরদের পরিচিতি নিয়ে নানা উৎসের নানা তথ্য কালবৈষম্যের সৃষ্টি করেছে যার অর্থ ঐতিহাসিক তথ্য বিকৃত করা হচ্ছে।
প্যান-মঙ্গোলিজম[সম্পাদনা]
প্যান-মঙ্গোলিজম বা বিশ্বের নানা স্থানে ছড়িয়ে থাকা 'মঙ্গলজাতির ঐক্যের' স্বার্থে মঙ্গলেরা নানা সময়ে উত্তর শিনচিয়াঙের জুনগারিয়ার 'ওইরাত জুনগার' অঞ্চলকে মঙ্গোলিয়া রাষ্ট্রের সাথে সংযুক্ত করার প্রস্তাব করেছে।১৯১৮ সালে 'ট্রান্সবৈকাল কোসাক' গোত্রের গ্রেগরি সেমিওনভ 'গ্রেট মঙ্গল স্টেট' প্রতিষ্ঠার কথা ঘোষণা করেন এবং তিনি শিনচিয়াং এর মঙ্গল অধ্যুষিত "ওইরাত অঞ্চল', ইনার(আভ্যন্তরীণ) মঙ্গোলিয়া অঞ্চল,আউটার (বহিঃস্থ) মঙ্গোলিয়া অঞ্চল, তান্নু উরিয়ানকাই,খভদ,হু-লেন-পেই-আরহ এবং তিব্বতকে যুক্ত করে একটি বিশাল মঙ্গোলিয়ান রাষ্ট্র বানাতে চেয়েছিলেন। আগভান দর্জিয়েভ, ওইরাতের কিছু অঞ্চলকে (যেমন তারবাগাতাই,ইলি,আলতাই) 'বহিঃস্থ মঙ্গোলিয়া' প্রদেশের অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব করেন।কিন্তু এতে চীনারা প্ররোচিত হতে পারে ভেবে সোভিয়েত ইউনিয়ন সমর্থন দিতে রাজি হয়নি।
প্যান-তুর্কিজম[সম্পাদনা]
প্যান তুর্কিজম বা তুর্কি ঐক্যের সমর্থক এবং পূর্ব তুর্কেস্তানের স্বাধীনতাকামী,'জাদিদ' গোত্রভুক্ত মোহাম্মদ আমিন বুঘরা ও মাসুদ সাবরি 'উইঘুর' শব্দকে সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাখান করেছেন কারণ তাদের মতে এটি সোভিয়েত ও চাইনীজদের ( সেনাপতি শেন শিকাই এর নেতৃত্বে) চাপিয়ে দেয়া একটি নাম।তারা এর বদলে 'তুর্কি-জাতি' (চাইনীজ: 突厥族; পিনিন: tūjué zú) শব্দটি ব্যবহার করেন।মাসুদ সাবরি, চাইনীজ 'হান মুসলিম' বা 'হুই গোত্রভুক্ত' দের আলাদা জনগোষ্ঠী মনে করেন।বুঘরা, তার নিজের লোকদের পরিচয় হিসেবে "তুর্কি" শব্দটি ব্যবহারের দাবি জানান এবং তুর্কি মুসলিমদের চীনের মধ্যে নানা গোত্রে ভাগ করে তাদের একতা বিনষ্ট করার জন্য চীনা সেনাপতি শেন শিনাই এর নিন্দা জানান।
পূর্ব তুর্কেস্তানের স্বাধীনতার ইতিহাস[সম্পাদনা]

চীন প্রজাতন্ত্রের অধীনে শিনচিয়াং (১৯১২-১৯৪৯)[সম্পাদনা]
পূর্ব তুর্কেস্তানের স্বাধীনতা অর্জনের প্রথমদিকের প্রচেষ্টার অন্যতম ফসল ছিল ক্ষণস্থায়ী 'প্রথম পূর্ব তুর্কেস্তান প্রজাতন্ত্র' (বা তুর্কি ইসলামি পূর্ব তুর্কেস্তান প্রজাতন্ত্র) যার স্থায়ীত্ব ছিল ১৯৩৩ থেকে ১৯৩৪ পর্যন্ত।কাশগার অঞ্চলে চীন প্রজাতন্ত্রের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের পর এই প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়, চীন প্রজাতন্ত্র দুই যুগ যুদ্ধের পর তখনো কাশগার পুনর্দখল করতে পারেনি। চীন সেনাবাহিনীর 'হুই' মুসলিমদের নিয়ে গঠিত ৩৬ তম ডিভিশান, কাশগারের প্রথম যুদ্ধ(১৯৩৩) ও কাশগারের দ্বিতীয় যুদ্ধে(১৯৩৪) জয়ী হবার পর এই প্রজাতন্ত্রকে পুনরায় চীনের সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়।
চীন প্রজাতন্ত্রের শেষ সময়ে যখন সরকার 'চাইনীজ কমিউনিস্ট' দের সাথে গৃহযুদ্ধে ব্যস্ত ছিল তখন জোসেফ স্টালিনের সোভিয়েত ইউনিয়ন শিনচিয়াং আক্রমণ করে এবং ইলিতে (ইনিং শহর) বিদ্রোহ ঘটাতে সাহায্য করে।এই বিদ্রোহের ফলে 'দ্বিতীয় তুর্কেস্তান প্রজাতন্ত্রের' (১৯৪৪-১৯৪৯) সৃষ্টি হয় যা শিনচিয়াং এর উত্তরের তিনটি জেলায় সীমাবদ্ধ ছিল (ইলি,তারবাগাতাই,আলতাই)।রাষ্ট্রটি গোপনে সোভিয়েত ইউনিয়নের সাহায্য পেত।১৯৪৯ সালে গৃহযুদ্ধে জয়ের পর গণচীনের 'লিবারেশন আর্মি',শিনচিয়াংকে পুনরায় চীনে অন্তর্ভুক্ত করে।
গণচীনের অধীনে শিনচিয়াং (১৯৪৯-বর্তমান)[সম্পাদনা]
উনবিংশ শতাব্দির শুরুর দিকে, 'চিং সাম্রাজ্যের' শিনচিয়াং জয়ের ৪০ বছর পর উত্তর শিনচিয়াং এ প্রায় ১৫৫,০০০ হান এবং হুই চাইনীজ ছিল। তাছাড়া,দক্ষিণ শিনচিয়াং এ এর প্রায় দ্বিগুন উইঘুর, ছিল।উনবিংশ শতাব্দির শুরুতে চিং রাজবংশের অধীনস্থ চীনের একটি আদমশুমারি অনুযায়ী শিনচিয়াঙে ৩০% হান এবং ৭০% তুর্কি জনগোষ্ঠীর উপস্থিতি ছিল যা ১৯৫৩ সালের আদমশুমারীতে অস্বাভাবিকভাবে পরিবর্তিত হতে দেখা যায় (৬% হান,৭৫% উইঘুর)।২০১০ সাল নাগাদ অবশ্য হান জনগোষ্ঠীর অনেককে শিনচিয়াঙে ফেরত আনার ফলে এ সংখ্যার অনেক পরিবর্তন ঘটেছে (হান ৪০.৫৭%, উইঘুর ৪৫.২১%)। প্রফেসর স্টানলি ডব্লিউ টুপস মনে করেন,জনসংখ্যার বর্তমান অনুপাতটি অনেকটা চিং সাম্রাজ্যের সময়ের মত।১৮৩১ সালের পূর্বে,দক্ষিণ শিনচিয়াং এর তারিম বেসিনের আশেপাশে মাত্র কয়েকশ চীনা বণিক বাস করত এবং অল্প কিছু উইঘুর উত্তর শিনচিয়াং এ বাস করত।বর্তমানেও দক্ষিণে চীনাদের সংখ্যা ও উত্তরে উইঘুরদের সংখ্যা অনেক কম।
উইঘুর জাতীয়তাবাদীরা দাবি করে থাকে, ১৯৪৯ সালে শিনচিয়াঙে হান চাইনীজের সংখ্যা ছিল ৫% এবং উইঘুরের সংখ্যা ছিল ৯৫%, যা সঠিক নয়। তারা এসব ক্ষেত্রে সম্পূর্ণভাবে কাজাখ,শাইব ও অন্যান্য গোত্রকে বাদ দেয় এবং এটা ভুলে যায় যে,১৮০০ সালে শিনচিয়াং এর এক-তৃতীয়াংশ মানুষ ছিল হান চাইনীজ। ১৯৫৫ সালে (১৯৫৩ সালে গণচীনের প্রথম আদমশুমারীর পর), শিনচিয়াং এর ৫১.১ লক্ষ মানুষের মধ্যে ৭৩% এর কাছাকাছি ছিল উইঘুর।যদিও শিনচিয়াং কে 'উইঘুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল' বলা হয় কিন্তু ১৯৫৪ সাল থেকেই শিনচিয়াং এর ৫০% জায়গা এমন ১৩ টি জনপদ অধ্যুষিত যারা উইঘুর নয়।১৯৫৫ সাল থেকে উইঘুর জনগোষ্ঠী প্রকাশ্যে তাদের ভাষা-সংস্কৃতি তথা তাদের জাতিসত্তার চর্চা করতে পারছে, কারণ এই সমইয়ে প্রথম গণচীন সরকার উইঘুরকে 'হান চাইনীজ' থেকে আলাদা একটি জাতিসত্তা হিসেবে স্বীকার করে। গণচীন সরকার জুনগার অববাহিকার পার্শ্ববর্তী জুনগারিয়াতে হান চাইনীজদের বসতি গড়ার ব্যাপারে সক্রিয় পদক্ষেপ নিয়েছে, ১৯৫৩ সালের পূর্বে শিনচিয়াং এর বেশিরভাগ মানুষ (৭৫%) তারিম অববাহিকার আশে পাশে বসবাস করত।কিন্তু হান চাইনীজদের আগমনের ফলে জুনগারিয়া ও তারিমে বসবাসরত জনসংখ্যার পরিবর্তন হয়েছে।নতুন অভিবাসীরা বেশিরভাগ উত্তরাঞ্চলে জুনগারিয়ার আশেপাশে বাস করছে।জুনগারিয়াতে হান এবং হুই জনগোষ্ঠীর সংখ্যাই বেশি,অন্যদিকে কাশগারিয়ার মত দক্ষিণের জায়গাগুলিতে উইঘুররা সংখ্যাগরীষ্ঠ।জুনগারিয়ার উত্তর ও মধ্য অঞ্চলেই মূলত বেশিরভাগ হান ও হুই চাইনীজ বসবাস করে।আগে থেকে বসবাসরত উইঘুরদের যাতে অসুবিধা না হয় সেজন্য নতুন অভিবাসীদের জন্য চীন সরকার ফাঁকা জায়গাগুলিই বেছে নিয়েছে।লারস-এরিক নায়ম্যান বলেন যে, 'কাশগারিয়া উইঘুরদের স্থানীয় বা নিজস্ব জায়গা কিন্তু জুনগারিয়াতে ১৮০০ থেকেই ক্রমাগত নানা জনপদের অভিবাসন চলে আসছে।'
১৯৮০ এর দশক থেকেই চীনের বিভিন্ন জায়গা থেকে অর্থনৈতিক ও নানা কারণে উত্তর শিনচিয়াং এ উইঘুর ও হানরা অভিবাসিত হচ্ছে। দক্ষিণ শিনচিয়াং এ উইঘুরদের সংখ্যাগরীষ্ঠতা থাকলেও বর্তমানে উত্তর শিনচিয়াং এ হান চাইনীজের সংখ্যা প্রায় ৯০%।দক্ষিণ শিনচিয়াং এ নব্বই লক্ষ উইঘুরের বসবাস এবং জায়গাটি অপেক্ষাকৃত অনুন্নত , অন্যদিকে হান চাইনীজ অধ্যুষিত জুনগারিয়া ও অন্যান্য উত্তরাঞ্চল উন্নত।
১৯৭০ সাল থেকে 'চীনা সরকারের অর্থনৈতিক সংস্কারের' কারণে শহরগুলোতে উন্নয়ন হওয়ায় উইঘুর এবং হানেরা উভয়ই শহরের দিকে ঝুকেছে।তাদের একসাথে কাজ করা বা একে অন্যের সংস্পর্শে আসার ফলে নানা "জঙ্গীবাদী কর্মকাণ্ড" ও ঘটেছে, যেমন '১৯৯৭ সালের উরুমকিতে বাসে বোমা হামলা'।১৯৮০ সাল থেকেই, উত্তর শিনচিয়াঙে হান চাইনিজরা সংখ্যায় নব্বই শতাংশ এবং ১৯৯০ এর মাঝামাঝি থেকে দক্ষিণ শিনচিয়াং এ উইঘুরেরা সংখ্যায় নব্বই শতাংশের কাছাকাছি।১৯৮০ সালে সংস্কারপন্থী নেতা 'হু উয়াওবাং' শিনচিয়াঙে কর্মরত সরকারি কর্মকর্তাদের অপসারণ করে চীনের পূর্বে আনার নির্দেশ দেন।কিন্তু প্ররোচনামূলক বক্তব্যদানের অভিযোগে হু কে ১৯৮৭ সালে অপসারণ করা হয়।শিনচিয়াং এর সুপরিচিত কর্মকর্তা ওয়াং জেন, হু এর সমালোচনা করেন সরকারী কর্মচারীদের নিরাপত্তাকে ব্যাহত করার জন্য।
হুকুউ (বসবাস করার অনুমতি) এর কারণে পূর্বে শিনচিয়াঙে হান চাইনীজদের অভিবাসনে সমস্যা থাকলেও ৯০ এর দশকে অনেকে এখানে আসা শুরু করে।১৯৯৬ সালে শিনচিয়াং এর ১৩.৬% মানুষ "শিনচিয়াং উৎপাদন ও নির্মাণ কর্পোরেশন" বা বিংটুয়ান নামক একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিল।বিংটুয়ানের ৯০% কাজ ছিল কৃষিকেন্দ্রিক এবং এদের ৮৮% কর্মচারী ছিল হান।অবশ্য পরবর্তীতে কর্মচারীদের মধ্যে হান চাইনীজদের সংখ্যা কমেছে।হানদের অভিবাসনের কারণে শিনচিয়াং এ ১৯৮২ সালে ৬৯.৪% কৃষক থেকে বেড়ে ১৯৯০ সালে ৭৬.৭% কৃষক হয়।১৯৯০ এর দশকে তুলোচাষের সময় শিনচিয়াঙে প্রায় ১২ লক্ষ অস্থায়ী চীনা শ্রমিক আসত।শিনচিয়াং এর বাইরে উইঘুরদের কিছু জনপদ আছে, যেমন বেইজিং এ একটি গ্রাম যেখানে কয়েক হাজার উইঘুর বসবাস করে।
২০০০ সালের আদমশুমারী অনুযায়ী, শিনচিয়াং এ উইঘুরের সংখ্যা প্রায় ৪৫%,এর মধ্যে ১২.৮% উইঘুর থাকে উরুমকিতে।সম্পূর্ণ শিনচিয়াং প্রদেশের এক ছোট অংশ হওয়া সত্ত্বেও উরুমকির অবদান এই প্রদেশের ২৫% জিডিপি।বর্তমানে উইঘুররা শহরের দিকে পাড়ি জমায় হালকা, ভারি এবং নানা প্রকারের শিল্পকলকারখানায় চাকরির উদ্দেশ্যে।শিনচিয়াং এ অবশ্য উইঘুরদের তুলনায় হানরাই বেশি শিক্ষিত,ধনী ও বড় বড় কাজে কর্মরত।হানেরা উরুমকি শহরে আসে মূলত অর্থনৈতিক কারণে, অন্যদিকে উইঘুরদের আসার কারণ হতে পারে আইনি ঝামেলা বা পারিবারিক ঝামেলা।হান এবং উইঘুরেরা উরুমকির 'ভাসমান জনগোষ্ঠী'র মত যারা মূলত কাজ করতে আসে।শহরে কাজ,বসবাস সব ক্ষেত্রেই বিভিন্ন গোত্রের মধ্যে আলাদা থাকার একটা প্রবণতা লক্ষ করা যায়।
সমগ্র শিনচিয়াং এ সংখ্যাগরীষ্ঠ না হলেও একক গোত্র বা জনগোষ্ঠীর মধ্যে উইঘুরদের সংখ্যাই বেশি (৪৫%), হান আর হুই জনগোষ্ঠী উত্তর শিনচিয়াং এর যেসব জায়গায় বাস করে সেসব জায়গা উইঘুর অধ্যুষিত দক্ষিণাঞ্চল থেকে টিয়ানশান পাহাড়শ্রেণী দ্বারা আলাদা।
মধ্য এশিয়ায় ১৯৯১ সালে, সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে কাজাখস্তান, কিরগিস্তান,তাজিকিস্তান,তুর্কিমেনিস্তান,উজবেকিস্তান স্বাধীন হবার পর চীন থেকে পূর্ব তুর্কেস্তানের স্বাধীনতার বিষয়টিও পৃথিবীর নানাস্থানে (বিশেষ করে তুর্কি জনগোষ্ঠী দ্বারা) আলোচিত হয়।
অনেকে উইঘুরদের রাষ্ট্র হিসেবে 'উইঘুরস্তান' নামটিও ব্যবহার করেন।পূর্বে এই নাম ব্যবহারকারীরা সোভিয়েত ইউনিয়নের সমর্থনপুষ্ট ছিল, এবং এরা বর্তমানে রাশিয়া, কিরগিস্তান বা কাজাখস্তান এর বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত।অবশ্য,শিনচিয়াং বা সিনকিয়াং বা তুর্কেস্তান বা উইঘুরস্থান নামগুলির কোনটাই দ্বিতীয় কোন জাতিসত্তার ব্যাপারে নয় -সবগুলিই 'পূর্ব তুর্কেস্তানের' ব্যাপারে প্রযোজ্য।তাছাড়াও,স্বাধীনতাকামীরা একই সাথে 'ইসলামিক' এবং 'তুর্কি' দুই পরিচয়ই ব্যবহার করে থাকে শিনচিয়াং এর ব্যাপারে।যেমন কাশগারে প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্রকে নেতারা 'পূর্ব তুর্কেস্তান প্রজাতন্ত্র' বা 'তুর্কেস্তান তুর্কি ইসলামিক প্রজাতন্ত্র' দুই নামেই ডাকতেন।
১৯৯৫ সালে উইঘুর নেতা ঈসা ইউসুফ আলপতেকিন এর ছেলে এরকিন আলপতেকিন "প্রতিনিধিত্ব বঞ্চিত জাতিদের সংগঠন" এর সভাপতি নির্বাচিত হন।
গণচীনের অধীনে শিনচিয়াঙে আরেকটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা ঘটে যখন মুসলিম উইঘুর এবং কাজাখরা উরুমকি শহরে বৌদ্ধ মূর্তি আস্পারার বিরোধীতা করে।এর জের ধরেই মূর্তিটি ২০১২ সালে ভেঙ্গে ফেলা হয়।
মরুদ্দ্যান ভেদে উইঘুরদের দৃষ্টিভঙ্গি[সম্পাদনা]
ভিন্ন ভিন্ন মরুদ্দ্যানে বসবাসরত উইঘুরদের দৃষ্টিভঙ্গি ভিন্ন রকম।চীন ঐতিহাসিক ভাবেই তারপান এবং হামি এলাকার উইঘুরদের সমর্থন দিয়ে এসেছে।তারপান এবং হামির উইঘুররা ,এবং আমিন খোজার মত নেতারা অন্যান্য উইঘুরদের বিরুদ্ধে সবসময় চীনকে সমর্থন করে এসেছে চিং সাম্রাজ্যের সময় থেকে।চিং সাম্রাজ্যের সময় থেকে তারপান ,হামি এসব এলাকা শাসিত হত স্বায়ত্তশাসিত রাজপুত্রদের দ্বারা,অন্যদিকে আলতিশাহর সহ তারিম বেসিনের অন্য উইঘুর অঞ্চলগুলি শাসিত হত বেগদের দ্বারা যারা ছিল চীন সমর্থক উইঘুর।তারপান,হামি এসব জায়গার উইঘুরেরা অর্থনৈতিকভাবে কাশঘার বা অন্য উইঘুর এলাকা থেকে উন্নত ছিল।তারপান,হামিতে ধর্মকে ভালোভাবেই দেখা হত কিন্তু কাশঘার বা খোটানের মত চীন বিরোধী এলাকাতে কঠোর হাতে সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করা হত।তারপান,হামিতে ধর্মীয় ব্যাপারে আইন শিথিল ছিল,কমিউনিস্ট পার্টির মুসলিম নেতাদেরও হজ্জ্বে যাবার ব্যাপারে সরকার উৎসাহিত করত, ১৯৭৯-১৯৮৯ সাল পর্যন্ত তারপানে ৩৫০ টি মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে।হান,হুই চাইনীজরা চীনা সরকারকে ইতিবাচক নজরে দেখে,সরকারও এসন জায়গায় অর্থনৈতিক,ধর্মীয় ও রাজনৈতিক সুবিধা দেয়।১৯৮৯ সালে শিনচিয়াং এ প্রায় ২০,০০০ মসজিদ ছিল যা আগের তুলনায় ৫.৮ গুণ বেশি।বিচ্ছিন্নতাবাদীরা ১৯৯৬ তে সক্রিয় হবার আগে পর্যন্ত চীন ধর্মীয় ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করত না।উরুমকিতে চীনা সরকারের সহায়তায় আধুনিক,বড় বড় মসজিদ এখনো তৈরি হচ্ছে কিন্তু দক্ষিণ শিনচিয়াং এ চীন ধর্মীয় ব্যাপারে অনেক কঠোর ভূমিকা পালন করছে যা উরুমকির বিপরীত চিত্র।
সীমাবদ্ধতা[সম্পাদনা]
শিনচিয়াং এ, কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য এবং সরকারী চাকরিজীবীদের ধর্মীয় কাজে অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়া হয়না তবে সাধারণ নাগরিকেরা ধর্মপালন ও রমজান মাসে রোজা রাখতে পারেন, সরকারি স্কুলে শিক্ষার্থীদের ধর্মীয় কাজে নিরুৎসাহিত করা হয় কিন্তু বাধা দেয়া হয় না।এই নিয়মগুলি সব ধর্মের ব্যাপারেই প্রযোজ্য, কমিউনিস্ট পার্টির সদস্যদের মধ্যে যারা "ডাও" মতানুসারী তাদেরও 'ফেং শুই' এর মত ধর্মীয় কার্যাবলীতে অংশ নেওয়ার অনুমতি দেয়া হয় না।
'দা ডিপ্লোম্যাট' সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে যে, যদিও উইঘুর মুসলিমদের ধর্মীয় কার্যাবলীর উপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়, একই সময়ে হুই গোত্রের মুসলিমদের ধর্মীয় স্বাধীনতা দেয়া হয়।শিংচিয়াং এর উইঘুরদের প্রতি চীন সরকারের যে দৃষ্টিভঙ্গি তা অনেকটা এইরকম, 'ইসলামের প্রতি অপছন্দ নয়,তবে ভূখণ্ড হারানোর ভয় (মারাত্মক বা ছোট) ই চীনকে আতঙ্কিত করে'। ১৯৮৯ সালে ইসলামকে অবমাননার কারণে লানচৌ ও বেইজিং এ হুই মুসলিমদের প্রতিবাদের পর চীন সরকার 'শিং ফেংসু' (যৌন সংস্কৃতি) নামক একটা বইকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল এবং লেখকদের গ্রেফতার করেছিল।চীনা পুলিশ এসব প্রতিবাদকারীদের নিরাপত্তা দিয়েছিল এবং চীনা সরকার উল্লিখিত বইটি জনসম্মুখে পোড়ানোর ব্যবস্থাও করেছিল।চীন সরকারের হুই মুসলিমদের প্রতি সহনশীল আচরণের অন্যতম কারণ তাদের মধ্যে উইঘুরদের মত কোন বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন নেই।প্রতিবাদ মিছিলের সময় ভাঙচুর করা হলে চীনা পুলিশ হুই মুসলিমদের ছেড়ে দিয়েছিল, তবে কিছু উইঘুর মুসলিমকে গ্রেফতার করেছিল।
২০০৭ সালে চীনা ক্যালেন্ডারের 'ইয়ার অফ দা পিগ', ('শুকরের বছর') চলাকালীন সরকার 'সংখ্যালঘুদের সাথে সংঘর্ষ এড়াতে' রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেল সিসিটিভি (CCTV) তে সকল প্রকার শুকরের প্রতিকৃতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করে, সংখ্যালঘু বলতে এক্ষেত্রে মনে করা হয় চীনের দুই কোটি মুসলিমকে যারা শুকরকে অপবিত্র মনে করে।
যদিও, শিশুদের ধর্মীয় শিক্ষা দেয়া চীনে আইনত নিষিদ্ধ কিন্তু চাইনিজ কমিউনিস্ট পার্টি হুই মুসলিমদের এই আইন ভাঙতে দেয়, তাদের সন্তানদের ধর্মীয় শিক্ষা দিতে ও মসজিদে যেতে দেয়।অন্যদিকে,উইঘুরদের ক্ষেত্রে আইনটি কঠোরভাবে প্রয়োগ করা হয়।মাধ্যমিক শিক্ষা শেষ করার পর চীন, হুই মুসলিমদের একজন ইমামের অধীনে ধর্মীয় শিক্ষা নিতেও অনুমতি দেয়।বাচ্চাদের মসজিদে যাবার নিষেধাজ্ঞার আইনটি চীন শিনচিয়াং এর উইঘুরদের উপর ছাড়া কোথাও প্রয়োগ করে না।১৯৮০ এর দশক থেকে একনাত্র শিনচিয়াং এর উইঘুর অধ্যুষিত এলাকা ছাড়া (বিচ্ছিন্নতাবাদী অনুভূতির জন্য) আর সকল মুসলিম অধ্যুষিত স্থানে চীন বেসরকারি ইসলামিক স্কুল গঠনে অনুমতি ও সমর্থন দেয় ।
হুই মুসলিমদের মধ্যে যারা সরকারি চাকরি করে তাদেরকে রমজানে রোজা রাখতে দেয়া হয় যা উইঘুরদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়, হুইদের হজ্জ্বযাত্রীদের সংখ্যা প্রতিবছরই বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং হুই মহিলাদের বোরকা (ধর্মীয় পোশাক) পরতে দেয়া হয়।অন্যদিকে,উইঘুর মহিলাদের এই ব্যাপারে নিরুৎসাহিত করা হয়।ভিন্ন ভিন্ন মুসলিম গোষ্ঠীর সাথে ধর্মীয় স্বাধীনতার ব্যাপারে চীন ভিন্নভাবে আচরণ করে।হুই মুসলিমরা ধর্ম পালন,মসজিদ গঠন ইত্যাদির পাশাপাশি বাচ্চাদেরকে মসজিদে পাঠাতে পারে কিন্তু শিনচিয়াং এর উইঘুরদের উপর এসব ব্যাপারে নিয়ন্ত্রণ রাখা হয়।
চীন সরকারের অনুমতি সাপেক্ষে হুই সুফি নেতা হং ইয়ান বহু ধর্মীয় স্কুল ও মসজিদ চালান যিনি পাকিস্তানে ইসলাম নিয়ে ৫ বছর পড়াশোনার সময় এমন অনুষ্ঠানেও গিয়েছেন যেখানে ওসামা বিন লাদেনের মত মৌলবাদীরা কথা বলেছে।
উইঘুর জঙ্গী সংগঠন 'পূর্ব তুর্কেস্তান ইসলামিক আন্দোলন' তাদের সাময়িক পত্রিকা 'ইসলামিক তুর্কিস্তানে' অভিযোগ করেছে চীনা মুসলিম ভাতৃসংহতি প্রতিষ্ঠান 'দা ইহিওয়ানি' হুই মুসলিমদের পরিবর্তনের জন্য দায়ী।হুইদের 'নরমপন্থী' জনপদে পরিণত হবার কারণে ৩০০ বছর ধরে হুই আর উইঘুরদের মধ্যে শত্রুতা চলছে বলে দাবি করে এই সংগঠন, তারা আরও অভিযোগ করে হুই মুসলিমরা বিচ্ছিনতাবাদকে সহযোগিতা না করার মাধ্যমে চীনকে নিজেদের দেশ বলে মেনে নিয়েছে এবং চীনা ভাষার মত 'অবিশ্বাসীদের' ভাষাকেও গ্রহণ করেছে।
এমনকি হুই সালাফি মতানুসারী ও উইঘুর সালাফি মতানুসারীদের মধ্যেও তেমন কোন পারষ্পরিক সহযোগিতা নেই।তাদের রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি সম্পূর্ণ আলাদা।হুই সালাফিরা তাদের নিজেদের মতানুসারে চলে এবং রাজনৈতিকভাবে নিরপেক্ষ থাকে।
পূর্ব তুর্কেস্তানের স্বাধীনতার সমর্থন[সম্পাদনা]
সোভিয়েত ইউনিয়ন[সম্পাদনা]
সোভিয়েত ইউনিয়ন 'চীন প্রজাতন্ত্রের' বিরুদ্ধে করা ইলি বিদ্রোহ ও তার মাধ্যমে গড়ে ওঠা 'দ্বিতীয় পূর্ব তুর্কেস্তান প্রজাতন্ত্রকে সমর্থন করেছিল।রেবিয়া কাদেরের আত্মজীবনী (ড্রাগন যোদ্ধা : চীনের সাথে শান্তির লক্ষ্যে এক নারীর সংগ্রাম) অনুযায়ী তার বাবা সোভিয়েত সমর্থিত উইঘুর বিদ্রোহীদের সাথে ১৯৪৪-১৯৪৬ সালে 'দ্বিতীয় তুর্কেস্তান প্রজাতন্ত্রের' পক্ষে ইলি বিদ্রোহ ঘটান।এ সময় তারা চিয়ান কাইশেকের সরকারের বিরুদ্ধে লড়ার জন্য সোভিয়েত সাহায্য সহযোগিতা পেতেন।কাদেরের পরিবারের অনেক শেতাঙ্গ রাশিয়ানের (যারা নির্বাসনে বা অন্য কারণে শিনচিয়াং এ বাস করত) সাথে ভালো সম্পর্ক ছিল।কাদেরের মনে আছে, উইঘুররা রাশিয়ানদের সংস্কৃতিকে তাদের নিজেদের সংস্কৃতি থেকে অগ্রসর মনে করত,এবং রাশিয়ানদের সম্মান করত।
শিনচিয়াং এর ইলি অঞ্চলের তুর্কি বংশোদ্ভূত লোকদের সাথে রাশিয়ার, পরে সোভিয়েত ইউনিয়নের সাংস্কৃতিক,রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে দারুণ যোগাযোগ ছিল।অনেকেই সোভিয়েত ইউনিয়নে পড়াশোনা করেছিল এবং কিছু রাশিয়ান এই জায়গায় বসবাসও করত।তাই,অনেক তুর্কি বিদ্রোহী সোভিয়েত ইউনিয়নে পালিয়ে যায় ও সোভিয়েত সহযোগিতায় ১৯৪৩ সালে 'সিনকিয়াং তুর্কি স্বাধীনতা সংঘ' গঠন করে।এবং,ইলি বিদ্রোহের সময় 'কুওমিনটাং' (চাইনিজ সেনাবাহিনী) এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে।যে সোভিয়েত সমর্থিত নেতা উইঘুরদের দ্বিতীয় পূর্ব তুর্কেস্তান প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, এহমেতজান কাশিম, তিনি সোভিয়েত ইউনিয়নে পড়াশুনা করেছিলেন এবং তাকে 'স্টালিনের লোক' বলে ডাকা হত।
সোভিয়েত ইউনিয়ন কাজাখদের সোভিয়েত ইউনিয়নে পালাতে উৎসাহিত করা,চীনকে আক্রমণ করা বা প্রচারের মাধ্যমে শিনচিয়াং এ বিচ্ছিন্নতাবাদী কার্যকলাপ বাড়িয়ে দিয়েছিল।চীন তার জবাবে হানদের দিয়ে গঠিত বিংটুয়ান আধাসামরিক বাহিনী ও কৃষকদের দিয়ে শিনচিয়াং-সোভিয়েত বর্ডারে আরো শক্তিশালী উপস্থিতি নিশ্চিত করেছিল।১৯৬৭ সাল থেকে সোভিয়েতরা রেডিও তাশখন্দ এর মাধ্যমে উইঘুরদের চীনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহে উস্কে দেবার পাশাপাশি সরাসরি গেরিলা যোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ ও সহযোগিতা করত।বর্ডার এলাকায় ১৯৬৬ সালে সোভিয়েত সমর্থিত আক্রমণের সংখ্যা দাঁড়ায় ৫০০০।সোভিয়েতরা ১৯৬৭ সালের ১৪ মে রেডিও তাশখন্দ থেকে একটি খবর প্রচার করে যেখানে দ্বিতীয় পূর্ব তুর্কেস্তান প্রজাতন্ত্রকে দেয়া সোভিয়েত সমর্থনের ব্যাপারে গর্ব করা হয়।রেডিও সম্প্রচারের পাশাপাশি নানা প্রচার মাধ্যম ব্যবহার করে উইঘুর জনগোষ্ঠীকে বিদ্রোহ করে স্বাধীনতা ঘোষণা করতে বলা হত, এর মধ্যে একটি মাধ্যম ছিল রেডিও আলমা-আতা।রেডিও আলমা-আতা 'শেরকি তুর্কিস্তান ইভাজি' বা 'পূর্ব তুর্কেস্তানের কন্ঠ' (شەرقىي تۈركىستان ئاۋازى) নামে একটি পত্রিকা প্রচার করত।১৯৬২ সালে চীন-সোভিয়েত সম্পর্কচ্ছেদের পর ৬০০০০ কাজাখ ও উইঘুর শিনচিয়াং থেকে সোভিয়েত ইউনিয়নের কাজাখ সোভিয়েত রিপাবলিকে পালিয়ে যায় শিনচিয়াং এর স্বাধীনতার লক্ষ্যে।পরবর্তীতে এই সকল বিদ্রোহীরা চীনকে এক 'উইঘুর মুক্তিবাহিনী' গঠনের কথা বলে হুমকি দেয় যা কিনা হাজার হাজার উইঘুর বিদ্রোহীদের দ্বারা তৈরির কথা ছিল।
সোভিয়েত ইউনিয়ন 'পূর্ব তুর্কেস্তান বিপ্লবী গণসংঘ' নামে সেই সময়ের সবচেয়ে বড় উইঘুর বিচ্ছিন্নতাবাদী দলকে অর্থায়ন ও অন্যান্য সহযোগিতা করেছিল যাতে করে তারা ১৯৬৮ সালে চীনে এক ভয়াবহ বিদ্রোহ তৈরি করতে পারে।সত্তরের দশকে সোভিয়েতরা আরফেট নামে পূর্ব তুর্কেস্তানের বিপ্লবীদের আরেকটি সংগঠনকে সহায়তা করেছিল চীনাদের বিরুদ্ধে লড়তে।
১৯৬৬-৬৭ সালে বর্ডার (সীমান্ত) এলাকায় সোভিয়েত আর চীনা বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষগুলোর পেছনে একটি বড় কারণ ছিল চীনবিরোধীদের সোভিয়েত ইউনিয়নে প্রশিক্ষণ ও সোভিয়েত ইউনিয়ন কর্তৃক উইঘুরদের তথাকথিত 'মহান স্বাধীনতা সংগ্রামকে' সমর্থন করা।১৯৬৯ সালে শিংচিয়াং-সোভিয়েত সীমান্তে চীনা ও সোভিয়েত সৈন্যরা সরাসরি যুদ্ধ করে।
সোভিয়েত ইউনিয়ন উইঘুর জাতীয়তাবাদী প্রচারণা ও বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন সম্পূর্ণরূপে সমর্থন করেছিল।সোভিয়েত ঐতিহাসিকরা দাবি করেন, উইঘুরদের নিজস্ব জায়গা শিনচিয়াং।উইঘুরদের জাতীয়তা আলাদা - এই জাতীয় কথা সোভিয়েত ইউনিয়নই প্রচার করেছিল।ডি আই তিখোনভের মত প্রচারকরা উইঘুরদের স্বাধীনতার পক্ষে ইতিহাস লেখে এবং সোভিয়েত সমর্থিত ঐতিহাসিক তুরসুন রাখিমভ উইঘুর স্বাধীনতাকে সমর্থন ও চীন সরকারকে আক্রমণ করে আরো ঐতিহাসিক বিষয়ে লেখালেখি করে।এসব জায়গায় দাবি করা হয়, শিনচিয়াং চীনের কৃত্তিম আবিষ্কার যা পূর্ব তুর্কেস্তান ও জুনগারিয়াকে যোগ করে বানানো হয়েছে।এই সোভিয়েত উইঘুর ঐতিহাসিকরা চীনের বিরুদ্ধে 'আদর্শগত যুদ্ধ' করে যাচ্ছিল উইঘুরদের 'জাতীয় স্বাধীনতা সংগ্রাম'কে জোর দেয়ার মাধ্যমে।সোভিয়েত কমিউনিস্ট পার্টি চীনের বিরুদ্ধে ইলি বিদ্রোহ ও দ্বিতীয় পূর্ব তুর্কেস্তান প্রজাতন্ত্র কে প্রশংসা করে লেখালেখি সমর্থন করত।সোভিয়েত প্রচারকরা এমন বইও লিখেছিল যাতে দাবি করা হয়েছিল উইঘুররা আগে আরো ভালোভাবে জীবনযাপন করত এবং তাদের সংস্কৃতি চর্চা শুধু সম্ভব মধ্য এশিয়ার অংশ হিসেবে,শিন চিয়াং এর অংশ হিসেবে নয়।১৯৭৯ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের কেজিবি এজেন্ট ভিক্টর লুইস একটি থিওরি লিখেছিল যাতে বলা হয়, সোভিয়েত ইউনিয়নের উচিত 'সাম্রাজ্যবাদী' চীন থেকে স্বাধীনতার জন্য উইঘুর,তিব্বতি,মঙ্গল ও মাঞ্চুদের সাহায্য করা । কেজিবি উইঘুরদের সরাসরি সহযোগিতাও করেছিল।উইঘুরদের মধ্যে সোভিয়েত ইউনিয়ন খুবই সমাদৃত ছিল।কেউ কেউ এটাও ভাবত তুর্কি বংশোদ্ভূতরা একসময় সোভিয়েত শাসন করেছে,এটাও দাবি করা হত মিখাইল গর্বাচেভ ছিল এমন একজন তুর্কি বংশোদ্ভূত।
উইঘুর জাতীয়তাবাদী লেখক ঐতিহাসিক তুরঘুন আলমাস এবং তার বই উইঘুরলার, সোভিয়েত ইউনিয়নের তৈরি জাতীয়তাবাদী ইতিহাসকেই বেশি গুরুত্ব দিয়েছে।তার কাজগুলো সবই সোভিয়েত ঐতিহাসিক ও প্রচারকদের সৃষ্ট তুর্কি ইতিহাসের উপর ভিত্তি করে তৈরি।সোভিয়েত ইতিহাসই 'উইঘুরলার' এর তত্ত্বগুলির বীজ বপন করেছিল।এই বইতে এমন দাবিও করা হয়েছে, উইঘুরদের মাতৃভূমি 'মধ্যএশিয়া' এবং এটি একসময় বিশ্বসভ্যতার কেন্দ্রবিন্দু ছিল।
সোভিয়েত ইউনিয়ন ১৯৭৯ সালে আফঘানিস্তান আক্রমণ করার পর চীনের কাছে শিনচিয়াং এর গুরত্ব আবার বৃদ্ধি পায়, সোভিয়েত ইউনিয়ন চীনকে ঘিরে ফেলছে এমন একটি ধারণার জন্ম হয়।চীন এসময় আফঘান মুজাহিদিনদের সাহায্য করে, এবং সোভিয়েত কর্তৃক 'আফঘান মুসলিমদের উপর অত্যাচারের' খবর শিনচিয়াং এ প্রচার করে যেখানে ইতিমধ্যে সোভিয়েত ইউনিয়ন নানা প্রচারের মাধ্যমে মুসলিমদের চীনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহে উস্কানী দিচ্ছিল।চীনা রেডিওগুলি মধ্য এশিয়ায় কাজাখদের মত সংখ্যালঘুদের কাছে সোভিয়েত বিরোধী প্রচার করা শুরু করে।সোভিয়েতরা ভীত হয়ে পড়ে কাজাখ,উজবেক,কিরগিজ (রাশিয়ান ব্যতীত সব গোত্র) এসব সংখ্যালঘু নাগরিকদের আনুগাত্য নিয়ে যারা কিনা সোভিয়েত ইউনিয়ন, চীন দ্বারা আক্রান্ত হলে চীনকে সহায়তা করতে পারে।সংখ্যালঘুরা এটাও বলত রাশিয়ানদের উদ্দেশ্যে , 'শুধু চীনাদের পৌছানোর অপেক্ষা করো,তারা দেখিয়ে দেবে কোনটা কি!' চীনারা,সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষার প্রশ্নে শিনচিয়াং এ হান অভিবাসীদের উপস্থিতিকে গুরুত্বের সাথে দেখত ।কাশগার ও খোটানের পাশে চীন আফঘান মুজাহিদিনদের সাহায্য করার জন্য ক্যাম্প খোলে যেখান থেকে কোটি কোটি ডলারের হালকা অস্ত্র,বোমা,রকেট আর ট্যাংক আক্রমণকারী অস্ত্র দেয়া হত।
আক্রমণাত্মক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রচারণার মাধ্যমে এক সময়ের সোভিয়েত সমর্থিত তুর্কি নেতা ইউসুপবেক মুখলিসি ১৯৯০ এর দশকে শিনচিয়াং এ হান চাইনীজ ও উইঘুরদের সংখ্যা, এবং শিনচিয়াং এ আক্রমণ নিয়ে মিথ্যা দাবি তোলে।
সোভিয়েত ইউনিয়ন গঠনের পর যেসব উইঘুর মধ্য এশিয়ায় পড়াশোনা করেছে তাদের অনেকে নিজেদের নাম রাশিয়ান নামের মত করার জন্য রাশিয়ান প্রত্যয় যোগ করেছিল।কারামেয়, উরুমকির মত শহরে উইঘুররা তাদের সন্তানদের নামকরণের সময় রাশিয়ান নামও বেছে নিত।
আল কায়েদা[সম্পাদনা]
পূর্ব তুর্কেস্তান ইসলামিক আন্দোলন (তুর্কিস্তান ইসলামিক পার্টি) সংগঠনটি উজবেকিস্তান ইসলামিক আন্দোলন,পাকিস্তানি তালেবান এবং আল কায়েদার মত সংগঠনের সাথে যুক্ত।
সংগঠনটি নাম পরিবর্তন করে তুর্কিস্তান ইসলামিক পার্টি (TIP) নাম নিয়ে পুরনো নাম পূর্ব তুর্কেস্তান ইসলামিক আন্দোলন (ETIM) ত্যাগ করলেও চীন নতুন নাম প্রত্যাখ্যান করে এটিকে এখনো পুরনো নামেই সম্বোধন করে।তুর্কিস্তান ইসলামিক পার্টি একসময় উজবেকিস্তান ইসলামিক আন্দোলন দলটির একটি অংশ ছিল কিন্তু পরবর্তীকালে সেখান থেকে আলাদা হয়ে অন্য একটি সংগঠন হিসেবে আত্মপ্রচার শুরু করে।ইসলামিক তুর্কি সাময়িকীর মাধ্যমে সারা পৃথিবীর জেহাদীদের কাছে বার্তা পৌছাতে এটি চীনা,আরবি,রাশিয়ান,তুর্কি এসব ভাষায় প্রচার করে থাকে।

ইসলামিক স্টেট অফ ইরাক এন্ড দা লেভান্ট[সম্পাদনা]
ইসলামিক মৌলবাদী ও সালাফী মতানুসারী তথাকথিত ইসলামিক স্টেট অফ ইরাক এন্ড দা লেভান্ট (আইএসআইএল বা আইএস) সংগঠনটি ৮০ বছরের এক উইঘুর বৃদ্ধের ভিডিও প্রকাশ করে যে তার ছেলের (যে সিরিয়াতেই যুদ্ধে মারা গেছে) কাছ থেকে উৎসাহিত হয়ে সিরিয়াতে তার স্ত্রী,কন্যা ও নাতি নিয়ে আইএসে যোগ দিয়েছে।ভিডিওতে উইঘুর বাচ্চাদের গান গেতে শোনা যাচ্ছে শহীদদের নিয়ে এবং এক দশ বছরের বাচ্চাকে বলতে শোনা যাচ্ছে, 'চীনা কাফেরের(অবিশ্বাসী) দল,জেনে রাখো আমরা খলিফার দেশে তৈরি হচ্ছি।আমরা ফেরত আসব আর আল্লাহর অনুমতি নিয়ে তুর্কেস্তানে পতাকা ওড়াব।বৃদ্ধ লোকটিকে বলতে শোনা যাচ্ছে, 'আমি আমার চার নাতি,মেয়ে আর স্ত্রীকে নিয়ে হিজরত (ধর্ম যাত্রা) করেছি'।
থাইল্যান্ড কিছু উইঘুরকে চীনে ফেরত পাঠালে তাদের সন্দেহ করা হয় তারা তুরষ্ক,সিরিয়া বা ইরাকে যাচ্ছিল জিহাদে অংশ নিতে।জন কিরবি, মার্কিন পররাষ্ট্রবিভাগের মুখপাত্র, এই কাজের নিন্দা জানান এবং বলেন থাইল্যান্ডের উচিত উইঘুরদের স্বেচ্ছায় ফেরত পাঠানো অথবা তাদের ইচ্ছানুযায়ী কোন দেশে পাঠানো যেখানে তারা নিরাপদ।'ইসলামিক তুর্কিস্তান' সংগঠন টুইটারে এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে চীন ও থাইল্যান্ডকে 'আল্লাহর শত্রু ও মুশরিক' ঘোষণা করে।
তুর্কি সংবাদপত্র 'টুডে'স জামান' এর আঙ্কারা শাখাপ্রধান আবদুল্লাহ বজকার্ট বলেন, তুর্কি রাষ্ট্রপতি এরদোগানের ইসলামিক,রক্ষণশীল সরকার উইঘুর যোদ্ধাদের সিরিয়ায় যাবার সুযোগ করে দিচ্ছে।এ খবরের কারণে তুরষ্ক ও চীনের মধ্যে সমস্যার সৃষ্টি হয়।
স্বাধীনতার চেষ্টা[সম্পাদনা]
উশ বিদ্রোহ[সম্পাদনা]
উশ বিদ্রোহ সংঘটিত হয়েছিল উইঘুর মুসলিমদের দ্বারা ১৭৬৫ সালে, চিং রাজবংশের মাঞ্চুদের বিরুদ্ধে।মাঞ্চু কর্মকর্তা সু চেং এর ছেলে ও তার চাকরদের দ্বারা কিছু উইঘুর নারী গণধর্ষিত হলে এটি শুরু হয়।এটা বলা হত যে, সুচেং ও তার ছেলের দ্বারা উইঘুর নারীদের ধর্ষণের কারণে উশ মুসলিমরা তাদের চামড়া তুলে মাংস ভক্ষণ করতে চাইত।পরবর্তীতে মাঞ্চু সম্রাট বিদ্রোহী উইঘুরদের শহর ধ্বংস করতে আদেশ দেয়, চিং সেনারা উইঘুর শিশু ও নারীদের ক্রীতদাস বানায়,এবং উইঘুর পুরুষদের হত্যা করে।মাঞ্চু সেনা ও কর্মকর্তাদের দ্বারা উইঘুর নারী ধর্ষণের কারণে উইঘুর মুসলিমদের মনে মাঞ্চু শাসনের বিরুদ্ধে ভয়াবহ রাগ ও ঘৃণা তৈরি হয়।বিঞ্জিং নামক এক কর্মকর্তা এক খোকান সর্দারের মেয়েকে ধর্ষণের পর ১৮১৮-১৮২০ সময়কালে জাহাঙ্গীর খোজার নেতৃত্বে বিদ্রোহ ও ধর্মযুদ্ধ সংগঠিত হয়।চিংরা উইঘুর নারীদের ধর্ষণের ঘটনা চাপা দেয়ার চেষ্টা করে যাতে করে উইঘুরদের মধ্যে তাদের শাসন অব্যহত থাকতে পারে।
কাশগারিয়ায় ইয়াকুব বেগের শাসন[সম্পাদনা]
খোকান্দি গোত্রভুক্ত ইয়াকুব বেগ 'দাঙ্গান বিদ্রোহের' সময় কাশগার আক্রমণ করে ও বিদ্রোহের সুযোগ নিয়ে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র গঠন করে।
দাঙ্গান বিদ্রোহের সময় তারাঞ্চি তুর্কি মুসলিমরা, দাঙ্গান (চীনা মুসলিম) দের সহযোগিতা করেছিল।কিন্তু নিজেদের সংস্কৃতি সচেতন দাঙ্গানরা সম্পূর্ণ অঞ্চলে 'দাঙ্গান শাসন' চালু করতে চাইলে তারাঞ্চিরা তাদের বিরুদ্ধে চলে যায়।তারাঞ্চিরা, দাঙ্গানদের খুলজাতে পরাজিত করে তাদের তাক গিরিপথ দিয়ে ইলি উপত্যকায় ফিরে যেতে বাধ্য করে।
প্রথম পূর্ব তুর্কেস্তান প্রজাতন্ত্র[সম্পাদনা]
উইঘুরদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত প্রথম প্রজাতন্ত্র ক্ষণস্থায়ী ছিল,চীনা মুসলিম ৩৬তম ডিভিশন (চীন প্রজাতন্ত্রের সেনাবাহিনী) উইঘুর সেনাদের পরাজিত করে এবং ১৯৩৪ সালে কাশগারের যুদ্ধে প্রজাতন্ত্রের পতন হয়।
দ্বিতীয় পূর্ব তুর্কেস্তান প্রজাতন্ত্র[সম্পাদনা]
সোভিয়েত ইউনিয়ন সমর্থিত উইঘুর বিদ্রোহীদের দ্বারা উত্তর শিনচিয়াং এ এই রাষ্ট্রটি গঠিত হয়।১৯৫০ সালে গণচীন এটিকে অধিগ্রহণ করে।
আন্দোলনের ব্যাপারে চীনা সরকারের অবস্থান[সম্পাদনা]
গণচীন[সম্পাদনা]
দেখুন 'শিনচিয়াঙে সংঘর্ষ'
শিনচিয়াং এ চলা স্বাধীনতা আন্দোলনের কারণে ১৯৫৪ সাল থেকে নানা সময়ে সশস্ত্র স্বাধীনতাকামীদের সাথে সরকারের সংঘর্ষ হয়েছে।শিনচিয়াং এ এখনো পর্যন্ত এক হাজারের বেশি নিহত এবং ১৭০০ এর মত লোকের আহত হবার তথ্য পাওয়া গেছে।
চীন প্রজাতন্ত্র[সম্পাদনা]
সৌদি আরবে বসবাসরত উইঘুর মুফতি আব্দুল আহাদ খানের চিঠির জবাবে চীনা মুসলিম জেনারেল মা বুফাং (যিনি সৌদি আরবে ১৯৫৭-১৯৬১ সাল পর্যন্ত চীন প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রদূত ছিলেন) নিম্নোক্ত চিঠিটি পাঠান যেখানে মুফতি আব্দুল খানের 'পূর্ব তুর্কেস্তান' নাম ব্যবহারকে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে ও শিনচিয়াং কে চীন প্রজাতন্ত্রের অংশ উল্লেখ করে পূর্ব তুর্কেস্তান স্বাধীনতা আন্দোলনকে অস্বীকৃতি জানানো হয়েছে,
প্রিয় ভ্রাতা,
শিনচিয়াং সরকারে আপনার অবস্থান ও চীন প্রজাতন্ত্রের মহামান্য রাষ্ট্রপতির আপনার প্রতি বিশ্বাসকে সম্মান রেখে বলতে চাই, একজন মুফতি হিসেবে আপনি আশা করি এমন কোন নাম ব্যবহার করবেন না যেটা করা উচিত নয়।আমরা সবাই আমাদের দেশবাসীর কল্যাণে তথা প্রিয় দেশের সেবায় কাজ করে যাচ্ছি।আব্দুল কায়ুম খান নামক জার্মানিতে বসবাসকারী কোন এক লোকের তৈরি 'তুর্কেস্তানী জাতি'কথাটি একটি কৃত্তিম সৃষ্টি যা আশা রাখি আপনি ভবিষ্যতে আর ব্যবহার করবেন না।আমরা শিনচিয়াং এর মানুষের জন্য কাজ করছি,শিনচিয়াং এর বাইরে থাকা কোন 'পূর্ব তুর্কেস্তানী'দের জন্য না, বা আব্দুল কায়ুম খানের অনুসারীদের জন্য না।
ধন্যবাদান্তে,
সৌদি আরবে চীন প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রদূত।
প্রতিক্রিয়া[সম্পাদনা]
পূর্ব তুর্কেস্তান ইসলামিক পার্টি, পূর্ব তুর্কেস্তান মুক্তি সংঘ, এবং তুর্কেস্তান ইসলামিক পার্টি এদের সবক'টিকেই ২০০৩ সালের নভেম্বরে কিরগিস্তানের 'লেনিন জেলা কোর্ট' অবৈধ ঘোষণা করে।২০১৪ সালে কিরগিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে কয়েকজন উইঘুর সশস্ত্র যোদ্ধা নিহত হয়।আরব দেশগুলো রাজনৈতিকভাবে চীনকে সমর্থন করে।ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থা (OIC) তে চীনবিরোধী প্রস্তাবগুলির ক্ষেত্রে সৌদি আরব ও মিশর চীনকে সহায়তা করে যেহেতু মিশরের আন্তঃগোত্রীয় সমস্যাগুলোর ধরন চীনের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।সুদানের সমর্থনের কারণ, সুদান চায় না তার দেশে বা অন্য কোন দেশে বহির্বিশ্ব হস্তক্ষেপ করুক এবং ইন্দোনেশিয়াও তার দেশে ইসলামিক রক্ষণশীল সশস্ত্র নানা গ্রুপকে সামলানোর সমস্যায় থাকায় শিনচিয়াং এর জাতিগত সমস্যা নিরসনে চীনকে সমর্থন করে।ইসলামী সহযোগিতা সংস্থাতে পাকিস্তান,সৌদি আরব এবং মিশর,শিনচিয়াঙের উইঘুরদের সমর্থনে একটি বক্তব্য নাকচ করতে সাহায্য করে।এ ব্যাপারে আরব লীগ,সৌদি আরব বা ইরান কোন অবস্থান নেয়নি এবং চীন সৌদি আরব ও ইরানের সাথে আরো শক্তিশালী সম্পর্ক গড়ে তুলেছে।
চীনের অনুরোধে মালেশিয়া অনেকের করা আহবান অগ্রাহ্য করে কিছু উইঘুরকে চীনে ফেরত পাঠিয়েছে।
রেবিয়া কাদের দাবি করেন, কুর্দি-তুর্কি সংঘর্ষে চীনের হস্তক্ষেপের ভয়ে তুরষ্ক উইঘুরদের ব্যাপারে তেমন কিছু করতে পারছে না।২০০৯ সালে, 'নিহাত এরগুন' চাইনিজ দ্রব্য বয়কটের ডাক দিলেও তা ব্যার্থ হয়।
চীনে সিরিয়ার রাষ্ট্রদূত ইমাদ মুস্তাফা অভিযোগ করেন, তুরষ্ক সিরিয়াতে জেহাদী উইঘুর যোদ্ধাদের প্রবেশে সহায়তা করছে।
উইঘুর বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দ্বন্দ্ব[সম্পাদনা]
আনোয়ার ইউসুফ তুরানী নির্বাসনে "পূর্ব তুর্কেস্তান সরকার" গঠন করেছেন। রেবিয়া কাদের এই সরকারকে চীনের নিযুক্ত চর বলে অভিযোগ করেছেন।
তুর্কি জাতীয়তাবাদ[সম্পাদনা]
প্রথম পূর্ব তুর্কেস্তান প্রজাতন্ত্র গঠনের সময় ,তুর্কি জাতীয়তাবাদের কারণে বিভিন্ন মুসলিম জনগোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদ দেখা গিয়েছিল।উইঘুর এবং কিরঘিজ ,যারা তুর্কি বংশোদ্ভুত মুসলিম ছিল তারা দক্ষিণ শিংচিয়ানের মুসলিমদের হান চাইনীজদের সাথে বিতাড়িত করতে চেষ্টা করেছিল।এই কারণে চীনা মুসলিমরা (জেনারেল মা জেনচ্যাং,মা ফুইয়ান,মা হুশান) তুর্কি বংশোদ্ভুত মুসলিমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নেমেছিল।চীনা মুসলিম জেনারেল বাই চংশি,বিগঠিত চীনা সেনাবাহিনীর অনেককে শিনচিয়াং এ আনতে চেয়েছিলেন যা উইঘুররা সমর্থন করেনি।
স্বাধীনতার পক্ষে যুক্তি[সম্পাদনা]


উইঘুর আমেরিকান এসোসিয়েশান দাবি করে চীনা সরকার উইঘুরদের ধর্মীয় কারণে অত্যাচার করে।যেসকল উইঘুর ধর্মপালন করতে চায়,তাদের কোরানের রাষ্ট্র-অনুমোদিত একটি সংস্করণ ব্যবহার করতে দেয়া হয়।তারা আরো দাবি করে জাতীয়তাবাদী অনেক উইঘুরকে বন্দী,অত্যাচার বা হত্যা করা হয়েছে, এমনকি শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকারীদের উপরেও অত্যাচার করা হয়েছে।তাদের দাবি শিনচিয়াং এ হান অভিবাসীদের এনে চীনা সরকার উইঘুরদের পোশাক,ভাষা ও সংস্কৃতিকে নিশ্চিহ্ন করতে চায়।উইঘুরদের জীবনযাপনকে ভুল বোঝা হয় ও যেকোন প্রতিরোধ সরকার কঠোরভাবে দমন করে। 'উইঘুর মানবাধিকার প্রজেক্ট' অভিযোগ করে দক্ষিণ শিনচিয়াং এ ১৮ বছর বয়সের নিচে সকলের জন্য মসজিদে যাওয়া নিষেধ।
উইঘুর জাতীয়তাবাদীরা শিনচিয়াঙের 'পুনঃশিক্ষা কেন্দ্রের' কড়া নিন্দা করে যেগুলো ২০১৪ সাল থেকে স্থানীয় সরকার তদারকি করে।দাবি করা হয়,চরমপন্থী নেতা শেন কুয়ানকুয়ো ২০১৬ তে এর দায়িত্ব গ্রহণের পর এসব বন্দীশালায় বন্দীদের উপর নির্যাতনের মাত্রা বেড়েছে।এই বন্দীশালাগুলো বিচারব্যবস্থা বহির্ভূত এবং সাধারণ মানুষকে বিচার ছাড়াই এখানে আটকে রাখা হয়।বলা হয়, জঙ্গীবাদ নিরসনের নামে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ লক্ষ লক্ষ উইঘুরদের এসব জায়গায় বন্দী করে রেখেছে।
ধারণা করা হয়, চীন সরকার কয়েক লক্ষ উইঘুর,কাজাখ,অন্য গোত্রের মুসলিম,খ্রিস্টান,এমনকি বিদেশীদের (বিশেষ করে কাজাখস্তানের নাগরিকদের) এসব জায়গায় আটকে রেখেছে।এইরকম বন্দীশালা শিনচিয়াং জুড়ে কয়েক জায়গায় আছে।
দক্ষিণ শিনচিয়াঙে উইঘুর সংখ্যাগরীষ্ঠের ভাষা হলেও উত্তরে মূলত ম্যান্ডারিনই বলা হয়।উত্তর শিনচিয়াঙে তাই পুনঃশিক্ষাকেন্দ্রের উপস্থিতি খুবই কম যেটা দক্ষিণে বিপুল সংখ্যক।
স্বাধীনতার বিপক্ষে যুক্তি[সম্পাদনা]
চীন দাবি করে দুই হাজার বছর আগে থেকেই শিনচিয়াঙ চীনের অংশ।পূর্ব এশিয়ার অভিবাসীরা তারিম অববাহিকায় আসা শুরু করে ৩০০০ বছর আগে থেকে,কিন্তু উইঘুররা সেখানে আসে 'অর্কন উইঘুর রাজ্যের' পতনের পর (৮৪২ সালে)।চীন মনে করে, বাহ্যিক বিভিন্ন শক্তি চীনকে দূর্বল করার জন্যই এই তথাকথিত স্বাধীনতা আন্দোলনকে অর্থদান ও সহায়তা করে।তাছাড়া চীন এটাও দাবি করে,এসব সংঘর্ষের মধ্য দিয়েও শিংচিয়াঙে বিপুল অর্থনৈতিক উন্নয়ন হয়েছে,অবকাঠামোগত উন্নয়ন হয়েছে - পাশপাশি এর শিক্ষাব্যবস্থা ও মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি পেয়েছে।
কিছু চীনা মুসলিম উইঘুর বিচ্ছিন্নতাবাদের সমালোচনা করেন এবং চরমপন্থী হিসেবে চিহ্নিত হবার ভয়ে ইসলাম নিয়ে কোন সংঘর্ষ বা বিতর্কে যেতে রাজী হন না।
উইঘুর স্বাধীনতাকামীরা শিনচিয়াঙে হানদের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার কারণে উদ্বেগ প্রকাশ করে,যদিও ঐতিহাসিকভাবে উইঘুরদের স্থান সম্পূর্ণ শিনচিয়াং নয়,শুধু তারিম অববাহিকার আশেপাশের অঞ্চলগুলি।প্রফেসর জেমস এ মিলওয়ার্ড একটি ব্যাপার নির্দেশ করেন যে,বহু আগে থেকেই শিনচিয়াং এর রাজধানী উরুমকি হান আর হুই সংখ্যাগরীষ্ঠ শহর ছিল,উইঘুরের সংখ্যা ছিল খুবই অল্প।বর্তমানে উইঘুররা উরুমকিতে অভিবাসী হয়ে যেতে শুরু করায় তাদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।অনেকে এখন মনে করেন,উরুমকি একসময় উইঘুর শহর ছিল যার সংস্কৃতি চীন ধ্বংস করেছে।এছাড়াও, হান আর হুই জনপদ উত্তর জুনগারিয়াতে বাস করত যা দক্ষিণের ৯০% উইঘুর অধ্যুষিত অঞ্চলগুলো থেকে তিয়ান শান পর্বতশ্রেণী দ্বারা আলাদা ছিল। অনেকে ঐতিহাসিক চিং সাম্রাজ্যের কিছু কাজকে বর্তমান শিনচিয়াঙের পরিস্থিতির সাথে মেলাতে চায়।তাদের বক্তব্য, শিনচিয়াঙে হানদের অভিবাসন ছিল উইঘুরদের নিশ্চিহ্ন করতে চিং রাজবংশের তৈরি নীলনকশা।মিলওয়ার্ড বলেন, চিং দের অভিবাসন কর্মসূচীগুলো কৃষিকাজ বিবেচনায় করা হত,উইঘুরদের সাথে এর কোন সম্পর্ক নেই।তাছাড়া,চিং সাম্রাজ্য হানদের তারিম বেসিনে (উইঘুরদের বাসভূমি) যেতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ও তাদের উত্তরে জুনগারিয়া বা উরুমকিতে যেতে বলে। সেজন্যই ১৭৬০-১৮৩০ এর মধ্যে যে ১৫৫,০০০ কৃষক শিনচিয়াঙে আসে তারা সবাই, তারিম বেসিনের মরুদ্দ্যানগুলোতে না গিয়ে জুনগারিয়া বা উরুমকিতে যায়।
উইঘুর জাতীয়তাবাদী ঐতিহাসিক তুরঘুন আলমাস দাবি করেন ৬০০০ বছর আগে থেকেই উইঘুররা চীনাদের থেকে আলাদা ও স্বাধীন সত্তা, এবং উইঘুর ব্যতীত শিনচিয়াঙের বাকি সকল বসবাসকারীরা অভিবাসী।যাইহোক,হান রাজবংশ (খ্রিস্টপূর্ব ২০৬-খ্রিস্টাব্দ ২২০) ১২০ খ্রিস্টপূর্বে শিনচিয়াঙে সামরিক বসতি (টুনশান),অধিগ্রহণকৃত এলাকা (ডুহুফু) ইত্যাদি স্থাপন করে এবং ট্যাং রাজবংশ (৬১৮-৯০৭) আন লুসান বিদ্রোহের আগ পর্যন্ত শিনচিয়াং এর বেশিরভাগ অংশ শাসন করেছে।২০০০ বছর ধরে শিনচিয়াঙে হান বসতির উপস্থিতি দেখিয়ে চীনা ঐতিহাসিকরা উইঘুর জাতীয়তাবাদীদের দাবিকে অস্বীকার করে।তারা আরো প্রমাণ করে শিনচিয়াঙে মঙ্গল,কাজাখ,উজবেক,মাঞ্চু,হুই,জিবো সব গোত্রের লোকই বসবাস করত।গণচীন সরকারের দাবি হুইগুরাই (উইঘুর) মঙ্গোলিয়া থেকে নবম শতকে অর্থাৎ দেরিতে শিনচিয়াঙে অভিবাসিত হয়েছে।তাদের মতে,উইঘুর বলা হত নবম শতকে তারিমে বসবাসকারী বৌদ্ধদের,পনের শতকের দিকে নামটি হারিয়ে যায়,এবং বিংশ শতাব্দিতে সোভিয়েত ইউনিয়ন আবার এটিকে পুনর্জীবিত করে।
উইঘুর জাতীয়তাবাদীরা দাবি করে থাকে, ১৯৪৯ সালে শিনচিয়াং এ হান চাইনীজের সংখ্যা ছিল ৫% এবং উইঘুরের সংখ্যা ছিল ৯৫%, যা সঠিক নয়। তারা এসব ক্ষেত্রে সম্পূর্ণভাবে কাজাখ,শাইব ও অন্যান্য গোত্রকে বাদ দেয় এবং এটা ভুলে যায় যে,১৮০০ সালে শিনচিয়াং এর এক-তৃতীয়াংশ মানুষ ছিল হান চাইনীজ।উনবিংশ শতাব্দির শুরুর দিকে, 'চিং সাম্রাজ্যের' শিনচিয়াং জয়ের ৪০ বছর পর উত্তর শিনচিয়াং এ প্রায় ১৫৫,০০০ হান এবং হুই চাইনীজ ছিল। তাছাড়া, এর প্রায় দ্বিগুন উইঘুর, দক্ষিণ শিনচিয়াং এ ছিল।উনবিংশ শতাব্দির শুরুতে চিং রাজবংশ অধীনস্থ চীনের একটি আদমশুমারি অনুযায়ী শিনচিয়াং এ ৩০% হান এবং ৭০% তুর্কি জনগোষ্ঠীর উপস্থিতি ছিল যা ১৯৫৩ সালের আদমশুমারীতে অস্বাভাবিকভাবে পরিবর্তিত হতে দেখা যায় (৬% হান,৭৫% উইঘুর)।২০১০ সাল নাগাদ অবশ্য হান জনগোষ্ঠীর অনেককে পুনরায় শিনচিয়াঙে ফেরত আনায় এ সংখ্যার অনেক পরিবর্তন ঘটেছে (হান ৪০.৫৭%, উইঘুর ৪৫.২১%)। প্রফেসর স্টানলি ডব্লিউ টুপস মনে করেন,জনসংখ্যার বর্তমান অনুপাতটি অনেকটা চিং সাম্রাজ্যের সময়ের মত।১৮৩১ সালের পূর্বে,দক্ষিণ শিনচিয়াং এ তারিম বেসিনের আশেপাশে মাত্র কয়েকশ চীনা বণিক বাস করত এবং অল্প কিছু উইঘুর উত্তর শিনচিয়াং এ বাস করত।
উত্তর শিনচিয়াঙের ওইরাত থেকে মঙ্গলদের পরাজিত ও বিতাড়িত করার পর, চিং শাসনামলে হান,হুই,শাইব,উইঘুর এবং কাজাখ বসতি গড়ে তোলা হয়।এ সময় থেকেই শিনচিয়াঙের এক তৃতীয়াংশ জনসংখ্যা হুই আর হান - যারা উত্তরে থাকত,আর দুই তৃতীয়াংশ উইঘুর যারা দক্ষিণে থাকত।
বিভিন্ন দল[সম্পাদনা]

সাধারণত যে সকল দল বা গ্রুপ স্বাধীনতা চায়, দৃষ্টিভঙ্গি ( পূর্ব তুর্কেস্তানের ভবিষ্যৎ 'সরকারব্যবস্থা ও পররাষ্ট্রনীতি' বিষয়ে) দিয়ে তাদেরকে আলাদা করা যায়।যারা 'পূর্ব তুর্কেস্তান' নামটি ব্যবহার করে তাদের মূলত পশ্চিম এশিয়া,মুসলিম বিশ্ব ও রাশিয়ার সাথে যোগ আছে।এদেরকে আবার কয়েকটি দলে ভাগ করা যায়,যেমন যারা মোস্তফা কামাল আতাতুর্কের ধর্মনিরপেক্ষতার সংগ্রামকে আদর্শ ধরে আধুনিক তুরষ্কের মত সরকারব্যবস্থা চায় বনাম যারা সৌদি আরব,ইরান বা প্রাক্তন আফঘান তালিবানদের মত রক্ষণশীল ইসলামিক শাসনব্যবস্থা চায়।বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দ্বিতীয় দলটি 'উইঘুর'দের পরিচয় বাদ দিয়ে 'ইসলামিক পরিচয়'কে গুরুত্ব দিতে চায় বেশি।তবে এসব দলগুলি সাধারণত চায় না,স্বাধীন পূর্ব তুর্কেস্তানে অ-তুর্কি জনগোষ্ঠী (বিশেষ করে সংখ্যালঘু অমুসলিম হানেরা) কোন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করুক।
পূর্ব তুর্কেস্তানের স্বাধীনতার দাবিদার কয়েকটি দলকে ইতিমধ্যে গণচীনের সাথে, জাতিসংঘ এবং যুক্তরাষ্ট্র 'জঙ্গী সংগঠন' হিসেবে চিহ্নিত করেছে।শিনচিয়াং এর বাইরে স্বাধীনতার দাবিদার যেসব সংগঠন রয়েছে তার মধ্যে আছে পূর্ব তুর্কেস্তান জাতীয় স্বাধীনতাকেন্দ্র, পূর্ব তুর্কেস্তানের নির্বাসিত সরকার,পূর্ব তুর্কেস্তান স্বাধীনতা সংঘ (হিযব-উত-তাহরীর)।২০০৪ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর ওয়াশিংটন ডিসিতে আনোয়ার ইউসুফ তুররানি কর্তৃক পূর্ব তুর্কেস্তান অভিবাসীদের নিয়ে গঠিত 'পূর্ব তুর্কেস্তানের নির্বাসিত সরকার' ছিল স্বাধীনতার পথে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ।এ সমস্ত দলের প্রধান লক্ষ্য পশ্চিমা বিশ্বের জনগণ ও সরকারকে প্রভাবিত করা,কারণ এদের প্রায় কারোরই ওয়েবসাইট 'উইঘুর' বা 'চাইনিজ' ভাষায় তৈরি নয় এবং চীন,মধ্যএশিয়ার উইঘুররা এসব সংগঠনের বেশিরভাগের অস্তিত্ব সম্পর্কে অজ্ঞ।পূর্ব তুর্কেস্তান ইসলামিক আন্দোলন বা 'পূর্ব তুর্কেস্তান ইসলামিক পার্টি' শিনচিয়াং এ একাধিক জঙ্গী হামলার দায় স্বীকার করেছে,এবং এটি চীন,কাজাখস্তান,পাকিস্তান,যুক্তরাষ্ট্র এবং জাতিসংঘের নিকট 'সন্ত্রাসী সংগঠন' হিসেবে পরিচিত।
নেতৃত্ব[সম্পাদনা]
উইঘুরদের বিচ্ছিন্নতাবাদী একটি দলের নেতার নাম ঈসা আলপ্তেকিন যিনি উগ্র জাতীয়তাবাদী ও তুর্কি ফ্যাসিস্ট নেতা আলপারসালান তুর্কিসের সাথে দেখা করেন।সেখানে তিনি আরমেনিয়ানদের বিরুদ্ধে কথা বলেন এবং দাবি করেন নিরপরাধ মুসলিমদেরকে আর্মেনিয়ানরা হত্যা করছে।
সাম্প্রতিক ঘটনাবলী[সম্পাদনা]
শিনচিয়াং অঞ্চলে উইঘুরদের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও চীনা সরকারের নানা পদক্ষেপের (এমনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতে হান বহির্ভূত সংস্কৃতিকে দমন) কারণে উত্তেজনা লেগেই থাকে।
যদিও, অনেক সময় হান চাইনীজরাও মনে করে সরকার প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসনের নামে তাদের প্রতি বিষম্যমূলক আচরণ করছে।স্বাধীন পর্যবেক্ষকরা শিনচিয়াঙে চীনের শাসন, 'শিনচিয়াং উৎপাদন ও নির্মাণ কর্পোরেশন' এর মত সংস্থা গঠন - এসব পদক্ষেপকে সাম্রাজ্যবাদী বলে উল্লেখ করেন।তবে, জাতিসংঘ,যুক্তরাষ্ট্রের মত অনেকে একইসাথে 'পূর্ব তুর্কেস্তান ইসলামিক পার্টি'কেও সন্ত্রাসবাদী বলে থাকে।
উত্তেজনাকর নানা ঘটনা ও সংঘর্ষ গণচীন প্রতিষ্ঠার পর প্রতিনিয়ত ঘটছে।উদাহরণস্বরূপ, ১৯৬২ সালে সে সময়ের 'গ্রেট লিপ ফরোয়ার্ড' কর্মসূর্চী চলাকালীন দূর্ভিক্ষ আর অত্যাচার এড়াতে ৬০০০০ উইঘুর আর কাজাখ উত্তর শিনচিয়াং থেকে পালিয়ে সোভিয়েত ইউনিয়নে চলে গিয়েছিল। আশির দশকে পুলিশের বিরুদ্ধে ছাত্রদের প্রতিবাদগুলোকেও অনেক সময় জাতিগত দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা হয়।১৯৯০ এর এপ্রিলে ব্যারেন শহরের দাঙ্গাটিও এমন একটি ঘটনা যা হঠাৎ একটি প্রতিবাদ মিছিল থেকে শুরু হয়ে ৫০ জনের মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
রমজান মাসে বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্দেহে গ্রেফতারের প্রতিবাদে ১৯৯৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে এক ভয়াবহ সংঘর্ষ হয় যাতে ৯ জনের মৃত্যু হয় এবং এটি 'ঘুলজা ঘটনা' নামে পরিচিত।এই ঘটনার পর ২৫ ফেব্রুয়ারি উরুমকিতে একটি বাসে হামলা হয় যাতে ৯ জন মারা যায় ও ৬৮ জন আহত হয়।মনে করা হয় এটা ঘুলজা ঘটনার প্রতিশোধ হিসেবে ঘটানো হয়েছিল।পূর্ব তুর্কেস্তান জাতীয় কংগ্রেসের প্রাক্তন চেয়ারম্যান ও স্বনামধন্য উইঘুরকর্মী এরকিন আলপ্তেকিন বলেন, 'আমাদের অবশ্যই আলোচনাকে গুরুত্ব দিতে হবে,এবং যুবসমাজকে সংঘর্ষের পথ এড়াতে বলতে হবে।তা না হলে আমাদের দাবির বৈধতা ক্রমেই কমে আসবে।বিচ্ছিন্নতাবাদ ও সন্ত্রাসবাদের কথা উঠলেও আমেরিকায় নাইন-ইলেভেনের (৯/১১) ঘটনার পর শিনচিয়াং নব্বই এর দশক থেকে ২০০৫-০৬ অব্দি মোটামুটি শান্তই ছিল।২০০৫ সালে উইঘুর লেখক নুরমেমেত ইয়াসিনকে প্রতিকী ছোট গল্প 'নীল পায়রা' লিখে বিচ্ছিন্নতাবাদ ছড়ানোর অপরাধে দশ বছরের কারাদন্ড দেয়া হয়।
২০০৭ সালের ৫ জানুয়ারি, চীনের নিরাপত্তা ব্যুরো দক্ষিণ শিনচিয়াঙে পামির মালভূমির কাছে এক পাহাড়ী ক্যাম্পে সন্ত্রাসবাদীদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয় - সন্দেহে সেখানে হানা দেয়।তথ্য অনুযায়ী,সরকারি বাহিনী আর পূর্ব তুর্কেস্তান স্বাধীনতা আন্দোলনকারীদের এক বন্ধুকযুদ্ধে ১৮ জন সন্ত্রাসী নিহত ও ১৭ জন আহত হয়।তাছাড়া একজন পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হয়,এবং ১৫০০ টি হাত বোমা জব্দ করা হয়।
বিভিন্ন জায়গা থেকে মুসলিম মুজাহিদিনরা শিনচিয়াঙে এসে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করেছে।সরকার এই ব্যাপারে ভীত যে বহির্বিশ্বে থাকা উইঘুরদের প্রচারে শিনচিয়াঙের অন্য উইঘুররাও চরমপন্থীতে পরিণত হতে পারে।চীন দাবি করে,স্থানীয় কর্তৃপক্ষ দুই ডজনের বেশি ইসলাম প্রচারককে আটক করেছে (ইমামসহ) যারা পশ্চিম শিনচিয়াঙে অবৈধভাবে বিদ্রোহ ও এক ভিন্ন রাষ্ট্র গঠনের কথা প্রচার করে।
স্বাধীনতা দাবির ক্ষেত্রে যারা উইঘুরদের সমর্থন করে তাদেরকে চীন সরকার সন্ত্রাসীদের সহযোগী মনে করে, এই তালিকায় তুরষ্কও রয়েছে।
অলিম্পিকস[সম্পাদনা]
২০০৮ সালে, চীন সরকার ঘোষণা করে ২০০৮ অলিম্পিক গেমসকে বাধাগ্রস্ত করার উদ্দেশ্যে উইঘুর বিছিন্নতাবাদীদের কয়েকটি পরিকল্পনা (যেমন ক্রীড়াবিদ,সাংবাদিক ও ভ্রমণকারীদের অপহরণ) তারা নস্যাৎ করেছে।নিরাপত্তা মন্ত্রণালয় এসময় জানায় কয়েক সপ্তাহে ৩৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং শিনচিয়াঙে কয়েক জায়গায় বোমা উদ্ধার করা হয়েছে।খেলা চলাকালীন বাধা দেবার আরেকটি চেষ্টার সময় পুলিশ ১০ জনকে গ্রেফতার করে। অন্যদিকে,উইঘুর আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করে সরকার এসব কল্পিত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অজুহাতে উইঘুরদের উপর অত্যাচার করছে যাতে তারা তাদের বৈধ অধিকার না পায়।কিছু বিদেশী পর্যবেক্ষকও 'চীন সরকার কৃত্তিম সন্ত্রাসীর অজুহাতে প্রতিবাদীদের কন্ঠরোধ করছে' বলে সমালোচনামুখর হন।
গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকস শুরু হবার পূর্বে যখন বিশ্বব্যাপী ' তিব্বতের স্বাধীনতা' বিষয়টি আলোচিত হচ্ছিল তখন উইঘুররাও বিশ্বের নানা দেশে প্রতিবাদের আয়োজন করে।চীন সরকারের তথ্যমতে, মার্চ ২০০৮ এ চীনের সাউথ এয়ারলাইনসের একটি প্লেনে আত্মঘাতি বোমাহামলার একটি প্রচেষ্টা ব্যার্থ করা হয়।
বেইজিং অলিম্পিকসের চারদিন আগে, কাশগারে এক হামলায় ১৬ জন চীনা পুলিশকে হত্যা করা হয় এবং ১৬ জনকে আহত করা হয়।খবরটি সংগ্রহ করতে যাওয়া দুজন জাপানী সাংবাদিককে চীনা পুলিশ আহত করে ও তাদের সরঞ্জাম ভেঙে দেয়।চারদিন পর কুকাতে আরেকটি বোমা হামলায় আরো দুইজনের মৃত্যু হয়।
২৭ আগস্ট,কাশগারে এক অতর্কিত হামলায় দুইজন চীনা পুলিশকে নিহত ও সাতজনকে আহত করা হয়।আক্রমণকারীরা (এক মহিলাসহ সাত জন) ছুরি ও স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র ব্যবহার করেছিল।বলা হয়,সন্ত্রাসীদের কেউ সহযোগিতা করছে এমন খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে হাজির হয়।উইঘুর সূত্রগুলি বলে,চীন উইঘুরদের বিনা বিচারে আক্রমণ ও গ্রেফতার করছে, এই ঘটনাটি চীনা শাসন প্রত্যাখানের একটি উদাহরণ। শুধুমাত্র আগস্টেই শিনচিয়াঙে ৩৩ জনের মৃত্যু হয়।
২০০৯ সালের ৫ই জুলাই শিনচিয়াঙের রাজধানী উরুমকিতে দাঙ্গা শুরু হয়।রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানায় তাতে ১৫০ জন মারা গেছে।যদিও দাঙ্গা শুরু হয় ২০০৯ সাওগান ঘটনায় দুইজন উইঘুরের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে,তবুও কেন্দ্রীয় সরকার দাবি করে এই দাঙ্গা রেবিয়া কাদেরের মত বিদেশে থাকা বিচ্ছিন্নতাবাদীদের পরিকল্পনায় হয়েছে।
২০১৫ ব্যাংকক বোমাহামলা[সম্পাদনা]
ধারণা করা হয়, ২০১৫ এর ব্যাংকক বোমাহামলায় তুর্কি ফ্যাসিস্ট, চরমপন্থী জাতীয়তাবাদী দল 'গ্রে উলভস' (ধূসর নেকড়ে) জড়িত।থাইল্যান্ড সরকার জঙ্গী সন্দেহে কিছু উইঘুর অভিবাসীদের চীনে ফেরত ( অভিবাসীদের ইচ্ছানুসারে তুরষ্কে না পাঠিয়ে) পাঠানোর প্রতিবাদে এই হামলা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হয়।আদেম কারাদেগ নামের এক তুর্কিকে সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেফতার করে থাই পুলিশ,তার বাসস্থানে তুর্কি পাসপোর্ট ও বোমা বানাবার সরঞ্জাম পাওয়া যায়।'গ্রে উলভস' কে সংবাদমাধ্যমগুলি 'সন্ত্রাসবাদী সংগঠন' হিসেবে চিহ্নিত করেছে, সাংবাদিকসহ সংস্কারপন্থী, বামপন্থীদের হত্যার জন্যও এই দল কুখ্যাত।তাদের সদস্য মেহমেত আলির 'পোপ দ্বিতীয় জন পল'কে হত্যাচেষ্টা, বা আর্মেনিয়ায় 'নাগার্নো-কারাবাখ যুদ্ধে' অংশ নেয়া বা 'চেচেন যুদ্ধে অংশ' নেয়ার পেছনে মূল কারণ তাদের মূল লক্ষ্য অর্জন - যা হল বিশ্বের সকল মুসলিম তুর্কিদের (মধ্য এশিয়া থেকে বলকান পর্যন্ত) একত্রিত করা।
সন্ত্রাসবাদ ও পাসপোর্ট জালিয়াতির কারণে থাইল্যান্ডে বাস করা উইঘুরদের,থাই প্রতিরক্ষামন্ত্রী প্রইত অংসুয়ান পুলিশ পর্যবেক্ষণে রাখার সিদ্ধান্ত নেন।এ সময়ে তুরষ্ক থেকে থাইল্যান্ডে দুইজন উইঘুর এলে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সন্দেহে থাই পুলিশকে সর্বোচ্চ সতর্কতাজনক অবস্থায় থাকতে নির্দেশ দেয়া হয়।
আরও দেখুন[সম্পাদনা]
- চীনের ইতিহাস
- শিনচিয়াঙের ইতিহাস
- পূর্ব তুর্কেস্তান
- চীনে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন
- হংকং এর ইতিহাস
- হংকং এর স্বাধীনতা আন্দোলন
- শিনচিয়াঙে সংঘর্ষ
টীকা[সম্পাদনা]
১৯৪৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হবার পর, গণচীন ধর্মীয়ভাবে পাপস্বীকারের প্রথার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে (১৯৫০ এর দশক থেকে ১৯৮০র দশক পর্যন্ত), অবশ্য পরবর্তীতে সরকারের উদারপন্থী কিছু চিন্তার কারণে মসজিদ,ইসলামিক স্কুলের নানা কার্যকলাপের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হয়।তাছাড়া,বিচ্ছিন্নতাবাদের জন্য শিনচিয়াং ব্যতীত, অন্য এলাকাগুলিতে সরকার মুসলিমদের জন্য বেসরকারি স্কুল স্থাপন সমর্থন ও সহায়তা করে থাকে যাতে করে যারা ব্যয়সাপেক্ষ সরকারি স্কুলে পড়াশোনা করতে অপারগ,তারা পড়াশোনার সুযোগ পায়।অনেক ছাত্রই ব্যয়সাপেক্ষ হবার কারণে বা সন্তোষজনক ফলাফল না হওয়ায় সরকারি স্কুলগুলিতে যায় না বা পরিত্যাগ করে।
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
- Mesny, William (১৯০৫)। Mesny's Chinese Miscellany। Vol. IV। Shanghai।
- Andreyev, Alexandre (২০০৩)। Soviet Russia and Tibet: The Debarcle of Secret Diplomacy, 1918–1930s। Volume 4 of Brill's Tibetan Studies Library, V.4 (illustrated সংস্করণ)। Brill। আইএসবিএন 90-04-12952-9।
- Andreyev, Alexandre (২০১৪)। The Myth of the Masters Revived: The Occult Lives of Nikolai and Elena Roerich। Brill। আইএসবিএন 90-04-27043-4।
- Baabar (১৯৯৯)। Kaplonski, Christopher, সম্পাদক। Twentieth Century Mongolia, Volume 1 (illustrated সংস্করণ)। White Horse Press। আইএসবিএন 1-874267-40-5।
- Linguistic Typology, Volume 2। Association for Linguistic Typology। Mouton de Gruyter। ১৯৯৮।
- Islamic Culture, Volumes 27-29। Islamic Culture Board। Deccan। ১৯৭১। আইএসবিএন 0-8420-1704-6।
- Ethnological information on China। Volume 16; Volume 620 of JPRS (Series)। CCM Information Corporation। n.d. [196?]।
- "Turkestan"। The Encyclopaedia Britannica: A Dictionary of Arts, Sciences, and General Literature। Volume 23 (9 সংস্করণ)। Maxwell Sommerville। ১৮৯৪। পৃষ্ঠা 681।
- Forbes, Andrew D. W. (১৯৮৬)। Warlords and Muslims in Chinese Central Asia: a political history of Republican Sinkiang 1911–1949। Cambridge University Press। আইএসবিএন 0-521-25514-7।
- Inner Asia, Volume 4, Issues 1-2। Contributor: University of Cambridge. Mongolia & Inner Asia Studies Unit। The White Horse Press for the Mongolia and Inner Asia Studies Unit at the University of Cambridge। ২০০২। আইএসবিএন 0-8047-2933-6। সংগ্রহের তারিখ ১০ মার্চ ২০১৪।
- Journal of the North-China Branch of the Royal Asiatic Society, Volume 10। Royal Asiatic Society of Great Britain and Ireland. North-China Branch। Shanghai : Printed at the "Celestial Empire" Office 10-Hankow Road-10.: The Branch। ১৮৭৬। সংগ্রহের তারিখ ১০ মার্চ ২০১৪।
- Royal Asiatic Society of Great Britain and Ireland. North China Branch, Shanghai (১৮৭৬)। Journal of the North China Branch of the Royal Asiatic Society, Volume 10। Royal Asiatic Society of Great Britain and Ireland. North-China Branch। Shanghai : Printed at the "Celestial Empire" Office 10-Hankow Road-10.: Kelly & Walsh.। সংগ্রহের তারিখ ১০ মার্চ ২০১৪।
- Great Britain. Parliament. House of Commons (১৮৭১)। Parliamentary Papers, House of Commons and Command, Volume 51। H.M. Stationery Office। সংগ্রহের তারিখ ১০ মার্চ ২০১৪।
- Great Britain. Parliament. House of Commons (১৯১৪)। Papers by Command, Volume 101। H.M. Stationery Office। সংগ্রহের তারিখ ১০ মার্চ ২০১৪।
- Great Britain. Foreign Office. Historical Section, George Walter Prothero (১৯২০)। Handbooks Prepared Under the Direction of the Historical Section of the Foreign Office, Issues 67-74। H.M. Stationery Office। সংগ্রহের তারিখ ১০ মার্চ ২০১৪।
- Great Britain. Foreign Office. Historical Section (১৯৭৩)। George Walter Prothero, সম্পাদক। China, Japan, Siam। Volume 12 of Peace Handbooks, Great Britain. Foreign Office. Historical Section। আইএসবিএন 0-8420-1704-6। সংগ্রহের তারিখ ১০ মার্চ ২০১৪।
- Bellér-Hann, Ildikó (২০০৭)। Situating the Uyghurs Between China and Central Asia। Ashgate। আইএসবিএন 978-0-7546-7041-4।
- Bellér-Hann, Ildikó (২০০৮)। Community Matters in Xinjiang, 1880–1949: Towards a Historical Anthropology of the Uyghur। BRILL। আইএসবিএন 90-04-16675-0।
- Biran, Michal (২০০৫)। The Empire of the Qara Khitai in Eurasian History: Between China and the Islamic World। Cambridge University Press। আইএসবিএন 978-0-521-84226-6।
- Bovingdon, Gardner (২০১০)। The Uyghurs: Strangers in Their Own Land। Columbia University Press। আইএসবিএন 978-0-231-51941-0।
- Benson, Linda; Svanberg, Ingvar C. (১৯৯৮)। China's Last Nomads: The History and Culture of China's Kazaks (illustrated সংস্করণ)। M.E. Sharpe। আইএসবিএন 1-56324-782-8।
- Benson, Linda (১৯৯০)। The Ili Rebellion: The Moslem Challenge to Chinese Authority in Xinjiang, 1944–1949। M.E. Sharpe। আইএসবিএন 978-0-87332-509-7।
- BURNS, john f. (৬ জুলাই ১৯৮৩)। "ON SOVIET-CHINA BORDER, THE THAW IS JUST A TRICKLE"। The New York Times। সংগ্রহের তারিখ ১২ মে ২০১৪।
- Bretschneider, E. (১৮৭৬)। Notices of the Mediæval Geography and History of Central and Western Asia। Trübner & Company। সংগ্রহের তারিখ ১০ মার্চ ২০১৪।
- Bridgman, Elijah Coleman; Williams, Samuel Wells (১৮৩৭)। The Chinese Repository, Vol. V, From May 1836 to April 1837 (reprint সংস্করণ)। Canton: Maruzen Kabushiki Kaisha।
- Clarke, Michael E. (২০১১)। Xinjiang and China's Rise in Central Asia - A History। Taylor & Francis। আইএসবিএন 1-136-82706-4। সংগ্রহের তারিখ ১০ মার্চ ২০১৪।
- Clarke, Michael Edmund (২০০৪)। In the Eye of Power: China and Xinjiang from the Qing Conquest to the 'New Great Game' for Central Asia, 1759–2004 (পিডিএফ) (গবেষণাপত্র)। Brisbane, Queensland: Dept. of International Business & Asian Studies, Griffith University। ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১১ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা।
- Croner, Don (২০০৯)। "False Lama – The Life and Death of Dambijantsan" (পিডিএফ)। dambijantsan.doncroner.com। Ulaan Baatar: Don Croner। ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ আগস্ট ২০১৪।
- Croner, Don (২০১০)। "Ja Lama – The Life and Death of Dambijantsan" (পিডিএফ)। dambijantsan.doncroner.com। Ulaan Baatar: Don Croner। ১১ জানুয়ারি ২০১৬ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ আগস্ট ২০১৪।
- Crowe, David M. (২০১৪)। War Crimes, Genocide, and Justice: A Global History। Palgrave Macmillan। আইএসবিএন 1-137-03701-6। সংগ্রহের তারিখ ২২ এপ্রিল ২০১৪।
- Dankoff, Robert (২০০৮)। From Mahmud Kaşgari to Evliya Çelebi। Isis Press। আইএসবিএন 978-975-428-366-2।
- Debata, Mahesh Ranjan (২০০৭)। China's Minorities: Ethnic-religious Separatism in Xinjiang। Central Asian Studies Programme (illustrated সংস্করণ)। Pentagon Press। আইএসবিএন 81-8274-325-7। সংগ্রহের তারিখ ১০ মার্চ ২০১৪।
- Dickens, Mark (১৯৯০)। "The Soviets in Xinjiang 1911–1949"। OXUS COMMUNICATIONS। ২৩ অক্টোবর ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ মে ২০১৪।
- Dillon, Michael (২০০৮)। Contemporary China – An Introduction। Routledge। আইএসবিএন 1-134-29054-3। সংগ্রহের তারিখ ১০ মার্চ ২০১৪।
- Dillon, Michael (২০০৩)। Xinjiang: China's Muslim Far Northwest। Routledge। আইএসবিএন 1-134-36096-7। সংগ্রহের তারিখ ১০ মার্চ ২০১৪।
- Dupree, Louis; Naby, Eden (১৯৯৪)। Black, Cyril E., সম্পাদক। The Modernization of Inner Asia। Contributor: Elizabeth Endicott-West (reprint সংস্করণ)। M.E. Sharpe। আইএসবিএন 0-87332-779-9। সংগ্রহের তারিখ ২৪ এপ্রিল ২০১৪।
- Dunnell, Ruth W.; Elliott, Mark C.; Foret, Philippe; Millward, James A (২০০৪)। New Qing Imperial History: The Making of Inner Asian Empire at Qing Chengde। Routledge। আইএসবিএন 1-134-36222-6। সংগ্রহের তারিখ ১০ মার্চ ২০১৪।
- Dwyer, Arienne M. (২০০৭)। Salar: A Study in Inner Asian Language Contact Processes, Part 1 (illustrated সংস্করণ)। Otto Harrassowitz Verlag। আইএসবিএন 3-447-04091-2। সংগ্রহের তারিখ ১০ মার্চ ২০১৪।
- Elliott, Mark C. (২০০১)। The Manchu Way: The Eight Banners and Ethnic Identity in Late Imperial China (illustrated, reprint সংস্করণ)। Stanford University Press। আইএসবিএন 0-8047-4684-2। সংগ্রহের তারিখ ১০ মার্চ ২০১৪।
- Fairbank, John K., সম্পাদক (১৯৭৮)। The Cambridge History of China: Volume 10, Late Ch'ing 1800–1911, Part 1। Cambridge University Press। আইএসবিএন 0-521-21447-5। সংগ্রহের তারিখ ১০ মার্চ ২০১৪।
- Fisher, Richard Swainson (১৮৫২)। The book of the world, Volume 2। J. H. Colton।
- Forbes, Andrew D. W. (১৯৮৬)। Warlords and Muslims in Chinese Central Asia: A Political History of Republican Sinkiang 1911–1949 (illustrated সংস্করণ)। CUP Archive। আইএসবিএন 0-521-25514-7। সংগ্রহের তারিখ ১০ মার্চ ২০১৪।
- Gernet, Jacques (১৯৯৬)। A History of Chinese Civilization (illustrated, reprint, revised সংস্করণ)। Cambridge University Press। আইএসবিএন 0-521-49781-7। সংগ্রহের তারিখ ২৪ এপ্রিল ২০১৪।
- Gladney, Dru C. (২০০৪)। Dislocating China: Reflections on Muslims, Minorities, and Other Subaltern Subjects। University of Chicago Press। আইএসবিএন 978-0-226-29776-7।
- Gorelova, Liliya M., সম্পাদক (২০০২)। Handbook of Oriental Studies Section 8 Uralic & Central Asian Studies, Manchu Grammar। Volume Seven Manchu Grammar। Brill Academic Pub। আইএসবিএন 90-04-12307-5। সংগ্রহের তারিখ ৬ মে ২০১৪।
- Gunaratna, Rohan; Acharya, Acharya; Pengxin, Wang (২০১০)। Ethnic Identity and National Conflict in China। Palgrave Macmillan US। আইএসবিএন 978-0-230-10787-8।
- Guo, Sujian; Guo, Baogang (২০০৭)। Guo, Sujian; Guo, Baogang, সম্পাদকগণ। Challenges facing Chinese political development (illustrated সংস্করণ)। Lexington Books। আইএসবিএন 0-7391-2094-8। সংগ্রহের তারিখ ১০ মার্চ ২০১৪।
- Guo, Baogang; Hickey, Dennis V., সম্পাদকগণ (২০০৯)। Toward Better Governance in China: An Unconventional Pathway of Political Reform (illustrated সংস্করণ)। Lexington Books। আইএসবিএন 0-7391-4029-9। সংগ্রহের তারিখ ১০ মার্চ ২০১৪।
- Harris, Rachel (২০০৪)। Singing the Village: Music, Memory and Ritual Among the Sibe of Xinjiang (illustrated সংস্করণ)। Oxford University Press। আইএসবিএন 0-19-726297-X। সংগ্রহের তারিখ ১০ মার্চ ২০১৪।
- Hansen, Valerie (২০১২)। The Silk Road: A New History। Oxford University Press। আইএসবিএন 978-0-19-993921-3।
- Hopper, Ben; Webber, Michael (২০০৯), "Migration, Modernisation and Ethnic Estrangement: Uyghur migration to Urumqi, Xinjiang Uyghur Autonomous Region, PRC", Inner Asia, Global Oriental Ltd, 11 (2): 173–203, ডিওআই:10.1163/000000009793066460
- Howell, Anthony J. (২০০৯)। Population Migration and Labor Market Segmentation: Empirical Evidence from Xinjiang, Northwest China। Michigan State University। ProQuest। আইএসবিএন 1-109-24323-5। সংগ্রহের তারিখ ১০ মার্চ ২০১৪।
- Juntunen, Mirja; Schlyter, Birgit N., সম্পাদকগণ (২০১৩)। Return To The Silk Routes (illustrated সংস্করণ)। Routledge। আইএসবিএন 1-136-17519-9। সংগ্রহের তারিখ ১০ মার্চ ২০১৪।
- Kadeer, Rebiya (২০০৯)। Dragon Fighter: One Woman's Epic Struggle for Peace with China। Kales। আইএসবিএন 978-0-9798456-1-1।
- Kaltman, Blaine (২০০৭)। Under the Heel of the Dragon: Islam, Racism, Crime, and the Uighur in China। Ohio University Press। আইএসবিএন 978-0-89680-254-4।
- Kim, Hodong (২০০৪)। Holy War in China: The Muslim Rebellion and State in Chinese Central Asia, 1864–1877 (illustrated সংস্করণ)। Stanford University Press। আইএসবিএন 0-8047-6723-8।
- Kim, Kwangmin (২০০৮)। Saintly Brokers: Uyghur Muslims, Trade, and the Making of Qing Central Asia, 1696--1814। University of California, Berkeley। আইএসবিএন 1-109-10126-0 – ProQuest-এর মাধ্যমে।
- Lattimore, Owen (১৯৫৫)। Nationalism and Revolution in Mongolia। Brill Archive।
- Lorge, Peter (২০০৬)। War, Politics and Society in Early Modern China, 900–1795। Routledge। আইএসবিএন 1-134-37286-8।
- Levene, Mark (২০০৮)। "Empires, Native Peoples, and Genocides"। Moses, A. Dirk। Empire, Colony, Genocide: Conquest, Occupation, and Subaltern Resistance in World History। Oxford and New York: Berghahn। পৃষ্ঠা 183–204। আইএসবিএন 1-84545-452-9। সংগ্রহের তারিখ ২২ এপ্রিল ২০১৪।
- Liu, Tao Tao; Faure, David (১৯৯৬)। Unity and Diversity: Local Cultures and Identities in China। Hong Kong University Press। আইএসবিএন 962-209-402-3। সংগ্রহের তারিখ ১০ মার্চ ২০১৪।
- Mackerras, Colin (২০০৩)। China's Ethnic Minorities and Globalisation। Routledge। আইএসবিএন 1-134-39288-5।
- Marks, Robert B. (২০১১)। China: Its Environment and History। Rowman & Littlefield Publishers। আইএসবিএন 1-4422-1277-2। সংগ্রহের তারিখ ১০ মার্চ ২০১৪।
- Martin, Robert Montgomery (১৮৪৭)। China; Political, Commercial, and Social: In an Official Report to Her Majesty's Government। Volume 1 of China, Political, Commercial, and Social: In an Official Report to Her Majesty's Government, China, Political, Commercial, and Social: In an Official Report to Her Majesty's Government। J. Madden।
- Martyn, Norma (১৯৮৭)। The silk road। Methuen। সংগ্রহের তারিখ ১০ মার্চ ২০১৪।
- Mentelle, Edme; Malte-Brun, Malte Conrad Brun (dit Conrad); de Halle, Pierre-Etienne Herbin (১৮০৪)। Géographie mathématique, physique & politique de toutes les parties du monde। Volume 12। H. Tardieu। সংগ্রহের তারিখ ১০ মার্চ ২০১৪।
- Millward, James A. (১৯৯৮)। Beyond the Pass: Economy, Ethnicity, and Empire in Qing Central Asia, 1759–1864 (illustrated সংস্করণ)। Stanford University Press। আইএসবিএন 0-8047-2933-6।
- Millward, James A. (২০০৭)। Eurasian Crossroads: A History of Xinjiang (illustrated সংস্করণ)। Columbia University Press। আইএসবিএন 0-231-13924-1।
- Morozova, Irina Y. (২০০৯)। Socialist Revolutions in Asia: The Social History of Mongolia in the 20th Century। Routledge। আইএসবিএন 1-135-78437-X। সংগ্রহের তারিখ ২৪ এপ্রিল ২০১৪।
- Nan, Susan Allen; Mampilly, Zachariah Cherian; Bartoli, Andrea, সম্পাদকগণ (২০১১)। Peacemaking: From Practice to Theory। Volume One। ABC-CLIO। আইএসবিএন 0-313-37576-3। সংগ্রহের তারিখ ২২ এপ্রিল ২০১৪।
- Nan, Susan Allen; Mampilly, Zachariah Cherian; Bartoli, Andrea, সম্পাদকগণ (২০১১)। Peacemaking: From Practice to Theory [2 volumes]: From Practice to Theory। ABC-CLIO। আইএসবিএন 0-313-37577-1।
- Newby, L. J. (২০০৫)। The Empire And the Khanate: A Political History of Qing Relations With Khoqand C.1760-1860। Volume 16 of Brill's Inner Asian Library (illustrated সংস্করণ)। BRILL। আইএসবিএন 90-04-14550-8। সংগ্রহের তারিখ ১০ মার্চ ২০১৪।
- Nyman, Lars-Erik (১৯৭৭)। Great Britain and Chinese, Russian and Japanese interests in Sinkiang, 1918–1934। Volume 8 of Lund studies in international history। Esselte studium। আইএসবিএন 91-24-27287-6। সংগ্রহের তারিখ ১০ মার্চ ২০১৪।
- Paine, S. C. M. (১৯৯৬)। Imperial Rivals: China, Russia, and Their Disputed Frontier (illustrated সংস্করণ)। M.E. Sharpe। আইএসবিএন 1-56324-724-0। সংগ্রহের তারিখ ২৪ এপ্রিল ২০১৪।
- Palmer, James (২০১১)। The Bloody White Baron: The Extraordinary Story of the Russian Nobleman Who Became the Last Khan of Mongolia (reprint সংস্করণ)। Basic Books। আইএসবিএন 0-465-02207-3। সংগ্রহের তারিখ ২২ এপ্রিল ২০১৪।
- Parker, Charles H. (২০১০)। Global Interactions in the Early Modern Age, 1400–1800। Cambridge University Press। আইএসবিএন 1-139-49141-5। সংগ্রহের তারিখ ১০ মার্চ ২০১৪।
- Pegg, Carole (২০০১)। Mongolian Music, Dance, & Oral Narrative: Performing Diverse Identities, Volume 1 (illustrated সংস্করণ)। University of Washington Press। আইএসবিএন 0-295-98030-3। সংগ্রহের তারিখ ২৪ এপ্রিল ২০১৪।
- Perdue, Peter C. (২০০৫)। China Marches West: The Qing Conquest of Central Eurasia (illustrated সংস্করণ)। Harvard University Press। আইএসবিএন 0-674-01684-X। সংগ্রহের তারিখ ২২ এপ্রিল ২০১৪।
- Perdue, Peter C. (২০০৯)। China Marches West: The Qing Conquest of Central Eurasia (reprint সংস্করণ)। Harvard University Press। আইএসবিএন 0-674-04202-6। সংগ্রহের তারিখ ২২ এপ্রিল ২০১৪।
- Perdue, Peter C. (অক্টোবর ১৯৯৬)। "Military Mobilization in Seventeenth and Eighteenth-Century China, Russia, and Mongolia"। Modern Asian Studies। Cambridge University Press। 30 (4 Special Issue: War in Modern China): 757–793। জেস্টোর 312949। ডিওআই:10.1017/s0026749x00016796।
- Pletcher, Kenneth, সম্পাদক (২০১০)। The Geography of China: Sacred and Historic Places। Britannica Educational Publishing। আইএসবিএন 1-61530-182-8। সংগ্রহের তারিখ ১০ মার্চ ২০১৪।
- Pletcher, Kenneth, সম্পাদক (২০১১)। The Geography of China: Sacred and Historic Places (illustrated সংস্করণ)। The Rosen Publishing Group। আইএসবিএন 1-61530-134-8। সংগ্রহের তারিখ ১০ মার্চ ২০১৪।
- Pollard, Vincent, সম্পাদক (২০১১)। State Capitalism, Contentious Politics and Large-Scale Social Change। Volume 29 of Studies in Critical Social Sciences (illustrated সংস্করণ)। BRILL। আইএসবিএন 90-04-19445-2। সংগ্রহের তারিখ ১০ মার্চ ২০১৪।
- Powers, John; Templeman, David (২০১২)। Historical Dictionary of Tibet (illustrated সংস্করণ)। Scarecrow Press। আইএসবিএন 0-8108-7984-0। সংগ্রহের তারিখ ২২ এপ্রিল ২০১৪।
- Prakash, Buddha (১৯৬৩)। The modern approach to history। University Publishers। সংগ্রহের তারিখ ১০ মার্চ ২০১৪।
- Rahul, Ram (২০০০)। March of Central Asia। Indus Publishing। আইএসবিএন 81-7387-109-4। সংগ্রহের তারিখ ২২ এপ্রিল ২০১৪।
- Reed, J. Todd; Raschke, Diana (২০১০)। The ETIM: China's Islamic Militants and the Global Terrorist Threat। ABC-CLIO। আইএসবিএন 0-313-36540-7।
- Roberts, John A.G. (২০১১)। A History of China (revised সংস্করণ)। Palgrave Macmillan। আইএসবিএন 0-230-34411-9। সংগ্রহের তারিখ ২২ এপ্রিল ২০১৪।
- Michell, Robert (১৮৭০)। "Eastern Turkestan and Dzungaria, and the rebellion of the Tungans and Taranchis, 1862 to 1866"। Romanovski, M.। Notes on the Central Asiatic Question। Calcutta, India: Office of Superintendent of Government Printing।
- Rudelson, Justin Jon; Rudelson, Justin Ben-Adam (১৯৯২)। Bones in the Sand: The Struggle to Create Uighur Nationalist Ideologies in Xinjiang, China (reprint সংস্করণ)। Harvard University।
- Rudelson, Justin Jon (১৯৯৭)। Oasis Identities: Uyghur Nationalism Along China's Silk Road (illustrated সংস্করণ)। Columbia University Press। আইএসবিএন 0-231-10786-2।
- RYAN, William l. (২ জানুয়ারি ১৯৬৯)। "Russians Back Revolution in Province Inside China"। The Lewiston Daily Sun। পৃষ্ঠা 3। সংগ্রহের তারিখ ১২ মে ২০১৪।
- Sanders, Alan J. K. (২০১০)। Historical Dictionary of Mongolia। Volume 74 of Historical Dictionaries of Asia, Oceania, and the Middle East (3, illustrated সংস্করণ)। Scarecrow Press। আইএসবিএন 0-8108-7452-0। সংগ্রহের তারিখ ২৪ এপ্রিল ২০১৪।
- Sautman, Barry (২০০০)। "Is Xinjiang an Internal Colony?"। Inner Asia। Brill। 2 (2): 239–271। জেস্টোর 23615559। ডিওআই:10.1163/146481700793647788।
- Scharff, David E.; Scharff, Jill Savege (২০১১)। The Interpersonal Unconscious। Jason Aronson। আইএসবিএন 978-0-7657-0870-0।
- Seymour, James D.; Anderson, Richard (১৯৯৯)। New Ghosts, Old Ghosts: Prisons and Labor Reform Camps in China। Socialism and Social Movements Series। Contributor: Sidong Fan (illustrated, reprint সংস্করণ)। M.E. Sharpe। আইএসবিএন 0-7656-0510-4।
- Shelton, Dinah C (২০০৫)। Shelton, Dinah, সম্পাদক। Encyclopedia of genocide and crimes against humanity, Volume 3 (illustrated সংস্করণ)। Macmillan Reference। আইএসবিএন 0-02-865850-7। সংগ্রহের তারিখ ২২ এপ্রিল ২০১৪।
- Aspects of Altaic Civilization III: Proceedings of the Thirtieth Meeting of the Permanent International Altaistic Conference, Indiana University, Bloomington, Indiana, June 19-25, 1987। Volume 3 of Aspects of Altaic civilization / ed. by Denis Sinor।
- Sinor, Denis, সম্পাদক (১৯৯০)। Volume 145 of Indiana University Uralic and Altaic series, Indiana University Bloomington। Contributor: Indiana University, Bloomington. Research Institute for Inner Asian Studies। Psychology Press। আইএসবিএন 0-7007-0380-2। সংগ্রহের তারিখ ২৪ এপ্রিল ২০১৪।
- Skrine, C.P.; Nightingale, Pamela (২০১৩) [1973]। Macartney at Kashgar: New Light on British, Chinese and Russian Activities in Sinkiang, 1890–1918। Routledge। আইএসবিএন 978-1-136-57609-6।
- Starr, S. Frederick, সম্পাদক (২০০৪)। Xinjiang: China's Muslim Borderland (illustrated সংস্করণ)। M.E. Sharpe। আইএসবিএন 0-7656-1318-2। সংগ্রহের তারিখ ১০ মার্চ ২০১৪।
- Svanberg, Ingvar; Westerlund, David (২০১২)। Islam Outside the Arab World। Routledge। আইএসবিএন 1-136-11330-4। সংগ্রহের তারিখ ১০ মার্চ ২০১৪।
- Tamm, Eric (২০১৩)। The Horse that Leaps Through Clouds: A Tale of Espionage, the Silk Road, and the Rise of Modern China। Counterpoint। আইএসবিএন 1-58243-876-5। সংগ্রহের তারিখ ১০ মার্চ ২০১৪।
- Tinibai, Kenjali (২৮ মে ২০১০)। "China and Kazakhstan: A Two-Way Street"। Bloomberg Businessweek। পৃষ্ঠা 1। ৫ জুলাই ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ মে ২০১৪।
- Tinibai, Kenjali (২৮ মে ২০১০)। "Kazakhstan and China: A Two-Way Street"। Gazeta.kz। ১৩ মে ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ মে ২০১৪।
- Tinibai, Kenjali (২৭ মে ২০১০)। "Kazakhstan and China: A Two-Way Street"। Transitions Online। সংগ্রহের তারিখ ১২ মে ২০১৪।
- Tyler, Christian (২০০৪)। Wild West China: The Taming of Xinjiang। Rutgers University Press। আইএসবিএন 978-0-8135-3533-3।
- Universität Bonn. Ostasiatische Seminar (১৯৮২)। Asiatische Forschungen, Volumes 73-75। O. Harrassowitz। আইএসবিএন 3-447-02237-X। সংগ্রহের তারিখ ২৪ এপ্রিল ২০১৪।
- Walcott, Susan M.; Johnson, Corey, সম্পাদকগণ (২০১৩)। Eurasian Corridors of Interconnection: From the South China to the Caspian Sea। Routledge। আইএসবিএন 1-135-07875-0। সংগ্রহের তারিখ ১৩ এপ্রিল ২০১৪।
- Wayne, Martin I. (২০০৭)। China's War on Terrorism: Counter-Insurgency, Politics and Internal Security। Routledge। আইএসবিএন 1-134-10623-8। সংগ্রহের তারিখ ১০ মার্চ ২০১৪।
- Westad, Odd Arne (২০১২)। Restless Empire: China and the World Since 1750 (illustrated সংস্করণ)। Basic Books। আইএসবিএন 0-465-02936-1।
- Zhao, Gang (জানুয়ারি ২০০৬)। "Reinventing China Imperial Qing Ideology and the Rise of Modern Chinese National Identity in the Early Twentieth Century" (পিডিএফ)। Modern China। Sage Publications। 32 (Number 1): 3–30। জেস্টোর 20062627। ডিওআই:10.1177/0097700405282349। ২৫ মার্চ ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ এপ্রিল ২০১৪।
- Znamenski, Andrei (২০১১)। Red Shambhala: Magic, Prophecy, and Geopolitics in the Heart of Asia (illustrated সংস্করণ)। Quest Books। আইএসবিএন 0-8356-0891-3। সংগ্রহের তারিখ ২৪ এপ্রিল ২০১৪।
- The Mongolia Society Bulletin: A Publication of the Mongolia Society, Volume 9। Contributor: Mongolia Society। The Society। ১৯৭০। সংগ্রহের তারিখ ২৪ এপ্রিল ২০১৪।
- Mongolia Society (১৯৭০)। Mongolia Society Bulletin, Volumes 9-12। Mongolia Society.। সংগ্রহের তারিখ ২৪ এপ্রিল ২০১৪।
- Central Asia Monitor। Contributor: Institute for Democratic Development। Central Asia Monitor। ১৯৯৩। সংগ্রহের তারিখ ১০ মার্চ ২০১৪।
- "Radio war aims at China Moslems"। The Montreal Gazette। UPI। ২২ সেপ্টেম্বর ১৯৮১। পৃষ্ঠা 11। সংগ্রহের তারিখ ১২ মে ২০১৪।
- Universität Bonn. Ostasiatische Seminar (১৯৮২)। Asiatische Forschungen, Volumes 73-75। O. Harrassowitz। আইএসবিএন 3-447-02237-X। সংগ্রহের তারিখ ২৪ এপ্রিল ২০১৪।
আরও পড়ুন[সম্পাদনা]
- Burhan Shahidi, Xinjiang wushi nian [Fifty Years in Xinjiang], (Beijing, Wenshi ziliao, 1984).
- Clubb, O. E., China and Russia: The 'Great Game'. (NY, Columbia, 1971).
- Forbes, A. D. W. Warlords and Muslims in Chinese Central Asia: A Political History of Republic Sinkiang, 1911–1949 (Cambridge, Cambridge University Press, 1986).
- Gladney, Dru C. (২০১৩)। Separatism in China: The case of the Xinjiang Uyghur Autonomous Region। Secessionism and Separatism in Europe and Asia: To have a state of one's own। Routledge। পৃষ্ঠা 220–236।
- Hasiotis, A. C. Jr. Soviet Political, Economic and Military Involvement in Sinkiang from 1928 to 1949 (NY, Garland, 1987).
- Hierman, Brent (2007). "The Pacification of Xinjiang: Uighur Protest and the Chinese State, 1988–2002". Problems of Post-Communism 54 (3): 48–62.
- Khakimbaev A. A., 'Nekotorye Osobennosti Natsional'no-Osvoboditel'nogo Dvizheniya Narodov Sin'tszyana v 30-kh i 40-kh godakh XX veka' [Some Characters of the National-Liberation Movement of the Xinjiang Peoples in 1930s and 1940s], in Materially Mezhdunarodnoi Konferentsii po Problemam Istorii Kitaya v Noveishchee Vremya, Aprel' 1977, Problemy Kitaya (Moscow, 1978) pp. 113–118.
- Lattimore, O., Pivot of Asia: Sinkiang and the Inner Asian Frontiers of China (Boston, Little, Brown & Co., 1950).
- Rakhimov, T. R. 'Mesto Bostochno-Turkestanskoi Respubliki (VTR) v Natsional'no-Osvoboditel'noi Bor'be Narodov Kitaya' [Role of the Eastern Turkestan Republic (ETR) in the National Liberation Struggle of the Peoples in China], A paper presented at 2-ya Nauchnaya Konferentsiya po Problemam Istorii Kitaya v Noveishchee Vremya, (Moscow, 1977), pp. 68–70.
- Shichor, Yitzhak. (2005). Blow Up: Internal and External Challenges of Uyghur Separatism and Islamic Radicalism to Chinese Rule in Xinjiang. Asian Affairs: An American Review. 32(2), 119—136.
- Taipov, Z. T., V Bor'be za Svobodu [In the Struggle for Freedom], (Moscow, Glavnaya Redaktsiya Vostochnoi Literaturi Izdatel'stvo Nauka, 1974).
- Wang, D., 'The Xinjiang Question of the 1940s: the Story behind the Sino-Soviet Treaty of August 1945', Asian Studies Review, vol. 21, no.1 (1997) pp. 83–105.
- Wang, D., 'The USSR and the Establishment of the Eastern Turkestan Republic in Xinjiang', Journal of Institute of Modern History, Academia Sinica, vol.25 (1996) pp. 337–378.
- Yakovlev, A. G., 'K Voprosy o Natsional'no-Osvoboditel'nom Dvizhenii Norodov Sin'tzyana v 1944–1949', [Question on the National Liberation Movement of the Peoples in Xinjiang in 1944–1945], in Uchenie Zapiski Instituta Voctokovedeniia Kitaiskii Spornik vol.xi, (1955) pp. 155–188.
- Wang, D., Clouds over Tianshan: essays on social disturbance in Xinjiang in the 1940s, Copenhagen, NIAS, 1999
- Wang, D., Under the Soviet shadow: the Yining Incident: ethnic conflicts and international rivalry in Xinjiang, 1944–1949, Hong Kong, The Chinese University Press, 1999.