পিলিভীত জেলা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
পিলিভীত জেলা
উত্তরপ্রদেশের জেলা
পিলিভীত জেলার স্কাইলাইন
উত্তরপ্রদেশে পিলিভীতের অবস্থান
উত্তরপ্রদেশে পিলিভীতের অবস্থান
দেশভারত
রাজ্যউত্তরপ্রদেশ
প্রশাসনিক বিভাগবরেলী বিভাগ
সদরদপ্তরপিলিভীত
সরকার
 • লোকসভা কেন্দ্রপিলিভীত
আয়তন
 • মোট৩,৫০৪ বর্গকিমি (১,৩৫৩ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা (২০১১)
 • মোট২০,৩১,০০৭
 • জনঘনত্ব৫৮০/বর্গকিমি (১,৫০০/বর্গমাইল)
জনতাত্ত্বিক
 • সাক্ষরতা৬৩.৫৮%.
ওয়েবসাইট[www.pilibhit.nic.in দাপ্তরিক ওয়েবসাইট]

পিলিভীত জেলা হল ভারতের উত্তর প্রদেশ রাজ্যের একটি জেলা। এই জেলাটি বরেলী বিভাগের অন্তর্গত এবং জেলার সদর দপ্তর হল পিলিভীত। ২০০৮ সালে টাইগার রিজার্ভ ফরেষ্ট ঀতৈরি করা হয়েছিল যা পিলিভীত টাইগার রিজার্ভ ফরেষ্ট নামে পরিচিত।

ইতিহাস[সম্পাদনা]

১৮৭১ সালে বরেলী জেলার একটি অংশ হিসাবে পিলিভীত জেলার উৎপত্তি হয়েছিল যা জাহানাবাদ, পিলিভীত এবং পুরানপুর নিয়ে গঠিত। ১৮৭৯ সালের নভেম্বরে আনুষ্ঠানিকভাবে পৃথক জেলার ঘোষণা করেন।[১]

পিলিভীত জেলার ইতিহাস স্পষ্ট নয়। এই জেলায় ঐতিহ্যগতভাবে পাঁচালা রাজ্যের অংশ বলে মনে করা হয়, যার রাজধানী ছিল অহিচ্ছত্রে। যদিও নিশ্চিত করার জন্য কোনো ঐতিহাসিক দলিল নেই। অন্যদিকে এই জেলার অনেক ধ্বংসাবশেষ পাওয়া যায় যা ইঙ্গিত দেয় যে এখানে ব্যাপক জনবসতি ছিল।[১]

প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান[সম্পাদনা]

নেওরিয়া হোসেনপুরে একটি বিশাল এলাকা জুড়ে প্রত্নতাত্ত্বিক ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে। এছাড়া মাহফে একটি বড় ধ্বংসপ্রাপ্ত ইটের দুর্গ আছে।[১] এই জেলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধ্বংসাবশেষ হল জাহানাবাদ শহরের কাছে বালাই খেরা নামে পরিচিত। পশ্চিমে পরসুয়া-কোট নামে আর একটি ঢিবি রয়েছে যা বলাই খেরা মতোই দেখতে।[১]

পুরানপুর অঞ্চলে প্রচুর ধ্বংসাবশেষ রয়েছে তাঁদের মধ্যে শাহগড়ের দুর্গের দেয়ালের ভিতর থেকে নেপালের ভার্মাদের মুদ্রা পাওয়া গেছে।[১]

ভৌগলিক অঞ্চল[সম্পাদনা]

পিলিভীত জেলাটির উত্তরে নেপাল সীমানা এবং হিমালয় পাদদেশে অবস্থিত। এই জেলাটি ২৮°৬′ থেকে ২৮°৫৩′ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৭৯°৫৭′ থেকে ৮০°২৭′ পূর্ব দ্রাঘিমাংশের রেখার মধ্যে অবস্থিত। উত্তরে উধমসিংহ নগর জেলা এবং নেপাল, দক্ষিণে শাহজাহানপুর জেলা, পূর্বে খেরি জেলা এবং শাহজাহানপুর জেলা এবং পশ্চিমে বেরেলী জেলা অবস্থিত।[২]

পিলিভীত জেলার প্রধান অংশ ঘন জঙ্গলে আচ্ছাদিত। মোট ৭৮৪৭৮ হেক্টর অঞ্চল বনভূমি। এই জেলায় খালের মোট দৈর্ঘ্য ৯৩৮ কিলোমিটার তবে সারদা খালটি এই জেলার প্রধান খাল ।

জনসংখ্যা[সম্পাদনা]

২০১১ সালের আদমশুমারি অনুসারে কানপুর নগর জেলার জনসংখ্যা ২,০৩১,০০৭ জন।[৩] জনসংখ্যায় এটি ভারতে ২২৬ তম জেলায় স্থান পেয়েছে (মোট ৬৪০টি জেলার মধ্যে)। এর জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গকিলোমিটারে ৫৬৭ জন (প্রতি বর্গমাইলে ১,৪৭০ জন) বাসিন্দা রয়েছে।[৩] ২০০১-২০১১ এর দশকে জেলার জনসংখ্যার বৃদ্ধির হার ছিল ২৩.৮৩%। কানপুর নগর প্রতি ১০০০ পুরুষের জন্য ৮৮৯ জন মহিলা লিঙ্গ অনুপাত রয়েছে এবং সাক্ষরতার হার ৬৩.৫৮% এবং তফসিলি জাতি জনসংখ্যার ১৬.৪২% অন্যান্য ০.০৮%।[৩]

ধর্ম[সম্পাদনা]

ভারতের ২০১১ সালের আদমশুমারির অনুসারে, জেলার জনসংখ্যার ৮৩.০৩% হিন্দি, ৮.৯৯% উর্দু, ৩.৭২% পাঞ্জাবি, ৩.০৫% বাঙালি এবং ১.১৩% ভোজপুরি।[৪]


পিলিভীত বাঘ সংরক্ষণ[সম্পাদনা]

পিলিভীত বাঘ সংরক্ষণ ভারতের উত্তর প্রদেশ রাজ্যের মাহফ রেঞ্জের পিলিভীত জেলায় অবস্থিত। এটি হিমালয়ের পাদদেশে ভারত-নেপাল সীমান্ত এবং উত্তর প্রদেশের তরাই সমভূমিতে অবস্থিত। এটি ভারতের ৫০ টি বাঘ সংরক্ষণের মধ্যে একটি।

২০০৪ সালে অনুমান অনুসারে পিলিভীত জেলায় ৮০০ km2 (৩১০ বর্গ মাইল) বনভূমি রয়েছে যা জেলার মোট আয়তনের প্রায় ২৩%। ২০১৬-১৭ সালে অনুমান অনুযায়ী ৩৬ টি বাঘ ছিল, তারপরে ২০১৭-১৮ সালে সংখ্যা বেড়ে ৪৫ টি বাঘ ছিল এবং বর্তমানে ২০১৯-২০ সালে ৬৫ টিরও বেশি বাঘ রয়েছে ।

পিলিভীত বনাঞ্চলে ডোরাকাটা বিড়াল, বাঘ, ভাল্লুক এবং অনেক প্রজাতির পাখির আবাসস্থল। পিলিভীত বনাঞ্চলে বিপন্ন প্রণয়ীদের জন্য একটি সংরক্ষণশালার প্রস্তাব ২০০৮ সালে ভারত সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছিল।[৫] ২০০৮ সালে ভারত সরকার পিলিভীত টাইগার রিজার্ভ ফরেষ্ট হিসাবে ঘোষণা করেছিল এবং তাদের বিশেষ ধরনের বাস্তুতন্ত্র বিস্তীর্ণ খোলা জায়গা এবং পর্যাপ্ত খাদ্য সংরক্ষণের জন্য স্বীকৃতি পেয়েছিল।[৬]

শিল্প[সম্পাদনা]

পিলিভীত জেলা শিল্পের ক্ষেত্রে কিছুটা পিছিয়ে রয়েছে। এই এলাকার প্রধান ফসল আখ। এই জেলার মাঝোলা, পুরানপুর, বিশালপুর ও পিলিভীতে চারটি চিনির কারখানা রয়েছে। এছাড়া আরও তিনটি দ্রাবক কারখানা, একটি ময়দা কল, একটি স্টিল প্ল্যান্ট এবং একটি অ্যালকোহল ডিস্টিলারি। ক্ষুদ্র শিল্প হল রাইস মিল, ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিট, ইটভাটা, মোমবাতি এবং বনসুরি (বাঁশি) উৎপাদন শিল্প রয়েছে।[২]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Nevill, H.R. (১৯০৯)। Pilibhit: A Gazetteer, Being Volume XVIII Of The District Gazetteers Of The United Provinces Of Agra And Oudh। Allahabad: Government Press। পৃষ্ঠা 115–6, 147–67। সংগ্রহের তারিখ ১২ এপ্রিল ২০২১ 
  2. "District Pilibhit, Government of Uttar Pradesh | City of Flute, Origin of Gomti river, Tiger Reserve | India" (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৫-৩০ 
  3. "District Census 2011"। Census2011.co.in। ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৯-৩০ 
  4. "Table C-16 Population by Mother Tongue: Uttar Pradesh"www.censusindia.gov.inRegistrar General and Census Commissioner of India 
  5. "Untitled Page" 
  6. "Pilibhit tiger reserve gets Central nod | Lucknow News"The Times of India। ২০১২-১০-২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।