পিপ্পা বাক্কা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

জুসেপিনা পাস্কুয়ালিনো দি মারিনো (৯ ডিসেম্বর ১৯৭৪ - ৩১ মার্চ ২০০৮) ছিলেন একজন ইতালীয় নারীবাদী শিল্পী। তিনি পিপ্পা বাক্কা নামে পরিচিত ছিলেন। তিনি একজন সহশিল্পীর সাথে একত্রে "বিভিন্ন মানুষ এবং জাতির মধ্যে বিবাহ" এই নীতিবাক্য নিয়ে বিশ্ব শান্তি প্রচারের জন্য আন্তর্জাতিকভাবে 'হিচহাইক' করছিলেন,[১] এই ভ্রমণের সময় তিনি প্রতীকীভাবে একটি বিয়ের পোশাক পরেছিলেন।[২]

২০০৮ সালের ৩১ মার্চ তুরস্কের গেবজে থেকে পিপ্পা বাক্কা নিখোঁজ হয়ে যান। ২০০৮ সালের ১১ এপ্রিল একই শহরে তার মৃতদেহ আবিষ্কৃত হয়। পুলিশ একজনকে গ্রেপ্তার করে যিনি পরে তাদের পিপ্পার মৃতদেহের খোঁজ দিয়েছিলেন।[২][৩][৪]

"সফরে নববধূ"[সম্পাদনা]

বাক্কা "ব্রাইডস অন ট্যুর" নামে পরিচিত বিশ্ব শান্তি প্রচেষ্টার অংশ ছিলেন, যার জন্য তিনি এবং সহশিল্পী সিলভিয়া মোরো ৮ মার্চ ২০০৮ সালে ইতালির মিলান ছেড়ে যাত্রা করেছিলেন।[৫] শিল্পীরা এরপর সাদা বিবাহের পোশাক পরে বলকানের মধ্য দিয়ে ভ্রমণ করেন এবং ২০ মার্চ ২০০৮ সালে তুরস্কে পৌঁছান। তারা মধ্যপ্রাচ্যের মধ্য দিয়ে হিচহাইক করার পরিকল্পনা করেছিলেন, তাদের চূড়ান্ত গন্তব্য ছিল জেরুসালেম[৪][৫] নিজেদের পোশাক সম্পর্কে তারা তাদের ওয়েবসাইটে জানিয়েছিলেন যে "এটাই একমাত্র পোশাক যা আমরা বহন করব - আমাদের যাত্রাপথের সমস্ত দাগ এতে জমা হবে।"[৩][৬]

তার দেহ আবিষ্কারের পরে নিজ বোনের হিচহাইকিং পরিকল্পনা সম্পর্কে দি মারিনোর সহোদর মারিয়া ইতালীয় সংবাদ সংস্থা এএসএসএ-কে বলেছিলেন যে "তার ভ্রমণ একটি শৈল্পিক পরিদর্শনের জন্য এবং শান্তি ও বিশ্বাসের বার্তা দেওয়ার জন্য ছিল, কিন্তু সবাই বিশ্বাসের যোগ্য নয়... আমরা বিশেষ চিন্তিত ছিলাম না কারণ সে অনেক দিন ধরে হিচহাইক করছিল, এবং ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতি এড়ানোর সক্ষমতা তার ছিল... শিল্পের জন্য কাজ করার ক্ষেত্রে সে ছিল একজন দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ব্যক্তি।"[৪]

অন্তর্ধান[সম্পাদনা]

বাক্কা এবং তার সঙ্গী ইস্তাম্বুলে পৌঁছানোর ঠিক আগে আলাদা হয়ে যান, এবং বৈরুতে আবার দেখা করার পরিকল্পনা করেন। ৩১ মার্চের পর বাক্কা নিখোঁজ হয়ে যান।[৩] সেদিন দুপুরে তার ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করা হয়েছিল বলে জানা গেছে।[৪] ইস্তানবুল থেকে প্রায় ৪০ মাইল (৬৪ কিলোমিটার) দক্ষিণ-পূর্বে গেবসের কাছে ঝোপের মধ্যে বাক্কার নগ্ন, গলা টিপে হত্যাকরা এবং পচা মৃতদেহ পাওয়া গিয়েছিল।[১][২]

যে ব্যক্তি পুলিশকে তার লাশের দিকে নিয়ে যায়, সেই মুরাত কারাতাশকে[৩] আটক করা হয় এবং ৩১ মার্চ গ্যাস স্টেশন থেকে তার জিপে নিয়ে যাওয়ার পর বাক্কাকে ধর্ষণ ও গলা টিপে হত্যা করার কথা স্বীকার করার পর তাকে আটক করা হয় এবং গ্রেপ্তার করা হয়।[২] ডিএনএ পরীক্ষায় দেখা গেছে যে বাক্কাকে কেবল কারাতাশ নয়, একাধিক ব্যক্তি ধর্ষণ করেছে।[৭] সন্দেহভাজন ব্যক্তি টি বলেছিল যে সে "মাদক এবং অ্যালকোহলের প্রভাবে" ছিল এবং কী ঘটেছিল তা মনে করতে পারেনি।[৮]

সে নির্যাতিতার মোবাইল ফোনে তার নিজের সিম কার্ড ঢোকানোর পরে তার খোঁজ পাওয়া গিয়েছিল- এবং পুলিশ তৎপর হয়েছিল, কারণ এ আগেও চুরির জন্য দোষী সাব্যস্ত হয়েছিল।[২] বাক্কার নিজের তথ্য মোবাইল ডিভাইস থেকে মুছে ফেলা হয়েছিল, যা থেকে বাক্কার পরিবারের আইনজীবীর মতে, অন্তত অন্য একজন সহযোগী এর সঙ্গে জড়িত, কারণ কারাতাশ ইংরেজি বলতে পারে না এবং তৃতীয় শ্রেণীর পরে স্কুল ছেড়ে দিয়েছে।[৮]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

 

  1. Elisabetta, Povoledo (১৯ এপ্রিল ২০০৮)। "Performance Artist Killed on Peace Trip is Mourned"The New York Times 
  2. "'World peace' hitcher is murdered"BBC News। সংগ্রহের তারিখ ১২ এপ্রিল ২০০৮ 
  3. "Missing Italian 'World Peace' Hitcher And Artist Found Dead In Turkey"। All Headline News। ৬ মে ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ এপ্রিল ২০০৮ 
  4. "'Brides for peace' protester found dead in Turkey"BreakingNews। সংগ্রহের তারিখ ১২ এপ্রিল ২০০৮ 
  5. "Itinerary"Brides on Tour। Fotoup.net। ১৪ মার্চ ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ এপ্রিল ২০০৮ 
  6. "Brides on Tour"Brides on Tour। Fotoup.net। ৭ এপ্রিল ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ এপ্রিল ২০০৮ 
  7. "Bacca faced multiple rape"Hürriyet Daily News। Istanbul। ২০০৮। 
  8. Guler, Mehmet (৫ নভেম্বর ২০০৮)। "Pippa Bacca murderer says he does not remember killing"। Today's Zaman। Archived from the original on ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬।  উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; আলাদা বিষয়বস্তুর সঙ্গে "Guler" নামটি একাধিক বার সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে