পিন-আপ নারী

একজন পিন-আপ মডেল হলেন এমন একজন মডেল, যার প্রচুর পরিমাণে ছাপানো ছবি ও ফটোগ্রাফ সমাজের জনপ্রিয় সংস্কৃতিতে ব্যাপক সাড়া ফেলে। পিন-আপ মডেল সাধারণত গ্ল্যামার, অভিনেত্রী, অথবা ফ্যাশন মডেল, যাদের ছবি সাধারণত আনুষ্ঠানিক নয় বরং সৌন্দর্যপূর্ণ প্রদর্শনের জন্য তৈরি হয় এবং যেগুলো দেওয়ালে পিন করা হয়। ১৯৪০-এর দশক থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পিন-আপ মেয়েদের ছবি চিজকেক নামে পরিচিতি পেয়েছিলো।[১][২]
‘পিন-আপ’ শব্দটি আধা নগ্ন নারীদের আঁকা ছবি, চিত্রকর্ম, এবং ফটোগ্রাফ বোঝাতে ব্যবহৃত হয় এবং এটি ইংরেজিতে প্রথম ব্যবহৃত হয় ১৯৪১ সালে।[৩] পিন-আপ মেয়েদের ছবি ম্যাগাজিন ও সংবাদপত্রে প্রকাশিত হতো। এগুলো পোস্টকার্ড, লিথোগ্রাফি এবং ক্যালেন্ডারেও দেখা যেত। পিন-আপ মেয়েদের পুরুষ সমতুল্য হল পুরুষ পিন-আপ, যাকে ‘বিফকেক’ বলা হয়। এর মধ্যে ছিলেন বিখ্যাত অভিনেতা জেমস ডিন, গায়ক জিম মরিসন, এবং মডেল ফাবিও।
ইতিহাস
[সম্পাদনা]
উনবিংশ শতাব্দীর শুরু থেকে, যখন পিন-আপ মডেলিংয়ের সূত্রপাত ঘটে থিয়েট্রিকাল পরিমণ্ডলে, তখনকার মার্কিন বার্লেস্ক পরিবেশনার শিল্পীরা ও অভিনেত্রীরা তাদের অনুষ্ঠানের প্রচারের জন্য প্রায়শই আলোকচিত্রসহ ব্যবসায়িক কার্ড ব্যবহার করতেন। এই কার্ডগুলো প্রায় প্রতিটি থিয়েটারের সবুজ ঘরের দেয়ালে পিন করে ঝুলিয়ে রাখা হতো বা আয়নার ফ্রেমের কোণায়, গ্যাস বাতির সংযোগস্থলে, এমনকি পোশাক রাখার কেসের ওপরেও রাখা থাকত।[৪]
ইতিহাসবিদ মারিয়া এলেনা বসজেক (Maria Elena Buszek) লিখেছেন— "উনবিংশ শতাব্দীর অভিনেত্রীদের পরিচয় ও তাদের প্রতীকী গুরুত্ব বুঝতে হলে, সেই সময়ের নারীর যৌনতা সম্পর্কে প্রচলিত ধারণাগুলোও বোঝা জরুরি। সেই যুগে, কোনো নারী যতটা বেশি জনসমক্ষে আসতেন, ততটাই তাকে ‘পাবলিক’ বা ‘সবার জন্য উন্মুক্ত’ বলে যৌনতার দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করা হতো।"
বিশ শতকের শুরুতে চলচ্চিত্রে যেসব নারী অভিনেত্রী যৌনতার প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হতেন, তাঁদের ছবি ও চিত্রাঙ্কন পোস্টারে ছাপা হতো এবং ব্যক্তিগত সংগ্রহের জন্য বিক্রি হতো। এরকমই এক জনপ্রিয় পিন-আপ মডেল ছিলেন বেটি গ্রেবল, যাঁর আলোকচিত্র দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন জিআই সৈন্যদের লকারে অত্যন্ত পরিচিত দৃশ্য ছিল।

ইউরোপে, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আগেই মিস ফেরনান্দে আধুনিক পিন-আপ শিল্পের পথপ্রদর্শক হিসেবে উঠে আসেন। তাঁর নগ্ন ও সাহসী ছবিগুলো উভয় পক্ষের সৈন্যদের মধ্যে অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিল।[৫]

পিন-আপ কেবল আলোকচিত্রে সীমাবদ্ধ ছিল না— অনেক শিল্পীর আঁকা আদর্শ নারীর চিত্রেও তা ফুটে উঠেছে। এর প্রাথমিক দৃষ্টান্ত হিসেবে উঠে আসে চার্লস ডানা গিবসন কর্তৃক সৃষ্ট গিবসন গার্ল নামের একটি কল্পিত নারীমূর্তি। নতুন নারী ধারণার প্রতীক হিসেবে গিবসন গার্ল নারী স্বাধীনতা ও যৌনতার নতুন দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন ঘটিয়েছিল।[৬]

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় পিন-আপ শিল্প নতুন মাত্রা পায়। মার্কিন পুরুষদের জন্য প্রকাশিত ‘এসকয়্যার’ ম্যাগাজিনে শিল্পী আলবার্টো ভারগাস অঙ্কিত “ভারগাস গার্লস” এক আলাদা জনপ্রিয়তা অর্জন করে। যুদ্ধের আগে এরা রুচিশীল সুন্দরী ছিলেন, কিন্তু যুদ্ধকালীন পর্বে তাঁদেরকে সামরিক পোশাকে, খেলনা পুতুলের মতো ভঙ্গিমায় আঁকা হতে থাকে।[৭] ১৯৪২ থেকে ১৯৪৬ সাল পর্যন্ত মার্কিন সেনাবাহিনীর চাহিদার ভিত্তিতে প্রায় ৯ মিলিয়ন কপি বিজ্ঞাপনবিহীন ম্যাগাজিন, বিনামূল্যে দেশে ও বিদেশে অবস্থানরত সৈন্যদের মধ্যে বিতরণ করা হয়।[৮]
এই ছবিগুলো নাক শিল্পের অংশ হিসেবে যুদ্ধবিমান ও জাহাজেও আঁকা হতো। নাকশিল্প বলতে বোঝায় একটি বিমানের সামনের দেহে অঙ্কিত অলঙ্করণমূলক চিত্র বা নকশা। সাধারণত এই চিত্রাঙ্কনগুলো বিমানের সামনের অংশে, বিশেষ করে নাকের কাছাকাছি অংশে অঙ্কিত হতো বলেই একে "নাকশিল্প" (ইংরেজি:Nose Art) বলা হয়। এসব মডেলদের শুধুই যৌনতার প্রতীক নয়, বরং সৈনিকদের জন্য সৌভাগ্য এবং সাহসের উৎস হিসেবে দেখা হতো।[৯]
এই ধারার উল্লেখযোগ্য শিল্পীদের মধ্যে ছিলেন আর্ল কে. বার্জি, ইনক বোলস, জিল এলভগ্রেন, জর্জ পেটি, রলফ আর্মস্ট্রং, জোয়ে মোজার্ট, ডুয়েন ব্রায়ার্স[১০] এবং আর্ট ফ্রাহাম। সমসাময়িক কালে অলিভিয়া ডে বেরার্ডিনিস পিন-আপ চিত্রকলার জন্য খ্যাতি অর্জন করেছেন, যিনি বেটি পেইজ-এর বিভিন্ন চিত্র তৈরি করে প্লেবয় ম্যাগাজিনেও কাজ করেছেন।
নারীবাদ ও পিন-আপ
[সম্পাদনা]
পিন-আপ গার্লস বইয়ের লেখিকা মারিয়া বুজেক বলেছেন, পিন-আপ গার্ল নারীদের তাদের যৌনতা নিয়ে নিজের মতো করে প্রকাশ করার ও আনন্দ পাওয়ার একটি উপায় হিসেবে কাজ করেছে।[১১]
নারীবাদী গবেষক জোয়ান মেয়ারোভিৎজ জার্নাল অব উইমেন হিস্ট্রি-তে প্রকাশিত “উইমেন, চিজকেক, অ্যান্ড ব্রোডারলাইন ম্যাটেরিয়াল” প্রবন্ধে লেখেন, "যখন জনপ্রিয় সংস্কৃতিতে নারীদের যৌন ছবি বেড়ে যায়, তখন নারীরাও তা নিয়ে নিজের মতো করে সমর্থন বা বিরোধিতা করে যুক্তি তুলে ধরেন।"[১২]
১৮৬৯ সাল থেকেই নারীরা পিন-আপ সংস্কৃতির পক্ষে ও বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে আসছেন। যাঁরা পক্ষে ছিলেন, তাঁরা এটিকে ভিক্টোরিয়ান যুগের শরীর নিয়ে লজ্জাবোধের বিপরীতে একটি ইতিবাচক পরিবর্তন হিসেবে দেখতেন এবং নারীসৌন্দর্যের প্রতি স্বাস্থ্যসম্মত শ্রদ্ধা হিসেবেও।[১৩]
পিন-আপ সংস্কৃতি নারীদের তাদের দৈনন্দিন সংস্কৃতিতে পরিবর্তন আনার সুযোগ দেয়। এই মডেলরা নারীবাদের সেই লক্ষ্য পূরণে সফল হন যেখানে পুরুষতান্ত্রিক কঠিন নিয়মভঙ্গ করে সমাজে নতুন ধারণা প্রতিষ্ঠা করা হয়।[১১]
সমালোচকদের মতে, বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে নারীদের এই ছবি ও চিত্রায়ণ কিছু দেহ-ধারণার মানদণ্ড তৈরি করে—যেমন পরিষ্কার, স্বাস্থ্যবান ও গ্রহণযোগ্য রূপ—যা শুধু পুরুষ নয়, অনেক নারীও উপভোগ করতেন। তবে সময়ের সাথে এসব ছবি ‘সম্মানজনক’ থেকে ‘নিন্দনীয়’-এ রূপ নেয়।[১৪]
অন্যদিকে, নারীবাদী সমালোচকরা বলেছিলেন, এই ছবি সমাজের নৈতিকতা নষ্ট করে, নারীদের সম্মান নষ্ট করে এবং তাদের শুধু পুরুষের আনন্দের বস্তুতে পরিণত করে। এ ধরনের যৌন উপস্থাপনাকে তাঁরা নারী ও কিশোরদের জন্য ক্ষতিকর বলে মনে করতেন।[১৩]
পিন-আপ মডেলিংকে একটি উপসংস্কৃতি হিসেবে দেখা হয় যা নারীদের নিজের দেহ নিয়ে গর্ব করতে ও নিজের যৌনতা প্রকাশ করতে উৎসাহ দেয়। এই সংস্কৃতি নারীদের মধ্যে আদিরসাত্মক আত্মসচেতনতা ও আত্মপ্রকাশের সুযোগ তৈরি করে।[১১]
আধুনিক যুগে পিন-আপ
[সম্পাদনা]যদিও পিন-আপ মডেলিংয়ের সঙ্গে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ এবং ১৯৫০-এর দশকের সম্পর্ক বেশি, এটি সময়ের সাথে একটি উপসংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে, যা কিছু তারকাদের ও জনপ্রিয় ব্যক্তিত্বদের জীবনধারায় দেখা যায়। পামেলা অ্যান্ডারসন কে "চিরন্তন পিন-আপ" বলা হয়, কারণ তিনি দশকের পর দশক হিউ হেফনারের প্লেবয় ম্যাগাজিনের জন্য মডেলিং করেছেন।[১৫]
আমেরিকান গায়িকা লানা ডেল রে-এর স্টাইল অনেকটা ধ্রুপদি পিন-আপ মডেলদের মতো, এবং তিনি পিন আপ গ্যালোর নামের একটি গানও পরিবেশন করেছেন।[১৬]
বিয়ন্সে হোয়াই ডোন্ট ইউ লাভ মি শিরোনামের একটি গান রেকর্ড করেছেন,[১৭] যা ১৯৫০-এর দশকের আমেরিকান পিন-আপ রানি বেটি পেইজ-কে শ্রদ্ধা জানায়।
আমেরিকান বার্লেস্ক] শিল্পী ডিটা ভন টিস কে প্রায়ই আধুনিক পিন-আপ হিসেবে উল্লেখ করা হয়, কারণ তিনি আমেরিকান বার্লেস্ক সংস্কৃতির নবজাগরণে, বিশেষ করে নিও-বার্লেস্ক ধারায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি বেটি পেইজ-এর জীবন নিয়ে নির্মিত তথ্যচিত্র বেটি পেইজ রিভিলস অলে অংশ নেন,[১৮] যেখানে তিনি পিন-আপ ধারণাটি ব্যাখ্যা করেন।
কেটি পেরিও পিন-আপ মডেলিং থেকে ধারণা নিয়ে তার মিউজিক ভিডিও ও পোশাকে তা ব্যবহার করেছেন। ভিক্টোরিয়াস সিক্রেট ফ্যাশন শো-কে অনেক সময় বার্লেস্ক শো-এর সঙ্গে তুলনা করা হয়, এবং তাদের বার্ষিক অ্যাডভেন্ট ক্যালেন্ডারকে পিন-আপ সংস্কৃতির আধুনিক রূপ হিসেবে দেখা যায়।[১৯]
পিন-আপ উপসংস্কৃতির নিজস্ব কিছু ম্যাগাজিন ও অনলাইন প্ল্যাটফর্ম আছে। ২০১১ সালে শুরু হওয়া ডেলিসিয়াস ডলস" নামের একটি ম্যাগাজিন, যার প্রিন্ট ও ডিজিটাল দুই সংস্করণই আছে। ২০১৫ সালে একে বিশ্বের "সবচেয়ে পছন্দের" পিন-আপ ম্যাগাজিন বলা হয়। এই ম্যাগাজিনের উদ্দেশ্য হচ্ছে—"পুরনো ও আধুনিক পিন-আপ গার্লদের প্রচার ও উপস্থাপন।"[২০]
আরেকটি বিখ্যাত আধুনিক পিন-আপ ম্যাগাজিন রেট্রো লাভলি, যেখানে পুরনো স্টাইলের পোশাকে পিন-আপ মডেলদের তুলে ধরা হয়।[২১] এটি আধুনিক যুগের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া পিন-আপ ম্যাগাজিন হিসেবে পরিচিত।
এই উপসংস্কৃতির মধ্যে পিন-আপ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের সুযোগও আছে, যেমন 'ভিভা লাস ভেগাস' রকাবিলি উৎসবে একটি বিশেষ পিন-আপ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।[২২]
চিত্রশালা
[সম্পাদনা]-
বেটি পেজ, ১৯৫০-এর দশকের অত্যন্ত জনপ্রিয় এক পিন-আপ মডেল
-
ন্যান্সি পোর্টারের পিন-আপ ছবি, ইয়াঙ্ক: দ্য আর্মি উইকলি, জুন ১৯৪৫
-
অড্রি টটার-এর পিন-আপ ছবি, আগস্ট ১৯৪৫, ইয়াঙ্ক: দ্য আর্মি উইকলি
আরো দেখুন
[সম্পাদনা]আরও পাঠযোগ্য
[সম্পাদনা]- ম্যাক্স অ্যালান কলিন্স (২০০০)। For the Boys: The Racy Pin-ups of World War II। পোর্টল্যান্ড, ওরেগন: কালেক্টরস প্রেস (২০০২ সালে এমবিআই পাবলিশিং কোম্পানি, সেন্ট পল, মিনেসোটায় পুনর্মুদ্রিত)। আইএসবিএন ০-৭৬০৩-১৪৭২-১।
বহিঃযোগ
[সম্পাদনা]
- আমেরিকান পিন-আপের ৫০ বছর – দ্য উইক ইউকে প্রকাশিত একটি স্লাইডশো
- দ্য পিন আপ – ২০০০-এর দশকের পিন-আপ মডেলদের নিয়ে তথ্যপূর্ণ আর্কাইভ ম্যাগাজিন "দ্য পিন আপ ম্যাগাজিন"
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ Ayto, p. ১২৬.
- ↑ Meyerowitz, ১৯৯৬, পৃঃ ৯–৩৫.
- ↑ Ayto (2006), p. 126.
- ↑ Buszek (2006), pp. 42–44.
- ↑ "Dazzledent: Fernande Barrey"। Tumblr। ২৯ আগস্ট ২০১১। ৫ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ Buszek (2006), p. 82.
- ↑ Buszek (2006), p. 209.
- ↑ Buszek (2006), p. 210.
- ↑ Costello, John (১৯৮৫)। Virtue Under Fire: How World War II Changed Our social and Sexual Attitudes। Boston: Little Brown। পৃষ্ঠা 144–155। আইএসবিএন 0-316-73968-5।
- ↑ Bulletin, JB Miller The (৬ জুন ২০১২)। "Noted artist Duane Bryers dies at 100"।
- ↑ ক খ গ Buszek, Maria Elena (২০০৭)। Pin-Up Grrrls: Feminism, Sexuality, Popular Culture। Duke University Press।
- ↑ Meyerowitz (1996), p. 9.
- ↑ ক খ Meyerowitz (1996), p. 10.
- ↑ Ross (1989), p. 61.
- ↑ Kercher, Sophia (৮ মার্চ ২০১৬)। "From Pinup to Muse: Pamela Anderson's Next Chapter"
। The New York Times।
- ↑ Pin Up Galore (Live)। ২৪ এপ্রিল ২০১২। ২০২১-১১-১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা – YouTube-এর মাধ্যমে।
- ↑ Beyoncé - Why Don't You Love Me। ১৮ মে ২০১০। ২০২১-১১-১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা – YouTube-এর মাধ্যমে।
- ↑ "Bettie Page Reveals All (2012)"। IMDb।
- ↑ Vanessa Friedman (২৭ নভেম্বর ২০১৭)। "Pinups in the Post-Weinstein World"। The New York Times (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-১১-২৫।
- ↑ "About Delicious Dolls Magazine & Retro Pinup Models"। Delicious Dolls Magazine।
- ↑ Bann, Michael (২ জুন ২০১৮)। "The Retro Lovely Story"। Retro Lovely।
- ↑ "Viva Las Vegas: Pin Up Contest"। Viva Las Vegas।