পিটার জর্জ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
পিটার জর্জ
২০১০ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে পিটার জর্জ
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামপিটার রবার্ট জর্জ
জন্ম (1986-10-16) ১৬ অক্টোবর ১৯৮৬ (বয়স ৩৭)
উডভিল, অ্যাডিলেড, অস্ট্রেলিয়া
উচ্চতা২.০৩ মিটার (৬ ফুট ৮ ইঞ্চি)
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম
ভূমিকাবোলার
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
একমাত্র টেস্ট
(ক্যাপ ৪১৬)
৮ অক্টোবর ২০১০ বনাম ভারত
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
২০০৮ - ২০১৩সাউথ অস্ট্রেলিয়া
২০১৪ - ২০১৯কুইন্সল্যান্ড
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি এলএ
ম্যাচ সংখ্যা ৬৪ ২২
রানের সংখ্যা ১৬৭ ১১
ব্যাটিং গড় ১.০০ ৩.৬৩ ৫.৫০
১০০/৫০ –/–
সর্বোচ্চ রান ২২ ৪*
বল করেছে ১৬৮ ১২,২৫৯ ১১৬৪
উইকেট ২০৭ ২৫
বোলিং গড় ৩৮.৫০ ৩০.৭৫ ৩৭.৭৬
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ২/৪৮ ৮/৮৪ ৫/৩৯
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ১২/– ৭/–
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২৭ আগস্ট ২০২০

পিটার রবার্ট জর্জ (ইংরেজি: Peter George; জন্ম: ১৬ অক্টোবর, ১৯৮৬) দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার উডভিল এলাকায় জন্মগ্রহণকারী সাবেক অস্ট্রেলীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ২০১০-এর দশকের শুরুরদিকে অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে কুইন্সল্যান্ড ও সাউথ অস্ট্রেলিয়া দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম বোলার হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিং করতেন পিটার জর্জ

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট[সম্পাদনা]

অস্ট্রেলিয়ার ঘরোয়া ক্রিকেটে অন্যতম দীর্ঘকায় খেলোয়াড়ের মর্যাদা পেয়েছেন। তার উচ্চতা ২০৩ সেন্টিমিটার। ২০০৮ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত পিটার জর্জের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। কুইন্সল্যান্ড বুলসের পক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলছেন।[১] দীর্ঘদেহী ফাস্ট-বোলার পিটার জর্জের বোলিংয়ের ধরন অনেকাংশেই সাবেক ও বিখ্যাত ফাস্ট-বোলার গ্লেন ম্যাকগ্রা’র অনুরূপ ছিল। ইংল্যান্ড ও ভারত গমনার্থে অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট দলের সদস্য করা হয় তাকে। রায়ান হ্যারিসের পরিবর্তে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক খেলায় অংশগ্রহণের সুযোগ লাভ করেন। এরপর, কিছুদিন নিউজিল্যান্ডে অবস্থান করেন। ইংল্যান্ডে পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলার জন্যে তাকে শেষ মুহূর্তে দলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এ সফরে ডার্বিশায়ারের বিপক্ষে প্রস্তুতিমূলক খেলায় ১১ ওভার বোলিং করে ১৪ রান খরচ করেছিলেন। তাসত্ত্বেও, ভারত গমনে তাকে দলে নেয়া হয়।

২০০৮-০৯ মৌসুমের নভেম্বর মাসে রেডব্যাকসের সদস্যরূপে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। হোবার্টে তাসমানিয়ার বিপক্ষে ৪/৫৬ পান তিনি। বেলেরিভ ওভালে সেরা বোলিং পরিসংখ্যানের রেকর্ড গড়েন। নিজস্ব দ্বিতীয় মৌসুমে তাসমানিয়ার বিপক্ষে ৮/৮৪ পান।[২] বেলেরিভ ওভালে এটিই সেরা বোলিং পরিসংখ্যান ছিল।

অস্ট্রেলিয়া জাতীয় দলে নেয়ার বিষয়ে শেফিল্ড শিল্ড প্রতিযোগিতায় ৩০.৪৪ গড়ে ৩৬ উইকেট প্রাপ্তি বেশ প্রভাব ফেলে। এ দলের সদস্যরূপে শ্রীলঙ্কা এ দলের বিপক্ষে সময় উপযোগী ১১ উইকেট লাভের প্রেক্ষিতে দল নির্বাচকমণ্ডলী তাকে ইংল্যান্ডে প্রেরণ করে। ২০৩ সেন্টিমিটারের উচ্চতা নিয়ে সর্বোচ্চ পর্যায়ের বাউন্স প্রদানে সক্ষম ছিলেন। ২০১০ সালে একাডেমি থেকে আউটসুইঙ্গারে দক্ষ হয়ে উঠেন।

অ্যাডিলেড গ্রেড ক্রিকেটে দুই মৌসুম ধারাবাহিকভাবে খেলার পর ২০০৮-০৯ মৌসুমে সাউথ অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটের সূচনা ঘটে তার। তাসমানিয়ার বিপক্ষে অভিষেক খেলায় ৪/৫৬ পান। গত দশ বছরের মধ্যে এটিই সাউথ অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে কোন অভিষেকধারী খেলোয়াড়ের সেরা সাফল্য ছিল। এরপর, তিনি আরও পাঁচটি শেফিল্ড শিল্ডের খেলায় অংশ নিয়ে ৩২.১৫ গড়ে ২০ উইকেট নিয়ে প্রথম মৌসুম অতিবাহিত করেন।

দলে প্রত্যাখ্যান[সম্পাদনা]

২০০৫-০৬ মৌসুমে রেডব্যাকসের সাথে রুকি চুক্তিতে উপনীত হন। তবে, পরের মৌসুমেই চুক্তিছিন্নতার কবলে পড়েন। ওয়েস্ট টরেন্স ডিসিসি’র পক্ষে গ্রেড ক্রিকেটে অংশ নেন। তবে, অনেক টেস্ট খেলোয়াড়ের ন্যায় তাকেও শুরুতে বেশ প্রতিকূলতার মুখোমুখি হতে হয়েছে। কিন্তু, ২০০৫-০৬ মৌসুমের পুরোটা সময় জুড়ে ওয়েস্টার্ন ঈগলসের পক্ষে এ গ্রেড ক্রিকেটে উইকেট লাভে বেশ তৎপরতা দেখান। ফলশ্রুতিতে, সাউথ অস্ট্রেলিয়ান শিল্ড ক্রিকেট দলে তাকে রাখা হয়। কিন্তু, ওয়েস্ট টরেন্সের পক্ষে ধারাবাহিক ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শন করায় ২০০৮-০৯ মৌসুমে বড়দের দলে পুনরায় ফিরে আসেন। তার দৃষ্টিভঙ্গী হচ্ছে কখনো শিক্ষাগ্রহণ বন্ধ রেখো না।

সাম্প্রতিক সময়ে ওয়েস্ট টরেন্স অঞ্চলে তিনি ও সাউদার্ন রেডব্যাকসের দলীয় সঙ্গী এবং সতীর্থ অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে প্রতিনিধিত্বকারী কলাম ফার্গুসনের সম্মানার্থে উদীয়মান তরুণ খেলোয়াড় হিসেবে ফার্গুসন-জর্জ ক্রিকেট একাডেমির নামকরণ করা হয়। খেলায় আরও সুযোগের প্রত্যাশা নিয়ে ২০১৪ সালে রুকি চুক্তির আওতায় কুইন্সল্যান্ডে চলে যান।[৩] ২০১৪-১৫ মৌসুমে ম্যাটাডোর কাপে এ সুযোগকে কাজে লাগান তিনি। খেলায় ১১ উইকেট পান। এরফলে, ২০১৫-১৬ মৌসুমে বুলসের পক্ষে বড়দের দলে খেলার জন্যে তাকে চুক্তিতে নিয়ে আসা হয়।[৪]

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট[সম্পাদনা]

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে একটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন পিটার জর্জ। ৯ অক্টোবর, ২০১০ তারিখে বেঙ্গালুরুতে স্বাগতিক ভারত দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। এটিই তার একমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ ছিল। এরপর আর তাকে কোন টেস্টে অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়নি। তাকে কোন ওডিআইয়ে অংশগ্রহণ করার সুযোগ দেয়া হয়নি।

ব্যাঙ্গালুরুতে অনুষ্ঠিত সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে স্বাগতিক ভারতের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয় তার।[৫] ২০১০ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিদেশ সফরকারী দলের সদস্য হন। এরপূর্বে ২০০৯-১০ মৌসুমে নিউজিল্যান্ড সফরের মাঝামাঝি সময়ে জরুরীভিত্তিতে পরিবর্তিত খেলোয়াড় হিসেবে তাকে দলে নেয়া হয়েছিল। এ পর্যায়ে দলের কয়েকজন পেসার আঘাতের কবলে উপনীত হয়েছিলেন। এরপর, ২০১০ সালে ইংল্যান্ডে পাকিস্তান ও ২০১০-১১ মৌসুমে ভারত সফর করেন। দুই উইকেট পান তিনি।

ব্যক্তিগত জীবন[সম্পাদনা]

তার পিতা-মাতা রব ও গেইল শারীরিক শিক্ষক ও তারা শিক্ষক কলেজে পরিচিত হয়েছিলেন। ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত তিনি। পিটার জর্জ ও তার স্ত্রী সুসি খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী। মাইল এন্ডের টেম্পল ক্রিস্টিয়ান কলেজে তারা একত্রে পড়াশুনো করেছেন। তিন বছর পূর্বে ২১ বছর বয়সে তারা পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হন।[৬]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Queensland Bulls player profile"। ১৮ মে ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫ 
  2. George Topples Moody's Bellerive record
  3. Peter George hopeful of playing Test cricket again as he starts afresh in Queensland
  4. "QUEENSLAND BULLS CONTRACTS ANNOUNCED"। ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ আগস্ট ২০২০ 
  5. Brettig, Daniel (৯ অক্টোবর ২০১০)। "Indian debut for 'McGrath with outswing'"The Age। সংগ্রহের তারিখ ৯ অক্টোবর ২০১০ 
  6. "Cricketer Peter George serves the Lord through cricket"christiantoday.com.au (ইংরেজি ভাষায়)। Christian Today। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুলাই ২০১৯ 

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]