পিএল-৯
পিএল-৯ (চীনা: 霹雳-9, পিনইন: Pī Lì-9, অর্থ: বজ্রপাত-৯) একটি স্বল্প-পাল্লার, ইনফ্রারেড-হোমিং (তাপ অনুসরণকারী) আকাশ থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র, যা গণপ্রজাতন্ত্রী চীন দ্বারা উন্নয়ন করা হয়েছে।
| উৎপত্তি | গণপ্রজাতন্ত্রী চীন |
|---|---|
| ধরন | স্বল্প-পাল্লার আকাশ থেকে আকাশ ক্ষেপণাস্ত্র |
| প্রস্তুতকারক | লুয়োয়াং ইলেক্ট্রো-অপটিক্স প্রযুক্তি উন্নয়ন কেন্দ্র (EOTDC) হানঝোং নানফেং মেশিন ফ্যাক্টরি শিয়ান ইস্টার্ন মেশিনারি ফ্যাক্টরি |
| পরিষেবাতে | আনুমানিক ১৯৮৯–বর্তমান |
| ইঞ্জিন | কঠিন ইন্ধন রকেট |
| ওজন | ১২৩ কেজি (PL-9) ১১৫ কেজি (PL-9C) |
| দৈর্ঘ্য | ২.৯ মিটার |
| ব্যাস | ০.১৫৭ মিটার |
| ডানার বিস্তার | ০.৮৫৬ মিটার |
| গতি | মাক ২+ |
| পাল্লা | ১৫ কিমি (PL-9) ২২ কিমি (PL-9C) >৮ কিমি (DK-9) |
| নির্দেশনা | বহু-উপাদান ইনফ্রারেড |
| যুদ্ধাস্র | ১১.৮ কেজি বিস্ফোরক-বিভাজন অথবা সম্প্রসারিত রড |
| বিস্ফোরণ পদ্ধতি | লেজার নিকটবর্তী ফিউজ |
| নিক্ষেপ প্ল্যাটফর্ম | যুদ্ধবিমান, হেলিকপ্টার গানশিপ, ভূমি থেকে উৎক্ষেপণ |
ইতিহাস
[সম্পাদনা]পিএল-৯ কর্মসূচি ১৯৮৬ সালে শুরু হয়। ক্ষেপণাস্ত্রটি ১৯৮৯ সালে ধারাবাহিক উৎপাদনে প্রবেশ করে। এর দুটি উন্নত সংস্করণ, পিএল-৯বি এবং পিএল-৯সি যথাক্রমে ১৯৯২ ও ২০০২ সালে অনুমোদিত হয়। সর্বশেষ সংস্করণটি হলো পিএল-৯ডি।[১]
এই ক্ষেপণাস্ত্রটি মূলত ডিজাইন করেছিলেন ডং বিংইন (董秉印), যিনি লুয়োয়াং ইলেক্ট্রো অপটিক্যাল সেন্টারে কর্মরত ছিলেন। এই প্রতিষ্ঠানটি পূর্বে "ইনস্টিটিউট ৬১২" নামে পরিচিত ছিল এবং ২০০২ সালে এর নাম পরিবর্তন করে "চীন আকাশ থেকে আকাশ গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্র গবেষণা ইনস্টিটিউট" (中国空空导弹研究院) রাখা হয়। ডং বিংইনের মৃত্যুর পর তাঁর স্থলাভিষিক্ত হন মি. জিন শিয়ানঝোং (金先仲)। পিএল-৯–এর উপ প্রধান ডিজাইনার হলেন ড. লিয়াং শিয়াওগেং (梁晓庚), যিনি PL-12 ক্ষেপণাস্ত্রেরও উপ প্রধান ডিজাইনার ছিলেন।
পিএল-৯সি হলো পিএল-৯–এর একটি পরবর্তী সংস্করণ, যার একটি ভূমি থেকে আকাশ রূপও রয়েছে – DK-9। পিএল-৯সি স্বল্প-উচ্চতার কৌশলগত ভূমি থেকে আকাশ ক্ষেপণাস্ত্র (SAM) ১৯৮৯ সালের প্যারিস এয়ার শো-তে প্রথম প্রকাশ্যে প্রদর্শিত হয়। এই ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ ইউনিট দুটি বিন্যাসে উপলব্ধ: টোড (towed) এবং স্বচালিত । স্বচালিত সংস্করণে একটি চার-রেলের উৎক্ষেপণ ব্যবস্থা রয়েছে, যেখানে টার্গেট অ্যাকুইজিশন রাডার ও ইলেক্ট্রো-অপটিক্যাল ডিরেক্টরসহ পুরো ব্যবস্থা একটি ৬×৬ WZ551তে স্থাপন করা হয়েছে। টোড সংস্করণে চার-রেলের উৎক্ষেপণ ব্যবস্থা একটি চার-চাকার ট্রেলারে বসানো হয়। উৎক্ষেপণ ইউনিটটি ক্ষেপণাস্ত্রের রক্ষণাবেক্ষণ ও পরীক্ষার জন্য ট্রাক-চালিত বিভিন্ন স্থল সরঞ্জাম দ্বারা সহায়তা পায়।
ডিজাইন
[সম্পাদনা]পিএল-৯ ক্ষেপণাস্ত্রের গাঠনিক নকশা পিএল-৫এবং পিএল-৭ ক্ষেপণাস্ত্রের উন্নতকৃত কাঠামোর উপর ভিত্তি করে তৈরি। এর সিকার হেডে পিএল-৮ (ক্ষেপণাস্ত্র)ও Python (ক্ষেপণাস্ত্র)ক্ষেপণাস্ত্র থেকে নেওয়া সেন্সর সংযুক্ত করা হয়েছে।[২]
এই ক্ষেপণাস্ত্রে একটি ক্রায়োজেনিক তরল নাইট্রোজেন দ্বারা শীতলকৃত ইনফ্রারেড (IR) সিকার ব্যবহৃত হয়েছে, যা +/-৪০ ডিগ্রি পর্যন্ত বোরসাইট কোণের বাইরে লক্ষ্য শনাক্ত করতে সক্ষম। ফ্লাইট নিয়ন্ত্রণের জন্য ক্ষেপণাস্ত্রের সামনের দিকে লম্বা, তীক্ষ্ণ ডেল্টা আকৃতির ফিন ব্যবহার করা হয়েছে এবং পশ্চাদভাগে Sidewinder ধাঁচের রোল নিয়ন্ত্রণকারী রোলেরন বসানো হয়েছে, যা ঘূর্ণন প্রতিরোধ করে এবং নির্দেশনা ব্যবস্থার কার্যকারিতা উন্নত করে।
ক্ষেপণাস্ত্রটির সর্বাধিক কার্যকর পাল্লা ৩৫ কিমি পর্যন্ত হতে পারে [তথ্যসূত্র প্রয়োজন], যদিও এত দূরত্বে আঘাতের সম্ভাবনা কম, কারণ এই রকম দূরত্বের হিসাব সাধারণত একটি উচ্চ উচ্চতায়, সোজা পথে আসা লক্ষ্যবস্তুর বিরুদ্ধে মুখোমুখি সংঘর্ষের ভিত্তিতে করা হয়, যেখানে ক্ষেপণাস্ত্রকে কম পথ অতিক্রম করতে হয়।
একটি একক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে সোজাসুজি আসা একটি লক্ষ্যবস্তুকে আঘাত করার সম্ভাবনা প্রায় ৯০%। এই ক্ষেপণাস্ত্রকে একটি স্বতন্ত্র ব্যবস্থার অংশ হিসেবে অথবা টাইপ ৩৯০ (DK-9) ব্রিগেড (বা রেজিমেন্ট) স্তরের সম্মিলিত AAA/SAM আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার অংশ হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
পিএল-৯ ক্ষেপণাস্ত্র ১৯৯১ সালে উৎপাদনে প্রবেশ করে এবং সীমিতভাবে পিপলস লিবারেশন আর্মি (PLA)-এর স্থল বাহিনীতে ব্যবহৃত হয়।
ধরন
[সম্পাদনা]- পিএল-৯
- পিএল-৯বি
- পিএল-৯সি
- পিএল-৯ডি
- ডিকেএ-৯
- পিএল-৯ পরিবর্তিত ভূমি থেকে আকাশ ক্ষেপণাস্ত্র।[৩]
ব্যবহারকারী
[সম্পাদনা]বর্তমান ব্যবহারকারী
[সম্পাদনা]- বাংলাদেশ বিমান বাহিনী (BAF)[৪]
- নামিবিয়া বিমান বাহিনী[৫]
- নাইজেরিয়া বিমান বাহিনী[৬]
- পাকিস্তান বিমান বাহিনী (PAF)
- চীনা পিপলস লিবারেশন আর্মি এয়ার ফোর্স
- চীনা পিপলস লিবারেশন আর্মি নেভাল এয়ার ফোর্স
আরো দেখুন
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ Wood, Yang এবং Cliff 2020, পৃ. 16–19।
- ↑ Wood, Yang এবং Cliff 2020, পৃ. 36।
- ↑ "PL-9 DK-9"। GlobalSecurity।
- ↑ "Trade-Register-1971-2018.rft"। Stockholm International Peace Research Institute। ২৯ ডিসেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ২১ এপ্রিল ২০১৯।
- ↑ Cooper এবং অন্যান্য 2011, পৃ. 73
- ↑ Cooper এবং অন্যান্য 2011, পৃ. 94