পাবুজির ফাড়

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
পাবুজির ফাড়
অন্তর্ভুক্তিহিন্দুধর্ম
আবাসরাজস্থান
গ্রন্থসমূহপাবুজির মহাকাব্যিক গল্প
অঞ্চলরাজস্থান

পাবুজির ফাড় হল লোক দেবতাদের একটি ধর্মীয় স্ক্রল চিত্রাঙ্কন। এটি প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী লোকশিল্পগুলির মধ্যে একমাত্র বেঁচে থাকা শিল্প যেটি সঙ্গীতের আকারে উপস্থাপন করা হয়। এটি হল রাঠোর রাজপুত প্রধান পাবুজির মহাকাব্যের জগতের ফাড় চিত্রকর্ম[১][২][৩][৪][৫] পাবুসারের ভোপারা হলেন চারণ কবি এবং এছাড়াও পুরোহিতেরা এই শিল্পের পরম্পরাগত বর্ণনাকারী। ফাড়কে "পার" হিসাবেও বানান করে লেখা হয়। শিল্পের এই রূপটি ভারতীয় রাজ্য রাজস্থানে জনপ্রিয়। আক্ষরিক অর্থে, 'পাবুজির ফাড়' দুই ভাবে অনূদিত হয়, যথা, "পাবুজির চিত্রকথা" বা "ও, পাবুজির পাঠ!"। পাবুজি "বালু মরুভূমির তপস্বী দেবতা" নামেও পরিচিত।[১][২][৩][৪][৫]

এই শিল্প রূপের সাথে যুক্ত তিনটি মৌলিক বৈশিষ্ট্য আছে: প্রথমটি হল, ১৪ শতকের রাজস্থানের রাঠোর প্রধান পাবুজির মহাকাব্য, এই পাবুজিকে হিন্দু ঈশ্বরের অবতার বলে গৌরব করা হয়, এবং রাজস্থানের রেবারী উপজাতিরা তাঁর পূজা করে; দ্বিতীয়টি ফাড় বা পার, যা কাপড়ে তৈরি একটি লম্বা স্ক্রল চিত্রকর্ম (বা সূচীকর্ম), যেখানে পাবুজির সামরিক বীরত্ব প্রচুরভাবে পূজার জন্য প্রদর্শিত হয়; তৃতীয় ভোপা নামে পরিচিত যাযাবর উপজাতির নায়কদের চারণ কবি পুরোহিত, (যারা পাবুজির সম্প্রদায়ভুক্ত) এবং পাবুজির গল্প বর্ণনায় বিশেষজ্ঞ, তারা সেরা নির্মান কর্ম নিয়ে ফাড়ের মাধ্যমে গল্প শোনায়। তৃতীয় ফাড়টি রাজস্থানের সমগ্র থর মরুভূমিতে একটি বহনযোগ্য মন্দির হিসেবে ব্যবহৃত হয়।[১][২]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

পাবুজির ফাড়-এ, লোক-দেবতা পাবুজি, নতুন দিল্লির জাতীয় সংগ্রহালয়ের একটি ফাড় চিত্রকর্ম

পাবুজিকে একটি লোক-দেবতা হিসাবে পূজা করা হয়। তিনি রাজস্থানের কোলু নামে পরিচিত একটি প্রত্যন্ত গ্রামে ১৪ শতকে (১৬ শতকেরও উল্লেখ পাওয়া যায়) বাস করতেন। কোলু গ্রামের ধাদল রাঠোরের চার সন্তান ছিল: দুই ছেলে, বড় জনের নাম বুড়ো আর ছোটটি পাবুজি, এবং দুটি মেয়ে, সোনা ও পেমা। যাইহোক, বলা হয় পাবুজির জন্ম হয়েছিল একটি জলপরীর ঘরে এবং জলপরীর ভবিষ্যদ্বাণী অনুসারে তিনি ১২ বছর পর অশ্বা হিসাবে ফিরে আসবেন তাঁর সাথে থাকার জন্য। অল্প বয়সেই, পাবুজি খিচি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে তাঁদের জমি থেকে তাদের উচ্ছেদ করার জন্য যুদ্ধ করেছিলেন, খিচিরা তাঁদের জমি দখল করে রেখেছিল এবং তাঁদের নেতা জিন্দ্রাভ খিঞ্চিকে হত্যা করেছিল। এই সময়কালে, তিনি চারণ বংশের লেডি দাভালের (কোলুতে পূজিত দেবী) কাছ থেকে একটি কালো ঘোড়াও অর্জন করেছিলেন এবং এটি বিশ্বাস করা হয় যে তাঁর নিজের মা এই ঘোড়াটির রূপে পুনর্জন্ম নিয়েছিলেন। এরপর তিনি গরু হত্যায় লিপ্ত মির্জা খানকে পরাজিত করতে যান, কারণ হিন্দুদের কাছে গরুকে পবিত্র বলে মনে করা হয়। তিনি নারীদের সম্মানও রক্ষা করেন।[২][৪][৫]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Dalrymple, William (২০০৯)। Nine LivesThe Singers of Epics। Bloomsbury Publishing Plc। পৃষ্ঠা 96–97। আইএসবিএন 978-1-4088-0153-6। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-০৬-১৩ 
  2. "The bhopas of Rajasthan"। The National। ২০০৯-০৯-০৪। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-০৬-১৩ 
  3. "The Epic of Pabhuji"। John Smith’s Homepage:Indology info। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-০৬-১৩ 
  4. "Phad Painting (Shahpura Traditional Phad Painting)"। Indian Business Directory। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-০৬-১৩ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  5. "Par (paintings on cloth) from Rajasthan"। Kalarte Gallery: India। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-০৬-১৩ 

গ্রন্থপঞ্জি[সম্পাদনা]

  • Dalrymple, William (২০০৯)। Nine LivesThye Singers of Epics। Bloomsbury Publishing Plc। আইএসবিএন 978-1-4088-0153-6। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-০৬-১৩ 
  • Smith, John D. (২০০৫)। The Epic of Pabuji। Katha, New Delhi। আইএসবিএন 81-87649-83-6 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]