পাবলো নেরুদা
পাবলো নেরুদা (জন্ম: ১২ই জুলাই, ১৯০৪) প্রকৃত নাম রিকার্ডো এলীসার নেফতালি রিয়েস বাসোয়ালতো।তিনি তাঁর বাবার জন্য পাবলো নেরুদা ছদ্মনাম গ্রহন করেছিলেন।
১৯৭১ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার বিজেতা একজন চিলিয় কবি, কুটনীতিবিদ ও রাজনী ছিলেন।বিদ। নেরুদা মাত্র তেরো বছর বয়েসে কবি হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন যখন তিনি বিভিন্ন ধরণের কবিতা লিখতে শুরু করেন। এর মধ্যে ছিল পরাবাস্তববাদী কবিতা, ঐতিহাসিক মহাকাব্য, প্রকাশ্য রাজনৈতিক ইশতেহার, গদ্য আত্নজীবনী এবং ভালোবাসার কবিতা যা তাঁর ১৯২৪ সালে প্রকাশিত বিশটি ভালোবাসার কবিতা ও একটি মন খারাপের গান শীর্ষক কাব্যগ্রন্থ থেকে গৃহীত।এগুলো লেখনীর
কিংবদন্তি।
পাবলো নেরুদা | |
---|---|
![]() ১৯৬৩ সালে নেরুদা | |
জন্ম | রিকার্ডো এলীসার নেফতালি ১২ জুলাই ১৯০৪ পারাল, মৌলে অঞ্চল, চিলি। |
মৃত্যু | ২৩ সেপ্টেম্বর ১৯৭৩ সান্তিয়াগো, চিলি। | (বয়স ৬৯)
পেশা | কবি, কুটনীতিবিদ, সিনেটর। |
ভাষা | স্পেনীয়, ইংরেজি, ফরাসি। |
জাতীয়তা | চিলিয় |
উল্লেখযোগ্য পুরস্কার |
|
দাম্পত্যসঙ্গী | মারিজকে এন্টোনিতা (বিচ্ছেদ- ১৯৬৫) ডেলিয়া ডেল (বিচ্ছেদ ১৯৮৯) |
সন্তান | মালভা ম্যারিনা (মৃত্যু ১৯৪৩) |
স্বাক্ষর | ![]() |
প্রাথমিক জীবন[সম্পাদনা]
পাবলো নেরুদা সান্তিয়াগোর ৩৫০ কি.মি দক্ষিণে চিলির লিনারেস প্রদেশের অন্তর্গত পারাল -এ ১৯০৪ সালের ১২ই জুলাই জন্মগ্রহণ করেন। মোরেলসের মতে, একজন রেলওয়ে কর্মী, রোজা অপ্যাজো ও একজন স্কুল শিক্ষক যিনি তাঁর জন্মের দুমাস পর মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর মৃত্যুর পর পরই রিয়েস তিমুকোতে পাড়ি জমান। তিনি সেখানে মালভারদে নামক একটি মহিলাকে বিয়ে করেন, যার কাছে তাঁর পূর্বে নয় বছর বয়েসি রোদোলফো নামক একজন ছেলে ছিল। নেরুদা তিমুকোতে রোদোলফো ও তাঁর বোন লরিতার সাথে বেড়ে ওঠেন। লরিতা ছিল তাঁর বাবার বিয়েবহির্ভূত প্রেমিকা অরেলার মেয়ে। নেরুদা একজন নাস্তিক। তিনি তাঁর প্রথম দিকের কবিতাগুলি ১৯১৪ সালের শীতকালে রচনা করেছিলেন।
ব্যক্তিগত জীবন[সম্পাদনা]
নেরুদা ব্যক্তিগত জীবনে পরপর মারজিকে এন্টোনিতা, ডেলিয়া ডেল ও মাতিলদের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তাঁদের সবার-ই বিবাহবিচ্ছেদ হয়। তাঁর একমাত্র কন্যাসন্তান ছিলেন মালভা ম্যারিনা।
কর্মজীবন[সম্পাদনা]
নেরুদা তাঁর জীবদ্দশায় বিভিন্ন দেশে বহু কুটনৈতিক পদে বহাল ছিলেন এবং চিলিয় সাম্যবাদী দল -এর সিনেটর হিসেবে নিজেকে নিয়োজিত রাখেন। রাষ্ট্রপতি গ্যাব্রিয়েল ভিদেলা যখন চিলিতে ১৯৪৮ সালে সাম্যবাদী বন্ধের ডাক দিয়ে নেরুদার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। বন্ধুরা তাঁকে ভালপারাইসোর বন্ধর শহরে একটি ঘরের ভিতর লুকিয়ে রাখেন। সেখান থেকে নেরুদা পাহাড়ের উপর দিয়ে মাইহু হ্রদ অতিক্রম করে আর্জেন্টিনায় পালিয়ে যান। বছর কয়েক পর নেরুদা চিলির সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রপতি সালভাদর আলেন্দের সাহচর্যে আসেন। নেরুদা নোবেল পুরস্কার গ্রহণের পর যখন তিনি চিলিতে ফেরত আসেন, তখন আলেন্দে তাঁকে এস্টাডিও নেশনালে সত্তর হাজার লোকের সম্মুখে বক্তব্য রাখার আমন্ত্রণ জানান। অগাস্টো পিনোচের শাসনামলে নেরুদা ১৯৭৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। তাঁর মনে হয়েছিল কোনো এক ডাক্তার পিনোচেটের আদেশে তাঁকে ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে হত্যা করার পরিকল্পনা করেছেন। নেরুদা ১৯৭৩ সালের ২৩শে সেপ্টেম্বর তাঁর নিজ বাড়িতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। অনেকে মনে করেন, তাঁকে স্পষ্টত হত্যা করা হয়েছে। কিংবদন্তি নেরুদার মৃত্যুতে স্বাভাবিকভাবেই সারা বিশ্বে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। পিনোচেট তাঁর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া জনসমক্ষে করার অনুমতি দেননি। কিন্তু হাজারও শোকার্ত চিলিয়রা তাঁর আদেশ অমান্য করে পথে ভিড় জমান। নেরুদাকে প্রায়ই চিলির জাতীয় কবি হিসেবে ধরা হয় এবং তাঁর সাহিত্যকর্মগুলি বিশ্বজুড়ে বেশ জনপ্রিয়তা পায়। কলম্বিয়ার ঔপন্যাসিক গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজ একদা তাঁকে বিংশ শতাব্দীর সকল ভাষার মহান কবি হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
সাহিত্যিক জীবন[সম্পাদনা]
নেরুদার বাবা তাঁর লেখালিখি ও সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনার বিরোধিতা করলেও নোবেল পুরস্কার বিজয়ী গ্যাব্রিয়েলা মিস্ট্রালদের মতো আরও অনেকজন থেকে সহযোগিতা পেয়েছে। ১৯১৭ সালের ১৮ই জুলাই তাঁর প্রথম লিখা আন্তরিকতা ও অধ্যবসায় মাত্র তেরো বছর বয়েসে দৈনিক সংবাদপত্র লা মানানা-তে প্রকাশিত হয়। ১৯১৮ থেকে ১৯২০ সাল পর্যন্ত তাঁর বহু কবিতা প্রকাশ পায়। ১৯১৯ সালে তিনি সাহিত্য প্রতিযোগিতায় যোগ দেন আর সেখানে তিনি তৃতীয় স্থান অধিকার করেন। ১৯২১ সালে শিক্ষক হওয়ার অভিপ্রায়ে নেরুদা চিলি বিশ্ববিদ্যালয়ে ফরাসি পড়তে যান। দিন-রাত এক করে তিনি সাহিত্য ও কবিতা লিখায় মন দেন। পরে তিনি একজন সফল আন্তর্জাতিক কবি হওয়ার খ্যাতি অর্জন করেন।
কুটনৈতিক ও রাজনৈতিক জীবন[সম্পাদনা]
চিলিতে ফেরার পর নেরুদাকে বুয়েনস এয়ারস-এ কুটনৈতিক পদ দেওয়া হয়েছিল, পরে স্পেনের বার্সেলোনায়। পরবর্তীতে তিনি মাদ্রিদে সাহিত্যের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে কাজ করেন। তাঁর একমাত্র কন্যা মালভা ম্যারিনা মাদ্রিদে জন্মগ্রহণ করেছিল। ছোট থেকেই তাঁর রোগব্যাধি থাকায় মাত্র নয় বছরে তাঁর কন্যা মারা যান। পরবর্তীতে তিনি সাহসী সাম্যবাদী ও বামপন্থী হিসেবে জীবন কাটিয়ে দেন। ১৯৪৫ সালের ৪ঠা মার্চ নেরুদা অ্যান্টোফাগাস্তা ও তারাপাসা -এর উত্তর প্রদেশের সাম্যবাদী সিনেটর হিসেবে নির্বাচিত হন। সরকারিভাবে তিনি চার মাস পর সাম্যবাদী দলে যোগ দেন।
মৃত্যু[সম্পাদনা]
পিনোচের শাসনামলে নেরুদা ১৯৭৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। তাঁর মনে হয়েছিল কোনো এক ডাক্তার পিনোচেটের আদেশে তাঁকে ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে হত্যা করার পরিকল্পনা করেছেন। নেরুদা ১৯৭৩ সালের ২৩শে সেপ্টেম্বর তাঁর নিজ বাড়িতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। অনেকে মনে করেন, তাঁকে স্পষ্টত হত্যা করা হয়েছে।
টীকা[সম্পাদনা]
![]() |
উইকিউক্তিতে নিচের বিষয় সম্পর্কে সংগৃহীত উক্তি আছে: Pablo Neruda। |
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
- Jaime Perales Contreras, " Paz and Neruda: A Clash of Literary Titans", Americas Magazine,(Organization of American States). July 2008.
- Adam Feinstein, Pablo Neruda: A Passion for Life, Bloomsbury, 2004. (আইএসবিএন ১-৫৮২৩৪-৪১০-৮)
- Pablo Neruda, Memoirs (translation of Confieso que he vivido: Memorias), translated by Hardie St. Martin, Farrar, Straus, and Giroux, 1977. (1991 edition is আইএসবিএন ০-৩৭৪-২০৬৬০-০)
- Pablo Neruda: Passion, Poetry, Politics আইএসবিএন ৯৭৮-০-৭৬৬০-২৯৬৬-৮ [১][স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ১৯০৪-এ জন্ম
- ১৯৭৩-এ মৃত্যু
- চিলীয় জাতি
- চিলীয় পুরুষ কবি
- নোবেল বিজয়ী সাহিত্যিক
- নোবেল বিজয়ী চিলীয়
- ফ্রান্সে চিলীয় রাষ্ট্রদূত
- চিলীয় কূটনীতিবিদ
- মার্কসবাদী লেখক
- মার্কসবাদী কবি
- সাম্যবাদী লেখক
- সাম্যবাদী কবি
- চিলীয় সাম্যবাদী
- বাস্ক বংশোদ্ভূত চিলীয়
- স্পেনীয় গৃহযুদ্ধের ব্যক্তি
- প্রস্টেট ক্যান্সারে মৃত্যু
- স্তালিন শান্তি পুরস্কার প্রাপক
- মৌলে অঞ্চলের ব্যক্তিত্ব
- ক্যান্সারে মৃত্যু
- সনেট রচয়িতা
- চিলীয় লেখক
- চিলীয় নাস্তিক
- চিলীয় মার্কসবাদী