পাত্তানি রাজ্য
পাত্তানি সালতানাত كراجأن ڤتاني Kerajaan Patani | |||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
১৪৫৭–১৯০২ | |||||||||
![]() পাত্তানি সালতানাতের মানচিত্র | |||||||||
রাজধানী | পাত্তানি | ||||||||
প্রচলিত ভাষা | ধ্রুপদী মালয় পাত্তানি মালয় | ||||||||
ধর্ম | সুন্নী ইসলাম | ||||||||
সরকার | রাজতন্ত | ||||||||
ঐতিহাসিক যুগ | মধ্যযুগ | ||||||||
• প্রতিষ্ঠা | ১৪৫৭ | ||||||||
• Conquest by Siam in 1785, later followed by annexation | ১৯০২ | ||||||||
| |||||||||
বর্তমানে যার অংশ | ![]() ![]() |
মালয়েশিয়ার ইতিহাস |
---|
ধারাবাহিকের একটি অংশ |
![]() |
পাত্তানি রাজ্য ঐতিহাসিক পটানি অঞ্চলে পাত্তানি (পটানি) সালতানাত নামে একটি মালয় সালতানাত ছিল। এটি বর্তমানে আধুনিক পটানি, ইলাও নারাওয়াই থাই প্রদেশ এবং উত্তর মালয়েশিয়ার কিছু অংশ পড়েছে।
প্রাথমিক ইতিহাস[সম্পাদনা]
চীনা ভ্রমনকারীদের বিবরন থেকে জানা যায়, এই অঞ্চলে ২য় শতাব্দিতে লংকাসুকা নামে একটি হিন্দু বৌদ্ধ রাজ্য ছিল। এর মধ্যে চীনা তীর্থ যাত্রী আই চিং এর বর্ণনা উল্লেখযোগ্য। রাজ্যটির ব্যবসা বাণিজ্য চীন, ভারত থেকে শুরু করে থাইল্যান্ড উপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। একাদশ শতাব্দী চোলা অভিযানের কারণে রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা শুরু হয় হলে এটি ব্যবসায়িক গুরুত্ব হারাতে শুরু করে। বর্তমানে সমুদ্র থেকে ১৫ কি.মি. দূরে লংকাসুকা রাজ্যের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া যায়। পটানি ধীরে ধীরে শ্রী বিজয়া সাম্রাজ্যের অংশ হয়ে পড়ে। শ্রী বিজয়া সাম্রাজ্যে দক্ষিণ চীন সাগর থেকে মালাক্কা প্রণালী পর্যন্ত ব্যবসা বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করত। ধারণা করা হয়, প্রাচীন মেবার রাজ্যের উপর মালয় সংস্কৃতির প্রভাব ছিল। ১৫ তম শতাব্দির শুরুতে পটানি অঞ্চলে ইসলামের বিস্তার শুরু হয়।[১] লোক কাহীনি থেকে জানা যায়, এর অগ্রদূত ছিলেন সুলতান ইসমাইল শাহ। মালয় ভাষায় পটানি শব্দের অর্থ সৈকত। ধারণা করা হয়, এটি চীনাদের কাছে প্যান প্যান নামে পরিচিত ছিল। আরেকটি তত্ব থেকে জানা যায়, পাত্তানি রাজ্য ১৪ শ তম শতাব্দিতে প্রতিষ্টিত হয়েছিল। লোক কাহীনি অনুযায়ী, পাক টানি (টানির পিতা) নামক জেলেকে রাজা সমুদ্র তীরে পাঠায় বসবাসের জায়গা খোজার জন্য। সে প্রথম যাত্রায় সফল হয় এবং পরবর্তীতে বহু লোক তাকে অনুসরণ করে। এই থেকে তার নাম অনুসারে জায়গাটির নাম হয় পাত্তানি পটানি। ১৫৮৪ সাল পর্যন্ত চার রাণীর রাজত্বকালকে পাত্তানি রাজ্যের স্বর্নযুগ বলা হয়। তারা ছিলেন রাতু (সবুজ রানী), রাতু বীরু (নীল রানী), রাতু উংগু (রক্তবর্ণ রানী) এবং রাতু কুনিন (হলুদ রাণী), এই সময়ে সামরিক শক্তি এতটাই বৃদ্ধি পেয়েছিল যে এরা চারবার সিয়ামিজ অভিযান প্রতিহত করে।
সুখুথাই[সম্পাদনা]
১৪শ শতাব্দীতে রাজা রামঘেয়াং পটানি রাজ্যকে একটি করদ রাজ্যে পরিনত করেন।
আয়ুথায়া[সম্পাদনা]
থাই আয়ুথায়া রাজ্যে এটিকে ১৪শ শতাব্দীতে জয় করে এবং কেন্দ্রীয় শক্তির অধীনে নিয়ে আসে। এই সময় শেখ সাইফুদ্দিন নামক এক ব্যক্তি সমুদ্র উপকূলবর্তী স্থানে বসবাস করতেন। তিনি রাজাকে দূরারোগ্য ব্যাধি থেকে মুক্ত করলে, রাজা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন এবং সুলতান ইসমাইল শাহ নাম ধারণ করেন। খন্ড খন্ড বিরবন থেকে জানা যায়, স্থানীয় লোকজন পূর্ব থেকেই ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতে শুরু করেছিল। ইবনে বতুতা ও পর্তুগীজদের বিবরন থেকে জানা যায়, মালাক্কার পূর্বেই পটানিতে ইসলামের প্রসার ঘটে ছিল।
প্রথম সিয়ামিজ বার্মিজ যুদ্ধ[সম্পাদনা]
১৬ শ শতাব্দীতে বার্মার উত্থান ঘটে, বার্মিজ রাজা চিরাং মাই লাওসের সাথে জোট করে আয়ুথায়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে। এতে, আয়ুথায়া সা¤্রাজ্যেও শক্তি কমতে শুরু করে এবং পটানি রাজ্য কার্যত স্বাধীন হয়ে পড়ে।
থাইদের পুনরুত্থান[সম্পাদনা]
১৬৮৮ সালে আয়ুথায়া রাজ্য অভিযান শুরু করলে পাঁচ দশক পর্যন্ত অস্থিরতা চলতে থাকে, স্থানীয় লোকজন তখন অসহায় হয়ে পড়ে। বেশিরভাগ বিদেশি ব্যবসায়ীরা পটানি ত্যাগ করতে শুরু করে। ব্যাংককের অধীনে পাত্তানি ১৭৮৫ সালে সিয়ামে চক্রী বংশ ক্ষমতা দখল করে। প্রিন্স শুরীর নেতৃত্বে সিয়ামিজরা অভিযান শুরু করলে পটানিরা সহজেই পরাজিত হয়। ১৮০০ সালে রাজা দ্বিতীয় রামা পটানি রাজ্যকে সাতটি রাজ্যে বিভক্ত করেন। বার্নি চুক্তির মাধ্যমে ব্রিটেন সিয়ামকে এই অঞ্চলের উপর পূর্ন অধিকার দান করে।
বাণিজ্যিক আড়তদার[সম্পাদনা]
১৪০৬-১৪৩৩ খ্রিষ্টাব্দের মধে্য চীনা ব্যবসায়ীরা পটানি অঞ্চলকে একটি আঞ্চলিক বাণিজ্য কেন্দ্রে পরিনত করতে প্রধান ভূমিকা পালন করেছিলেন। ১৫১৬ খ্রিষ্টাব্দে পর্তুগিজ, ১৫২৯ সালে জাপানীজ, ১৬০২ সালে ডাচ, ১৬১২ সালে ইংরেজ এবং পরবর্তীতে মালয়েশিয়ান ও সিয়ামীয় ব্যবসায়ীরাও এ অঞ্চলে ব্যবসা শুরু করে। ১৬১২ সালে, ডাচরা পটানি উপকূলে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির প্রধান ফ্যাক্টর জন জেরডাইনকে হত্যা কের। চীনা বাজারে প্রবেশের উপায় হিসাবে ইউরোপীয় ব্যবসায়ীরা পটানিকে দেখেছিলেন। ১৬২০ সালের পর, ডাচ ও ইংরেজ উভয়ই তাদের গুদাম বন্ধ করে েদয়, কিন্তু ১৭ শতকের বেশির ভাগ সময়ই চীনা, জাপানি ও পর্তুগিজদের বাণিজ্য অব্যাহত ছিল।
শাসকদের তালিকা[সম্পাদনা]
শ্রীওয়াংশা বংশ[সম্পাদনা]
- সুলতান ইসমাইল শাহ (প্রথম শাসক যিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন এবং ১৫৩০ সালে মৃত্যুবরণ করেন)[২]।
- সুলতান মুজাফ্ফর শাহ (১৫৩০-১৫৬৪), সুলতান ইসমাইল শাহের পুত্র, যিনি (সিয়াম) আক্রমণের সময় মারা যান।
- সুলতান মুনজর (১৫৬৪-১৫৭২), সুলতান মুজাফ্ফর শাহের ভাই।
- সুলতান পাটিক সিয়াম (১৫৭২-১৫৭৩), সুলতান মুজাফ্ফর শাহের পুত্র, যিনি তার অর্ধ-ভাই রাজা বাম্বাং দ্বারা খুন হন।
- সুলতান বাহাদুর (১৫৭৩-১৫৮৪), সুলতান মুনজর শাহের পুত্র
- রাতু হিজাজু (সবুজ রাণী) (১৫৮৪-১৬১৬), সুলতান বাহাদুরের বোন, যার শাসনামলে পটানি মাঝারি আকারের বন্দর হিসাবে সর্বশ্রেষ্ঠ অর্থনৈতিক সাফল্য লাভ করেছিলেন ।
- রাতু হিজাজু (নীল রাণী) (১৫১৬-১৬২৪), রাতু হিজাজুর বোন ।
- রাতু হিজাজু (রক্তবর্ণ রাণী) (১৬২৪-১৬৩৫), রাতু হিজাজুর বোন। বিশেষত স্থানীয় বিষয়গুলিতে সিয়ামিজ হস্তক্ষেপের বিরোধিতা করেছিলেন।
- রাতু হিজাজু (হলুদ রাণী) (১৬৩৫-১৬৪৯/৮৮), রাতু হিজাজুর বোন।
প্রথম কেদানিজ বংশ[সম্পাদনা]
- রাজা বকাল (১৬৮৮-১৬৯০/১৬৫১-১৬৯০)
- রাজা ইমাস কেনানটান (১৬৯০-১৭০৪)
- রাজা ইমাস চায়াম (১৭০৪-১৭০৯)
- রাজা ডেইয়ি (১৭০৭-১৭১৬)
- রাজা বেনদাং বাদান (১৭১৬-১৭২০)
- রাজা লখসমনা ডাজাং (১৭২০-১৭২৭)
- রাজা আলং ইউনুস (১৭২৮-১৭২৯)
- রাজা ইউনুস (১৭২৯-১৭৪৯)
- রাজা লং নৃহ (১৭৪৯-১৭৭১)
- রাজা মাহমুদ (১৭৭১-১৭৮৫)
- টেংকুলামিদিন (১৭৮৫-১৭৯১)
- ডাটুক পেংকালান (১৭৯১-১৮০৮)
দ্বিতীয় কেলান্টানিজ রাজবংশ[সম্পাদনা]
- সুলতান ফ্রায়া লং মুহাম্মদ ইবনে রাজা মুদা কেলন্তান (১৮৪২-১৮৫৬)
- তুয়ান লং পুতে বিন সুলতান ফ্রায়া লং মুহাম্মদ ( (১৮৫৬-১৮৮১)
- তুয়ান বেষর বিন তুয়ান লং পুতেহ (১৮৮১-১৮৯০)
- তুয়ান লং বংসু বিন সুলতান ফ্রায়া লং মুহাম্মদ (সুলতান সুলাইমান শরফুদ্দিন সিহাহ ) (১৮৯০-১৮৯৮)
- সুলতান আবদুল কাদির কামারউদ্দীন সৈয়াহ ১৯০২ সালে পদত্যাগ করেছিলেন, তার বংশধর ছিলেন:
- তেনক্কু শ্রী আকরাম আহমেদ জয়নুল আবদীন
- তেনক্কু মাহমুদ মাহাইদন
- তেনকু বেষর জুবাইদাহ, তার বংশধর ছিল:
- পার্লিসের টেংকু বুড়িরিয়া
- তেনকু আহমদ রিথাউদ্দিন
আরও পড়ুন[সম্পাদনা]
- Ibrahim Syukri. History of the Malay Kingdom of Patani. আইএসবিএন ০-৮৯৬৮০-১২৩-৩.
- Thailand: Country Studies by the Library of Congress, Federal Research Division http://lcweb2.loc.gov/frd/cs/thtoc.html
- Maryam Salim. (2005). The Kedah Laws. Dewan Bahasa and Pustaka. আইএসবিএন ৯৮৩-৬২-৮২১০-৬
- "พงศาวดารเมืองปัตตานี" ประชุมพงศาวดาร ภาคที่ 3 ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৬ জুন ২০০৯ তারিখে, พระนคร : หอพระสมุดวชิรญาณ, 2471 (พิมพ์ในงานศพ หลวงชินาธิกรณ์อนุมัติ 31 มีนาคม 2470) – Historical account of Patani made by a Thai official.
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
- ↑ Bougas, Wayne (১৯৯০)। "Patani in the Beginning of the XVII Century"। Archipel। 39 (1): 113–138। ডিওআই:10.3406/arch.1990.2624।
- ↑ Ibrahim Syukri. (১৯৮৫)। History of the Malay Kingdom of Patani। Athens, Ohio: Ohio University, Center for International Studies। আইএসবিএন 0-89680-123-3। ওসিএলসি 11159821।
বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]
উইকিমিডিয়া কমন্সে পাত্তানি রাজ্য সম্পর্কিত মিডিয়া দেখুন।