পাগলপন্থি বিদ্রোহ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
(পাগলপন্থী আন্দোলন থেকে পুনর্নির্দেশিত)

পাগলপন্থি বিদ্রোহ হচ্ছে ১৮২৪ - ১৮৩৩ সালের মধ্যে উত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলে পাগলপন্থি সম্প্রদায়ের নেতৃত্বে যে কৃষকবিদ্রোহ সংঘটিত হয় তার নাম। এই বিদ্রোহের চৌহদ্দি ছিলো দক্ষিণ পশ্চিমে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদ, উত্তরে গারো পাহাড়রাজি এবং পূর্বে হাওড় এলাকা। অতীতে এই এলাকা ছিলো সকল কেন্দ্রীয় সামন্ত শক্তির নিয়ন্ত্রণ মুক্ত। এলাকাটির রাজনৈতিক বৈশিষ্ট্য ছিলো এর আঞ্চলিক স্বাধীনতা।[১]

পাগলপন্থি বিদ্রোহের প্রথম পর্ব ছিলো ১৮২৪-২৫ সাল পর্যন্ত। এই সময় বিদ্রোহী কৃষকদের সব দাবি একমুখী হয়ে ওঠে। অতিরিক্ত করারোপ, বেগার প্রথা, বার্মাযুদ্ধজনিত বিভিন্ন কর, রসদ সরবরাহ, পুলিসের অত্যাচার ও চাঁদা আদায় ইত্যাদির স্থলে টিপু শাহ কর্তৃক পরিমিত রাজস্ব প্রদানের প্রতিশ্রুতিতে কৃষক শ্রেণি পাগলপন্থিদের কর্মসূচিতে বিশ্বাস স্থাপন করে। ১৮২৫ সালের ১৯ জানুয়ারি বিদ্রোহীরা শেরপুর শহর ও জমিদারদের স্থাপনাসমূহ আক্রমণ করে। তাঁরা কর্তব্যরত ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট দাবি তোলে যে তাঁরা জমিদারি অত্যাচার ও শোষণ উৎপীড়ন মানতে রাজি নয়। ১৮৩৩ সালের ১ এপ্রিল সরকারি বাহিনী শেরপুর শহর পুনর্দখল করে। সরকার সেনাবাহিনী মোতায়েন করে এবং ৩ মে সামরিক বাহিনী বিদ্রোহীদের উপর ব্যাপক আক্রমণ চালায় এবং তাঁদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি করে। ১৮৩৩ সালের ১৩ মে থেকে বিদ্রোহ স্তিমিত হয়ে পড়ে। এর পর থেকে বিদ্রোহীরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে দাবি আদায়ের পন্থা অবলম্বন করে। তাঁদের পক্ষে দাবি আদায়ের জন্য উজির সরকারকে উকিল নিযুক্ত করে ময়মনসিংহে পাঠানো হয়। আদালতের লড়াইয়ে তাদের হাত শক্ত করার জন্য কলকাতা থেকে একজন এ্যাটর্নি আনা হয়।[১]

এই বিদ্রোহ আদিবাসীদের বা কোনো ধর্মীয় আন্দোলন ছিলো না। এ বিদ্রোহে অংশগ্রহণকারীরা ছিলেন সব ধর্মের ও বর্ণের।[১]

নেতৃবৃন্দ[সম্পাদনা]

আরো দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. আবদুল বাছির, বাংলার কৃষক ও মধ্যবিত্তশ্রেণি, বাংলা একাডেমী, ঢাকা, প্রথম প্রকাশ, ফেব্রুয়ারি ২০১২, পৃষ্ঠা ১৩৮-১৪০।

২. অার্যেস রায় এর 'ইতিহাস এর কতকথা' গ্রন্থ, ২০১৯, মহালয়া