বিষয়বস্তুতে চলুন

পশ্চিমবঙ্গের চাকরিহারা শিক্ষকদের আন্দোলন, ২০২৫

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
পশ্চিমবঙ্গের চাকরিহারা শিক্ষকদের আন্দোলন, ২০২৫
তারিখএপ্রিল ২০২৫ – বর্তমান
অবস্থান
কারণ২০১৬ সালের ডব্লিউবিএসএসসি নিয়োগে দুর্নীতি; সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃক ২৫,৭৫৩ নিয়োগ বাতিল
লক্ষ্য
  • নির্দোষ প্রার্থীদের পুনঃনিয়োগ
  • নতুন পরীক্ষা ছাড়াই চাকরিতে পুনর্বহাল
  • অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূূলক ব্যবস্থা
পদ্ধতিঅবস্থান বিক্ষোভ, ধর্না, মিছিল, অনশন
অবস্থাচলমান
পক্ষ
চাকরিচ্যুত শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মচারীরা
সংখ্যা
প্রায় ২৫,৭৫৩ জন

পশ্চিমবঙ্গের চাকরিহারা শিক্ষকদের আন্দোলন, ২০২৫ হল রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থায় ঘটে যাওয়া এক নজিরবিহীন নিয়োগ দুর্নীতির ফলস্বরূপ সংঘঠিত একটি আন্দোলন।[][] ২০১৬ সালের পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ব্যাপক অনিয়ম এবং দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর, কলকাতা হাইকোর্ট এবং পরবর্তীতে সুপ্রিম কোর্ট এই নিয়োগ বাতিল ঘোষণা করে।[] এর ফলে ২৫,৭৫২ জন শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মচারী তাদের চাকরি হারান।[][][]

পটভূমি

[সম্পাদনা]

২০১৬ সালে পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশন (ডব্লিউবিএসএসসি) রাজ্যের সরকারি ও সরকার-পোষিত স্কুলগুলিতে সহকারী শিক্ষক (নবম-দ্বাদশ শ্রেণি) এবং গ্রুপ-সি ও গ্রুপ-ডি পদে কর্মী নিয়োগের জন্য পরীক্ষা শুরু করে।[] এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় লিখিত পরীক্ষা, ইন্টারভিউ/পার্সোনালিটি টেস্ট ইত্যাদি ধাপ ছিল। ওএমআর শিট স্ক্যান এবং ফল মূল্যায়নের দায়িত্বে ছিল নাইসা কমিউনিকেশনস নামে একটি সংস্থা।[] প্রথম থেকেই এই নিয়োগ প্রক্রিয়া স্বচ্ছতার অভাবে জর্জরিত ছিল। অভিযোগ ওঠে, মেধাতালিকায় নিচের দিকে থাকা প্রার্থীদের উপরের দিকে স্থান দেওয়া হয়েছে (র‍্যাঙ্ক জাম্পিং), এমনকি যারা মেধাতালিকায় বা অপেক্ষমান তালিকায় ছিলেন না, তাদেরও নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, বয়সের শিথিলতা না দেওয়া এবং ওএমআর শিট জাল করার অভিযোগও ওঠে। ২০২১ সালের মধ্যে ২৫,৭৫৩ জন শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মচারী নিয়োগে অনিয়ম ধরা পড়ে। একটি চার সদস্যের কমিটি এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ব্যাপক অসঙ্গতি খুঁজে পায় এবং ডব্লিউবিএসএসসি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি ষড়যন্ত্র, জালিয়াতি ও প্রতারণার অভিযোগ আনে। সিবিআই তদন্তে দেখা যায়, নাইসা কমিউনিকেশনস নিয়ম ভেঙে অন্য একটি সংস্থাকে কাজ দিয়েছে। এছাড়াও, সিবিআই সার্ভার থেকে উদ্ধার করা ডেটা এবং হার্ডডিস্কের মধ্যে তথ্যের অমিল খুঁজে পায়, যা ব্যাপক দুর্নীতির ইঙ্গিত দেয়। সিবিআই আরও জানায় যে, ডব্লিউবিএসএসসি মূল ওএমআর শিট এবং স্ক্যান করা ছবি ২০১৯ সালে নষ্ট করে দিয়েছে।[][১০]

দাবিসমূহ

[সম্পাদনা]

আন্দোলনকারী চাকরিহারা শিক্ষকদের মূল দাবি ছিল, যারা যোগ্য এবং স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে চাকরি পেয়েছেন, তাদের চাকরি ফিরিয়ে দেওয়া হোক।[১১] তারা প্রশ্ন তোলেন যে, নির্দোষ প্রার্থীদের কেন তাদের দোষের জন্য চাকরি হারাতে হবে। রাজ্য সরকার এবং স্কুল সার্ভিস কমিশন উভয়ই কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করে যোগ্য প্রার্থীদের চাকরি বাঁচানোর চেষ্টা করে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও চাকরিহারাদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন।[১২][১৩] তাদের দাবিগুলি নিম্নরূপ:

যোগ্য প্রার্থীদের চাকরি ফিরিয়ে দেওয়া
আন্দোলনের মূল দাবি ছিল, যে সকল শিক্ষক স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এবং যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগ পেয়েছেন, অথচ দুর্নীতির কারণে তাদের চাকরি বাতিল করা হয়েছে, তাদের অবিলম্বে চাকরিতে পুনর্বহাল করা হোক। আন্দোলনকারীরা বারবার বলেছেন যে, তাদের কোনোরকম দুর্নীতিতে যুক্ত থাকার প্রমাণ নেই, এবং অন্যের কৃতকর্মের ফলস্বরূপ তাদের কেন চাকরি হারাতে হবে। তারা নিজেদের নির্দোষ প্রমাণ করতে সকল প্রকার তদন্তে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত ছিলেন।[১৪][১৫]
দুর্নীতিগ্রস্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি
চাকরিহারা শিক্ষকরা শুধুমাত্র তাদের নিজেদের চাকরি ফিরে পাওয়ার দাবি জানাননি, বরং এই বিশাল নিয়োগ দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত সকল ব্যক্তি, তা সে প্রশাসনিক কর্মকর্তা হোক বা রাজনৈতিক নেতা, তাদের কঠোর এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিও তুলেছিলেন। তাদের মতে, এই দুর্নীতির মূল হোতাদের চিহ্নিত করে শাস্তি না দিলে ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে।[১৬][১৭]
নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা
আন্দোলনকারীরা দাবি করেন যে, ভবিষ্যতে সকল সরকারি নিয়োগ প্রক্রিয়া যেন সম্পূর্ণ স্বচ্ছ এবং জবাবদিহিমূলক হয়। তারা একটি সুনির্দিষ্ট, ডিজিটাল-ভিত্তিক এবং ত্রুটিমুক্ত নিয়োগ ব্যবস্থার প্রস্তাব করেন, যেখানে মেধার ভিত্তিতেই নিয়োগ হবে এবং কোনো প্রকার অনিয়মের সুযোগ থাকবে না। তাদের দাবি ছিল, ওএমআর শিট এবং ফলাফল প্রকাশ থেকে শুরু করে কাউন্সেলিং পর্যন্ত প্রতিটি ধাপে যেন সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা বজায় থাকে।[১৮][১৯]
নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করা
যেহেতু সুপ্রিম কোর্ট নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরুর নির্দেশ দিয়েছে, তাই আন্দোলনকারীরা দ্রুত এবং নিরপেক্ষভাবে সেই প্রক্রিয়া শেষ করার দাবি জানান। তাদের ভয় ছিল যে, দীর্ঘসূত্রিতা বা নতুন করে কোনো অনিয়ম আবার তাদের বঞ্চিত করতে পারে। তারা একটি নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে সম্পূর্ণ নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করার উপর জোর দেন।[২০][২১]

ঘটনাপ্রবাহ

[সম্পাদনা]

২০১৬ সালে পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি) নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করে।[২২] পরবর্তী কয়েক বছরে এই নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে একাধিক অভিযোগ সামনে আসে। ২০২১ সালে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ প্রকাশ্যে আসে এবং বিতর্ক শুরু হয়।[২৩]

২০২২ সালে সিবিআই এই নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তদন্ত শুরু করে। তদন্তের অগ্রগতির ফলে রাজ্যের তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় সহ একাধিক নেতা ও সরকারি কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।[২৪][২৫]

২০২৪ সালের ১৫ এপ্রিল, কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শাব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ ২০১৬ সালের এসএসসি নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণভাবে বাতিল করে দেন। আদালতের ২৮২ পাতার রায়ে বলা হয়, এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় গুরুতর অনিয়ম হয়েছে, এবং ২৫,৭৫৩ জনের চাকরি বাতিল করা হয়। আদালত নির্দেশ দেয়, যাদের চাকরি বেআইনিভাবে হয়েছে তাদের সুদ-সহ বেতন ফেরত দিতে হবে এবং সিবিআই-কে তদন্ত অব্যাহত রাখতে বলা হয়।[২৬]

এই রায়ের বিরুদ্ধে পশ্চিমবঙ্গ সরকার এবং এসএসসি সুপ্রিম কোর্টে আপিল করে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রায়কে ‘বেআইনি’ বলে দাবি করেন এবং চাকরিচ্যুতদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন।[২৭] অন্যদিকে, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী রাজ্য মন্ত্রিসভার সদস্যদের গ্রেফতারের দাবি জানান।[২৮]

২০২৪ সালের মে মাসে সুপ্রিম কোর্ট হাইকোর্টের আদেশে আংশিক স্থগিতাদেশ দেয়। বেতন ফেরতের বাধ্যবাধকতা সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়, তবে সিবিআই-কে তদন্ত চালিয়ে যেতে নির্দেশ দেয়।[২৯][৩০]

২০২৫ সালের ৩ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্ট হাইকোর্টের রায় বহাল রাখে এবং ২০১৬ সালের নিয়োগ সম্পূর্ণ বাতিল করে। আদালত স্পষ্টভাবে জানায় যে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ব্যাপক জালিয়াতি ও অনিয়ম ঘটেছে।[৩১][৩২]

এরপর ১৭ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্ট একটি অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশ জারি করে জানায়, নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ‘যোগ্য’ সহকারী শিক্ষকরা ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত কাজ চালিয়ে যেতে পারবেন। তবে গ্রুপ-সি এবং গ্রুপ-ডি কর্মীরা এই সুবিধার বাইরে থাকবেন। এই সময়ের মধ্যেই নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার নির্দেশ দেয় আদালত।[৩৩][৩৪]

সবশেষে, পশ্চিমবঙ্গ সরকার ঘোষণা করে যে ২০২৫ সালের ৩০ মে, ২৪২০৩টি শূন্যপদ পূরণ করতে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হবে। পাশাপাশি রাজ্য সরকার অতিরিক্ত ২০,০০০-এর বেশি পদ সৃষ্টি করে, যার মধ্যে নবম-দশম শ্রেণির জন্য ১১,৫১৭টি, একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির জন্য ৬,৯১২টি, গ্রুপ-সি এর জন্য ৫৭১টি এবং গ্রুপ-ডি এর জন্য ১,০০০টি পদ অন্তর্ভুক্ত। মোট ৪৪,২০৩টি শূন্যপদের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি জারি করার ঘোষণা দেওয়া হয়।[৩৫][৩৬][৩৭]

কোর্টের রায়

[সম্পাদনা]

কলকাতা হাইকোর্টের রায়

[সম্পাদনা]

২০২৪ সালের ১৫ই এপ্রিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শাব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ ২০১৬ সালের পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে সম্পন্ন হওয়া সম্পূর্ণ নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করে দেয়। ২৮২ পৃষ্ঠার এই রায়ের ফলে শিক্ষক (নবম-দ্বাদশ শ্রেণি) এবং গ্রুপ-সি ও গ্রুপ-ডি পদের মোট ২৫,৭৫৩ জনের চাকরি বাতিল হয়।[][] হাইকোর্ট তার রায়ে উল্লেখ করে যে এই নিয়োগগুলি সংবিধানের ১৪ (আইনের সামনে সমতা) এবং ১৬ (সরকারি চাকরিতে সুযোগের সমতা) অনুচ্ছেদ লঙ্ঘন করেছে এবং বিচারপতি বসাক মন্তব্য করেন, "এ ছাড়া কোনো উপায় ছিল না।" আদালত নির্দেশ দেয় যে, প্যানেলের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও যারা চাকরি পেয়েছেন, সাদা খাতা জমা দিয়ে যারা চাকরি পেয়েছেন এবং প্যানেলের বাইরে থেকে যারা অবৈধভাবে নিয়োগ পেয়েছেন, তাদের সকলকে ১২% সুদ সহ প্রাপ্ত বেতন চার সপ্তাহের মধ্যে ফেরত দিতে হবে।[৩৮] যদি কোনো ব্যক্তি টাকা ফেরত না দেন, তাহলে সংশ্লিষ্ট জেলার জেলাশাসককে ছ’সপ্তাহের মধ্যে বেতনের টাকা সুদসহ আদায় করার প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। জেলা স্কুল পরিদর্শকদের অবৈধভাবে বেতন গ্রহণকারী ব্যক্তির বেতনের পরিমাণ সম্পর্কে জেলাশাসককে অবহিত করতে বলা হয়। হাইকোর্ট এই মামলার তদন্ত চালিয়ে যাওয়ার জন্য সিবিআইকে নির্দেশ দেয় এবং অতিরিক্ত শূন্যপদ (সুপারনিউমেরিক পোস্ট) তৈরির জন্য রাজ্য সরকারের সঙ্গে যুক্ত সন্দেহভাজনদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেওয়া হয়। সিবিআইকে তিন মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করে সংশ্লিষ্ট আদালতে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়। এছাড়া, এসএসসির নিয়োগ প্রক্রিয়ার সমস্ত ওএমআর শিট দ্রুত কমিশনের ওয়েবসাইটে আপলোড করার নির্দেশ দেওয়া হয়, যাতে জনগণ তা দেখতে পান। হাইকোর্ট এই পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিলের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে জানায় যে, দুর্নীতির ব্যাপকতা এতটাই বেশি ছিল যে, এর থেকে যোগ্যদের আলাদা করা সম্ভব ছিল না, কারণ "নানা দিক থেকে দুর্নীতি করা হয়েছে।"[৩০][৩৯]

সুপ্রিম কোর্টের রায়

[সম্পাদনা]

২০২৫ সালের ৩রা এপ্রিল, ভারতের সুপ্রিম কোর্ট কলকাতা হাইকোর্টের রায়কে বহাল রাখে এবং ২০১৬ সালের ডব্লিউবিএসএসসি নিয়োগ প্রক্রিয়াকে বাতিল ঘোষণা করে। সর্বোচ্চ আদালত নিয়োগ প্রক্রিয়ায় "ব্যাপক জালিয়াতি" এবং "নজিরবিহীন অনিয়ম" হয়েছে বলে মন্তব্য করে এবং জানায় যে, এই দুর্নীতির মাত্রা এত বেশি যে, নিয়োগ প্রক্রিয়াটি "মেরামতের বাইরে" চলে গেছে। ওএমআর শিট নষ্ট করার বিষয়টিকেও আদালত অবৈধ বলে উল্লেখ করে, যা দুর্নীতির প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা হিসেবে বিবেচিত হয়। তবে, মানবিক দিক এবং শিক্ষার্থীদের স্বার্থ বিবেচনা করে ২০২৫ সালের ১৭ই এপ্রিল সুপ্রিম কোর্ট একটি অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশ জারি করে। এই নির্দেশ অনুযায়ী, নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির "যোগ্য" সহকারী শিক্ষকরা (অর্থাৎ, যাদের বিরুদ্ধে সরাসরি দুর্নীতির অভিযোগ ওঠেনি) ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৫ পর্যন্ত তাদের চাকরিতে বহাল থাকতে পারবেন, যা শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় সম্ভাব্য ব্যাঘাত এড়ানোর জন্য নেওয়া হয়। কিন্তু গ্রুপ-সি এবং গ্রুপ-ডি পদের কর্মীদের জন্য এই অন্তর্বর্তীকালীন সুবিধা প্রযোজ্য হবে না, তাদের চাকরি অবিলম্বে বাতিল বলে গণ্য হয়। আদালত রাজ্য সরকারকে ৩১ মে, ২০২৫ এর মধ্যে নতুন শূন্য পদের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে এবং ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৫ এর মধ্যে সম্পূর্ণ নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করতে নির্দেশ দেয়।

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

‌ তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. 1 2 "আন্দোলন চলবেই, দাবি চাকরিহারা শিক্ষকদের"আনন্দবাজার পত্রিকা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মে ২০২৫
  2. Dey, Sreyashi (৭ এপ্রিল ২০২৫)। Kumar Bose, Saikat (সম্পাদক)। ""Everything Will Be Finished": Sacked Teachers Target Bengal Government"www.ndtv.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মে ২০২৫
  3. "দুর্নীতির দায়ে পশ্চিমবঙ্গে ২৬ হাজার শিক্ষকের নিয়োগ বাতিল"dhakapost.comডয়েচে ভেলে। ৩ এপ্রিল ২০২৫। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মে ২০২৫
  4. "২৬০০০ চাকরি বাতিল: শুনানি শেষ, রায় স্থগিত, সব পক্ষের কথা শুনে কী পর্যবেক্ষণ সুপ্রিম কোর্টের"আনন্দবাজার পত্রিকা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মে ২০২৫
  5. HAZRA, ARNAB; Adhikary, Satabdi (৩ এপ্রিল ২০২৫)। "SSC Supreme Court Verdict: ২৫,০০০ চাকরি বাতিল! ১২% সুদ সহ ৯ বছরের বেতন ফেরাতে হবে কাদের? সুপ্রিম কোর্টের রায়ে স্পষ্ট নির্দেশ"bengali.news18.com। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মে ২০২৫
  6. 1 2 Mitra, Sraboni। "SSC Case: ২০১৬ সালে পরীক্ষা-২০১৯এ নিয়োগ, এক নজরে ২৬ হাজার চাকরি বাতিল মামলার ইতিবৃত্ত"Asianet News Bangla। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মে ২০২৫
  7. "'এ ছাড়া উপায় ছিল না'! যোগ্য-অযোগ্য নির্বিশেষে ২৫,৭৫৩ চাকরি বাতিলের রায় দিয়ে বলল হাই কোর্ট"আনন্দবাজার পত্রিকা। ২২ এপ্রিল ২০২৪। সংগ্রহের তারিখ ২৮ এপ্রিল ২০২৫
  8. "SSC: Arrested NYSA ex-VP under CBI lens for a long time"The Times of India। ২৭ মার্চ ২০২৩। আইএসএসএন 0971-8257। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মে ২০২৫
  9. Chaudhuri, Monalisa; Chowdhury, Subhankar (১৩ এপ্রিল ২০২৫)। "A detailed lowdown on how OMR impacted government school jobs and the SSC scam"দ্য টেলিগ্রাফ (ভারত) (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মে ২০২৫
  10. Paul, Sneha (৭ এপ্রিল ২০২৫)। "SSC Recruitment Scam: এক বছর পরেই নষ্ট OMR শিট! নিয়ম কী বলছে? ২৬০০০ চাকরি বাতিলের পর সামনে চাঞ্চল্যকর তথ্য"। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মে ২০২৫
  11. Standard, Business। "Jobless teachers' protest outside Bengal Education Dept enters third day"www.business-standard.com (মার্কিন ইংরেজি ভাষায়)। ১৭ মে ২০২৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মে ২০২৫ {{ওয়েব উদ্ধৃতি}}: |প্রথমাংশ= প্যারামিটারে সাধারণ নাম রয়েছে (সাহায্য)
  12. Bangla, Jago (২২ এপ্রিল ২০২৫)। "বেতন নিয়ে ভাবতে হবে না, SSC-র চাকরিহারাদের পাশে মুখ্যমন্ত্রী"JagoBangla:। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মে ২০২৫{{ওয়েব উদ্ধৃতি}}: উদ্ধৃতি শৈলী রক্ষণাবেক্ষণ: অতিরিক্ত বিরামচিহ্ন (লিঙ্ক)
  13. "Mamata Banerjee: '২ মাসের মধ্যে যোগ্যদের চাকরি, প্ল্যান A টু E রেডি', চাকরিহারাদের মুখ্যমন্ত্রী মমতার আশ্বাস..."Zee24Ghanta.com। ৭ এপ্রিল ২০২৫। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মে ২০২৫
  14. Parui, Suparna (১৬ মে ২০২৫)। "অবিলম্বে পুনর্বহালের দাবি, চাকরি ফেরতের দাবিতে আমরণ অনশনের হুঁশিয়ারি বিক্ষোভকারীদের"Kolkata24x7 (Bengali ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মে ২০২৫{{ওয়েব উদ্ধৃতি}}: উদ্ধৃতি শৈলী রক্ষণাবেক্ষণ: অচেনা ভাষা (লিঙ্ক)
  15. "১৫ দিনের মধ্যেই সুখবর মিলতে পারে, যোগ্যরা চাকরি ফেরত পাবেন কীভাবে - jobs-will-be-given-within-15-days-orders-calcutta-high-court"ThewWall। ২১ এপ্রিল ২০২৪। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মে ২০২৫
  16. "Job loss for 25,752 teachers- Mamata and Bengal's moment of reckoning"The Times of India (ইংরেজি ভাষায়)। ৫ এপ্রিল ২০২৫। আইএসএসএন 0971-8257। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মে ২০২৫
  17. সাহা, অয়ন্তিকা (৬ এপ্রিল ২০২৫)। "দুর্নীতির মাথারা আদৌ শাস্তি পাবে? প্রশ্ন চাকরিহারাদের"এই সময় Online। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মে ২০২৫
  18. "Explained: SSC Scam in WB – The case behind nearly 26,000 school teachers losing jobs"The Economic Times। ১১ এপ্রিল ২০২৫। আইএসএসএন 0013-0389। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মে ২০২৫
  19. Nag, Niranjana (১৮ এপ্রিল ২০২৫)। "এবার OMR এর কার্বনকপি হাতে পাবেন পরীক্ষার্থীরা? নিয়োগে স্বচ্ছতা আনতে একগুচ্ছ বদলের প্রস্তাব SSC-র | Bangla Hunt"বাংলা হান্ট। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মে ২০২৫
  20. "২৬ হাজার চাকরিই বাতিল, তিন মাসের মধ্যে নতুন নিয়োগের নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের"এই মুহূর্তে। ৩ এপ্রিল ২০২৫। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মে ২০২৫
  21. "৩ মাসের মধ্যে ২৬ হাজার নতুন নিয়োগের নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের - ssc-supreme-court-ordered-to-recruit-26-thousand-candidates-within-3-months"ThewWall। ৩ এপ্রিল ২০২৫। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মে ২০২৫
  22. "West Bengal teacher recruitment scam: Calcutta HC declares 2016 SSC recruitment null and void, orders fresh appointments"ডিডি নিউজএএনআই। ২২ এপ্রিল ২০২৪। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মে ২০২৫
  23. পাইন, সুকুমার (১৭ এপ্রিল ২০২৫)। "নিয়োগ দুর্নীতি: ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের পথে"গনশক্তি। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মে ২০২৫
  24. "পশ্চিমবঙ্গের শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় গ্রেপ্তার – DW – 22.07.2022"dw.com। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মে ২০২৫
  25. Singh, Shiv Sahay (২৩ জুলাই ২০২২)। "ED arrests Bengal Minister Partha Chatterjee in job scam"The Hindu (ভারতীয় ইংরেজি ভাষায়)। আইএসএসএন 0971-751X। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মে ২০২৫
  26. "'এ ছাড়া উপায় ছিল না'! যোগ্য-অযোগ্য নির্বিশেষে ২৫,৭৫৩ চাকরি বাতিলের রায় দিয়ে বলল হাই কোর্ট"আনন্দবাজার পত্রিকা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ এপ্রিল ২০২৫
  27. Mukherjee, Suvam (২৪ এপ্রিল ২০২৪)। "West Bengal SSC Recruitment Scam: চাকরি বাতিল নিয়ে হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ SSC"Times Now Khobor। সংগ্রহের তারিখ ২৯ মে ২০২৫
  28. "মেদিনীপুরে সাড়ে তিনহাজার চাকরি দিয়েছিলেন শুভেন্দুই: কল্যাণ - kalyan-bandyopadhyays-major-complaint-is-that-suvendu-gave-3500-jobs-in-medinipur"ThewWall। ৫ এপ্রিল ২০২৫। সংগ্রহের তারিখ ২৯ মে ২০২৫
  29. Bhattacharyya, Pinaki (৭ মে ২০২৪)। "চাকরি বাতিলের নির্দেশে সুপ্রিম কোর্টের স্থগিতাদেশ, আপাতত ফেরত দিতে হবে না বেতনও"Hindustantimes Bangla। সংগ্রহের তারিখ ২৯ মে ২০২৫
  30. 1 2 "২৫ হাজার চাকরি বাতিল: সুপ্রিম কোর্টে স্থগিতাদেশ পেল না পশ্চিমবঙ্গ সরকার"দৈনিক প্রথম আলো। ২৯ এপ্রিল ২০২৪। সংগ্রহের তারিখ ২৯ মে ২০২৫
  31. "Teachers Recruitment Case: বাতিল ২০১৬ সালের পুরো প্যানেল, নিয়োগ কেলেঙ্কারি মামলায় বড় রায় সুপ্রিম কোর্টের"Madhyom। ৩ এপ্রিল ২০২৫। সংগ্রহের তারিখ ২৯ মে ২০২৫
  32. "SSC Recruitment Case Verdict: SSC-র পুরো প্যানেলই বাতিল সুপ্রিম কোর্টের, চাকরি গেল প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষকের"bengali.indianexpress.com। সংগ্রহের তারিখ ২৯ মে ২০২৫
  33. "নতুন নিয়োগ পর্যন্ত যোগ্য শিক্ষকদের চাকরি 'বহাল', ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রক্রিয়া শেষের নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের"bartamanpatrika.com। সংগ্রহের তারিখ ২৯ মে ২০২৫
  34. Rajagopal, Krishnadas (১৭ এপ্রিল ২০২৫)। "West Bengal recruitment scam: SC directs govt to complete teachers' recruitment process by year-end, voices concern for students"The Hindu (ভারতীয় ইংরেজি ভাষায়)। আইএসএসএন 0971-751X। সংগ্রহের তারিখ ২৯ মে ২০২৫
  35. "SSC Recuitment: SSC-র শিক্ষক নিয়োগের নোটিফিকেশন ৩১ মে-র মধ্যেই, বড় ঘোষণা মমতার"Aaj Tak বাংলা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ মে ২০২৫
  36. "শীর্ষ আদালতের নির্দেশ মেনে ৩০ মে SSC-র নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ, জানালেন মুখ্যমন্ত্রী"দৃষ্টিভঙ্গি (ইংরেজি ভাষায়)। ২৭ মে ২০২৫। সংগ্রহের তারিখ ২৯ মে ২০২৫
  37. "৩০ মে প্রকাশিত হবে এসএসসি নিয়োগের নতুন বিজ্ঞপ্তি, জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়"najarbandi.in। ২৭ মে ২০২৫। সংগ্রহের তারিখ ২৯ মে ২০২৫
  38. সাহা, স্নেহাশিস নিয়োগী,অয়ন্তিকা (৪ এপ্রিল ২০২৫)। "বেতন ফেরাতে হবে 'টেন্টেড'-দের, বাকিদের নয়"এই সময় Online। সংগ্রহের তারিখ ২৯ মে ২০২৫{{ওয়েব উদ্ধৃতি}}: উদ্ধৃতি শৈলী রক্ষণাবেক্ষণ: একাধিক নাম: লেখকগণের তালিকা (লিঙ্ক)
  39. "WBSSC: ২৬ হাজার চাকরি মামলায় সিদ্ধান্ত হল না সুপ্রিম কোর্টে, পাঁচ পক্ষের বক্তব্য শুনবে শীর্ষ আদালত"Madhyom। ১৩ নভেম্বর ২০২৪। সংগ্রহের তারিখ ২৯ মে ২০২৫