পচ্চিকারি (বংশাণুবিজ্ঞান)

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
Tulip flower with one side red and one side yellow.
টিউলিপ ফুলে পচ্চিকারি (মোজাইক অবস্থা) দেখা যাচ্ছে

বংশাণুবিজ্ঞানের আলোচনায় পচ্চিকারি বা বংশাণুগত পচ্চিকারি (বা মোজাইক অবস্থা) বলতে বহুকোষীয় জীবদের একটি অবস্থাকে বোঝায়, যেখানে একটি জীবদেহে একটিমাত্র নিষিক্ত ডিম্বাণুতে বংশাণুগত পরিব্যক্তির ফলস্বরূপ একাধিক বংশাণুরেখা উপস্থিত থাকে।[১][২] একে ইংরেজি পরিভাষায় "মোজাইসিজম" (ইংরেজি: Mosaicism) বা "জেনেটিক মোজাইসিজম" (ইংরেজি: Genetic mosaicism) বলা হয়।

পচ্চিকারি জীবগুলিকে প্রায়শই কিম্ভূত জীবসমূহের সাথে গুলিয়ে ফেলা হয়। কিম্ভূত জীবে পচ্চিকারি জীবের মতোই একই জীবে দুই বা ততোধিক বংশাণুরূপের উদ্ভব হতে পারে, কিন্তু এর বংশাণুরূপগুলি ভ্রূণীয় বিকাশের প্রাথমিক পর্যায়ে একাধিক নিষিক্ত ডিম্বাণু বা ভ্রূণাণুর সংযোজনের ফলে উদ্ভূত হয়ে থাকে, পচ্চিকারি জীবের মতো পরিব্যক্তি বা ক্রোমজোমহানির (বংশসূত্র) মতো কারণেঅ-বিযুক্রতি জন্য নয়।

বংশাণুগত পচ্চিকারী বহু বিভিন্ন কর্মপদ্ধতির ফলাফল হিসেবে উদ্ভূত হতে পারে, যেমন ক্রোমোজোম অ-বিযুক্তি (nondisjunction), অ্যানাফেজ ধীরগতি বা তৃতীয় দশার ধীরগতি (anaphase lag), অন্তঃপ্রতিলিপিকরণ (endoreplication)।[৩] কোষবিভাজনের তৃতীয় দশার ধীরগতি (Anaphase lagging) হল প্রাক-রোপণ ভ্রূণে পচ্চিকারির উদ্ভবের সবচেয়ে সাধারণ উপায়।[৩] এছাড়া কোনও একটি কোষের বিকাশের সময় একটি পরিব্যক্তির কারণেও পচ্চিকারি সৃষ্টি হতে পারে, যেখানে পরিব্যক্তিটি ভবিষ্যতে কেবলমাত্র কোষটির অপত্য বা কন্যাকোষগুলিতে পরিবাহিত হয় (এবং কেবলমাত্র কিছুসংখ্যক প্রাপ্তবয়স্ক কোষে উপস্থিত থাকে)[৪] কায়িক পচ্চিকারি সাধারণত উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্তব্য নয়, কেননা এটি সাধারণত জননকোষগুলির উপরে প্রভাব ফেলে না।[২]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Somatic mosaicism: implications for disease and transmission genetics"Trends in Genetics (ইংরেজি ভাষায়)। 31 (7): 382–392। ২০১৫-০৭-০১। আইএসএসএন 0168-9525ডিওআই:10.1016/j.tig.2015.03.013পিএমসি 4490042অবাধে প্রবেশযোগ্য 
  2. Forsberg, Lars A.; Gisselsson, David; Dumanski, Jan P. (ফেব্রুয়ারি ২০১৭)। "Mosaicism in health and disease — clones picking up speed"Nature Reviews Genetics (ইংরেজি ভাষায়)। 18 (2): 128–142। আইএসএসএন 1471-0064ডিওআই:10.1038/nrg.2016.145 
  3. Taylor, T. H.; Gitlin, S. A.; Patrick, J. L.; Crain, J. L.; Wilson, J. M.; Griffin, D. K. (২০১৪)। "The origin, mechanisms, incidence and clinical consequences of chromosomal mosaicism in humans"। Human Reproduction Update20 (4): 571–581। আইএসএসএন 1355-4786ডিওআই:10.1093/humupd/dmu016অবাধে প্রবেশযোগ্যপিএমআইডি 24667481 
  4. Strachan, Tom; Read, Andrew P. (১৯৯৯)। "Glossary"Human Molecular Geneticsবিনামূল্যে নিবন্ধন প্রয়োজন (2nd সংস্করণ)। New York: Wiley–Liss। আইএসবিএন 978-1-85996-202-2পিএমআইডি 21089233 [পৃষ্ঠা নম্বর প্রয়োজন]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]