নেভিল কুইন

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
নেভিল কুইন
Neville Quinn in 1931
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামনেভিল অ্যান্থনি কুইন
জন্ম(১৯০৮-০২-২১)২১ ফেব্রুয়ারি ১৯০৮
টুইফন্তেইন, দক্ষিণ আফ্রিকা
মৃত্যু৫ আগস্ট ১৯৩৪(1934-08-05) (বয়স ২৬)
কেনিলওয়ার্থ, কিম্বার্লী, উত্তর কেপ, দক্ষিণ আফ্রিকা
ব্যাটিংয়ের ধরনবামহাতি
বোলিংয়ের ধরনবামহাতি মিডিয়াম-ফাস্ট
সম্পর্কমাইকেল কুইন
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ১২৭)
১৫ জুন ১৯২৯ বনাম ইংল্যান্ড
শেষ টেস্ট৪ মার্চ ১৯৩২ বনাম নিউজিল্যান্ড
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ১২ ৫১
রানের সংখ্যা ৯০ ৪৩৮
ব্যাটিং গড় ৬.০০ ৯.১২
১০০/৫০ ০/০ ০/০
সর্বোচ্চ রান ২৮ ৩২
বল করেছে ২৯২২ ১১০৫৫
উইকেট ৩৫ ১৮৬
বোলিং গড় ৩২.৭১ ২০.৭৮
ইনিংসে ৫ উইকেট ১২
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ৬/৯২ ৮/৩৭
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ১/- ১০/-
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১৯ জুলাই ২০১৯

নেভিল অ্যান্থনি কুইন (ইংরেজি: Neville Quinn; জন্ম: ২১ ফেব্রুয়ারি, ১৯০৮ - মৃত্যু: ৫ আগস্ট, ১৯৩৪) টুইফন্তেইন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী প্রথিতযশা দক্ষিণ আফ্রিকান আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯২৯ থেকে ১৯৩২ সময়কালে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।[১]

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটে গ্রিকুয়াল্যান্ড ওয়েস্ট ও গটেং দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ বামহাতি মিডিয়াম-ফাস্ট বোলিং করতেন। এছাড়াও, নিচেরসারিতে বামহাতে কার্যকরী ব্যাটিংশৈলী উপস্থাপন করেছেন নেভিল কুইন

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট[সম্পাদনা]

১৯২৭-২৮ মৌসুম থেকে ১৯৩৩-৩৪ মৌসুম পর্যন্ত নেভিল কুইনের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। বামহাতি নিচেরসারির ব্যাটসম্যান ও বামহাতি মিডিয়াম ফাস্ট বোলার নেভিল কুইন ১৯২৭-২৮ মৌসুম থেকে গ্রিকুয়াল্যান্ড ওয়েস্টের পক্ষে খেলতে থাকেন। পরের মৌসুমে নিজস্ব তৃতীয় খেলায় বর্ডারের বিপক্ষে সুন্দর ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শন করেন। প্রথমে ইনিংসে ৮/৩৭ পান। পরবর্তীকালে এটিই তার ব্যক্তিগত সেরা বোলিং পরিসংখ্যান হিসেবে রয়ে যায়।[২]

এরপর পরের খেলায় ট্রান্সভালের বিপক্ষে ২৪ ওভার বোলিং করে ৬/১৯ পান। ফলশ্রুতিতে, ১৯২৯ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার সদস্যরূপে ইংল্যান্ড গমনে তার স্থান সুনিশ্চিত হয়।[৩]

টেস্ট ক্রিকেট[সম্পাদনা]

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে বারো টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন নেভিল কুইন। ১৫ জুন, ১৯২৯ তারিখে বার্মিংহামে স্বাগতিক ইংরেজ দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ৪ মার্চ, ১৯৩২ তারিখে ওয়েলিংটনে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।

১৯২৯ সালে ইংল্যান্ড সফরে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে নেভিল কুইনের। শুষ্ক ইংরেজ গ্রীষ্ম মৌসুমে নিজের সুইং বোলিং মানিয়ে নিতে সক্ষম হন। পাঁচ টেস্টে নিয়ে গড়া ঐ সিরিজের চার টেস্টে তার অংশগ্রহণ ছিল। হেডিংলিতে অনুষ্ঠিত সিরিজের তৃতীয় টেস্টে ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংসে ৬/৯২ লাভ করেন।[৪] এটিই তার সংক্ষিপ্ত টেস্ট খেলোয়াড়ী জীবনের একমাত্র পাঁচ-উইকেট লাভের ঘটনা ছিল। এ সফর শেষে সফরকারী দলের টাপি ওয়েন-স্মিথের পর বোলিং গড়ে দ্বিতীয় স্থান দখল করেন। ২৩.৮৯ গড়ে ৬৫ উইকেট লাভ করেছিলেন তিনি। তবে, দক্ষিণ আফ্রিকার টার্ফ উইকেটের ন্যায় বল সোজা আসতো না। ২২ ইনিংসে কেবলমাত্র ২০০ রান তুলতে সক্ষম হয়েছিলেন।

১৯৩০-৩১ মৌসুমে নিজদেশে সফরকারী ইংরেজ দলের বিপক্ষে সিরিজের একটি টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ পান। ডারবানে অনুষ্ঠিত ড্র হওয়া তৃতীয় টেস্টে ইংরেজ বোলারদের একচ্ছত্র প্রাধান্য ছিল।[৫]

অস্ট্রেলিয়া গমন, ১৯৩১-৩২[সম্পাদনা]

১৯৩১-৩২ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড গমন করেন। সিরিজে শেষে সফরকারী দলে বোলিং গড়ে দ্বিতীয় স্থান দখল করেন। এবার শীর্ষস্থানে ছিলেন স্যান্ডি বেল। মেলবোর্নের তৃতীয় টেস্টে ডোনাল্ড ব্র্যাডম্যানকে ২ রানে ফেরৎ পাঠিয়েছিলেন তিনি।[৬] এ সিরিজে একবারই ব্র্যাডম্যান ১০০ রানের নিচে ইনিংসে রান তুলেছিলেন।[৭] টেস্ট সিরিজে ৫১২ রান খরচ করে ১৩ উইকেট পান। অন্যান্য সকল প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিয়ে ২৪ রানেরও কম গড়ে ৪২ উইকেট পেয়েছিলেন। ব্র্যাডম্যান তার বোলিংশৈলীর প্রশংসা করেন।

ব্র্যাডম্যান পরবর্তীকালে উল্লেখ করেছিলেন যে, প্রথমে টেস্টে নেভিল কুইন আমাকে গোলকধাঁধায় ফেলেছিল। ঐ ইনিংসে তিনি দুইবার তার বলে পরাস্ত হয়েছিলেন। তাসত্ত্বেও, ২২৬ রান তুলেন তিনি। কুইন অন্য যে-কোন বোলারের তুলনায় ব্যতিব্যস্ত রেখেছিল। মরিসে টেটের পর তার ন্যায় মিডিয়াম ফাস্ট বোলারের বল পিচে এতো দ্রুতলয়ে আসতে পারে ভাবতে পারেননি।[৮]

ব্যক্তিগত জীবন[সম্পাদনা]

অস্ট্রালেশিয়ান সফর শেষে আকস্মিকভাবে হৃদযন্ত্রক্রীয়ায় আক্রান্ত হন।[৯] ৫ আগস্ট, ১৯৩৪ তারিখে মাত্র ২৬ বছর বয়সে কিম্বার্লীর কেনিলওয়ার্থ এলাকায় নেভিল কুইনের দেহাবসান ঘটে।

অনেক সময়ে ঘুমের ঘোরে হাঁটার অভ্যাস ছিল তার।[১০] তার জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা মাইকেল কুইন ১৯৩১-৩২ মৌসুমে রোডেশিয়ার পক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছিলেন।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Neville Quinn"। www.cricketarchive.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৩-২৬ 
  2. "Scorecard: Border v Griqualand West"। www.cricketarchive.com। ১৯২৮-১২-১৭। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৩-৩০ 
  3. "Scorecard: Griqualand West v Transvaal"। www.cricketarchive.com। ১৯২৮-১২-১৯। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৩-৩০ 
  4. "3rd Test, South Africa tour of England at Leeds, Jul 13-16 1929"Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ 
  5. "South Africa v England, Durban 1930-31"CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ 
  6. "3rd Test, South Africa tour of Australia at Melbourne, Dec 31 1931 - Jan 6 1932"Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ 
  7. "Sir Donald Bradman (Australia) - Test Cricket"Howstat। সংগ্রহের তারিখ ১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ 
  8. Don Bradman, Farewell to Cricket, Hodder & Stoughton, London, 1950, pp. 48, 49.
  9. "Death of a South African Cricketer"। The Times (46825)। London। ৬ আগস্ট ১৯৩৪। পৃষ্ঠা 5। 
  10. W. H. Ferguson, Mr Cricket, Nicholas Kaye, London, 1957, pp. 91–92.

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]