বিষয়বস্তুতে চলুন

নিহাদ আওয়াদ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
নিহাদ আওয়াদ
Nihad Awad

তথ্য
জন্ম:আম্মান নিউ ক্যাম্প, আম্মান, জর্দান
বাসস্থান:মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
জাতীয়তা:ফিলিস্তিনী, মার্কিন
শিক্ষা:ইউনিভার্সিটি অফ মিনেসোটা
পেশা:নির্বাহী পরিচালক
কাউন্সিল অন অ্যামেরিকান-ইসলামিক রিলেশানস (সিএআইআর)
সেপ্টেম্বর ১১, ২০০১ এর হামলার ঘটনার কয়েকদিন পর ওয়াইট হাউজে নিহাদ আওয়াদ পাশে দাঁড়ানো অবস্থায় মার্কিন রাষ্ট্রপতি জর্জ ডব্লিউ বুশ বলেন, "যুক্তরাষ্ট্রের শান্তিকামী মানুষ আজ আমার সাথে দাঁড়ানো এই মানুষগুলোর মতই সন্ত্রস্ত ও উদ্বিগ্ন"[]

নিহাদ আওয়াদ (আরবি: نهاد عوض) একজন মার্কিন মুসলিম সংগঠক এবং কাউন্সিল অন অ্যামেরিকান-ইসলামিক রিলেশানস (সিএআইআর) নামক সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক ও প্রতিষ্ঠাতা।

প্রাথমিক জীবন

[সম্পাদনা]

নিহাদ আওয়াদ জর্দানের রাজধানী আম্মানে অবস্থিত আম্মান নিউ ক্যাম্প নামক একটি ফিলিস্তিনী শরণার্থী শিবিরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি তার জন্মস্থান শরণার্থী শিবিরে জাতিসংঘ কর্তৃক পরিচালিত সেকেন্ড আম্মান প্রিপারেটর স্কুল ফর বয়েজ, এবং আশরাফিয়েহতে অবস্থিত সালাহেদিন হাই স্কুলে পড়াশোনা করেন। পরে উচ্চশিক্ষার্থে তিনি প্রথমে ইতালি, ও পরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যান।

কর্মজীবন

[সম্পাদনা]

নিহাদ আওয়াদ ১৯৯০ এর দিকে ইউনিভার্সিটি অফ মিনেসোটায় নির্মাণ প্রকৌশল বিষয়ে পড়াশোনা করেন,[][] এবং তিনি এ সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির স্বাস্থ্য কেন্দ্রে কর্মরত ছিলেন। আওয়াদ প্রথম উপসাগরীয় যুদ্ধের পর ইসলামিক অ্যাসোসিয়েশান ফর প্যালেস্টাইন (আইএপি) নামক সংগঠনের গণসংযোগ বিষয়ক পরিচালক নিযুক্ত হন।

১৯৯৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ওকলাহোমা রাজ্যের ওকলাহোমা সিটি শহরে বোমা হামলা ঘটলে নিহাদ আওয়াদ ঘটনাস্থলে যান এবং উদ্ধারকার্যে অংশগ্রহণ করেন। তিনি ব্যক্তিগত ভাবে এর গভর্নর ফ্র্যাংক কিটিংয়ের সাথে সাক্ষাত করেন এবং মার্কিন মুসলিম সমাজের পক্ষ থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থ দান স্বরূপ তার হাতে তুলে দেন।

১৯৯৭ সালে আওয়াদ মার্কিন উপ রাষ্ট্রপতি আল গোরের নেতৃত্বাধীন ওয়াইট হাউজ কমিশন অন এভিয়েশান সেফটি অ্যান্ড সিকিউরিটির মানবাধিকার বিষয়ক উপদেষ্টা সভার সদস্য হিসেবে কাজ করেন।

আওয়াদ নিজ পেশাগত মাত্রা থেকে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রীদ্বয় ম্যাডেলিন অলব্রাইট এবং কলিন পাওয়েলের সাথে সাক্ষাত করেন এবং মার্কিন মুসলিম সমাজের চাহিদা সম্পর্কে তাদেরকে অবহিত করেন।

১৯৯৪ সালের জুন মাসে ইসলামিক অ্যাসোসিয়েশান ফর প্যালেস্টাইনের সভাপতি ওমার আহমাদ ও অপর কয়েকজন মুসলিম সংগঠক যৌথ ভাবে কাউন্সিল অন অ্যামেরিকান-ইসলামিক রিলেশানস (সিএআইআর) প্রতিষ্ঠা করেন, এবং নিহাদ আওয়াদকে প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী পরিচালক হিসেবে নিয়োগ করা হয়। ঐ বছরের মার্চ মাসে ব্যারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত একটি আলোচনা সভায় ফিলিস্তিনে জনকল্যাণমূলক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে উত্থাপিত এক প্রশ্নের জবাবে আওয়াদ বলেন, "আমি ফিলিস্তিনী আন্দোলন হিসেবে প্যালেস্টাইন লিবারেশান অর্গানাইজেশানের (পিএলও) চেয়ে হামাসকে বেশি সমর্থন করি। অবশ্য হামাসে কিছু উগ্রপন্থী রয়েছে, এবং আমরা তাদের বিষয়ে আগ্রহী নই"।[][]

নিহাদ আওয়াদ নিয়মিত ভাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ইন্টারন্যাশনাল ভিসিটর লিডারশিপ প্রোগ্রামে অংশ নিয়ে থাকেন। এই প্রোগ্রামের আওতায় বিভিন্ন দেশ থেকে আগত রাষ্ট্রীয় অতিথিবৃন্দ, সাংবাদিক এবং বুদ্ধিজীবিগণ যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতির সাথে সাক্ষাত করে থাকেন, এবং নিহাদ আওয়াদ সেখানে মার্কিন মুসলিম সমাজের প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নেন।

২০০১ সালের সেপ্টেম্বরে টুইন টাওয়ার আক্রমণের কয়েক দিন পর যুক্তরাষ্ট্রের মুসলিম সমাজের একটি প্রতিনিধি দল রাষ্ট্রপতি জর্জ ডব্লিউ বুশের সাথে সাক্ষাতের জন্য ওয়াইট হাউজে আমন্ত্রিত হন। নিহাদ আওয়াদ এই প্রতিনিধি দলের একজন সদস্য ছিলেন।[]

আওয়াদ ২০০৭ সালে আ কমন ওয়ার্ড বিটুইন আজ অ্যান্ড ইউ নামক একটি চিঠিতে স্বাক্ষর করেন, যা যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক ইসলামী বুদ্ধিজীবিদের তরফ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের খ্রিস্টান বুদ্ধিজীবিদের উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছিল।

কংগ্রেসম্যান পল ফিন্ডলে যুক্তরাষ্ট্রের মুসলিম সমাজের ইতিহাস বিষয়ে তার রচিত 'সাইলেন্ট নো মোর' বইয়ে নিহাদ আওয়াদের কথা উল্লেখ করেছেন।

বিতর্ক

[সম্পাদনা]

২০১১ সালের এপ্রিল মাসে রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান ফ্র্যাংক উলফ লিবিয়ার স্বৈরশাসক মুয়াম্মার গাদ্দাফিকে পাঠানো নিহাদ আওয়াদ স্বাক্ষরিত একটি চিঠিকে আলোচনায় নিয়ে আসেন। চিঠিটিতে গাদ্দাফিকে "মহামাণ্য" হিসেবে আখ্যায়িত করে ইসলাম, মুসলিম ও পুরো মানবজাতির প্রতি গাদ্দাফির অবদান, এবং ইসলাম শিক্ষা ও ইসলামী সংস্কৃতির প্রসারে তার কৃতিত্বের ভূয়সী প্রশংসা করে তার প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা হয়েছিল। এই চিঠি নিয়ে সমালোচনার জবাবে সিএআইআরের মুখপাত্র ইব্রাহিম হুপার বলেন, সিএআইআর লিবিয়ার সরকারের কাছ থেকে কখনও কোন অর্থ সাহায্য গ্রহণ করেনি।[]

পুরস্কার ও সম্মাননা

[সম্পাদনা]

সূত্র

[সম্পাদনা]
  1. ""Islam is Peace" Says President"। Office of the Press Secretary। সেপ্টেম্বর ১৭, ২০০১।  Retrieved on Jan. 27, 2007
  2. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১১ মার্চ ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ জুলাই ২০১৪ 
  3. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ২১ ফেব্রুয়ারি ২০০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ জুলাই ২০১৪ 
  4. Statement by Nihad Awad at a panel discussion, “The Road to Peace: the Challenge of the Middle East,” Barry University, March 22, 1994.[১] ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৩ মে ২০১২ তারিখে
  5. Kushner, Harvey W. (১৯৯৮)। "The future of terrorism: violence in the new millennium"। সংগ্রহের তারিখ নভেম্বর ২৭, ২০০৯  [অকার্যকর সংযোগ]
  6. ""Islam is Peace" Says President"। Georgewbush-whitehouse.archives.gov। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-০৪-১৮ 
  7. Lawmaker Criticizes Muslim Group Director's 2009 Fundraising Letter to Qaddafi
  8. http://www.blogger.com/profile/16025605882787185339
  9. http://www.arabianbusiness.com/power100-2010/list?view=profile&itemid=150752[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]

বহিঃসুত্র

[সম্পাদনা]