নিউ ইয়র্ক শহরে কোভিড-১৯ মহামারী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

নিউ ইয়র্ক শহরে কোভিড-১৯ মহামারী গত বছরের মার্চে নিউ ইয়র্ক শহরে করোনা মহামারীর প্রথম রোগী হিসেবে শনাক্ত হয়েছিলেন ইরান-ফেরত এক নারী। উল্লেখ্য, ইরানে সেসময় কোভিডের মারাত্মক সংক্রমন ছড়িয়ে পড়েছিল। এর মাত্র এক মাসের মধ্যেই নিউ ইয়র্ক মেট্রোপলিটন এলাকা পুরো দেশের মধ্যে সবচেয়ে সাংঘাতিক ভাবে আক্রান্ত জায়গার তালিকায় প্রথম স্থানে উঠে আসে। এপ্রিল নাগাদ নিউ ইয়র্ক শহরে মোট আক্রান্তের সংখ্যা চীন, ইরান ও যুক্তরাজ্যের আক্রান্তের সংখ্যাকে ছাড়িয়ে যায়। আর মাস ঘুরতে না ঘুরতেই শহরটি মোট শনাক্তের সংখ্যায় যুক্তরাষ্ট্র বাদে বিশ্বের বাকি সব দেশকে টপকে ফেলে।[১][২][৩]

মার্চের ২০ তারিখে গভর্নরের অফিস থেকে জারিকৃত এক নির্দেশ অনুযায়ী সকল অনাবশ্যক ব্যাবসায়িক কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। গণপরিবহন ব্যবস্থা খোলা থাকলেও এর উপর ভীষন চাপ তৈরি হয়, যা আসনপ্রত্যাশী মানুষের ভিড়ে রূপ নেয়৷ এর নেপথ্যে কারণ হিসেবে ছিল সার্বিক ভাবে পরিবহন সেবার হ্রাসকরণ ও গৃহহীন মানুষদের আশ্রয় নিতে সাবওয়ে তে ছুটে যাওয়া।

এপ্রিল গড়াতে শহরটির বাসিন্দারা লাখে লাখে কর্মহীন হয়ে পড়তে থাকেন। এতে বিলিয়ন ডলারের বেশি আয়কর গচ্চা গিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। খুচরো, পরিবহন আর রেস্তোরাঁ ক্ষেত্রের স্বল্প আয়ের চাকুরিজীবীদের সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। আয়কর, বাণিজ্য কর এবং পর্যটন বাবদ আয় হ্রাস পাওয়ায় শহরটির ১০ বিলিয়ন টাকা পর্যন্ত ক্ষতি হয়ে থাকতে পারে। মেয়র বিল ডে ব্লাসিও জানান যে গ্রাহকদের সংখ্যা হঠাৎ করে বৃদ্ধি পাওয়ায় শহরের বেকারত্ব-রোধী ব্যবস্থায় বিরাট ধস নামে। তার মতে, কেন্দ্রের সহায়তা ব্যতীত এমনকি প্রাথমিক সেবাও প্রদান করা সম্ভব হবে না।

মৃত্যুর সংখ্যা থেকে দেখা যায়, চলমান মহামারীটি নিউইয়র্ক শহরের ইতিহাসে ভয়াবহতম দুর্যোগ।

অবশেষে গত বছরের ডিসেম্বরে শহরের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর উচ্চঝুঁকিসম্পন্ন রোগী, চিকিৎসক ও নার্স দের ভ্যাকসিন প্রদান আরম্ভ করে। এই ধাপকে "ফেজ ১ এ" বলে অভিহিত করা হয়। এই বছরের ১১ জানুয়ারিতে শহরটি "ফেজ ১ বি" তে প্রবেশ করে। ৬৫ বছরের ঊর্ধ্বের বয়স্ক মানুষ, মুদি কর্মচারী, শিক্ষক, কারেকশনস কর্মকর্তা, গণপরিবহন শ্রমিকদের টিকার আওতায় আনা হয়। ফেব্রুয়ারি মাসে রেস্তোরাঁ কর্মচারী এবং ট্যাক্সি চালকদেরকেও এর অধীনে নিয়ে আসা হয়। গ্রীষ্ম নাগাদ শহরটির সকল অধিবাসীদের জন্য টিকাটি উন্মুক্ত ঘোষণা করা হয়।[৪]

গত ২৩ আগস্ট এফডিএ কর্তৃক কমির্নাটি কোভিড ভ্যাকসিন কে স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। উল্লেখ্য, এই টিকাটি পূর্বে ফাইজার-বায়োটেক কোভিড ভ্যাকসিন নামে পরিচিত ছিল।[৫]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "COVID-19: Data Main - NYC Health"www1.nyc.gov। জুন ৫, ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ সেপ্টেম্বর ৬, ২০২০ 
  2. "The Flu Epidemic of 1918"NYC Department of Records & Information Services (ইংরেজি ভাষায়)। নভেম্বর ১৬, ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ সেপ্টেম্বর ৬, ২০২০ 
  3. "SUMMARY OF VITAL STATISTICS - 2017 - THE CITY OF NEW YORK" (পিডিএফ)। নভেম্বর ১৬, ২০২০ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। 
  4. "SUMMARY OF VITAL STATISTICS - 2017 - THE CITY OF NEW YORK" (পিডিএফ)। নভেম্বর ১৬, ২০২০ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। 
  5. "COVID-19: Data on Vaccines - NYC Health"www1.nyc.gov