নামিবিয়ায় ইসলাম

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

নামিবিয়া প্রধানত একটি খ্রিস্টান অধ্যুষিত দেশ এবং সেখানে একটি ছোট মুসলমান সম্প্রদায়ের বসবাস রয়েছে। দেশটিতে মুসলিম জনসংখ্যা দিন দিন উল্লেখ যোগ্য হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।[১] ২০২১ সালের পিউ রিসার্চ সেন্টারের তথ্যমতে, দেশটিতে প্রায় ১০,০০০ মুসলিম বসবাস করে, যা নামিবিয়ার মোট জনসংখ্যার ০.৯%। [২] বর্তমান দেশটিতে ৫০ এর অধিক মসজিদ এবং বেশ কয়েকটি প্রসিদ্ধ ইসলামিক সেন্টার রয়েছে। [৩]

নামিবিয়ায় ইসলাম
মোট জনসংখ্যা
১০,০০০ (২০২১)
উল্লেখযোগ্য জনসংখ্যার অঞ্চল
উইন্ডহোক, কাতিমা, মুলিলো, ওয়ালভিস বে
ধর্ম
সুন্নি ইসলাম
ধর্মগ্রন্থ
কুরআন, হাদিস, ফিকহ
ভাষা
ইংরেজি, আফ্রিকান্স ভাষা, আরবি

জনসংখ্যা[সম্পাদনা]

নামিবিয়া ১৯৯০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে স্বাধীন হয়ে সার্বভৌম দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। সে হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকায় ইসলামের ইতিহাসে যা পাওয়া যায় তাই নামিবিয়ায় ইসলামের ইতিহাস হিসেবে গণ্য হয়। তবে বর্তমান নামিবিয়া অঞ্চলে ঠিক কখন ইসলাম এসেছিল তার সঠিক ইতিহাস জানা যায়নি।

২০০৯ সালে নামিবিয়া সরকার সেখানে মুসলমানদের সংখ্যা ৩,০০০ থেকে ৫,০০০ বলে রিপোর্ট করেছিল। ২০১১ সালে এই সংখ্যা ৯ হাজারে পৌঁছয়। দেশটির অধিকাংশ মুসলমান নামা সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত। তবে নামিবিয়া সরকার অন্যান্য আফ্রিকীয় সরকারের মত মুসলিমদের সংখ্যা কম করে দেখায় বলে অভিযোগ রয়েছে। সরকারী তথ্য মতে, সংখ্যালঘু ইহুদি ধর্ম, বৌদ্ধ ধর্ম ও বাহাই ধর্মের সাথে ইসলাম নামিবিয়ার বৃহত্তম সংখ্যালঘু ধর্ম তৈরি করে। মুসলমানরা নামিবিয়ার জনসংখ্যার ১% এরও কম। [৪]২০২১ সালে পিউ রিসার্চ সেন্টারের তথ্যমতে নামিবিয়ায় প্রায় ১০,০০০ মুসলিম রয়েছেন। তবে তা দিন দিন ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।[৫]

জনবৃদ্ধি[সম্পাদনা]

নামিবিয়ার অধিকাংশ মুসলিম নামাকুয়া জাতিগোষ্ঠীর সদস্য। এই সম্প্রদায়ে যখন ইসলাম প্রবেশ করে তখন মাত্র কয়েকজন মানুষ ইসলাম গ্রহণ করে। এরপর ১৯৮০ সালে নামাকুয়া সম্প্রদায়ের একজন বিশিষ্ট প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ জ্যাকবস সালমান ধামীর ইসলাম গ্রহণ করেন। তখন তাঁর উদ্যোগ ও প্রচেষ্টায় নামা সম্প্রদায়ে ইসলামের ব্যাপক প্রচার হয়। বর্তমান সালমান ধামীরকে সে দেশের মুসলিমদের অভিভাবক হিসেবে গণ্য করা হয় এবং তিনি ইসলাম প্রচারে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করছেন।

১৯৮৬ সালে নামিবিয়ায় প্রথম মসজিদ প্রতিষ্ঠিত হয়। মুসলমানদের প্রথম কমিউনিটি সোয়েটো ইসলামিক সেন্টার ১৯৮৬ সালে প্রতিষ্ঠিত। এটি কাতুতুরাতে অবস্থিত। একটি গবেষণা সংস্থার তথ্যমতে, ২০০৯ সালের মে মাস পর্যন্ত দেশটিতে মোট বারোটি মসজিদ ছিল। তখন উইন্ডহোকে ছয়টি, কাতিমা মুলিলোতে দুটি, ওয়ালভিস বে-তে একটি ও দেশের উত্তরে তিনটি মসজিদ ছিল। বর্তমান গোটা দেশে মসজিদের সংখ্যা ৫০ এর অধিক। [৩] বর্তমান নামিবিয় মুসলমানদের ব্যক্তিগত তৎপরতায় সারাদেশে মসজিদ ও ইসলামিক সেন্টারের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেই সাথে বাড়ছে মুসলিমদের সংখ্যা। নামিবিয়ায় সকল ধর্ম পালনের রাষ্ট্রীয় অনুমতি আছে। [৬]

মুসলিম সমাজে ধর্মীয় কার্যক্রম[সম্পাদনা]

নামিবিয়ার মুসলমানরা বেশ উদ্যমতার সাথে ধর্মীয় কার্যক্রমে অংশ নিয়ে থাকে। মুসলিম সমাজে শরিয়া আইন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে তারা ইসলামি জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠন করেছেন। এছাড়া মুসলিমদের হালাল খাদ্য সরবরাহের জন্যে NIHA (নামিবিয়া ইসলামিক হালাল অ্যাসোসিয়েশন) নামে একটি সংস্থাও গড়ে তুলেছেন। NIHA নামিবিয়ার প্রাচীনতম ও সর্বাধিক পরিচিত হালাল সার্টিফিকেশন সংস্থা। এটি দক্ষিণ আফিকাসহ বিশ্বের অনেক মুসলিম রাষ্ট্রের হালাল সার্টিফিকেশন সংস্থা দ্বারা স্বীকৃত। NIHA ২০০১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং এর আগে নামিবিয়ান হালাল স্লটারার্স অ্যাসোসিয়েশন নামে পরিচিত ছিল। [৭]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. NW, 1615 L. St; Suite 800Washington; Inquiries, DC 20036USA202-419-4300 | Main202-857-8562 | Fax202-419-4372 | Media (২০১১-০১-২৭)। "Table: Muslim Population by Country"Pew Research Center's Religion & Public Life Project (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১০-১৬ 
  2. "Islam by country"Wikipedia (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২২-১১-১৭। 
  3. Smith, R. J.; Bryant, R. G. (১৯৭৫-১০-২৭)। "Metal substitutions incarbonic anhydrase: a halide ion probe study"Biochemical and Biophysical Research Communications66 (4): 1281–1286। আইএসএসএন 0006-291Xডিওআই:10.1016/0006-291x(75)90498-2পিএমআইডি 3 
  4. "RELIGION-NAMIBIA: Finding Sanctuary in Islam"Inter Press Service। ২০০৯-০৫-১২। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১০-১৬ 
  5. "দেশ অনুযায়ী ইসলাম"উইকিপিডিয়া। ২০২২-০৮-০৫। 
  6. "Islam in Namibia"Wikipedia (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২১-১১-০২। 
  7. "NAMIBIA ISLAMIC HALAAL ASSOCIATION"www.niha.org.na। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১০-১৬