নাজিহা আল-দুলাইমি

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
নাজিহা আল-দুলাইমি
জন্ম১৯২৩
মৃত্যু৯ অক্টোবর ২০০৭
জাতীয়তাইরাকি
পেশাচিকিৎসক, মন্ত্রী
আন্দোলনইরাকি উম্যান লীগের সভাপতি

নাজিহা জাওদাত আসগাহ আল-দুলাইমি (১৯২৩, বাগদাদ – ৯ অক্টোবর ২০০৭, হেরদেকে) ইরাকের নারীবাদী আন্দোলনের প্রথমদিককার উদ্যোক্তা ছিলেন। তিনি ১০ মার্চ ১৯৫২ সালে ইরাকি উম্যান লীগের প্রথম প্রতিষ্ঠাতা-সভাপতি হন। তিনি ইরাকের আধুনিক ইতিহাসে প্রথম নারী মন্ত্রী এবং আরব বিশ্বের প্রথম নারী কেবিনেট মন্ত্রী ছিলেন।

জীবনী[সম্পাদনা]

আল-দুলাইমির দাদা বাগদাদ এবং ব্যাবিলনের মাঝে অবস্থিত আল-মাহমুদিয়া ছেড়ে উনিশ শতকের শেষদিকে বাগদাদে বসতি স্থাপন করেন। এখানেই ১৯২৩ খ্রিস্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন আল-দুলাইমি। তিনি রয়েল কলেজ অব মেডিসিনে (যা পরবর্তীতে ইউনিভার্সিটি অব বাগদাদে পরিণত হয়) মেডিসিন নিয়ে পড়াশোনা করেন।[১] উনিশ বছর বয়সে তিনি ভর্তি হন এবং তখন তিনি ঐ কলেজের হাতেগোণা নারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে একজন ছিলেন। মানুষ এবং মাতৃভূমির কথা চিন্তা করে এবং সহকর্মীদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে তিনি "উম্যানস সোসাইটি ফর কমব্যাটিং ফ্যাসিজম অ্যান্ড নাসিজম"-এ যুক্ত হন এবং এর কাজের সাথে সরাসরি যুক্ত হন। পরবর্তীতে এই সংগঠন যখন নাম পরিবর্তন করে "অ্যাসোসিয়েশন ফর ইরাকি উম্যান" নাম নেয়, তিনি এর নির্বাহী পরিষদে যুক্ত হন।

১৯৪১ সালে তিনি একজন চিকিৎসক হিসেবে পাস করেন। কলেজছাত্র থাকা অবস্থাতেই তিনি ইরাকি কমিউনিস্ট পার্টি (আইসিপি) এর আদর্শ ও লক্ষ্যের সাথে পরিচিত হন। ১৯৪৭ সালে দলীয় মনোনয়ন পান এবং ১৯৪৮ সালে পূর্ণ সদস্যে পরিণত হন। ঐ বছরের জানুয়ারিতে নাজিহা ঔপনিবেশিক পোর্টসমাউথ চুক্তির বিরুদ্ধে "আল-ওয়াথবাহ"তে যুক্ত হন। এছাড়া অন্যান্য দেশীয় আন্দোলনেও তিনি যুক্ত ছিলেন। এ ধরনের নানাবিধ রাজনৈতিক কাজ, মানুষের দুর্দশা দূরীকরণ বিষয়ক কাজ, শাসক ও সমাজের পশ্চাৎপদগামীদের দ্বারা নির্যাতন ইত্যাদির প্রতিবাদের মাধ্যমে তিনি সামাজিক আন্দোলন তৈরিতে যুক্ত হন।

পাস করার পর তিনি বাগদাদের রয়েল হাসপাতালে যুক্ত হন, পরে কার্খ হাসপাতালে স্থানান্তরিত হন, পুরো সময়জুড়েই তিনি উপরমহলের হাস্য-তামাশার পাত্রী ছিলেন, কারণ তিনি সাওকাহ জেলাতে তার ক্লিনিকে ফ্রিতে গরীবদের চিকিৎসা করতেন। কুর্দিস্তানের সুলাইমানিয়াতে স্থানান্তরিত হওয়ার পর আবারও তার ক্লিনিক গরিব রোগীদের আবাসস্থল হয়ে পড়ে, যেখানে তারা বিনামূল্যে ভালো চিকিৎসা লাভ করতেন। এখান থেকে তিনি ধীরে ধীরে কারবালা, উমারাহ প্রভৃতি শহরে স্থানান্তরিত হন গরিবদের প্রতি তার মানবিক সাহায্যের পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য। এছাড়া তার পুরুষতান্ত্রিকতা বিরোধী রাজনৈতিক কাজও এর কারণের মধ্যে ছিল।

এর মাধ্যমে নাজিহা দেশের বিভিন্ন স্থানে মানুষ কীরকম অবস্থার মধ্যে দিয়ে দিন কাটায় তা জানতে পারেন। ইরাকি নারীর জন্য কাজ করার ক্ষেত্রে তার এ অভিজ্ঞতা অবদান রেখেছে বলে মনে করা হয়। এর উপর তিনি দ্য ইরাকি উম্যান নামক পুস্তিকা রচনা করেন।[২]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Dr. Naziha Jawdet Ashgah al-Dulaimi | Women as Partners in Progress Resource Hub"pioneersandleaders.org। ২০২০-০৩-১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৩-০৮ 
  2. Ali, Zahra (২০১৮-০৯-১৩)। Women and Gender in Iraq: Between Nation-Building and Fragmentation (ইংরেজি ভাষায়)। Cambridge University Press। আইএসবিএন 978-1-107-19109-9 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]