নওগাঁর মাটির প্রাসাদ
নওগাঁর মাটির প্রাসাদ | |
---|---|
বিকল্প নাম | নওগাঁর মাটির বাড়ি |
সাধারণ তথ্য | |
অবস্থা | সম্পূর্ণ |
ধরন | বাসস্থান |
অবস্থান | আলিপুর, চেরাগপুর মহাদেবপুর নওগাঁ |
শহর | নওগাঁ |
দেশ | বাংলাদেশ |
স্থানাঙ্ক | ২৪°৫৪′২৬.৫″ উত্তর ৮৮°৪৮′৫৫.৯″ পূর্ব / ২৪.৯০৭৩৬১° উত্তর ৮৮.৮১৫৫২৮° পূর্ব |
নির্মাণকাজের আরম্ভ উদযাপন | ১৯৮৫ |
নির্মাণকাজের সমাপ্তি | ১৯৮৬ |
স্বত্বাধিকারী | সমশের আলী মণ্ডল এবং তাহের আলী মণ্ডল |
ভূমিমালিক | সমশের আলী মণ্ডল এবং তাহের আলী মণ্ডল |
অন্তর্ভুক্তি | মাটির বাড়ি |
উচ্চতা | ২০-২২ ফুট |
মাত্রা | |
অন্যান্য মাত্রা | দৈর্ঘ্য ৩০০ ফিট প্রস্থ ১০০ ফিট |
কারিগরী বিবরণ | |
কাঠামোগত পদ্ধতি | মাটির বাড়ি |
উপাদান | মাটি, খড় ও পানি |
তলার সংখ্যা | ২ |
ভূতল | ২১ বিঘা |
নকশা এবং নির্মাণ | |
প্রকৌশলী | ১০০ জন |
পরিচিতির কারণ | ১০৮ কক্ষের মাটির প্রাসাদ |
অন্যান্য তথ্য | |
কক্ষ সংখ্যা | ১০৮ টি |
নওগাঁর মাটির প্রাসাদ নওগাঁ জেলার মহাদেবপুর উপজেলায় অবস্থিত মাটির প্রাসাদ। মাটির প্রাসাদটিতে ১০৮ কক্ষ আছে। প্রাসাদটি দ্বিতল বিশিষ্ট হলেও কোন ইট বা সিমেন্টের ব্যবহার করা হয় নাই। ১৯৮৬ সালে ২১ বিঘা জমির জমির উপর মাটির প্রাসাদটি নির্মাণ করা হয়েছে।[১][২][৩]
অবস্থান[সম্পাদনা]
নওগাঁ জেলার মহাদেবপুর উপজেলার চেরাগপুর ইউনিয়নের আলিপুর গ্রামে মাটির প্রাসাদটি অবস্থিত। উপজেলা সদর থেকে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে প্রায় ১১ কিলোমিটার দূরে মাটির প্রাসাদটি অবস্থিত।[৪][৫]
ইতিহাস[সম্পাদনা]
মাটির প্রাসাদটি ১৯৮৬ সালে মাটি দিয়ে তৈরি করা হয়। সমশের আলী মণ্ডল এবং তাহের আলী মণ্ডল প্রাসাদটি নির্মাণ করেন। তারা আপন দুই সহোদর ভাই। তারা সখের বসে প্রসাদটি তৈরি করেছিলেন। বিভিন্ন গ্রামের প্রায় শতাধিক কারিগরের সমন্বয়ে এই দ্বিতল প্রাসাদটি নির্মাণ করা হয়েছে। প্রাসাদটি নির্মাণ করতে প্রায় ৯ মাস সময় লেগেছিল। তবে এই প্রাসাদটি সম্পূর্ণ করতে প্রায় এক বছর সময় লেগেছিল।[২][৪][৬]
নির্মাণ কৌশল[সম্পাদনা]
ইট বা সিমেন্টের প্রাসাদ না হবার কারণে প্রসাদের দেয়াল বিশেষভাবে তৈরি করতে হয়েছিল। কারণ মাটির দেয়াল প্রতিবারে এক থেকে দেড় ফুটের বেশি উঁচু করা সম্ভব ছিল না। একবার দেয়াল নির্মাণের পর শুকিয়ে যাবার জন্য কয়েক দিন অপেক্ষা করতে হয়েছিল। শুকিয়ে গেলে আবার তার ওপর একই উচ্চতার দেয়াল তৈরি করা হয়েছিল। এভাবে দোতলা বাড়িটির ২০-২২ ফুট উঁচু দেয়াল নির্মাণ করা হয়েছিল। দেয়ালের স্থায়িত্ত বাড়ানো এবং সৌন্দর্য বাড়াতে এতে চুন ও আলকাতরার ব্যবহার করা হয়েছিল।[১][২][৬]
প্রাসাদের বিবরণ[সম্পাদনা]
মাটির প্রাসাদটি প্রায় ২১ বিঘা এলাকা জুড়ে অবস্থিত। প্রাসাদের দৈর্ঘ্য প্রায় ৩০০ ফিট ও প্রস্থ প্রায় ১০০ ফিট। প্রাসাদে প্রবেশের জন্য ৭ টি দরজা আছে। যেকোনো একটি দিয়ে প্রবেশ করলেই ১০৮ টি কক্ষে যাওয়া যাবে। মাটির প্রাসাদটিতে কোন ইট, সিমেন্ট, বালি ও রড ব্যবহার করা হয় নাই।[৫]
প্রাসাদে ৯৬টি বড় কক্ষ এবং ১২টি ছোট কক্ষ মিলে মোট ১০৮ টি কক্ষ আছে। প্রতিটি কক্ষে একাধিক দরজা আছে। কোন কোন কক্ষে ৪-৫টি দরজা রয়েছে।[৪][৭]
প্রাসাদের প্রাচীর ২০-৩০ ইঞ্চি চওড়া। মাটি, খড় ও পানি দিয়ে ভিজিয়ে কাদায় পরিণত করে প্রাসাদের প্রাচীর তৈরি করা হয়েছে।[৫]
দোতলায় ওঠার জন্য ১৩ টি সিঁড়ি আছে। প্রাসাদের পিছনের দিকের এলাকা থেকে বাড়ি নির্মাণের মাটি সংগ্রহ করা হয়। প্রচুর মাটির নেওয়ার ফলে সেইখানে বিশাল আকারের পুকুর তৈরি হয়েছে। বাড়িটিতে ছাউনি দিবার জন্য প্রায় ২০০ বান্ডেল টিন লেগেছে।[১][৬][৮]
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
- ↑ ক খ গ নুরুল করিম, আব্দুর রউফ (৮ ডিসেম্বর ২০১৮)। "মাটির প্রাসাদে..."। দৈনিক ইত্তেফাক। সংগ্রহের তারিখ ১৯ জুন ২০২০।
- ↑ ক খ গ "নওগাঁয় ১০৮কক্ষের মাটির বাড়ি ঐতিহ্যের এক বিরল দৃষ্টান্ত"। দৈনিক জনকন্ঠ। ২৮ জুলাই ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ১৯ জুন ২০২০।
- ↑ "১০৮ কক্ষের মাটির বাড়ি!"। বাংলাদেশ টুডে। ২৭ জানুয়ারি ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ১৯ জুন ২০২০।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ ক খ গ বাবুল আখতার রানা (১৮ আগস্ট ২০১৮)। "নওগাঁয় ১০৮ কক্ষের মাটির বাড়ি"। বাংলাদেশ প্রতিদিন। সংগ্রহের তারিখ ১৯ জুন ২০২০।
- ↑ ক খ গ আব্দুর রউফ পাভেল (২০১৯-০১-২৮)। "ঘুরে আসুন নওগাঁর ১০৮ কক্ষের মাটির প্রাসাদ"। ঢাকা ট্রিবিউন বাংলা। ২০২০-০৬-১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-১৯।
- ↑ ক খ গ "নওগাঁর মাটির প্রাসাদ"। বাংলাদেশ প্রতিদিন। ২২ ডিসেম্বর ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ১৯ জুন ২০২০।
- ↑ "১০৮ কক্ষবিশিষ্ট মাটির বাড়ি"। আমাদের নতুন সময়। ২০১৮-০৭-৩০। ২০২০-০৬-১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-১৯।
- ↑ কাজী কামাল হোসেন (২০২০-০১-৩০)। "দৃষ্টিনন্দন নওগাঁর মহাদেবপুরে ১০৮ কক্ষের মাটির বাড়ি"। সিল্কসিটি নিউজ। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-১৯।