বিষয়বস্তুতে চলুন

ধর্মীয় যুদ্ধ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
তাইপিং বিদ্রোহের একটি নমুনা দৃশ্য।
১১৮৭ সালের হিত্তিনের যুদ্ধের পর সালাহুদ্দিনের কাছে গাই দ্য লুসিগনানের আত্মসমর্পণ

একটি ধর্মীয় যুদ্ধ বা ধর্মের জন্য যুদ্ধ, কখনও কখনও পবিত্র যুদ্ধ (ল্যাটিন: sanctum bellum) হিসেবেও পরিচিত, এমন একটি যুদ্ধ বা সংঘর্ষ যা প্রধানত ধর্ম ও বিশ্বাসের পার্থক্যের কারণে সংঘটিত বা সমর্থিত হয়। আধুনিক যুগে, ধর্মীয়, অর্থনৈতিক, জাতিগত বা অন্যান্য দিকগুলির মধ্যে কোনটি একটি যুদ্ধের ক্ষেত্রে প্রাধান্য পাচ্ছে তা নিয়ে প্রায়শই বিতর্ক হয়। একটি যুদ্ধকে ধর্মীয় যুদ্ধ বলা যাবে কি না, তা নির্ধারণ করতে গিয়ে অনেক জটিল প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়। যেমন, ধর্ম কী, ধর্মীয় যুদ্ধের সংজ্ঞা কী, এবং যুদ্ধে ধর্মের ভূমিকা কতটা গুরুত্বপূর্ণ—এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে হয়। এই প্রশ্নগুলির উত্তর ধর্মীয় যুদ্ধের পরিমাণ কতটা তা সম্পর্কে সিদ্ধান্তে বড় ধরনের প্রভাব ফেলে।

জেফ্রি বার্টন রাসেল-এর মতো পণ্ডিতদের মতে, সংঘাতগুলি কেবল ধর্মের সাথে সম্পর্কিত নাও হতে পারে বরং ধর্মীয় মর্মের আড়ালে পৃথিবী শাসন, জাতিগত, সামাজিক, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক কারণগুলিও থাকতে পারে।[] অন্য কিছু পণ্ডিতের মতে, "ধর্মীয় যুদ্ধ" বলতে যা বোঝানো হয়, তা মূলত একটি "পশ্চিমা দ্বৈততা" এবং বিগত কয়েক শতাব্দীর একটি আধুনিক ধারণা। তারা মনে করেন, যেসব যুদ্ধকে "ধর্মীয়" বলে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়, সেগুলোরও আসলে জাগতিক (অর্থনৈতিক বা রাজনৈতিক) প্রভাব রয়েছে।[][] ইসরায়েলি-ফিলিস্তিনি সংঘাত, সিরীয় গৃহযুদ্ধ, এবং আফগানিস্তান ও ইরাকের যুদ্ধসহ বিভিন্ন সংঘাতে ধর্মীয় উপাদান প্রকাশ্য, যদিও একে কখনো মৌলবাদ, আবার কখনো ধর্মীয় উগ্রবাদ হিসেবে বর্ণনা করা হয়—যা মূলত পর্যবেক্ষকের সহানুভূতির ওপর নির্ভর করে। তবে, এসব ক্ষেত্রে করা গবেষণাগুলো প্রায়ই এই সিদ্ধান্তে পৌঁছায় যে, অধিকাংশ সংঘাতের মূল কারণ জাতিগত বিদ্বেষ।[]

এনসাইক্লোপিডিয়া অব ওয়ার্স এর মতে, মোট ১,৭৬৩টি পরিচিত/নথিভুক্ত ঐতিহাসিক সংঘাতের মধ্যে ১২১টি অর্থাৎ ৬.৮৭%, সংঘাতের প্রাথমিক কারণ ছিল ধর্ম।[] ম্যাথিউ হোয়াইটের দ্য গ্রেট বিগ বুক অফ হরিবল থিংস বইয়ের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের ১০০টি সবচেয়ে ভয়াবহ নৃশংসতার মধ্যে ১১টির প্রধান কারণ ছিল ধর্ম।[][]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. Russell, Jeffrey Burton (২০১২)। Exposing Myths about Christianityবিনামূল্যে নিবন্ধন প্রয়োজন। Downers Grove, Ill.: IVP Books। পৃষ্ঠা 56আইএসবিএন 9780830834662 
  2. Morreall, John; Sonn, Tamara (২০১৩)। 50 Great Myths of Religion। Wiley-Blackwell। পৃষ্ঠা 39–44। আইএসবিএন 9780470673508 
  3. Entick, John (১৭৬৩)। The General History of the Later War (ইংরেজি ভাষায়)। 3। পৃষ্ঠা 110। 
  4. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; Omar নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  5. Axelrod, Alan; Phillips, Charles, সম্পাদকগণ (২০০৪)। Encyclopedia of Wars (Vol.3)। Facts on File। পৃষ্ঠা 1484–1485 "Religious wars"। আইএসবিএন 0816028516 
  6. Matthew White (২০১১)। The Great Big Book of Horrible Things। W.W. Norton & Company। পৃষ্ঠা 544। আইএসবিএন 978-0-393-08192-3 
  7. Holt, Andrew (২০১৮-১১-০৮)। "Religion and the 100 Worst Atrocities in History"Andrew Holt, Ph.D. (ইংরেজি ভাষায়)। ১০ অক্টোবর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-০২