বিষয়বস্তুতে চলুন

দ্য সাবজেকশন অব উইমেন

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
দ্য সাবজেকশন অব উইমেন
১৮৬৯ সালের "দ্য সাবজেকশন অব উইমেন" বইয়ের প্রথম মুদ্রণের শিরোনাম পৃষ্ঠা
লেখকজন স্টুয়ার্ট মিল এবং হ্যারিয়েট টেলর মিল
প্রকাশনার স্থানযুক্তরাজ্য
ভাষাইংরেজী
প্রকাশকলংম্যানস, গ্রিন, রিডার এবং ডায়ার
প্রকাশনার তারিখ
১৮৬৯
মিডিয়া ধরনছাপা

দ্য সাবজেকশন অব উইমেন (বাংলা: নারীদের বশ্যতা) হল ইংরেজ দার্শনিক, রাজনৈতিক অর্থনীতিবিদ এবং সরকারি কর্মচারী জন স্টুয়ার্ট মিলের একটি প্রবন্ধ। ১৮৬৯ সালে প্রকাশিত প্রবন্ধটির ধারণাগুলি লেখক তাঁর স্ত্রী হ্যারিয়েট টেলর মিলের সাথে যৌথভাবে বিকশিত করেছিলেন। জেএস মিল ১৮৫৮ সালের শেষের দিকে তাঁর স্ত্রীয়ের অকাল মৃত্যুর পরপরই তাদের সহযোগী রচনা অন লিবার্টি (১৮৫৯)-র সমাপ্ত পাণ্ডুলিপি জমা দেন এবং তারপর ১৮৬১ সালে সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত দ্য সাবজেকশন অব উইমেন-এর কাজ চালিয়ে যান।

প্রকাশের সময় প্রবন্ধটির লিঙ্গ সমতার পক্ষে যুক্তি ছিল পুরুষ ও মহিলাদের মর্যাদা সম্পর্কিত ইউরোপীয় প্রচলিত নিয়মের অবমাননা।

ইতিহাস এবং প্রেক্ষাপট

[সম্পাদনা]

মিল তার আত্মজীবনীতে "দ্য সাবজেকশন অব উইমেন" রচনার জন্য তার স্ত্রী এবং তার মেয়ে হেলেন টেলরের প্রতি তার ঋণের কথা বর্ণনা করেছেন :

মিল স্বীকার করেন যে তাঁর গ্রন্থে তাঁর কন্যার কিছু গুরুত্বপূর্ণ চিন্তা যুক্ত হয়েছে এবং কিছু অংশ তাঁর স্ত্রীর লেখা থেকে নেওয়া হয়েছে। তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন যে লেখার সবচেয়ে গভীর ও তাৎপর্যপূর্ণ দিকগুলো মূলত তাঁর স্ত্রীর চিন্তা থেকে উদ্ভূত, যা তাঁদের অগণিত আলোচনা ও বিতর্কের মাধ্যমে দুজনের মধ্যে অভিন্ন ধারণায় রূপ নিয়েছিল, কারণ এই বিষয়টি তাঁদের চিন্তাজগতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করেছিল।[]

যদিও পণ্ডিতরা সাধারণভাবে একমত ছিলেন যে জন স্টুয়ার্ট মিলই একমাত্র লেখক ছিলেন, তবে কিছু যুক্তি হ্যারিয়েট টেলর মিলের ১৮৫১ সালে প্রকাশিত প্রবন্ধ দ্য এনফ্র্যাঞ্চাইসমেন্ট অব উইমেন-এর সাথে মিল রয়েছে বলে মনে করা হয়।

মিল বিশ্বাস করতেন যে মানবজাতির নৈতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক অগ্রগতি সকলের জন্য অধিক সুখ বয়ে আনবে। তিনি যুক্তি দিয়েছিলেন যে বুদ্ধির উচ্চতর আনন্দ ইন্দ্রিয়সুখের চেয়ে অনেক বেশি পরিতৃপ্তি এনে দেয়। তার ধারণা ছিল, মানুষ নৈতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে শিক্ষিত ও সভ্য হওয়ার ক্ষমতা রাখে। মিল মনে করতেন যে সকলের ভোটাধিকার থাকা উচিত, তবে বর্বর ও অশিক্ষিত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে তিনি ব্যতিক্রম রেখেছিলেন।[][]

মিল যুক্তি দেন যে মানুষকে নিজের অধিকার রক্ষার জন্য এবং নৈতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে স্বনির্ভর হতে শেখার জন্য ভোটাধিকার পাওয়া উচিত। এই যুক্তি তিনি পুরুষ ও নারীর ক্ষেত্রে সমানভাবে প্রয়োগ করেন। তিনি সংসদ সদস্য হিসেবে বারবার নারীদের ভোটাধিকার দাবির পক্ষে কথা বলেন, যা সে সময় বেশ বিতর্কিত ছিল।

মিলের সময়ে সামাজিক নিয়ম অনুযায়ী একজন নারী সাধারণত তার স্বামী বা পিতার ইচ্ছার উপর নির্ভরশীল ছিলেন, কারণ তখনকার সমাজ মনে করত যে নারীরা শারীরিক ও মানসিকভাবে পুরুষদের তুলনায় দুর্বল এবং তাদের "পরিচর্যার" প্রয়োজন। এই দৃষ্টিভঙ্গিকে শক্তিশালী করেছিল পরিবারে পুরুষ ও নারীর ভূমিকা নিয়ে ধর্মীয় ধারণা এবং জৈবিক নির্ধারণবাদ-ভিত্তিক সামাজিক তত্ত্ব। ১৯শ শতকের সমাজে আদর্শ নারীর প্রতিমূর্তি ছিল একজন মা, স্ত্রী ও গৃহিণী হিসেবে।

মিল স্বীকার করেন যে তিনি তখনকার সমাজের প্রচলিত মতের বিরুদ্ধে অবস্থান নিচ্ছিলেন এবং তাঁর দাবিগুলো বারবার যুক্তি দিয়ে প্রমাণ করতে হবে। তিনি যুক্তি দেন যে নারীদের প্রতি বৈষম্য একটি অতীতের ধ্বংসাবশেষ, যখন "শক্তিই ছিল ন্যায়," কিন্তু আধুনিক সমাজে এর কোনো স্থান নেই। মিল মনে করেন যে মানব সভ্যতার উন্নতির পথে সবচেয়ে বড় বাধাগুলোর একটি হলো সমাজের অর্ধেক জনগোষ্ঠীকে ঘরের বাইরে অবদান রাখতে না দেওয়া।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. Mill, John Stuart (১৮৭৩)। Autobiography (পিডিএফ)। পৃ. ১৬৬।
  2. Tong, Rosemarie (২০০৯)। Feminist Thought: A More Comprehensive Introduction। Westview Press (Perseus Books)। পৃ. ১৭আইএসবিএন ৯৭৮-০-৮১৩৩-৪৩৭৫-৪
  3. Mill, Mrs. John Stuart (১৮৫১)। The Enfranchisement of Women (July 1851 সংস্করণ)। London: Westminster & Foreign Quarterly Review। পৃ. ২৭। সংগ্রহের তারিখ ৪ জুন ২০১৪

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]