দ্য মারমেইড (১৯১০-এর চলচ্চিত্র)

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
দ্য মারমেইড
চলচ্চিত্রের পোস্টার
প্রযোজকথানহাউসার কোম্পানি
শ্রেষ্ঠাংশে
পরিবেশকথানহাউসার ফিল্ম কর্পোরেশন
মুক্তি
  • ২৯ জুলাই ১৯১০ (1910-07-29)
দেশমার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
ভাষানির্বাক চলচ্চিত্র
ইংরেজি ইন্টারটাইটেলস

দ্য মারমেইড (ইংরেজি: The Mermaid) ১৯১০ সালের মার্কিন নির্বাক স্বল্পদৈর্ঘ্য কমেডি চলচ্চিত্র, যা প্রযোজনা করেছে থানহাউসার কোম্পানি। চলচ্চিত্রটিতে জন গ্রে নামের এক হোটেল মালিকের চরিত্র আলোকপাত করা হয়েছে, যে চায় তার ব্যবসায়ে আবার নতুন করে প্রাণ সঞ্চার হোক। মৎস্যকন্যা দৃশ্যত হয়েছে এমন একটি প্রতিবেদন পাঠের পর, গ্রে পত্রিকার প্রতিবেদককে ডেকে তার কন্যার মৎসকন্যা ভঙ্গিতে আলোকচিত্র তুলে ছাপিয়ে দেয়। এই প্রচারণার কারণে হোটেলটি বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করে, কিন্তু ঘটনাক্রমে তার কন্যা ইথেল হোটেলের মারমেইড সুইটে আসা অতিথিদের সেই গোপন বিষয়টি প্রকাশ করে দেয়। জুলাই ২৯, ১৯১০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্রটি বেশিরভাগ ইতিবাচক মূল্যায়ন অর্জন করেছিল। এছাড়া এটিকে হারানো চলচ্চিত্র হিসেবে ধরা হয়।

কাহিনীসংক্ষেপ[সম্পাদনা]

যদিও চলচ্চিত্রটি হারানো হিসেবে পরিগণিত হয়, তবুও এর একটি সারাংশ জুলাই ৩০, ১৯১০ সালের দ্য মুভিং পিকচার ওয়াল্ডে পাওয়া যায়। এখানে বর্ণিত রয়েছে যে, "জন গ্রে একটি গ্রীষ্মকালীন হোটেল চালান সমুদ্র উপকূলের কোন এক নন্দনীয় স্থানে, কিন্তু অতিথিদের এখানে আসার ব্যপারে সে কিছুই করতে পারছিলোনা, এবং চলচ্চিত্রের শুরুতে তাকে হোটেলের রেজিস্টার হাতে বিলাপ করতে দেখা যায়; এই বলে যে তার এখানে একজন অতিথিরও নাম নেই। এই সময় তার মেয়ে এথেল স্কুল থেকে বাড়ি ফেরে। এথেল একজন দক্ষ সাঁতারু, সে আটলান্টিকের জলে মৎসকন্যা দেখা গেছে এমন একটি গুজবের খবর পত্রিকায় পড়ছিল, গ্রে সিদ্ধান্ত নিল সমুদ্রের রহস্যময় ললনার ভঙ্গিতে তার মেয়ের ভঙ্গিমা দেখবে। সে বুঝেছিল যে, এ ধরনের মৎসকন্যা তার হোটেলের গ্রাহক আনতে সমর্থ হবে। যথার্থ কস্টিউম পরিধান করার পর, সত্যিকারের মারমেইড ফ্যাশনের ভঙ্গিমায় পাথরের উপর এথেলের ভঙ্গি, এবং তাঁর বাবা স্থানীয় পত্রিকার প্রতিবেদককে প্ররোচিত করতে সমর্থ হয়েছিলেন এ প্রতিভাস দিয়ে। পত্রিকার লোকেরা সত্যিকার অর্থে মুগ্ধ হয়েছিলেন সেই মৎসকন্যার ছবি দেখে যেটি সে প্রকাশ করেছিল। কথিত, এই মৎসকন্যা ব্যাপক প্রচারণা পায় যার জন্য কাছে-দূরের পর্যটকেরা এটি দেখার জন্য এখানে আসা শুরু করে। টম, ডিক এবং হ্যারি নামের তিন শহুরে ক্রীড়াবিদ মৎসকন্যার চারপাশের জলে লাফঝাফ আর গোসল করছিল এবং বিভিন্নভাবে এটিকে প্রত্যক্ষ করছিল। মৎসকন্যা তাদের মোহিত করে রেখেছিল যতক্ষণ না প্রি-টেইলর্ড সুইটে এথেল নিজেকে অথিতির বেশে উপস্থাপন করে এবং এই রহস্যের জট খুলেছিল। ইতোমধ্যে গ্রে-হোটেলের খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছিল এবং এর মালিকও একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী হয়েছিল।"[১]

অভিনয়ে[সম্পাদনা]

উৎপাদন[সম্পাদনা]

দ্য মারমেইড (১৯১০)

এই চলচ্চিত্রের দৃশ্যকল্প ঠিক কে লিখেছেন তা অজানা, তবে ধারণা করা হয় লয়েড লনারজান। কেননা যখন তিনি থানহাউসার প্রোডাকশনের স্ক্রিপরাইটারের কাজ করছিলেন তখন তিনি ছিলেন দ্য নিউ ইয়র্ক ইভিনিং ওয়াল্ড পত্রিকার একজন অভিজ্ঞ সংবাদকর্মী।[২] এই চলচ্চিত্রের পরিচালকের নাম অজানা তবে খুব সম্ভবত ব্যারি ও'নেইল। চলচ্চিত্র ইতিহাসবেত্তা কিউ. ডেবিড বাউয়ার্স এই প্রযোজনার জন্য একজন নয় বরং সম্ভাব্য দুইজন চিত্রগ্রাহকের অস্তিত্ব রয়েছে বলে ধারণা করেন। ব্লেয়ার স্মিথ, যিনি ছিলেন থানহাউসার কোম্পানির প্রথম চিত্রগ্রাহক কিন্তু, পরর্তীতে তিনি স্থির এবং মোশন ছবি বিষয়ে অভিজ্ঞ আলোকচিত্রী কার্ল লুইজ গ্রেগরির সাথে যোগ দিয়েছিলেন। ১৯১০ সালের চলচ্চিত্রে চিত্রগ্রাহকের ভূমিকা প্রযোজনায় স্বীকৃত থাকত না।[৩] দ্য মর্ণিং পিকচার ওয়ার্ল্ড এই চলচ্চিত্রের অভিনয়ে হেমিং এবং ক্র্যানির নাম রয়েছে বলে ঘোষণা করেছে, কিন্তু বাউয়ার্স একটি অজানা চরিত্রে "থানহাউসার কিড" ম্যারি এলিনের কথাও যুক্ত করেন।[১][৪] বিষয়টি অজানা তবে চলচ্চিত্রে ছোট্ট বালক উশারের ভূমিকায় সম্ভবত এলেনই অভিনয় করেছে। এই সময়ে এলেন নিজেকে পুরুষ চরিত্রে অভিনয়ের জন্য উপযুক্ত করে গড়ে তোলেন, যার ফলে দ্য টু রোজেস চলচ্চিত্রে এক ইতালীয় তরুণের ভূমিকায় তাকে দেখা যায়।[৫] এলিনকে দ্য লিটল হিরো অব হল্যান্ড চলচ্চিত্রে হানস চরিত্রেও দেখা যায়।[৬] থানহাউসারের অন্য একজন গুরুত্বপূর্ণ নারী এনা রোজমন্ডের এই চলচ্চিত্রে কোন ভূমিকা ছিল কিনা তা জানা যায় নি।[৭]

চলচ্চিত্রবোদ্ধারা জানান, এই প্রযোজনাটি ত্রুটিমুক্ত ছিল না। একটি ভুল ছিল আলোকচিত্রীর, তিনি যথাযথ ভাবে মৎসকন্যার ছবি ধারণ করতে পারেন নি। যে দূরত্ব থেকে ছবি ধারণ করা হয়েছে তাতে মৎসকন্যার ভাল ছবি পাওয়া সহজ ছিল না। অন্য একটি ছোট ভুল ছিল হোটেল পরিচালনার কাজে নিয়োজিত অফিস বালকটির, যে কিনা অত্যন্ত দ্রুততার সাথে হোটেলে আগত অতিথিদের স্বাগত জানাচ্ছিল[১] ত্রুটি-বিচ্যুতি সত্ত্বেও, স্বাধীন প্রযোজনার জন্য এই কোম্পানির যে অগ্রণী ভূমিকা দ্য নিউ ইয়র্ক ড্রামাটিক মিরর পত্রিকায় তার প্রশংসা করেছেন আমেরিকান বায়োগ্রাফ কোম্পানির ফ্রাংক ই. উডস[৮][৯]

মুক্তি ও অভ্যর্থনা[সম্পাদনা]

প্রায় ১০০০ ফুট দৈর্ঘ্যের এই এক রীলের কমেডি মুক্তি পেয়েছিল জুলাই ২৯, ১৯১০ সালে।[১] এই চলচ্চিত্রের বৃহত্তর মুক্তি ঘটেছিল, কিন্তু একই নামের অন্য চলচ্চিত্র মুক্তি দিয়েছিল সোসিয়েটা এনোনিমা এমব্রোসিও[১০] এমব্রোসিওর চলচ্চিত্রটি মুক্তি পেয়েছিল নভেম্বর ১৬, ১৯১০ সালে, কিন্তু কিছু কিছু থিয়েটারের বিজ্ঞাপনে চলচ্চিত্র প্রদর্শনের সময় দ্ব্যর্থযুক্ত।[১১] জানা যায়, থানহাউসার এবং এমব্রোসিওদের চলচ্চিত্র মাঝে মাঝে এক সাথে প্রদর্শিত হতো, ম্যারিল্যান্ড থিয়েটারের এক বিজ্ঞাপনে বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়।[১২][note ১] চলচ্চিত্রটি সমালোচকদের থেকে প্রধানত ইতিবাচক সমালোচনা অর্জন করে। দ্য মর্নিং টেলিগ্রাফ জানায়, হোটেলের বিজ্ঞাপনের জন্য গল্পটিতে ছিল চমৎকার এক পন্থা, কিন্তু তারা দৃশ্য ধারনের ক্ষেত্রে আলোকচিত্রীর ত্রুটিপূর্ণ উদ্যোগ এবং যার ফলাফল মৎসকন্যার ত্রুটিপূর্ণ চিত্র।[১] দ্য মুভিং পিকচার ওয়ার্ল্ড-এর মতে, কিছু বিশদ বিবরণ আর সংক্ষিপ্ত সারাংশ বাদ দিলে চলচ্চিত্রটি ছিল আসলেই একটি কার্যকরী প্রযোজনা।[১] সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পর্যালোচনা প্রকাশ করে দ্য নিউ ইয়র্ক ড্রামাটিক মিরর তাদের মূল্যায়ন ছিল নিরপেক্ষ, এই প্রযোজনার অনেকগুলো ভুলের একটি তালিকা প্রকাশ করে যেখানে এ্যাকশনের ধারাবাহিকতার সমস্যার উপর বেশি আলোকপাত করা হয়েছে।[১]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

টীকা[সম্পাদনা]

  1. অজস্র বিজ্ঞাপনে এই নামের চলচ্চিত্র প্রদর্শনের খবর নিশ্চিত হয়, কিন্তু কিছু দ্ব্যর্থকভাবে চলচ্চিত্র প্রযোজকের নামও প্রকাশ করে। মার্ভেলের এক বিজ্ঞাপনে পাওয়া যায় এমব্রোসিও'র নাম এবং ভডেটের বিজ্ঞাপনে দেখা যায় থানহাউসারের নাম, তবে কয়েকটি ব্যতিক্রম ছাড়া[১২][১৩] আরিজোনায় এক বিজ্ঞাপনে থানহাউসার প্রযোজনা কমেডি হিসেবে নির্দেশিত হয়েছে।[১৪]দ্য ওয়েনাটছী ডেইলি ওয়ার্ল্ড-এর এক বিজ্ঞাপনে থানহাউসারের চলচ্চিত্রটি এমব্রোসিওর উপরে দেখানো হয়েছে কেননা এটি আগে মুক্তি পেয়েছিল।[১৫]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Q. David Bowers (১৯৯৫)। "Volume 2: Filmography - The Mermaid"Thanhouser Films: An Encyclopedia and History। ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৫ 
  2. Q. David Bowers (১৯৯৫)। "Volume 3: Biographies - Lonergan, Lloyd F."Thanhouser Films: An Encyclopedia and History। ১৭ জানুয়ারি ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ জানুয়ারি ১৭, ২০১৫ 
  3. Q. David Bowers (১৯৯৫)। "Volume 1: Narrative History - Chapter 3 - 1910: Film Production Begins"Thanhouser Films: An Encyclopedia and History। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ জানুয়ারি ১৪, ২০১৫ 
  4. "Moving Picture World 2 Jul 1910 - 31 Dec 1910"। New York, Chalmers Publishing Company। ১৯১০। পৃষ্ঠা 234। সংগ্রহের তারিখ ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৫ 
  5. Q. David Bowers (১৯৯৫)। "Volume 2: Filmography - The Two Roses"Thanhouser Films: An Encyclopedia and History। ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ফেব্রুয়ারি ৬, ২০১৫ 
  6. Q. David Bowers (১৯৯৫)। "Volume 2: Filmography - The Little Hero of Holland"Thanhouser Films: An Encyclopedia and History। ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ফেব্রুয়ারি ৬, ২০১৫ 
  7. Q. David Bowers (১৯৯৫)। "Volume 3: Biographies - Rosemond, Anna"Thanhouser Films: An Encyclopedia and History। ২২ জানুয়ারি ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ জানুয়ারি ১৬, ২০১৫ 
  8. Q. David Bowers (১৯৯৫)। "Volume 1: Narrative History - Chapter 3: 1910 Thanhouser Quality Commended"Thanhouser Films: An Encyclopedia and History। ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ফেব্রুয়ারি ১০, ২০১৫ 
  9. Q. David Bowers (১৯৯৫)। "Volume 2: Filmography - Thanhouser Filmography - 1910 ."Thanhouser Films: An Encyclopedia and History। ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ফেব্রুয়ারি ১০, ২০১৫ 
  10. "Bijou"The Austin Daily Herald (Austin, Minnesota)। ডিসেম্বর ৯, ১৯১০। পৃষ্ঠা 4। সংগ্রহের তারিখ ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৫Newspapers.com-এর মাধ্যমে।  উন্মুক্ত প্রবেশাধিকারযুক্ত প্রকাশনা - বিনামূল্যে পড়া যাবে
  11. "Moving Picture World 2 Jul 1910 - 31 Dec 1910"। New York, Chalmers Publishing Company। ১৯১০। পৃষ্ঠা 1192। সংগ্রহের তারিখ ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৫ 
  12. "The Marvel Tonight"The News (Frederick, Maryland)। ডিসেম্বর ১২, ১৯১০। পৃষ্ঠা 5। সংগ্রহের তারিখ ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৫Newspapers.com-এর মাধ্যমে।  উন্মুক্ত প্রবেশাধিকারযুক্ত প্রকাশনা - বিনামূল্যে পড়া যাবে
  13. "Vaudet Theatre"The Daily Republican (Rushville, Indiana)। ফেব্রুয়ারি ৩, ১৯১১। পৃষ্ঠা 5। সংগ্রহের তারিখ ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৫Newspapers.com-এর মাধ্যমে।  উন্মুক্ত প্রবেশাধিকারযুক্ত প্রকাশনা - বিনামূল্যে পড়া যাবে
  14. "O.K. Theatre"Bisbee Daily Review (Bisbee, Arizona)। ডিসেম্বর ২৮, ১৯১০। পৃষ্ঠা 4। সংগ্রহের তারিখ ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৫Newspapers.com-এর মাধ্যমে।  উন্মুক্ত প্রবেশাধিকারযুক্ত প্রকাশনা - বিনামূল্যে পড়া যাবে
  15. "The Gem Theatre"The Wenatchee Daily World (Wenatchee, Washington)। অক্টোবর ১২, ১৯১০। পৃষ্ঠা 2। সংগ্রহের তারিখ ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৫Newspapers.com-এর মাধ্যমে।  উন্মুক্ত প্রবেশাধিকারযুক্ত প্রকাশনা - বিনামূল্যে পড়া যাবে

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]