দ্য ট্যালিসম্যান (উপন্যাস)
![]() প্রথম সংস্করণের প্রচ্ছদ | |
| লেখক | স্টিভেন কিং, পিটার স্ট্রাব |
|---|---|
| প্রকাশনার স্থান | মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র |
| ভাষা | ইংরেজি |
| ধারাবাহিক | জ্যাক সয়্যার ট্রিলজি |
| ধরন | পৈশাচিক কল্পকাহিনী |
| প্রকাশিত | ৭ নভেম্বর, ১৯৮৪ |
| প্রকাশক | ভাইকিং প্রেস |
| মিডিয়া ধরন | মুদ্রণ (হার্ডকভার) |
| পৃষ্ঠাসংখ্যা | ৬৪৬ |
| আইএসবিএন | ৯৭৮-০-৬৭০-৬৯১৯৯-৯ |
| পরবর্তী বই | ব্লাক হাউজ (উপন্যাস) |
মূল পাঠ্য | উইকিসংকলনে দ্য ট্যালিসম্যান |
দ্য ট্যালিসম্যান একটি ১৯৮৪ সালের ফ্যান্টাসি উপন্যাস, যা আমেরিকান লেখক স্টিভেন কিং এবং পিটার স্ট্রাব রচিত। উপন্যাসটির কাহিনি স্যার ওয়াল্টার স্কটের ১৮২৫ সালের একই নামে প্রকাশিত উপন্যাসের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়, যদিও এতে "স্যার ওয়াল্টার স্কটের একটি উপন্যাস" সম্পর্কে একটি ক্ষণিক উল্লেখ রয়েছে। দ্য ট্যালিসম্যান ১৯৮৫ সালে লোকাস এবং ওয়ার্ল্ড ফ্যান্টাসি অ্যাওয়ার্ডের জন্য মনোনীত হয়েছিল।[১] পরবর্তীতে, কিং ও স্ট্রাব উপন্যাসটির সিক্যুয়েল "ব্ল্যাক হাউজ" (২০০১) প্রকাশ করেন, যেখানে প্রাপ্তবয়স্ক জ্যাক সওয়ার একজন অবসরপ্রাপ্ত লস অ্যাঞ্জেলেস পুলিশের গোয়েন্দা কর্মকর্তা, যিনি উইসকনসিনের ফ্রেঞ্চ ল্যান্ডিং শহরে একাধিক হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচনের চেষ্টা করেন। ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে, তৃতীয় একটি উপন্যাসের কাজ চলমান থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।[২]
সারসংক্ষেপ (স্পয়লার সহ)
[সম্পাদনা]জ্যাক সয়্যার, বারো বছর বয়সী এক কিশোর, এবং তার মা লিলি ক্যাভানাফ ক্যালিফোর্নিয়া থেকে নিউ হ্যাম্পশায়ারের আর্কাডিয়া বিচে চলে আসেন, তার বাবা মর্গান স্লোটের পুরনো ব্যবসায়িক অংশীদার থেকে দূরে থাকার জন্য। সেখানে জ্যাকের দেখা হয় স্পিডি পার্কার নামে এক রহস্যময় কর্মীর সঙ্গে, যিনি তাকে টেরিটরিজ নামে এক ভিন্ন জগতের কথা জানান। সেই জগতে আছে এক জাদুকরী বস্তু, "দ্য ট্যালিসম্যান", যা তার ক্যানসারে আক্রান্ত মায়ের জীবন বাঁচাতে পারে।
জ্যাকের যাত্রা তাকে একই সঙ্গে আমেরিকার বিস্তীর্ণ অঞ্চল এবং "টেরিটরিজ" নামের এক রহস্যময় ফ্যান্টাসি জগতে নিয়ে যায়, যা আমাদের জগতের সমান্তরাল এক বিশ্বে অবস্থিত। টেরিটরিজে বসবাসকারী প্রতিটি মানুষের আমাদের জগতে একটি "টুইনার" বা সমান্তরাল সত্তা থাকে। টুইনারদের জন্ম, মৃত্যু এবং গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলি সাধারণত দুটি জগতেই ঘটে। কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া, টুইনাররা "ফ্লিপ" বা জগত পরিবর্তন করতে পারে, তবে একে অপরের দেহ শেয়ার করতে হয়। যখন কেউ টেরিটরিজে ফ্লিপ করে, তখন সে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সেই জগতের ভাষায় কথা বলা ও চিন্তা করা শুরু করে।
বিরল কিছু ক্ষেত্রে (যেমন জ্যাকের), একজন ব্যক্তি এক জগতে মারা গেলেও অন্য জগতে জীবিত থাকতে পারে, যা তাকে "সিঙ্গেল-নেচারড" বা একক প্রকৃতির করে তোলে। এর ফলে তারা পূর্ণ স্বাধীনতায় দুটি জগতের মধ্যে মন ও শরীর সহ পরিবর্তন করতে সক্ষম হয়। স্পিডি পার্কার জ্যাককে ফ্লিপ করার কৌশল শেখান, এবং জ্যাক জানতে পারে যে, স্পিডির টুইনার হলেন "পার্কাস", টেরিটরিজের এক দক্ষ বন্দুকধারী। টেরিটরিজে, রাজ্যবাসীর প্রিয় রানি লরা ডেলোশিয়ান, যিনি জ্যাকের মায়ের টুইনার (যাকে "বি-মুভির কুইন" নামে ডাকা হয়), তিনিও মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে। স্পিডি জানায় যে টেরিটরিজে থাকা ট্যালিসম্যান রানিকে ও লিলিকে সুস্থ করতে পারে।
জ্যাক সেই জাদুকরী ট্যালিসম্যান খুঁজতে অভিযানে বের হয়, এবং স্পিডির দেওয়া এক বোতল তরল পান করে টেরিটরিজে ফ্লিপ করতে সক্ষম হয়। সেখানে সে অসমন্ড নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে দেখা করে, যে মর্গান স্লোটের টুইনার "মর্গান অফ অরিস"-এর জন্য কাজ করে। এর পর জ্যাক এক সৈনিকের সহায়তায় গ্রাম ছেড়ে দেয় এবং রাস্তা ধরে এগোতে থাকে। কিন্তু পথিমধ্যে, অরিসের সেনারা তাকে খুঁজে ফেলে, এবং সে জঙ্গলে পালিয়ে যায়। জঙ্গল তাকে আক্রমণ করে, গাছপালাগুলো তাকে শ্বাসরোধ করে মারতে চায়, ফলে জ্যাক বাধ্য হয়ে পৃথিবীতে ফ্লিপ করে ফিরে আসে। এরপর জ্যাক যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঞ্চল ঘুরতে থাকে এবং নিউ ইয়র্কের ওটলি শহরে এক বারের কর্মচারী হিসেবে কাজ নেয়। কিন্তু বারের মালিক, স্মোকি আপডাইক অত্যন্ত নিষ্ঠুর এবং জ্যাককে একপ্রকার দাসত্বে বাধ্য করে।
কিছুদিন পরে জ্যাক ওটলি থেকে পালিয়ে যায়, কিন্তু তার পিছু নেয় এলরয় নামে ছাগল-সদৃশ এক ভয়ঙ্কর প্রাণী, যে দীর্ঘদিন ধরে জ্যাকের গতিবিধি লক্ষ্য করছিল। একপর্যায়ে, জ্যাক টেরিটরিজে ফিরে আসে এবং বুঝতে পারে, তার বাবার এক পুরনো সহযোগী জেরি ব্লেডসো এক বিস্ফোরণে মারা গিয়েছিল। জ্যাক শেষ পর্যন্ত বুঝতে পারে যে, মর্গান স্লোট ওই বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল দুটি জগতের মধ্যে ফ্লিপ করে, যা বহু বছর আগে ঘটে যায়। এরপর জ্যাক আবার পৃথিবীতে ফিরে আসে এবং বুঝতে পারে যে, তার অনিচ্ছাকৃতভাবে ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনার কারণে সাতজন নির্মাণকর্মী প্রাণ হারিয়েছে। এতে সে গভীর শোক অনুভব করে এবং এটি তাকে জেরি ব্লেডসোর মৃত্যুর কথা মনে করিয়ে দেয়।
ওহাইওতে, জ্যাক এক অন্ধ গায়ক স্নোবল-এর সাথে দেখা করে, যিনি স্পিডি হতে পারেন বা নাও হতে পারেন। স্নোবল তাকে যাত্রা চালিয়ে যেতে উদ্বুদ্ধ করে। পথে, জ্যাক একটি বিশ্রামকেন্দ্রে মরগান-এর সামনে পড়ে, দ্রুত টেরিটরিজে ফ্লিপ করে এবং একটি বিশাল ওয়্যারউলফ প্রাণীর সাথে দেখা করে, যার নাম শুধু উলফ। উলফ একজন বন্ধুত্বপূর্ণ তরুণ নেকড়ে-মানব, যার পরিবার রানির গবাদি পশুর প্রহরী ও পালক হিসেবে কাজ করে। এই গবাদি পশু গরু-ভেড়ার সংকর প্রাণীর মতো দেখতে। উলফ জ্যাকের বাবা ও মরগান/ওরিসকে চিনত এবং তাদের শুভ ও অশুভ প্রকৃতি সম্পর্কে জানত। সে জ্যাককে চিনতে পারে কারণ তার গন্ধ অনেকটা তার বাবার মতো। জ্যাক ও উলফ বন্ধুত্ব গড়ে তোলে, কিন্তু ঠিক তখনই মরগান এক পোর্টাল দিয়ে প্রবেশ করে এবং বজ্রপাতের মতো আক্রমণকারী যন্ত্র ব্যবহার করে তাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। আতঙ্কিত গবাদি পশুগুলো নদীতে পড়ে যায়, এবং উলফ প্রায় ডুবে মারা যায়। জ্যাক তাকে উদ্ধার করে এবং ফ্লিপ করে এই জগতে ফিরে আসে। তারা একসঙ্গে ইন্ডিয়ার দিকে যাত্রা করে, তবে উলফ আধুনিক যুক্তরাষ্ট্রের পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে হিমশিম খায়।
একজন পুলিশ অফিসার ভাগ্যান্সি (ভবঘুরেপনা) অভিযোগে জ্যাক ও উলফকে গ্রেপ্তার করে এবং সানলাইট হোম নামক এক বালকদের পুনর্বাসন কেন্দ্রে পাঠায়। কেন্দ্রটির মালিক রবার্ট গার্ডনার, একজন উন্মাদ ধর্মপ্রচারক, যার টুইনার হল টেরিটরিজের অসমন্ড। গার্ডনার জ্যাককে ধরতে মরিয়া। স্কুলের দারোয়ান সনি সিঙ্গার ও হেক বাস্ট সহ অন্যান্যরা ছেলেদের উপর অত্যাচার চালায়। এক রাতে, যখন এক ছাত্র পালিয়ে যায় এবং সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়, তখন জ্যাক ও উলফ টেরিটরিজে ফ্লিপ করে দেখে, এই স্কুলের টুইনার আসলে একটি কারাগার। কিছুক্ষণ পরে তারা ফিরে আসে।
এরপর বাথরুমে দারোয়ানদের সঙ্গে মারামারি বাধে। গার্ডনার বুঝতে পারে জ্যাক কে এবং উলফকে চেতনানাশক দিয়ে আটকে রেখে জ্যাককে নির্যাতন শুরু করে। এদিকে উলফ, যার রূপান্তরিত হওয়ার সময় এসেছে, একা থাকা অবস্থায় রাক্ষসী ওয়্যারউলফে পরিণত হয় এবং স্কুলে তাণ্ডব চালায়। সে অসংখ্য ছাত্রকে হত্যা করে ও গার্ডনারের অফিস ভেঙে ফেলে। সেখানে সে দারোয়ানদের হত্যা করে, কিন্তু সনি তাকে গুলি করে মেরে ফেলে। তবে সনিও তার ক্ষত থেকে রক্তক্ষরণে মারা যায়। জ্যাক তার মৃত বন্ধুর পাশে কিছুক্ষণ বসে থাকে, তারপর এগিয়ে যায়। সে মরগান স্লোটের ছেলে রিচার্ডকে ইলিনয়ের একটি বোর্ডিং স্কুলে খুঁজে বের করে। কিন্তু রিচার্ড জ্যাকের কথা বিশ্বাস করতে চায় না। হঠাৎ স্কুলটি বিকৃত রূপ নেয় এবং ছাত্ররা দানবে পরিণত হয়ে রিচার্ডকে জ্যাককে ত্যাগ করতে উস্কানি দেয়। ভয় পেয়ে দুজনেই টেরিটরিজে ফ্লিপ করে পালায়।
টেরিটরিজে তারা এক অ্যান্ডারস নামের লোকের সঙ্গে দেখা করে, যে মরগানের সৈন্যদের জন্য অস্ত্রের চালান পাঠাচ্ছে। রিচার্ড মনে করে সে টিউমারে আক্রান্ত, কিন্তু আসলে মরগান তাকে একটি বিষাক্ত অসুখে আক্রান্ত করেছে। জ্যাক অস্ত্রের চালানটি দখল করে হামলা চালানোর পরিকল্পনা করে। তারা এক ব্যাটারি-চালিত ট্রেনে ব্লাস্টেড ল্যান্ডস নামক এক ধ্বংসপ্রাপ্ত অঞ্চলের মধ্যে দিয়ে যায়, যেখানে আগুনের গোলা, বিকৃত প্রাণী ও চোরাচালানিদের বসবাস। তারা মরগানের দুর্গে হামলা চালিয়ে বেশিরভাগ সৈন্যকে হত্যা করে, এলরয় ও অসমন্ডের ছেলেকে মেরে ফেলে। এরপর ক্যালিফোর্নিয়ায় ফ্লিপ করলে রিচার্ড অবশেষে টেরিটরিজের অস্তিত্ব স্বীকার করে।
তারা পয়েন্ট ভেনুটিতে পৌঁছে অ্যাজিনকোর্ট হোটেলে লুকিয়ে পড়ে। সমুদ্র সৈকতে তারা স্পিডি পার্কারের দেখা পায়, যে তখন মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে। ব্ল্যাক ক্যাসলে, জ্যাক জীবন্ত পাথরের সৈন্যদের সঙ্গে লড়াই করে তালিসমানটি সংগ্রহ করে। এতে ভয়ানক ভূমিকম্প শুরু হয় এবং মরগানের সহযোগী দানবেরা পালিয়ে যায়। জ্যাক বুঝতে পারে এই তালিসমান শুধু দুটি জগত নয়, বরং অগণিত জগতের কেন্দ্রবিন্দু। সে রিচার্ডকে সুস্থ করে, গার্ডনারকে হত্যা করে এবং মরগানের সঙ্গে সৈকতে চূড়ান্ত লড়াই করে। অবশেষে সে মরগান স্লোটকে পরাজিত করে, স্পিডিকে সুস্থ করে তোলে এবং একটি ক্যাডিলাক এলডোরাডো চালিয়ে নিউ হ্যাম্পশায়ারে ফিরে যায়। সেখানে সে তার মায়ের সঙ্গে পুনরায় মিলিত হয় এবং তালিসমানটি শেষবারের মতো ব্যবহার করে লিলি ও রানিকে বাঁচায়।
প্রকাশনার ইতিহাস
[সম্পাদনা]দ্য ট্যালিসম্যান লেখার ধারণা প্রথম আসে যখন স্টিভেন কিং পরিবারসহ ১৯৭৭ সালের শুরুর দিকে লন্ডনে চলে যান। সেখানে তার পরিচয় হয় পিটার ও সুসান স্ট্রাবের সঙ্গে। দুজনেই পরস্পরের লেখার বড় ভক্ত ছিলেন, ধীরে ধীরে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। তিন মাস পর কিং পরিবার নিয়ে আমেরিকায় ফিরে যান। এর আগেও তারা একসঙ্গে একটি উপন্যাস লেখার কথা ভেবেছিলেন, কিন্তু সেটি বাস্তবায়িত হয়নি। তবে, কয়েক বছর পর স্ট্রাবও আমেরিকায় চলে আসেন, তখন তারা দ্য ট্যালিসম্যান লিখতে বসেন। উপন্যাসটি প্রকাশের পরও তাদের বন্ধুত্ব অটুট থাকে। ১৯৯৯ সালে তারা এর সিক্যুয়েল লেখার সিদ্ধান্ত নেন, যা ২০০১ সালে ব্ল্যাক হাউজ নামে প্রকাশিত হয়। এখানে জ্যাক সয়্যারের বড় হওয়ার পরের জীবন দেখানো হয়েছে। এই গল্পে কিছু পরিবর্তন (retcon) আনা হয়, যেখানে বলা হয় দ্য টেরিটরিজ আসলে All-World-এর একটি সমান্তরাল জগত। স্টিভেন কিং তার বই দ্য লিটল সিস্টার্স অফ এলুরিয়া-তে উল্লেখ করেন যে জ্যাক সয়্যার যেখানে সোফির সঙ্গে দেখা করে, সেটি দ্য লিটল সিস্টার্স-এর একই প্যাভিলিয়ন।[৩]
স্থানসমূহ
[সম্পাদনা]দ্য টেরিটরিজ (The Territories)
[সম্পাদনা]জ্যাক যখন "ফ্লিপ" করে, তখন সে নিজেকে একটি সমান্তরাল জগতে খুঁজে পায়, যা তার পরিচিত জগতের তুলনায় আকারে ছোট। উপন্যাসের কাহিনিতে, জ্যাক এই আকারের পার্থক্যকে দ্রুত ভ্রমণের জন্য ব্যবহার করে।
- পূর্ব অঞ্চল, যা পূর্ব আমেরিকার সমতুল্য, সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ এবং রানির শাসনে পরিচালিত একটি সামন্ততান্ত্রিক এলাকা।
- কেন্দ্রীয় অঞ্চল, যা আমেরিকার বিস্তৃত সমভূমির অনুরূপ, এটিকে "আউটপোস্ট" (The Outposts) বলা হয় এবং এটি প্রধানত শস্য উৎপাদনের জন্য পরিচিত।
- পশ্চিম অংশটি একটি ধ্বংসপ্রাপ্ত এলাকা, যা "ব্লাস্টেড ল্যান্ডস" (The Blasted Lands) নামে পরিচিত (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল, বিশেষত নিউ মেক্সিকো অঞ্চলের সাথে তুলনীয়, যেখানে পারমাণবিক বোমার পরীক্ষা চালানো হয়েছিল)। এই অঞ্চলটি তেজস্ক্রিয়তায় ধ্বংসপ্রাপ্ত, যেখানে বিপজ্জনক মিউট্যান্ট এবং মাঝে মাঝে আগুনের গোলা দেখা যায়।
আলহাম্ব্রা হোটেল (Alhambra Hotel)
[সম্পাদনা]এখানেই জ্যাক তার অভিযান শুরু করে এবং স্পিডি পার্কারের সাথে দেখা হয়। এটি নিউ হ্যাম্পশায়ারের উপকূলে অবস্থিত একটি পুরোনো ভবন, যা উপন্যাসের শেষে জনশূন্য হয়ে যায়, কেবলমাত্র জ্যাকের অসুস্থ মা সেখানে থাকেন। এই হোটেলের টেরিটরিজ সংস্করণটি রানির গ্রীষ্মকালীন প্রাসাদ।
ওটলি ট্যাপ (Oatley Tap)
[সম্পাদনা]কাল্পনিক পশ্চিম নিউ ইয়র্ক শহরের একটি বার। এর মালিক স্মোকি, জ্যাককে কার্যত দাস হিসেবে ধরে রাখে। জ্যাক তাকে ঘৃণা করে তার নির্মম আচরণের জন্য। এখানে স্মোকির প্রেমিকা লরি এবং একজন নামহীন কর্মীও কাজ করে। উপন্যাসের শেষের দিকে, ওটলি ট্যাপ একটি বিস্ফোরণের কারণে আগুনে পুড়ে যায়, স্মোকি ও লরির মৃত্যু হয় এবং পুরো শহরটি ধ্বংস হয়ে যায়।
সানলাইট গার্ডনারের স্কুল (Sunlight Gardener’s School)
[সম্পাদনা]যখন জ্যাক ও উলফ ভ্রাম্যমাণ অবস্থায় ধরা পড়ে, তখন তাদের আদালত এই বিশেষ অনাথশালায় পাঠায়, যা মূলত বিপথগামী ছেলেদের জন্য একটি কঠোর প্রশিক্ষণকেন্দ্র। এটির পরিচালক রবাট "সানলাইট" গার্ডনার, যে টেরিটরিজের অসমন্ডের টুইনার। স্কুলটির টেরিটরিজ সংস্করণটি হলো এক ভয়ংকর বন্দিশিবির, যেখানে দাসদের দিয়ে তেজস্ক্রিয় খনিজ সংগ্রহ করানো হয়।
থেয়ার স্কুল (Thayer School)
[সম্পাদনা]ইলিনয়ের স্প্রিংফিল্ডে একটি অভিজাত ছেলেদের বোর্ডিং স্কুল। এখানেই জ্যাক তার বন্ধু রিচার্ডের সাথে দেখা করে। স্কুলটিকে মরগান স্লোট বিকৃত করে দেয়, যেখানে নেকড়ের মতো দানব এবং গার্গয়েল আকৃতির প্রাণীরা জ্যাককে বন্দী করার চেষ্টা করে।
অ্যাজিনকোর্ট হোটেল (Agincourt Hotel)
[সম্পাদনা]উত্তর ক্যালিফোর্নিয়ার উপকূলে পয়েন্ট ভেনুতি নামক একটি ধ্বংসপ্রাপ্ত শহরে অবস্থিত। এটি একটি রহস্যময় কালো ভবন, যা আলহাম্ব্রার অনুরূপ। এই ভবনের মধ্যেই ট্যালিসম্যান সংরক্ষিত আছে। এটি বিভিন্ন বিকল্প জগতের মাঝে পরিবর্তনশীল অবস্থায় থাকে এবং পাঠকের কাছে স্পষ্ট হয় যে, টেরিটরিজ ও আমেরিকার বাইরেও আরও বহু জগৎ রয়েছে।
প্রতিক্রিয়া
[সম্পাদনা]স্ট্রাব এবং কিং দুজনই ছিলেন জনপ্রিয় ও সফল লোমহর্ষক এবং সাসপেন্স লেখক, তাই দ্য ট্যালিসম্যান বইটির জন্য প্রত্যাশা ছিল আকাশছোঁয়া। প্রকাশক এই বইয়ের প্রচারণার জন্য ৫,৫০,০০০ মার্কিন ডলার বাজেট নির্ধারণ করেছিল, আর বিভিন্ন নিবন্ধে দুই লেখকের এই সহযোগিতাকে অভূতপূর্ব বলে প্রশংসা করা হয়, এমনকি কেউ কেউ এটিকে "সবচেয়ে সেরা হরর উপন্যাস" হতে পারে বলেও অনুমান করেছিলেন।[৪] তবে বইটি প্রকাশের পর পাঠক ও সমালোচকদের প্রতিক্রিয়া মিশ্র ছিল। কেউ কেউ একে দুর্দান্ত বলেছেন, আবার কেউ কেউ ততটা প্রশংসা করেননি। যেমন পিপল ম্যাগাজিন এটিকে তাদের বছরের সবচেয়ে খারাপ বইয়ের তালিকায় রাখে, অন্যদিকে টোয়াইলাইট জোন ম্যাগাজিন একে বছরের সেরা উপন্যাস বলে স্বীকৃতি দেয়।[৪] তবে People ছাড়া অন্য কোনো সমালোচক বইটি পড়তে নিরুৎসাহিত করেননি।[৪]পাবলিশার্স উইকলি-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৯৮৪ সালে দ্য ট্যালিসম্যান-এর মোট বিক্রি ছিল ৮,৮০,২৮৭ কপি। বইটির হার্ডকভার সংস্করণ নিউ ইয়র্ক টাইমসের বেস্টসেলার তালিকায় ১২ সপ্তাহ ধরে ১ নম্বরে ছিল এবং মোট ২৩ সপ্তাহ তালিকায় ছিল। পাবলিশার্স উইকলি এটি ১১ সপ্তাহ ধরে ১ নম্বর স্থান দেয় এবং মোট ২৬ সপ্তাহ ধরে তালিকায় রাখে।[৪] পরবর্তীতে বার্কলে থেকে প্রকাশিত পেপারব্যাক সংস্করণ নিউ ইয়র্ক টাইমসের বেস্টসেলার পেপারব্যাক তালিকায় ২ সপ্তাহ ধরে ১ নম্বরে ছিল এবং মোট ১৪ সপ্তাহ তালিকায় ছিল। পাবলিশার্স উইকলি এটিকে ৩ সপ্তাহ ১ নম্বরে রাখে এবং মোট ১৩ সপ্তাহ ধরে তালিকায় রাখে।[৪]
অভিযোজন
[সম্পাদনা]দ্য ট্যালিসম্যান উপন্যাসটি ২০০৮ সালে একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে রূপান্তরিত হয় এবং এটি The Stand ও The Dark Tower-এর মতো একটি গ্রাফিক নভেল হিসেবেও প্রকাশিত হয়েছে। গ্রাফিক নভেলের প্রথম সংখ্যা ২০০৯ সালের অক্টোবর মাসে প্রকাশিত হয়েছিল।[৫] ডেল রে (Del Rey) প্রকাশনা সংস্থা কমপক্ষে ২৪টি সংখ্যা প্রকাশের পরিকল্পনা করেছিল,[৬] তবে শেষ পর্যন্ত মাত্র ছয়টি সংখ্যা প্রকাশিত হয়।
এছাড়া, দ্য ট্যালিসম্যান-এর পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণের পরিকল্পনা দীর্ঘদিন ধরে চলছিল। অ্যাম্বলিন পার্টনারস (Amblin Partners) এবং কেনেডি/মার্শাল কোম্পানি (The Kennedy/Marshall Company) এটি প্রযোজনা করেছিল, যেখানে ক্রিস স্পারলিং (Chris Sparling) চিত্রনাট্য লিখছিলেন।[৭] ২০২১ সালে ঘোষণা করা হয় যে অ্যাম্বলিন উপন্যাসটিকে নেটফ্লিক্স-এর জন্য একটি টেলিভিশন সিরিজ হিসেবে তৈরি করবে, যেখানে ডাফার ব্রাদার্স (Duffer Brothers) উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় সহায়তা করবেন।[৮]
আরো দেখুন
[সম্পাদনা]- ↑ "1985 Award Winners & Nominees". Worlds Without End. Retrieved 2009-07-22.
- ↑ https://www.timesnownews.com/lifestyle/books/features/stephen-king-confirms-the-one-book-fans-have-been-waiting-for-all-decade-article-117251667
- ↑ King, Stephen (2002). Everything's Eventual. New York, New York: Scribner. pp. 145. ISBN 0-7432-3704-8.
- 1 2 3 4 5 Nectoux, Tracy. "King, Stephen and Peter Straub: The Talisman". 20th-Century American Bestsellers (database). The University of Illinois at Urbana-Champaign. Archived from the original on January 7, 2014. Retrieved December 12, 2015.
- ↑ Del Rey Announces Massimo Carnevale as Cover Artist of Stephen King and Peter Straub's 'The Talisman' (press release) (June 16, 2009). Via Stephen King's web site. Retrieved December 12, 2015.
- ↑ Straub and King's novel to be made into Graphic Novel from liljas-library.com[full citation needed]
- ↑ Breznican, Anthony (March 12, 2019). "Stephen King and Peter Straub's The Talisman is finally headed to the screen". Entertainment Weekly.
- ↑ Kit, Borys (March 5, 2021). "Steven Spielberg, Duffer Bros. Team to Tackle Stephen King's 'Talisman' (Exclusive)". The Hollywood Reporter. Retrieved May 24, 2021.
