দোম আন্তোনিও
দোম আন্তোনিও | |
---|---|
ব্যাক্তিগত তথ্য | |
জন্ম | আনু. ১৬৪৩ |
মৃত্যু | ১৬৯৫ |
ধর্ম | খ্রিষ্ট |
দোম আন্তোনিও দো রোজারিও (আনু. ১৬৪৩ – ১৬৯৫) বাংলার একজন খ্রিষ্ট ধর্ম প্রচারক ছিলেন। তিনি বাংলা গদ্যরীতির প্রথম লেখক।[১]
জীবনী[সম্পাদনা]
দোম আন্তোনিও যশোর-ফরিদপুর অঞ্চলের ভূষণার এক জমিদার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।[১] তিনি ভূষণার রাজপুত্র ছিলেন। খ্রিষ্টান হবার পূর্বে তার নাম কি ছিল তা জানা যায় নি।[২]
১৬৬৩ সালে তাকে পর্তুগিজ জলদস্যুরা অপহরণ করে।[১] তাকে আরাকানে দাস হিসেবে বিক্রি করার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। তাকে মনোএল্ দো রোজারিও নামক এক পর্তুগিজ পাদ্রি উদ্ধার করেন।[১] তারপর, তিনি খ্রিষ্ট ধর্ম গ্রহণ করেন ও তার নাম পরিবর্তন করে দোম আন্তোনিও দো রোজারিও রাখা হয়।
১৬৬৬ সালে দোম আন্তোনিও ভূষণাউ ফিরে আসেন ও খ্রিষ্ট ধর্ম প্রচার শুরু করেন।[১] তিনি তার স্ত্রী, আত্মীয়স্বজন ও প্রজাদের খ্রিষ্ট ধর্মে ধর্মান্তরিত করেন। তিনি কোষাভাঙা গ্রামে সন্ত নিকোলাস তলেন্তিনো গির্জা ও মিশন স্থাপন করেছিলেন।[১] পরবর্তীতে, গির্জা ও মিশন ঢাকার ভাওয়াল পরগণার নাগোরি গ্রামে স্থানান্তর করা হয়।
দোম আন্তোনিও ব্রাহ্মণ রোমান ক্যাথলিক সংবাদ নামের একটি গ্রন্থ রচনা করেছিলেন।[১] ১২০ পৃষ্ঠার গ্রন্থটিতে একজন ব্রাহ্মণ ও একজন রোমান ক্যাথলিকের ধর্মীয় বিতর্ক বিদ্যমান।[৩] পরবর্তীতে, গ্রন্থটি মানোএল দা আস্সুম্পসাঁউ কর্তৃক পর্তুগিজ ভাষায় অনূদিত হয় ও ১৭৪৩ সালে ফ্রান্সিসকো দা সিলভা অনূদিত গ্রন্থটি লিসবন থেকে প্রকাশ করেন।[৪] পরবর্তীতে, সুরেন্দ্রনাথ সেন মূল পাণ্ডুলিপি সংগ্রহ করেন ও গ্রন্থটি সম্পাদনা করেন। ১৯৩৭ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় তার সম্পাদিত গ্রন্থটি প্রকাশ করে।[৫] বইটি ছিল প্রথম বাংলা গ্রন্থ যেটি কোনো বিদেশি কর্তৃক অনূদিত হয়েছে।[২]
দোম আন্তোনিও ১৬৯৫ সালে মৃত্যুবরণ করেন।[৬]
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ সরকার, সুশান্ত (২০১২)। "আন্তোনিও, দোম"। ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। আইএসবিএন 9843205901। ওএল 30677644M। ওসিএলসি 883871743।
- ↑ ক খ Paniker, K. Ayyappa (১৯৯৭)। Medieval Indian Literature: Surveys and selections। Sahitya Akademi। পৃষ্ঠা 69। আইএসবিএন 81-260-0365-0।
- ↑ George, K. M. (১৯৯২)। Modern Indian Literature, an Anthology: Surveys and poems। Sahitya Akademi। পৃষ্ঠা 73। আইএসবিএন 81-7201-324-8।
- ↑ "বাংলা গদ্যের বিকাশে ইউরোপীয় ও মিশনারিদের অবদান"। ইত্তেফাক। ১২ জুন ২০১৫। ২০ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ জানুয়ারি ২০২০।
- ↑ "হরফ নির্মাতা পঞ্চানন কর্মকার ও তাঁর উত্তরসূরিগণ"। ইত্তেফাক। ১২ জুন ২০১৫। ৮ অক্টোবর ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ জানুয়ারি ২০২০।
- ↑ "The first-ever bangla grammar and dictionary by a portuguese priest"। The Daily Star। ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ৮ জানুয়ারি ২০২০।