দেখা, না-দেখায়

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
দেখা, না-দেখায়
প্রেক্ষাগৃহে মুক্তিপ্রাপ্ত
পরিচালকঅর্ণব ঘোষাল
প্রযোজকনিবেদিতা দাশগুপ্ত
চিত্রনাট্যকারদেবব্রত রায়
উৎসরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কর্তৃক 
অপরিচিতা
শ্রেষ্ঠাংশেসমদর্শী দত্ত
দেবস্মিতা
লাবনি সরকার
প্রিয়াংকা বন্দ্যোপাধ্যায়
সুরকারদীপ্তনীল চৌধুরী
চিত্রগ্রাহকঅরবিন্দ দোলুই
সম্পাদকঅলোক ধাড়া
পরিবেশকপি থ্রি কমিউনেকশনস
মুক্তি
  • ১৯ এপ্রিল ২০১৩ (2013-04-19) (কলকাতা)
স্থিতিকাল১৬৫ মিনিট
দেশভারত
ভাষাবাংলা

দেখা, না-দেখায় হল ২০১৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত একটি ভারতীয় বাংলা নাটকীয় চলচ্চিত্র। এই ছবিটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অপরিচিতা নামক ছোটোগল্প অবলম্বনে নির্মিত। ছবিটি পরিচালনা করেছেন অর্ণব ঘোষাল এবং প্রযোজনা করেছেন নিবেদিতা দাশগুপ্ত। ছবির প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন সমদর্শী দত্ত ও দেবস্মিতা সাহা। ছবির সংগীত পরিচালনা করেছেন দীপ্তনীল চৌধুরী। ছবিটি মুক্তি পেয়েছিল ২০১৩ সালের ১৯ এপ্রিল।[১]

কাহিনি[সম্পাদনা]

দেখা, না-দেখায় ছবির প্রধান চরিত্র উত্তর কলকাতার এক ২৩ বছরের যুবক। তার নাম অনুপম (সমদর্শী দত্ত অভিনীত)। সে তার মা (লাবনি সরকার) ও মামার (কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায়) সঙ্গে থাকে। পরিবারের আদরে সে পুরোপুরি বিগড়ে গিয়েছিল। নিজের পায়ে দাঁড়ানোর শিক্ষা সে পায়নি। বয়সের তুলনায় সে ছিল অনেকটাই শিশুসুলভ। বাইরের জগত সম্পর্কে তার কোনও ধারণাই ছিল না। সে নিজের স্বপ্নের জগতে বাস করত। কাজকর্ম কিছুই করত না। তার মামা তার জন্য একটি পাত্রীর সন্ধান করছিলেন। অনুপমের কলেজের সিনিয়র ছিল হরিশ (প্রসূন গায়েন)। সে একদিন অনুপমের মামাকে অনুপমের জন্য পাত্রী সন্ধানের কাজে সাহায্য করতে আসে। সে অনুপমের জন্য ডাক্তার শম্ভুনাথের (মৃণাল মুখোপাধ্যায়) কন্যা কল্যাণীর (দেবস্মিতা সাহা) নাম প্রস্তাব করে। কিন্তু বিয়ের দিন অনুপমের মামা কল্যাণীর বাবাকে অপমান করেন। ফলে কল্যাণী অনুপমকে বিয়ে করতে অসম্মত হন। ডাক্তার শম্ভুনাথ ও কল্যাণী অনেক দূরে চলে যান। এতে অনুপম খুব দুঃখিত হয়। সে কিছু করার সিদ্ধান্ত নেয়। সে বাড়ি ছেড়ে কল্যাণীর সন্ধানে বেরিয়ে পড়ে। তার সন্ধান পাওয়ার পর অনুপম তাকে তার কাজে সাহায্য করার প্রস্তাব দেয়। কল্যাণী ঠিক করেছিল সে কখনও বিয়ে করবে না। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সে অনুপমকে তার সঙ্গে থাকার এবং তার কাজে সাহায্য করার অনুমতি দেয়।[১][২]

অভিনেতা-অভিনেত্রী[সম্পাদনা]

প্রধান চরিত্র[সম্পাদনা]

পার্শ্বচরিত্র[সম্পাদনা]

  • লাবনি সরকার – অনুপমের মা
  • প্রিয়াংকা বন্দ্যোপাধ্যায় - দেবিকা
  • প্রসূন গায়েন - হরিশ
  • কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায় – অনুপমের মামা
  • মৃণাম মুখোপাধ্যায় – ডাক্তার শম্ভুনাথ (কল্যাণীর বাবা)
  • মনোজ মিত্র
  • প্রদীপ চক্রবর্তী

সাউন্ডট্র্যাক[সম্পাদনা]

দেখা, না-দেখায়
দীপ্তনীল চৌধুরী
কর্তৃক সাউন্ডট্র্যাক অ্যালবাম
মুক্তির তারিখ২০১২
শব্দধারণের সময়২০১২
ঘরানাচলচ্চিত্রের সাউন্ডট্র্যাক
দৈর্ঘ্য৪৩:০০
ভাষাবাংলা

দেখা, না-দেখায় ছবির সাউন্ডট্র্যাকে সুরারোপ করেছেন দীপ্তনীল চৌধুরী।[৩] ট্র্যাক-তালিকার প্রত্যেকটি গানই রবীন্দ্রসংগীত

ট্র্যাক-তালিকা[সম্পাদনা]

নং.শিরোনামগায়ক-গায়িকাদৈর্ঘ্য
১."দেখা না-দেখায় মেশা হে বিদ্যুৎলতা"শান৪:১২
২."আমার মন মানে না"অন্বেষা দত্তগুপ্ত৪:৫১
৩."ঘরেতে ভ্রমর এলো গুনগুনিয়ে (পুরুষ কণ্ঠ)"শান৪:১২
৪."দীপ নিবে গেছে মম"অন্বেষা দত্তগুপ্ত৪:২৭
৫."আমার মন কেমন করে"রূপঙ্কর বাগচী৩:৪৪
৬."আমি তোমার প্রেমে হব সবার কলঙ্কভাগী"শান৪:২৬
৭."ভেঙে মোর ঘরের চাবি"অন্বেষা দত্তগুপ্ত৪:১০
৮."কেটেছে একেলা বিরহের বেলা"শান৪:৩১
৯."ঘরেতে ভ্রমর এলো গুনগুনিয়ে (নারী কণ্ঠ)"শুভমিতা বন্দ্যোপাধ্যায়৪:০৯
১০."একি আকুলতা ভুবনে"শ্রাবণী সেন৪:১৮
মোট দৈর্ঘ্য:৪৩:০০

প্রতিক্রিয়া[সম্পাদনা]

পেশাদার সমালোচনা
পর্যালোচনা স্কোর
সূত্র রেটিং
গোমোলো ৩/৫ তারকা
দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়া ১.৫/৫ তারকা

দেখা, না-দেখায় ছবিটিকে বেশিরভাগ সমালোচকই নেতিবাচক দিক থেকে দেখেছেন। যদিও এই ছবিতে রবীন্দ্রসংগীতের ব্যবহার প্রশংসিত হয়েছে। দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়া ৫ তারার মধ্যে এই ছবিকে ১.৫ দিয়েছে। এই সংবাদপত্রে লেখা হয়, “রবীন্দ্রনাথের ছোটোগল্পের চলচ্চিত্রায়ন নিঃসন্দেহে একটি ভাল উদ্যোগ। কিন্তু ছবির প্যাকেজিং-এর ক্ষেত্রে পরিচালক হতাশ করেছেন। চিত্রনাট্যটি দর্শককেআকর্ষণ করে রাখতে অক্ষম। ছবিতে ভাল সংলাপও কম। প্রথমার্ধটি তাও সহনীয়। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধটি দীর্ঘসূত্রিতার দোষে দুষ্ট। হিন্দি সংলাপের ব্যবহার দ্বিতীয়ার্ধে প্রয়োজনীয় হলেও হাস্যকর হয়েছে। ডাবিং-এর ক্ষেত্রে পরিচালকের উচিত ছিল একজন পেশাদারকে ব্যবহার করা। পোষাকের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা পুরোপুরিই ছবির প্রেক্ষাপটের সময়কালের সঙ্গে বেমানান হয়েছে। ক্যামেরার কাজ ও সম্পাদনা একটু নিম্নমানের। তবে স্বপ্নের মুহূর্তগুলি সুন্দরভাবে ধরা হয়েছে। এই ছবিতে ব্যবহৃত রবীন্দ্রনাথের গানগুলি উল্লেখনীয়।

গোমোলো এই ছবিটিকে ৫-এর মধ্যে ৩ রেট রিয়েছে। গোমোলোর আদিত্য চক্রবর্তী লিখেছেন: “কলকাতার বাইরে অল্প কয়েকটি জায়গাতেই এই ছবিটি শ্যুট করা হয়েছে। তাই এই ছবির সিনেমাটোগ্রাফি ভাল হয়েছে। ছবির সব কটি গানই যেহেতু রবীন্দ্রসংগীত, সেহেতু এগুলির প্রত্যেকটি বিশেষ উল্লেখ প্রয়োজন। এগুলি গেয়েছেন শান, শুভমিতা, অন্বেষা, রূপঙ্কর এবং অন্যান্য শিল্পীরা যারা রবীন্দ্রসংগীত গান না। তাঁরা গানগুলি যথেষ্ট ভাল গেয়েছেন। সমদর্শী দত্তর চেহারাটি দেখে তাঁকে রবীন্দ্রনাথের সমকালের ব্যক্তি মনে হচ্ছিল। তাঁর চুলের ভঙ্গিমা, চেহারা ও অভিনয় সব কিছুই বেশ ভাল হয়েছে। অনুপমের সিনিয়র হরিশের ভূমিকায় প্রসূন গায়েন হঠাৎ করে ছবিতে উদিত হন। তাঁর প্রবেশ অসাধারণ হয়েছে। আরও ভাল চরিত্র পেলে তিনি যথেষ্ট প্রভাব বিস্তার করতে পারবেন। হরিশের প্রেমিকার ভূমিকায় দেবিকাও বেশ ভাল অভিনয় করেছেন। ছবির নায়িকা দেবস্মিতা সাহার থেকে তিনি অনেক ভাল। দেবস্মিতা ছবির সবচেয়ে দুর্বল চরিত্র। তাঁর উচ্চারণ ও তাঁর অভিনয়ের ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্নের অবকাশ রয়েছে। ছবিতে গতির অভাব রয়েছে। ছবির দেরিতে মুক্তি পাওয়াও ছবির ক্ষতি করেছে।[৪]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Dekha, Na-Dekhay movie review"The Times of India (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৩১ মে ২০১৩ 
  2. Chakrabarty, Aditya। "Dekha, Na-Dekhay synopsis" (ইংরেজি ভাষায়)। Gomolo। ১৫ মে ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ মে ২০১৩ 
  3. "Dekha, Na-Dekhay music" [দেখা, না-দেখায় সঙ্গীত] (ইংরেজি ভাষায়)। Gomolo। ১ জুন ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ মে ২০১৩ 
  4. Chakrabarty, Aditya। "Dekha, Na-Dekhay review" [দেখা, না-দেখায় পর্যালোচনা] (ইংরেজি ভাষায়)। Gomolo। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ জুন ২০১৩ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]