বিষয়বস্তুতে চলুন

দুর্গাপ্রসাদ ধর

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
দুর্গাপ্রসাদ ধর
সোভিয়েত ইউনিয়নে ভারতের রাষ্ট্রদূত
কাজের মেয়াদ
১৯৬৯ – ১৯৭১
পূর্বসূরীকেবল সিং
উত্তরসূরীকে. এস. শেলভাঙ্কর
সোভিয়েত ইউনিয়নে ভারতের রাষ্ট্রদূত
কাজের মেয়াদ
১৯৭৫ – ১৯৭৫
পূর্বসূরীকে. এস. শেলভাঙ্কর
উত্তরসূরীইন্দর কুমার গুজরাল
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্মদুর্গা প্রসাদ ধর
(১৯১৮-০৫-১০)১০ মে ১৯১৮
শ্রীনগর, জম্মু ও কাশ্মীর, ব্রিটিশ ভারত
মৃত্যু১২ জুন ১৯৭৫(1975-06-12) (বয়স ৫৭)
জাতীয়তাভারতীয়
সন্তানবিজয় ধর
শিক্ষাটিনডেল বিসকো স্কুল
প্রাক্তন শিক্ষার্থীপাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়
লখনউ বিশ্ববিদ্যালয়
পেশাকূটনীতিবিদ, সোভিয়েত ইউনিয়নে ভারতের রাষ্ট্রদূত

দুর্গা প্রসাদ ধর, যিনি সাধারণত ডিপি ধর (১৯১৮-১৯৭৫) নামে পরিচিত, ছিলেন একজন ভারতীয় রাজনীতিবিদ এবং কূটনীতিক। তিনি ১৯৭১ সালের বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় হস্তক্ষেপের প্রধান স্থপতি হিসেবে বিবেচিত।[] ধর ইন্দিরা গান্ধীর ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টা এবং বিশ্বাসী ছিলেন। তিনি সোভিয়েত ইউনিয়নে ভারতের রাষ্ট্রদূত এবং জম্মু ও কাশ্মীর সরকারের পাশাপাশি ভারত সরকারের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

প্রাথমিক জীবন এবং শিক্ষা

[সম্পাদনা]

ধর ১৯১৮ সালের ১০ মে ব্রিটিশ ভারতের জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের শ্রীনগরে একটি কাশ্মীরি পণ্ডিত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি শেখ বাগের টিন্ডেল বিস্কো স্কুলে পড়াশোনা করেছেন।[] তিনি লাহোরের পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন এবং পরবর্তীতে লখনউ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি সম্পন্ন করেন।[]

কর্মজীবন

[সম্পাদনা]

রাজনৈতিক

[সম্পাদনা]

ধর ১৯৪৬ সালে কাশ্মীরের মহারাজা হরি সিংয়ের বিরুদ্ধে শেখ আবদুল্লাহর নেতৃত্বে কাশ্মীর ছাড়ো আন্দোলনে যোগ দেন। ১৯৪৭ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময় তিনি ভারতীয় সেনাবাহিনীকে সহায়তা করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন বলে জানা গেছে। তিনি ভারতীয় অফিসারদের জনগণের সাথে যোগাযোগ করতে এবং কুলি, খচ্চর এবং অন্যান্য ধরণের প্রশাসনিক সহায়তা সংগ্রহ করতে সাহায্য করেছিলেন যা সৈন্যদের কাজকে সহজতর করেছিল।[]

১৯৪৮ সালে শেখ আবদুল্লাহ প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন ধরকে স্বরাষ্ট্রসচিব এবং পরে জম্মু ও কাশ্মীরের উপ-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিযুক্ত করা হয়। তিনি ১৯৫১ থেকে ১৯৫৭ সাল পর্যন্ত জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্য গণপরিষদের সদস্য ছিলেন, যা কাশ্মীরের ভারতে অন্তর্ভুক্তির পক্ষে সমর্থন করেছিল। তিনি ১৯৫৭ থেকে ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত রাজ্য বিধানসভার সদস্য ছিলেন এবং বিভিন্ন দপ্তরের দায়িত্বে মন্ত্রিপরিষদ মন্ত্রী নিযুক্ত হন। পরবর্তীতে ১৯৭২ সালে তিনি জম্মু ও কাশ্মীর থেকে রাজ্যসভায় নির্বাচিত হন। ১৯৭২ সালের জুলাই মাসে তিনি কেন্দ্রীয় পরিকল্পনা মন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হন।[]

ধর ইন্দিরা গান্ধীর ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন এবং ১৯৭২ সালের ভারত-বাংলাদেশ শান্তি, বন্ধুত্ব এবং সহযোগিতা চুক্তি চূড়ান্ত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।[] তিনি নেহেরু-গান্ধী পরিবারের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠদের একজন হয়ে ওঠেন এবং ১৯৭২ সালে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সিমলা চুক্তিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।[]

কূটনীতি

[সম্পাদনা]

ধর ১৯৪৯ সালে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সভায় ভারতীয় প্রতিনিধিদলের সদস্য ছিলেন এবং ১৯৫২ সালে প্যারিস অধিবেশনে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ভারতীয় প্রতিনিধিদলের সদস্য ছিলেন।[] তিনি ১৯৬৯-১৯৭১ সাল পর্যন্ত এবং তারপর আবার ১৯৭৫ সাল থেকে তার মৃত্যু পর্যন্ত সোভিয়েত ইউনিয়নে ভারতের রাষ্ট্রদূত ছিলেন।[]

তিনি ১৯৭১ সালের ভারত-সোভিয়েত বন্ধুত্ব ও সহযোগিতা চুক্তির আলোচনায় অংশ নিয়েছিলেন এবং প্রতিবেশী পূর্ব পাকিস্তানের গৃহযুদ্ধে ভারতের সামরিক হস্তক্ষেপের একজন প্রধান স্থপতি ছিলেন, যার ফলে স্বাধীন বাংলাদেশ সৃষ্টি হয়েছিল।

মতাঁর সম্মানেস্কোতে ভারতীয় দূতাবাসের ডিপি ধর হলের নামকরণ করা হয়েছে।

মৃত্যু

[সম্পাদনা]

ডিপি ধর ১৯৭৫ সালের ১২ জুন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।

পুরষ্কার

[সম্পাদনা]

২০১২ সালে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান ১৯৭১ সালের ভারত-সোভিয়েত মৈত্রী চুক্তি সম্পাদনে অগ্রণী ভূমিকা, বাংলাদেশের পক্ষে আন্তর্জাতিক সমর্থন সংগ্রহ এবং মুক্তিযুদ্ধের সমর্থনে বিশেষ ভূমিকা পালনের স্বীকৃতিস্বরূপ দুর্গা প্রসাদ ধরকে মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মান (মরণোত্তর) প্রদান করেন।[] ডিপি ধরের পক্ষে তার ছেলে বিজয় ধর ঢাকায় এই সম্মাননা গ্রহণ করেন।[]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "Events of 23 June 1975"Time। ২৩ জুন ১৯৭৫। ৬ ডিসেম্বর ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ জুলাই ২০১২ 
  2. Hyderi, M. (১৪ মার্চ ২০১৫)। "Schooling excellence, Biscoe since 1880"Greater Kashmir (ইংরেজি ভাষায়)। ২৯ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১২-২৯ 
  3. Chief Minister, W.A. Sangma (২৮ জুলাই ১৯৭৫)। "Proceedings of the Emergent session of the Meghalaya Legislative Assembly"। Meghalaya Legislative Assembly। সংগ্রহের তারিখ ৩১ জুলাই ২০১২  উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; আলাদা বিষয়বস্তুর সঙ্গে "LA" নামটি একাধিক বার সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে
  4. Sen, Maj Gen L. P. (১৯৬৯)। Slender Was the Thread: Kashmir Confrontation 1947-48। Orient Longman। পৃষ্ঠা 196। আইএসবিএন 0-86131-692-4। সংগ্রহের তারিখ ৪ আগস্ট ২০১০ 
  5. Nayar, K.C. (১৪ সেপ্টেম্বর ২০১১)। "Greater common good"। telegraphindia.com। সংগ্রহের তারিখ ৩১ জুলাই ২০১২ 
  6. Issue 02, Vol 02 (১৯ মার্চ ২০১২)। "Durga Prasad Dhar"। kashimrlife.net। সংগ্রহের তারিখ ৩১ জুলাই ২০১২ 
  7. "Ambassadors of India to USSR and Russia"। indianembassy.ru। সংগ্রহের তারিখ ৩১ জুলাই ২০১২ 
  8. Online, The Hindu (২৭ মার্চ ২০১২)। "D.P. Dhar honoured in Bangladesh"The Hindu 
  9. Bangladesh, Sangbad Sanstha। "Bangladesh honours Indian who shaped things in 1971"। bssnews.net। ১৩ মার্চ ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ জুলাই ২০১২