দিভোর্সিও আল'ইতালিয়ানা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
দিভোর্জিও আললিতালিয়ানা
পরিচালকপিয়েত্রো জার্মি
প্রযোজকফ্রাঙ্কো ক্রিস্তালদি
চিত্রনাট্যকারএন্নিও দি কোনচিনি
পিয়েত্রো জার্মি
আলফ্রেদো জিয়ান্নেত্তি
অ্যাগনোর ইনক্রোচ্চি (uncredited)
শ্রেষ্ঠাংশেমারচেল্লো মাস্ত্রোইয়ান্নি
ড্যানিয়েলা রোচ্চা
স্তেফানিয়া সান্দ্রেল্লি
লিওপোল্দো ত্রিয়েস্তে
অদোরাদো স্পাদারো
সুরকারকার্লো রুস্তিচেল্লি
চিত্রগ্রাহককার্লো দি পালমা
লিওনিদা বার্বোনি
সম্পাদকরবার্তো চিনকিনি
পরিবেশকএম্ব্যাসি পিকচার্স
মুক্তি১৯৬১
স্থিতিকাল১০৮ মিনিট
দেশইতালি
ভাষাইতালীয়

দিভোর্জিও আললিতালিয়ানা ১৯৬১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ও ইতালীয় ভাষায় নির্মিত একটি হাস্যরসাত্মক নাট্য চলচ্চিত্র। পিয়েত্রো জার্মি ছবিটির পরিচালক। এন্নিও দি কোনচিনি,পিয়েত্রো জার্মি,আলফ্রেদো জিয়ান্নেত্তিঅ্যাগনোর ইনক্রোচ্চি ছবিটির চিত্রনাট্য রচনা করেন। জিওভান্নি আর্পিনো রচিত উনদেলিতোদিনোরে (সম্মান রক্ষার্থে হত্যা) উপন্যাস অবলম্বনে চিত্রনাট্য রচিত হয়। ছবির শ্রেষ্ঠাংশে রয়েছেন মারচেল্লো মাস্ত্রোইয়ান্নি,দেনিয়েলা রোচ্চা,স্তেফানিয়া সান্দ্রেল্লি,লানদো বুজানচালিওপোল্দো ত্রিয়েস্তে। সেরা চিত্রনাট্যের জন্য এটি একাডেমি পুরস্কার লাভ করে। মাস্ত্রোইয়ান্নি শীর্ষচরিত্রে সেরা অভিনেতা ক্যাটাগরিতে একাডেমি পুরস্কার ও জার্মি সেরা পরিচালক পুরস্কারের জন্য মনোনীত হন।

কাহিনী[সম্পাদনা]

ফার্দিনান্দো চেফালু একজন দরিদ্র কিন্তু সম্ভ্রান্ত সিসিলীয়। সে রোজালিয়ার সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ। দেখতে সুন্দর না হলেও সে একজন সতী ও নিবেদিতপ্রাণা স্ত্রী। কিন্তু ফার্দিনান্দো তার চাচাতো বোন অ্যাঞ্জেলাকে ভালোবাসে। অ্যাঞ্জেলা তরুণী ও আকর্ষণীয়া। সে যাজিকাদের কাছে লেখাপড়া করে বলে শুধু গ্রীষ্মকালেই তার আর ফার্দিনান্দোর দেখা হয়। বউ,বৃদ্ধ বাবা-মা, উচ্ছৃঙ্খল বোন ও তার শবসমাহিতকরণ ব্যবসায়ী বন্ধুকে নিয়েই ফার্দিনান্দোর দিন কেটে যায়। সে একটি প্রাসাদে বসবাস করে; ঐ প্রাসাদে তার চাচারাও থাকেন। বংশের একদা অঢেল সম্পত্তি একটু একটু করে ফুরিয়ে যেতে থাকে।

ফার্দিনান্দো জানে, ইতালিতে বিবাহবিচ্ছেদ অবৈধ। তাই স্ত্রীর হাত থেকে পরিত্রাণ পাবার জন্য সে নানারকম ফন্দি আঁটে। একবার ভাবে-হাঁড়িতে ফেলে বৌকে সাবান বানিয়ে দেবে অথবা মহাকাশযানে করে তাকে শূন্যে পাঠিয়ে দেবে। সমুদ্রসৈকতে বসে সে কল্পনা করে -তার বৌ চোরাবালিতে পা দিয়ে অতলে তলিয়ে যাচ্ছে। অ্যাঞ্জেলার সাথে দেখা হওয়ার পর ফার্দিনান্দো বুঝতে পারে, অ্যাঞ্জেলাও তাকে ভালোবাসে । একটি স্থানীয় আখ্যান তাকে উৎসাহিত করে, যেখানে ঈর্ষান্বিত একজন স্ত্রী ক্ষিপ্ত হয়ে তার স্বামীকে হত্যা করে । ফার্দিনান্দো পরিকল্পনা করে, যেভাবেই হোক রোজালিয়াকে অবৈধ প্রেমের ফাঁদে ফেলতে হবে ; এবং অবৈধ সম্পর্কে লিপ্ত অবস্থায় তাকে পাকড়াও করে খুন করতে হবে। ক্রিমিনাল কোড সতর্কভাবে অধ্যয়ন করে ফার্দিনান্দো অনুধাবন করে, সম্মানরক্ষার্থে হত্যা করলে সে কম শাস্তি পাবে। কিন্তু এজন্য প্রথমে ফার্দিনান্দকে উপযুক্ত পুরুষ খুঁজে পেতে হবে। স্থানীয় পুরোহিতের ধর্মপুত্র কারমেলো পাতানের মধ্যেই সে উপযুক্ত পুরুষ খুঁজে পায়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় আফ্রিকাতে তার জীবনাবসান ঘটেছিল বলে ধারণা করা হলেও ধারণাটি অসত্য প্রমাণিত হয়। একসময় ফার্দিনান্দো রাজ্যের প্রসিকিউটরের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলে। এরপর সে চিন্তা করে, কীভাবে প্রাসাদে কারমেলোর সার্বক্ষণিক উপস্থিতি নিশ্চিত করা যায়। প্রাসাদে ফ্রেসকো সংরক্ষণের বিষয়ে কারমেলোর আগ্রহকে পুঁজি করে সে এই লক্ষ্যও হাসিল করে।

কারমেলো অত্যন্ত লাজুক ব্যক্তি এবং রোজালিয়া সতী নারী হওয়ায় ফার্দিনান্দোর পরিকল্পনা সফল হতে সময় নেয়। ফার্দিনান্দোকে একদিকে তাদের কথাবার্তা সাবধানে রেকর্ড করতে হয়,অপরদিকে গৃহকর্মীর কারমেলোর প্রতি সৃষ্টি হওয়া অনুরাগেরও মোকাবিলা করতে হয়। ফার্দিনান্দো আবিষ্কার করে,প্রকৃতপক্ষে কারমেলো বিবাহিত ও তার তিন সন্তান রয়েছে। তবে সে একজন ব্যভিচারী প্রকৃতির ব্যক্তি। একসময় রোজালিয়া তার সতীত্ব বিসর্জন দেয় এবং কারমেলোর সাথে পরবর্তী সাক্ষাতের সময় নির্ধারণ করে।

ঐদিন রোজালিয়া মাথাব্যথার নাটক করে। পরিবারের বাকি সদস্যরা অশালীনতার অভিযোগে কুখ্যাত ছবি "লা দোলচে ভিতা" দেখতে সিনেমা হলে চায়। এক ফাঁকে ফার্দিনান্দো সিনেমা হল থেকে বেরিয়ে আসে এবং টের পায়, ট্রেন স্টেশনের দিকে রোজালিয়া রওনা দিয়েছে। কিন্তু হঠাৎ করে ফার্দিনান্দোর মনে পড়ে, সে বন্দুক ফেলে চলে এসেছে। বন্দুক আনতে গিয়ে সে ট্রেন মিস করে ফেলে। ফার্দিনান্দো হতাশ হয়ে আবার ক্রিমিনাল কোড অধ্যয়ন করে এবং বুঝতে পারে, বৌকে খুন করে সে সহজে পার পাবে না । ব্যভিচারী বৌকে নিয়েই তার সারাজীবন কাটাতে হবে। তবে বৌয়ের সতীত্ব নিয়ে কেউ সবার সামনে তাকে অপমান করলে একটা রাস্তা পাওয়া যাবে।

এরই মাঝে অ্যাঞ্জেলা ফার্দিনান্দোকে প্রেমের কথা জানিয়ে চিঠি লিখে। কিন্তু একটি চিঠি ভুলে অ্যাঞ্জেলোর বাবার কাছে চলে যায় এবং তার মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণ হয়,যার ফলে তিনি মারা যান। অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার দিন কারমেনের বৌ মিসেস পাতানের সঙ্গে ফার্দিনান্দোর দেখা হয় এবং সবার সামনে মিসেস পাতানে ফার্দিনান্দোকে অপমান করেন। এটাই তো ফার্দিনান্দোর দরকার ছিল। স্থানীয় মাফিয়া ডন ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পলায়ন করা কপোত-কপোতীকে খুঁজে বের করার নির্দেশ দেন। ফার্দিনান্দো কপোত-কপোতীর নিবাসে গিয়ে জানতে পারে, মিসেস পাতানে এইমাত্র তার স্বামীকে খুন করেছেন। হতচকিত ফার্দিনান্দোও রোজালিয়াকে খুন করে। রাজ্যের প্রসিকিউটর ফার্দিনান্দোকে সাহায্য করেন,যার ফলে তার মাত্র তিন বছরের সাজা হয়। সাজা ভোগ করে সে অ্যাঞ্জেলাকে বিয়ে করে।

উপসংহারে দেখা যায়, ফার্দিনান্দো ও অ্যাঞ্জেলা নৌকায় করে ঘুরে বেড়াচ্ছে। ফার্দিনান্দো বলে,চল্লিশ বছর বয়সেই জীবন শুরু হয়। এদিকে মাঝির পায়ের সাথে অ্যাঞ্জেলা লুকিয়ে তার পা ঘষতে থাকে।

চরিত্রায়ণে[সম্পাদনা]

ফার্দিনান্দো রূপে মাস্ত্রোইয়ান্নি
  • মারচেল্লো মাস্ত্রোইয়ান্নি (ফার্দিনান্দো)
  • দানিয়েলা রোচ্চা (রোজালিয়া চেফালু)
  • স্তেফানিয়া সান্দ্রেল্লি(অ্যাঞ্জেলা)
  • লিওপোল্দো ত্রিয়েস্তে (কারমেল পাতানে)
  • অদোয়ার্দো স্পাদারু (ডন গেতানো চেফালু)

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]

টেমপ্লেট:Pietro Germi টেমপ্লেট:Golden Globe Award for Best Foreign Language Film