বিষয়বস্তুতে চলুন

দরিয়া-ই-নূর

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
দরিয়া-ই-নূর
হ্যামিল্টন ও কোম্পানি কর্তৃক আনু.১৯০৬ খ্রিষ্টাব্দে সংকলিত দরিয়া-ই-নূর
দ্য ক্রিস্টাল প্যালেস অ্যান্ড ইটস কনটেন্ট (১৮৫১) গ্রন্থের ৬৮নং পাতায় দ্য লন্ডন গ্রেট এক্সিবিশনে প্রদর্শিত দরিয়া-ই-নূর
রত্নের ধরনহীরা
ওজন২৬ ক্যারেট (৫.২ গ্রাম)
রংপ্রায় স্বচ্ছ
আকৃতিটেবিল কাট
মূল দেশগোলকোন্ডা সালতানাত
মূল খনিকোল্লুর খনি
মূল মালিকঢাকার নবাব পরিবার
মালিকবিতর্কিত
বাংলাদেশ সরকারের কোর্ট অব ওয়ার্ডসের অধীনে নওয়াব এস্টেট
বা ঢাকার নবাব পরিবার
বর্তমান অবস্থান২৩°৪৩′৩৫″ উত্তর ৯০°২৫′১৬″ পূর্ব / ২৩.৭২৬৩৮৬০৫৫৮৯৩৬৮৮° উত্তর ৯০.৪২১১৬৩০২০৬০৫৪২° পূর্ব / 23.726386055893688; 90.42116302060542
সোনালী ব্যাংকের মতিঝিল শাখায়, ঢাকা
আনুমানিক মূল্য১৯০৮ সালের অনুমানের ভিত্তিতে বর্তমান বাজারমূল্য $১.৩ কোটি মার্কিন ডলার বা ৳১৬০ কোটি বাংলাদেশি টাকা

দরিয়া-ই-নূর (ফার্সি: دریای نور আক্ষ.'আলোর সমুদ্র') একটি ২৬ ক্যারেট ওজনের টেবিল-কাট প্রায় স্বচ্ছ হীরা, যা বর্তমানে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় সোনালী ব্যাংকের ভল্টে সংরক্ষিত আছে বলে ধারণা করা হয়। দক্ষিণ ভারতের কোল্লুর হীরার খনি থেকে উত্তোলিত এই হীরা মূল্য ও আকৃতিতে বাংলাদেশের বৃহত্তম রত্নপাথর এবং ঢাকার নবাব পরিবারের ঐতিহ্য। ঐতিহাসিকভাবে একে অনেক সময় কোহিনূরের সহোদর বলে গণ্য করা হয়। মধ্যযুগে পারস্যের দারিয়া-এ নূরের অনুকরণে এর নামকরণ করা হয়েছিল বলে এই হীরক নিয়ে ইতিহাসে বিভ্রান্তি রয়েছে।[][]

ব্যুৎপত্তি ও একই নামের হীরাসমূহ

[সম্পাদনা]

ধ্রুপদী ফার্সিতে দরিয়া (دريا) শব্দের অর্থ সমুদ্র বা বড় নদী এবং নূর (نور) শব্দের অর্থ আলো। একত্রে দরিয়া-ই-নূর (دریای نور)-এর আক্ষরিক অর্থ "সমুদ্রের আলো"।[]

ঐতিহাসিকভাবে, বিশ্বের অন্যতম বিখ্যাত ও দামী দুইটি হীরা কোহিনূরদারিয়া-এ নূরমধ্যযুগে ঐশ্বর্য ও প্রতিপত্তির প্রতীক হিসেবে এই দুটি নাম শাসকরা ব্যবহার করতেন। বিশেষত মুঘল ও পরবর্তী মুসলিম শাসকেরা ঐশ্বর্য ও মূল্য বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে তাদের সংগ্রহে থাকা উৎকৃষ্ট হীরাসমূহের নাম প্রায়শ এই দুটির অনুকরণে রাখতেন। এর ফলে একই নামের একাধিক হীরার প্রচলন হয় এবং তাদের ইতিহাস প্রায়শই বিভ্রান্তির শিকার হয়। কোহিনূরের পাশাপাশি ঢাকায় অবস্থিত দরিয়া-ই-নূর হীরা মহারাজা রণজিৎ সিং এর নিকট থাকাকালে বিশ্বের সবচেয়ে দামি দুই হীরার মালিকানা প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে তিনি নিজের সংগ্রহে থাকা একটি ২৬ ক্যারেট টেবিল-কাট এই হীরার নাম দরিয়া-ই-নূর রাখেন। দরিয়া-ই-নূর এর নামে মোট চারটি হীরার সন্ধান পাওয়া যায়।[]

পারস্যের দরিয়া-ই-নূর

[সম্পাদনা]

সবচেয়ে বড় ও ঐতিহাসিকভাবে বিখ্যাত হীরাটি হলো ১৮২ ক্যারেট ওজনের টেবিল-কাট গোলাপী হীরা, যা ১৭৩৯ সালে নাদের শাহ ভারতের দিল্লি লুণ্ঠনকালে মুঘলদের কাছ থেকে দখল করেন। পরবর্তীতে এটি পারস্য রাজমুকুটের অংশ হয় এবং বর্তমানে ইরানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সংরক্ষিত রয়েছে।[][]

অন্যান্য বিতর্কিত "দরিয়া-ই-নূর"

[সম্পাদনা]

একই নামে আরও কিছু ২টি হীরার বিক্রির চেষ্টা হয়েছে বলে ঐতিহাসিক সূত্রে উল্লেখ আছে।[]

  • ১৯২২ সালের মে মাসে, আফগানিস্তানের রাজকুমারী ফাতিমা নিউ ইয়র্কে দারা-গাই-নূর নামে একটি হীরা নিলামে তোলেন এবং সেটিকে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম হীরা বলে দাবি করেন।[]
  • ১৭৬৩ সালে, আমস্টারডামে আরেকটি টেবিল-কাট হীরাকে দেবিয়ারী-নূরী বলা হয়। দে মান্‌দেলাইক্‌সে নেদারলান্দিশে মেরকুরিউস (De Maandelykse Nederlandische Mercurius) পত্রিকায় এর ছবি ছাপা হয়। যদিও গবেষকদের মতে, এটি সম্ভবত শাহজাহান হীরা ছিল, যা ১৭৩৯ সালে নাদের শাহ দিল্লি থেকে লুণ্ঠন করেছিলেন এবং পরে ইউরোপে বিক্রির সময় দরিয়া-নূর নামে প্রচার করা হয়।[]

বর্ণনা

[সম্পাদনা]

বাংলাদেশে হীরাসমূহের মধ্যে দরিয়া-ই-নূর সবচেয়ে বড় আকৃতির এবং সবচেয়ে মূল্যবান।[] এটি একটি প্রথম শ্রেণীর ২৬ ক্যারেট টেবিল-কাট অত্যন্ত বিশুদ্ধ প্রায় স্বচ্ছ হীরা, যার বহিরঙ্গ সমতল টেবিল আকৃতির কার্নিসযুক্ত আয়তাকার আকারে কাটা। হীরাটি স্বর্ণের বাজুবন্দে বসানো ছিল, যার চারপাশে প্রতিটি প্রায় ৫ ক্যারেট ওজনের দশটি ডিম্বাকৃতির হীরা সংযুক্ত। মোট ওজন দাঁড়ায় প্রায় ৭৬ ক্যারেট।[][][][]

দরিয়া-ই-নূরকে মিনা করা সোনার তাগায় বসানো হয়েছিল এবং তাতে ১০টি (জন লগিনের মতে ১১টি) মুক্তা সংযুক্ত ছিল। হীরাটির কাটিং খুব ভালো নয়, বসানোর ধরনও জুতসই না। তবে আকার ও বিশুদ্ধতার দিক দিকে এই হীরা মহামূল্যবান। এর চিত্র আহসান মঞ্জিলে সংরক্ষিত হাতে আঁকা প্রতিকৃতিতে দেখা যায়, এছাড়া জেমিওলজিস্ট জন সিনকেনকাসের সংকলনেও এর ছবি অন্তর্ভুক্ত আছে।[][][]

বাজুবন্ধ

[সম্পাদনা]

দরিয়া-ই-নূরের মূল বাজুবন্ধ আলাদা করার কোনো তথ্য নেই। তবে হীরাটির হুবহু অনুরূপ একটি বাজুবন্ধ বর্তমানে স্কটল্যান্ডের ন্যাশনাল মিউজিয়ামে সংরক্ষিত আছে (চিত্র)। এতে হীরার স্থানে ক্রিস্টাল কোয়ার্টজ বসানো, বেজটি খাঁটি রুপার এবং পেছনে সোনার ওপর লাল, সবুজ ও নীল রঙের জয়পুরী মিনা খোদাই রয়েছে। কোহিনূরের বাজুবন্ধের মতো এর তাগা মেরুন রঙের সিল্ক সুতার। ২০১৪ সালে রাজা দিলীপ সিংয়ের গয়নার প্রদর্শনীতেও এটি উপস্থাপিত হয়।[১০][][১১]

মিউজিয়ামের তথ্যমতে, বাজুবন্ধটি ৭ম বেঙ্গল ক্যাভালরির স্কোয়াড্রন কমান্ডার মেজর জেনারেল লিন্ডসে কার্নেগির সংগ্রহশালা থেকে এসেছে, যা তিনি ১৮৯৮ সালে মহারাজা দিলীপ সিংয়ের ছেলে প্রিন্স ভিক্টর সিংয়ের কাছ থেকে ক্রয় করেন। ১৯১১ সালে কার্নেগির মৃত্যুর পর তার সংগ্রহশালার অন্যান্য রত্নসহ বাজুবন্ধটি মিউজিয়ামে দান করা হয়।[][১১][১০]

ইতিহাস

[সম্পাদনা]

উৎপত্তি ও ব্রিটিশ মালিকানার পূর্বে

[সম্পাদনা]
১৮৪১ সালে আগস্ট শেফটের আঁকা শের সিং এর ছবি। তার ডান বাহুতে রয়েছে দরিয়া-ই-নূর
১৮৪১ সালে আগস্ট শেফটের আঁকা শের সিং এর ছবির ডান বাহুর দরিয়া-ই-নূর

দরিয়া-ই-নূর কোহিনূরের মতো দক্ষিণ ভারতের গোলকুণ্ডা অঞ্চলের কাকতীয় রাজবংশের কোল্লুর হীরার খনি থেকে উত্তোলিত হয়েছিল।[][][] ধারণানুযায়ী এটি দীর্ঘ সময় মারাঠা শাসকদের মালিকানায় ছিল। পরবর্তীতে হায়দ্রাবাদ রাজ্যের প্রধানমন্ত্রী নবাব সিরাজ-উল-মুলকের পরিবার প্রায় ₹১,৩০,০০০ রুপিতে হীরাটি ক্রয় করে।[]

হীরাটি পরবর্তীতে আনু.১৮৪০-৬০ সালে পাঞ্জাবের শিখ সাম্রাজ্যের প্রথম মহারাজা রণজিৎ সিং এর মালিকানায় আসে। তিনি কোহিনূর ও দরিয়া-ই-নূর উভয়কেই বাজুবন্দ হিসেবে ব্যবহার করতেন। এগুলো মিনা করা সোনার ওপর বসানো ছিল। তিনিই এই হীরার নাম দেন পারস্যের হীরা দারিয়া-এ নূরের অনুকরণে দরিয়া-ই-নূর।[]

১৮৪১ সালে দরিয়া-ই-নূরের প্রাচীনতম চিত্র আঁকেন হাঙ্গেরীয় শিল্পী আগস্ট শেফট। ১৮৪১ থেকে ১৮৪৩ সালে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য সিংহাসনে বসেন রণজিৎ সিংয়ের ছেলে শের সিং। সেসময় এক বছর লাহোর থাকাকালে শিখ সাম্রাজ্যের বেশকিছু ছবি আঁকেন শেফট। তার আঁকা শের সিং-এর প্রতিকৃতিতে ডান হাতে কোহিনূর ও বাম হাতে দরিয়া-ই-নূরের বাজুবন্দ অঙ্কিত রয়েছে। একই ছবিতে তৈমুরের রুবি-খচিত তৈমুর রুবি নেকলেসও দেখা যায়।[]

পারস্যের দারিয়া-এ নূর এর সাথে বিভ্রান্তের ফলে এই হীরা অনেক সময় পারস্যে নাদের শাহ এর নিকট থাকার কথা উল্লেখ্য থাকেও এর উল্লেখ্যযোগ্য প্রমাণ নেই।[]

ব্রিটিশ মালিকানায়

[সম্পাদনা]
দ্য ক্রিস্টাল প্যালেস অ্যান্ড ইটস কনটেন্ট (১৮৫১) গ্রন্থের ৬৮নং পাতায় দ্য লন্ডন গ্রেট এক্সিবিশনে প্রদর্শিত দরিয়া-ই-নূর এবং এর প্রদর্শন

১৮৪৯ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি পাঞ্জাবের ওপর আধিপত্য স্থাপন করে এবং কোহিনূর ও দরিয়া-ই-নূরসহ রণজিৎ সিংয়ের কনিষ্ঠ পুত্র ও পাঞ্জাবের শেষ বালক রাজা দিলীপ সিংয়ের লাহোরের খাজাঞ্চিখানার মূল্যবান দ্রব্য-সামগ্রী কোম্পানির অধিকারে নেয়।[] এর পর তিন মাস যাবত সেনাবাহিনীর স্কটিশ সার্জন ড. জন স্পেন্সার লগিন এই লাহোর দরবারের তোষাখানার প্রতিটি সামগ্রীর তালিকা ও সম্ভাব্য মূল্য নির্ধারণ করেন। লগিন পরবর্তীকালে দিলীপ সিংয়ের অভিভাবক হিসেবেও নিযুক্ত হন। তৎকালীন হিসেব অনুযায়ী, জন লগিন দরিয়া-ই-নূরের ওজন ১০.৮ তোলা বা ২৬ ক্যারেট এবং মূল্য ₹৬৩,০০০ রুপি বা £৬,০০০ পাউন্ড নির্ধারণ করেন (বর্তমানে ১ কোটি ব্রিটিশ পাউন্ড)। লগিন কোহিনূর ও দরিয়া-ই-নূর দুটো বাজুবন্ধের তাগার দুই প্রান্তে অতিরিক্ত ১১টি মুক্তা, ১১টি চুনি থাকার কথা উল্লেখ করেন। জন লগিন তালিকাসহ লর্ড ডালহৌসির কাছে তোশাখানার সামগ্রী হস্তান্তর করেন। সেখান থেকেই লাহোর দরবারের রত্ন ডালহৌসি কালেকশন নামেও পরিচিতি পায়।[]

অপ্রাপ্তবয়স্ক দিলীপ সিংয়ের পক্ষ থেকে একরকম প্রতারণা করেই ডালহৌসি ভেটস্বরূপ কোহিনূর ও দরিয়া-ই-নূর রাণী ভিক্টোরিয়াকে উপহার দেন। রাজা পঞ্চম জর্জের মতে কোহিনূর রাণী রেখে দিলেও তার কাছে দরিয়া পছন্দ না হওয়ায় তা কোম্পানির কাছে ফিরিয়ে দেন।[]

গ্রেট এক্সিবিশন

[সম্পাদনা]

১৮৫১ সালের লন্ডনের হাইড পার্কে দ্য ক্রিস্টাল প্যালেসে অনুষ্ঠিত দ্য গ্রেট এক্সিবিশনে রাণী ভিক্টোরিয়ার পক্ষে থেকে কোহিনূর এবং ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির পক্ষ থেকে দরিয়া-ই-নূর প্রদর্শিত হয়।[] এই প্রদর্শনীতে ব্রিটিশ উপনিবেশ ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের উল্লেখযোগ্য সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যবহনকারী সামগ্রী ও নতুন সব প্রযুক্তি তুলে ধরা হয়। ভারতের বিভিন্ন রত্নসামগ্রীর এই প্রদর্শনীতে ছিল। দ্য ইলাস্ট্রেট্রেড লন্ডন নিউজ পত্রিকায় ১৮৫১ সালের ৩১ মে বিশেষ এক নিবন্ধে এই রত্নগুলোর বিস্তারিত বিবরণ ছাপা হয়।[১২] পারস্যের আসল দারিয়া-এ নূরের অস্তিত্বের জন্যে সমসাময়িক সংবাদপত্রে দরিয়া-ই-নূরকে সো কল্ড বা তথাকথিত বলা হয় এবং এর কাটিং নিয়ে সমালোচনা প্রকাশিত হয়। দ্য ক্রিস্টাল প্যালেস অ্যান্ড ইটস কনটেন্ট (১৮৫১) গ্রন্থে এর একটি ছবি অন্তর্ভুক্ত ছিল, যেখানে একে বিখ্যাত "লাহোর ডায়মন্ড" নামে উল্লেখ করা হয়।[১৩]

প্রদর্শনীর পর কোহিনূর ব্রিটিশ রাজপরিবারে থেকে যায়, তবে প্রদর্শনীতে দরিয়া-ই-নূরের আশানুরূপ দাম না ওঠায় ভারতে নিলামের উদ্দেশ্যে এই হীরাকে ভারতে ফেরত পাঠানো হয়। ব্রিটিশ সরকারের অনুমোদনক্রমে কলকাতার হ্যামিল্টন অ্যান্ড কোম্পানি ১৮৫২ সালের নভেম্বরে দরিয়া-ই-নূরের নিলামের আয়োজন করে।[][১৪]

নবাবি মালিকানায়

[সম্পাদনা]
জন সিনকাঙ্কাস এর সংগ্রহের হ্যামিল্টন অ্যান্ড কোম্পানির "ঢাকা কালেকশন" অ্যালবামে দরিয়া-ই-নূর

১৮৫২ সালের নভেম্বরে কলকাতায় হ্যামিল্টন অ্যান্ড কোম্পানির আয়োজিত নিলামে ঢাকার নবাব পরিবারের প্রতিষ্ঠাতা খাজা আলীমুল্লাহ প্রায় ₹৭৫,০০০ রুপিতে দরিয়া-ই-নূর ক্রয় করেন। পরবর্তীতে ঢাকার নবাব পরিবার কর্তৃক হীরাটিকে বাজুবন্দ ও কখনো পাগড়ির অলংকার হিসেবে ব্যবহিত হয়েছে। ফ্যামিলি হেরাল্ডিক বাহুবন্ধনে সেট করা কেন্দ্রীয় হীরারূপে নবাবের একটি পারিবারিক রেকর্ডে এর বর্ণনা রয়েছে।[][১৫]

১৮৮৭ সালে ভাইসরয় লর্ড ডাফরিনলেডি ডাফরিন কলকাতার বালিগঞ্জে নবাব ভবনে হীরাটি প্রত্যক্ষ করেন। লেডি ডাফরিন তার Our Viceregal Life in India গ্রন্থে উল্লেখ করেন যে চ্যাপ্টা আকারের কারণে হীরাটি তাদের কাছে খুব আকর্ষণীয় মনে হয়নি।[১৬][][১৭]

হ্যামিল্টন অ্যান্ড কোম্পানির সহযোগিতায় ১৮৪১ থেকে ১৯০১ সালে নবাব পরিবারের সংগৃহীত রত্নসম্ভারের "ঢাকা কালেকশন" নামের একটি অ্যালবাম প্রকাশিত হয়, যেখানে দরিয়া-ই-নূর বিশেষভাবে স্থান পায়।[১৮][]

১৯০৮ সালে নবাব খাজা সলিমুল্লাহ দরিয়া-ই-নূর হীরাটি সরকারের নিকট বন্ধক রেখে ঋণ গ্রহণ করেন।[]

বন্ধক

[সম্পাদনা]

১৯০৭ সালের দিকে জনসেবা ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে প্রায় ₹৩৭ লাখ রুপি ব্যয়ের কারণে নবাব সলিমুল্লাহ গভীর আর্থিক সংকটে পড়েন। নওয়াব এস্টেটের জমি ও সম্পত্তি বন্ধক রেখে একজন মারোয়াড়ি ও একজন হিন্দু মহাজনের কাছ থেকে ₹১৪ লাখ রুপি ঋণ নেন নবাব সলিমুল্লাহ।[১৯][২০] ১৯০৭ সালের ৫ সেপ্টেম্বর নবাব সলিমুল্লাহর আবেদনের প্রেক্ষিতে কোর্ট অব ওয়ার্ডস এর সিদ্ধান্তে পূর্ব বাংলা ও আসাম সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে নবাব সলিমুল্লাহকে জমিদারি পরিচালনার জন্য অযোগ্য ঘোষণা করে। একই সঙ্গে নওয়াব এস্টেটের সব সম্পত্তি কোর্ট অব ওয়ার্ডসের তত্ত্বাবধানে নেওয়ার সিদ্ধান্ত দেয়।[১৯][২১]

বিভিন্ন ঋণ পরিশোধের জন্য ১৯০৮ সালের ৬ আগস্ট নবাব সলিমুল্লাহ বোর্ড অব রেভিনিউয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন কোর্ট অব ওয়ার্ডসের কাছ থেকে ₹১৪ লাখ রুপি ঋণ গ্রহণ করেন। শতকরা ৩ রুপি সুদে ৩০ বছরে ঋণ পরিশোধের শর্তে দরিয়া-ই-নূরসহ তিনি তার সব স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি নয়টি শর্তে কোর্ট অব ওয়ার্ডসের অনুকূলে বন্ধক রাখেন। সে সময় এই হীরার মূল্য নির্ধারণ হয় ₹৫ লক্ষ রুপি।[][১৯][২২] ঋণ পরিশোধের জন্য তিনি ১৯১১ সালে হীরাটি নিলামের ইংল্যান্ডে পাঠান এবং সর্বোচ্চ £১৫০০ পাউন্ড দাম উঠে ফলে তা বিক্রি হয়নি।

১৯১২ সালের জানুয়ারিতে রাজা পঞ্চম জর্জ ও রাণী মেরি অব টেক ভারত সফরে কলকাতায় হীরাটি উপস্থাপিত হয়। রাজা জর্জ এই হীরা সম্পর্কে পূর্ব অবগত ছিলেন।[] পরবর্তীতে এটি কলকাতায় ব্রিটিশ রাজপরিবারের বিশ্বস্ত স্বর্ণকার ও জহুরী হ্যামিল্টন অ্যান্ড কোম্পানির তত্ত্বাবধানে ১৯৪৮ সাল পর্যন্ত সংরক্ষিত থাকে।[][]

স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বোর্ড অব রেভিনিউ বিলুপ্ত হয়। পরে ১৯৮৯ সালে এক অধ্যাদেশের মাধ্যমে ভূমি সংস্কার বোর্ড গঠিত হয়। তখন থেকে ঢাকার নবাব এস্টেটের দেখভালের দায়িত্ব ভূমি সংস্কার বোর্ডের কাছে আসে।[] ১৯৪৭ এ পাকিস্তান সৃষ্টির পর কলকাতা থেকে এনে ভারতীয় ইম্পেরিয়াল ব্যাংকের ঢাকা শাখায় জমা রাখা হয় এই হীরা। পরবর্তীতে স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তান ঘুরে বর্তমানে এটি সোনালী ব্যাংকের ভল্টে সংরক্ষিত রয়েছে।[][]

১৯৩৭ সালে নবাবের অধিকাংশ ঋণ পরিশোধিত হলেও নবাবের নেওয়া ঋণ ও সুদ আজও সম্পূর্ণ পরিশোধ করা হয়নি।[১৯]

সাম্প্রতিক ইতিহাস ও অবস্থান

[সম্পাদনা]

বর্তমানে হীরাটি বাংলাদেশ সরকারের ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ ভূমি সংস্কার বোর্ডের কোর্ট অব ওয়ার্ডসের তত্ত্বাবধানে ঢাকা নবাব পরিবারের জামানত হিসেবে ঢাকা নবাব এস্টেটের হেফাজতে রয়েছে এবং এটি সোনালী ব্যাংকের মতিঝিল শাখায় সংরক্ষিত রয়েছে।[]

১৯০৮ সালে ভল্টে রাখার পরে দেশভাগ (১৯৪৭) ও মুক্তিযুদ্ধের (১৯৭১) পর রত্নটি হারিয়ে গেছে কি না, নাকি ভল্টে অক্ষত রয়েছে তা নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত আলোচনা চলছে।[] ১৯৫৪, ১৯৫৬, ১৯৭০, ১৯৭৪, ১৯৭৫, ১৯৮৩ ও ১৯৮৫ সালে মোট আটবার দরিয়া-ই-নূর পরিদর্শন করা হলেও এসংক্রান্ত কোনো প্রতিবেদন সংরক্ষিত নেই।[] ১৯৮৫ সালে বিশেষজ্ঞদের পরীক্ষায় দরিয়া-ই-নূরকে অকৃত্রিম বলে নিশ্চিত করা হয়। মতান্তরে ১৯৮৫ সালে শুধুমাত্র বাক্সটি নিশ্চিত করা হয়।[]

২০০৩ সালের ৩ মে নবাব স্টেটের বন্ধকি সম্পত্তি পরিদর্শনের জন্য ভূমি মন্ত্রণালয় একটি কমিটি গঠন করেছিল। কমিটির কার্যক্রম সম্পর্কে কোনো তথ্য সংরক্ষিত নেই। তবে ভূমি সংস্কার বোর্ডের নথি অনুসারে ২০১১ সালের ২১ জুন সোনালি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কক্ষে ভূমিমন্ত্রী রেজাউল করিম হীরাসহ কমিটির সদস্যদের সামনে কাপড়ে মোড়ানো সিলগালা অবস্থায় একটি লোহার বাক্স পরিদর্শন করা হয়। তবে এই সিলগালা খুলে হীরকখণ্ডটিসহ অন্যান্য মূল্যবান সম্পদ দেখা হয়নি। ২০১৬ সালের ২৩ মার্চ ভূমি মন্ত্রণালয়-সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এ নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করে ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফের নেতৃত্বে পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু এ সুপারিশ বাস্তবায়িত হয়নি।[২৩]

২০১৭ সালে হীরাটি হারিয়ে গেছে বলে গুঞ্জন উঠে।[১১]

ভূমি সংস্কার বোর্ডের নথিপত্র অনুযায়ী, ঢাকা নওয়াব এস্টেটের একটি সেফ ডিপোজিট ছিল সোনালী ব্যাংকের সদরঘাট শাখায়। যেখানে দরিয়া-ই-নূর লেখা সিলগালা করা একটি প্যাকেট ছিল। নিরাপত্তাশঙ্কায় ২০১১ সালের জুলাই মাসে সেফ ডিপোজিট থেকে ওই প্যাকেট মতিঝিলে সোনালী ব্যাংকের স্থানীয় কার্যালয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়।[][২৩][২৪] বর্তমানে এটি সোনালী ব্যাংকের ভল্টে সংরক্ষিত আছে বলে ধরা হয়। ব্যাংক কর্তৃপক্ষের মতে ভল্টটি সিলগালা অবস্থায় রয়েছে এবং এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে খোলা হয়নি।[][২১]

বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের সাবেক মহাপরিচালক ফয়জুল লতিফ চৌধুরীর মতে, বিভিন্ন সময় ব্যাংক স্থানান্তরের সময় কোনো অনিয়ম না হয়ে থাকলে হীরাটি এখনও ভল্টে নিরাপদেই আছে। তবে রত্নভান্ডারের সামগ্রিক নিরাপত্তা এবং হারিয়ে গেলে তার দায়বদ্ধতা এড়াতে ভূমি মন্ত্রণালয়ের আশঙ্কার কারণে প্রদর্শনীর জন্য এটি জাদুঘরে আনা সম্ভব হয়নি।[]

সেপ্টেম্বর ২০২৫ এ বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এই হীরাসহ নবাব পরিবারের মোট ১০৯ প্রকার রত্নালংকারের প্যাকেট আনুষ্ঠানিকভাবে খোলার সিদ্ধান্ত নেয়। ভূমি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে গঠিত ১১ সদস্যের একটি কমিটি ঢাকা নওয়াব এস্টেটের অস্থাবর সম্পত্তির এসব রত্নের তালিকা প্রণয়ন ও সংরক্ষণ তদারকির দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়েছে। কমিটির সভাপতি করা হয় মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে এবং সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয় বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ডেপুটি গভর্নর, বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক, সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও একজন রত্নবিশেষজ্ঞকে।[২২]

সরকারি কমিটির তত্ত্বাবধানে রত্নগুলোর তালিকা যাচাই শেষে সংরক্ষণ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে দাখিল করার পরিকল্পনা গৃহীত হয়।[২২][]

দরিয়া-ই-নূরের বর্তমান অবস্থান সোনালী ব্যাংকের মতিঝিল শাখায় এক ভল্টে।[] অতীতে অনেকবার বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে প্রদর্শনের চেষ্টা করলেও তা সম্ভব হয়নি। বর্তমানে হীরাটি প্রদর্শনের জন্য দাবি জোরদার হয়েছে।[]

মূল্য ও মূল্যনির্ধারণ

[সম্পাদনা]

ভূমি সংস্কার বোর্ডের নথি অনুযায়ী, ১৯০৮ সালে এই ১০৯টি রত্নালংকারের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছিল ₹১০,০৯,৮৩৫ রুপি, যার মধ্যে দরিয়া-ই-নূরের মূল্য ছিল ₹৫ লক্ষ রুপি। মূল আদালতের নথিতে হীরাটির মূল্য ₹৫,০০,০০০ রুপি হিসেবে উল্লেখ আছে ১৯০৮ এর হিসেবে; বার্তা সংস্থা এএফপি এর মতে যার বর্তমান বাজার মূল্য হতে পারে প্রায় $১ কোটি ৩০ লক্ষ মার্কিন ডলার বা তারও বেশি। বাংলাদেশী টাকা অনুযায়ী প্রায় ৳১৬০ কোটি বাংলাদেশি টাকার বেশি।[১৪][২০][১৫]

টমাস হলবেইন হেন্ডলির ভারতীয় অলঙ্কার গ্রন্থে নবাবের অলংকার সংগ্রহশালার একাংশ

তালিকায় উল্লেখযোগ্য আরও কিছু অলংকার হলো ৯৬টি মুক্তা সংবলিত ফ্রান্সের সর্বশেষ সম্রাজ্ঞী ইউজেনি ডি মন্টিজোর পূর্ব মালিকানাধীন একটি হীরার তারা (মূল্য ₹৯৬ হাজার রুপি), পান্না খোদাই করা হীরার বাজুবন্ধ (₹৫০ হাজার রুপি), রুবিহীরার নারীদের মাথার অলংকার ‘রোজ অব করসিকা’ (₹৪৮ হাজার রুপি), ঝুলন্ত মুক্তা ও হীরার ফেজ টুপি (₹৩৪ হাজার রুপি), পান্না ও হীরাযুক্ত সোনার বেল্ট (₹২৮ হাজার রুপি) এবং হীরা-পান্নার পাগড়ির অলংকার (₹২৫ হাজার রুপি)। প্যাকেটে আরও থাকার কথা আংটি, হার, হাতবন্ধনী, হীরাখচিত তরবারি, মূল্যবান রত্ন ও বাদ্যযন্ত্রের ক্ষুদ্র সংস্করণ ম্যান্ডোলিন, যার মূল্য মাত্র ₹৫ রুপি। নথি অনুসারে অধিকাংশ অলংকার হীরা বা পান্না দিয়ে নির্মিত।[২২][২৫]

মালিকানা

[সম্পাদনা]

১৯০৭ সালে ঢাকা নওয়াব এস্টেট কোর্ট অব ওয়ার্ডসের অধীনে নেওয়া হয় এবং ১৯৫০ সালে পূর্ববঙ্গীয় রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন, ১৯৫০ (জমিদারি প্রথা উচ্ছেদ আইন) এর আওতায় বাতিল করা হয়। ১৯৮৯ সালে এক অধ্যাদেশের মাধ্যমে গঠিত ভূমি সংস্কার বোর্ড গঠিত হয় এবং কোর্ট অব ওয়ার্ডস তার অধীনে ভূমি মন্ত্রণালয়ে আসে।[] তবে আহসান মঞ্জিল ও কিছু সম্পত্তি অধিগ্রহণের বাইরে থেকে যায় এবং পারিবারিক দাবিদাওয়া নিষ্পত্তি না হওয়ায় কিছু সম্পত্তি ভূমি সংস্কার বোর্ডের তত্ত্বাবধানে আজও রয়েছে। নবাব সলিমুল্লাহর ঋণ সংক্রান্ত জটিলতার কারণে এসব সম্পত্তির মালিকানা নিয়ে বিরোধ অব্যাহত আছে। নবাব পরিবারের উত্তরসূরিরা দরিয়া-ই-নূরসহ রত্নগুলোর মালিকানা দাবি করলেও সরকার ও কোর্ট অব ওয়ার্ডস মনে করে ঋণ পরিশোধের প্রমাণ না থাকায় এসব সম্পত্তি সরকারের মালিকানাধীন। ফলে হীরকটির প্রকৃত মালিকানা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে।[১৯][২০]

ঐতিহাসিকতা ও কিংবদন্তি

[সম্পাদনা]

দরিয়া-ই-নূর নিয়ে খুবই স্বল্প গবেষণা হয়েছে। একারণে হীরার ইতিহাস নিয়ে স্বচ্ছতা নেই।[]

অনেকে এই হীরাকে কোহিনূরের মতোই “অভিশপ্ত রত্ন” বলে মনে করেন। ধারণা করা হয়, পাঞ্জাবের শিখ সাম্রাজ্যের মহারাজা রণজিৎ সিং এর পতন এবং পরে ঢাকার নবাব পরিবারের আর্থিক দুরবস্থার পেছনে এই হীরকের অভিশাপ কাজ করেছে। শিখ সাম্রাজ্যের বিলুপ্তি ও নবাবি এস্টেটের দেউলিয়াত্বের সঙ্গে দরিয়া-ই-নূরের সম্পর্ক টেনে লোকমুখে প্রচলিত হয়েছে যে রত্নটি মালিকের জন্য অমঙ্গল বয়ে আনে। যদিও এসব মতামত ঐতিহাসিক প্রমাণের ভিত্তিতে নয়, বরং লোককথা ও কুসংস্কারের অংশ হিসেবেই বিবেচিত হয়।[]

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 "১১৭ বছর পর প্রকাশ্যে আসবে কোহিনূরের 'সহোদর' দেশের সবচেয়ে অমূল্য হীরা দরিয়া-ই-নূর! খোলা হবে ভল্ট"দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড। ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫। সংগ্রহের তারিখ ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  2. 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 মোসলেম, সৈয়দ রিফাত (১৪ মে ২০২৫)। "ঢাকার নবাবদের 'দরিয়া-ই-নূর' হীরা কি সোনালী ব্যাংকের ভল্টে আছে"প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  3. 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 মোহাম্মদ আলমগীর (২০১২)। "দরিয়া-ই-নূর"ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর (সম্পাদকগণ)। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটিআইএসবিএন ৯৮৪৩২০৫৯০১ওসিএলসি 883871743ওএল 30677644M
  4. "Iran Chamber Society: Iranian National -Royal- Jewels" [ইরান চেম্বার সোসাইটি: ইরানি ন্যাশনাল -রয়েল - জুয়েলস]www.iranchamber.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  5. 1 2 3 4 ভাটিয়া, শ্যাম (২৮ মার্চ ২০১২)। "Meet Daria-i-Noor, the Koh-i-Noor's little-known sibling" [কোহ-ই-নুরের অচেনা ভাইবোন দরিয়া-ই-নুরের সাথে দেখা করুন]www.tribuneindia.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  6. "SULTANA'S DIAMOND BRINGS ONLY $5,500; Famous Dara-Gai-Noor Gem, Which Princess Valued at $300,000, Barely Squares Debts. APPRAISED AT ABOUT $7,000 Government Exacted $1,400 Dutyand Owner Is Left but $136--She Disappears." [সুলতানার হীরা মাত্র ৫,৫০০ ডলার এনেছে; বিখ্যাত দারা-গাই-নূর রত্ন, যার মূল্য ছিল ৩০০,০০০ ডলার, তার ঋণ সবেমাত্র। প্রায় ৭,০০০ ডলারে মূল্যায়ন করা হয়েছে। সরকার ১,৪০০ ডলার শুল্ক আরোপ করেছে এবং মালিকের বাকি আছে মাত্র ১৩৬ ডলার--তিনি নিখোঁজ।]নিউ ইয়র্ক টাইমস (ইংরেজি ভাষায়)। ১০ মে ১৯২২। সংগ্রহের তারিখ ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  7. De Maandelykse Nederlandische Mercurius [মাসিক ডাচ মার্কিউরিয়াস] (ওলন্দাজ ভাষায়)। আমস্টাডাম: বি. মাউরিক। ১৭৬৪।
  8. আরমান, আরিফ (১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫)। "ঢাকার নবাবি ভল্টের অন্ধকারে ১১৭ বছর ধরে লুকানো দরিয়া-ই-নূর হীরা"Bangla news। সংগ্রহের তারিখ ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  9. 1 2 দেব, কুষাল (১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫)। "Kohinoor's long-lost sister Daria-i-noor diamond to reappear in Bangladesh in a 117-year-old vault" [কোহিনুরের হারিয়ে যাওয়া বোন দরিয়া-ই-নূর হীরা বাংলাদেশে ১১৭ বছরের পুরনো একটি ভল্টে পুনরায় পাওয়া যাবে।]Wion (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  10. 1 2 "Indian Encounters" [ভারতীয় এনকাউন্টার]National Museums Scotland (ইংরেজি ভাষায়)। ১৪ নভেম্বর ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  11. 1 2 3 "Dariya-i-Noor: The myth and the mystery of the country's most precious diamond" [দরিয়া-ই-নূর: দেশের সবচেয়ে মূল্যবান হীরার মিথ এবং রহস্য]The Business Standard (ইংরেজি ভাষায়)। ২৭ জানুয়ারি ২০২৩। সংগ্রহের তারিখ ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  12. "The illustrated London news v.18 1851 Jan-Jun" [দ্য ইলাস্ট্রেটেড লন্ডন নিউজ ভার্সন ১৮ ১৮৫১ জানুয়ারী-জুন]The illustrated London news (ইংরেজি ভাষায়): ৪৮১। ১৮৪২। আইএসএসএন 0019-2422
  13. The Crystal Palace, and its contents : being an illustrated cyclopaedia of the great exhibition of the industry of all nations, 1851 [ক্রিস্টাল প্যালেস, এবং এর বিষয়বস্তু: ১৮৫১ সালে সমস্ত জাতির শিল্পের মহান প্রদর্শনীর একটি চিত্রিত সাইক্লোপিডিয়া হওয়া] (ইংরেজি ভাষায়)। লন্ডন: ডব্লিউ.এম. ক্লার্ক। ১৮৫১। পৃ. ৬৮।
  14. 1 2 জামান, সুমিলা (৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫)। "What is Daria-i-Noor? Bangladesh's Yunus govt to search for world's most valuable diamonds... it belongs to..." [দরিয়া-ই-নূর কী? বাংলাদেশের ইউনূস সরকার বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান হীরার সন্ধান করবে... এটি...]www.india.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  15. 1 2 "কোহিনুরের বোন হীরা দরিয়া-ই-নূর কি তবে বাংলাদেশের ব্যাংক ভল্টে?"দৈনিক ইনকিলাব। ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫। সংগ্রহের তারিখ ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  16. জর্জিনা ব্ল্যাকউড আব ডাফরিন এবং আভা, হ্যারিয়ট জর্জিনা ব্ল্যাকউড (১৮৯০)। Our viceregal life in India; selections from my journal, 1884-1888 [ভারতে আমাদের ভাইসরয়াল জীবন; আমার জার্নাল থেকে নির্বাচিত অংশ, ১৮৮৪-১৮৮৮] (ইংরেজি ভাষায়)। লন্ডন: জে. মারে।
  17. "Is Dariya-i-Noor, Kohinoor's sister diamond, lying in a bank vault in Bangladesh?" [কোহিনূরের বোন হীরা দরিয়া-ই-নূর কি বাংলাদেশের কোন ব্যাংক ভল্টে পড়ে আছে?]Firstpost (ইংরেজি ভাষায়)। ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫। সংগ্রহের তারিখ ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  18. আহসানুল্লাহ, খাজা; হ্যামিল্টন ও কোম্পানি (১৯০১)। Dacca Collection [ঢাকা কালেকশন] (ইংরেজি ভাষায়)। জন সিনকাঙ্কাস।
  19. 1 2 3 4 5 মোসলেম, সৈয়দ রিফাত (৩১ জুলাই ২০২৫)। "দরিয়া-ই-নূর হীরাসহ ১০৯ রত্নের মালিক কারা"Prothomalo। সংগ্রহের তারিখ ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  20. 1 2 3 "The Bright Side: Bangladesh eyes end to dazzling Darya-e-Noor diamond mystery" [উজ্জ্বল দিক: বাংলাদেশের চোখ ধাঁধানো দরিয়া-ই-নূর হীরার রহস্যের দিকে]France 24 (ইংরেজি ভাষায়)। ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫। সংগ্রহের তারিখ ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  21. 1 2 ভূমি সংস্কার বোর্ড (১ নভেম্বর ২০২১)। "ঢাকা নওয়াব এস্টেটের মামলা-মোকদ্দমা সংক্রান্ত তথ্য"lrb.portal.gov.bd। ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  22. 1 2 3 4 নিজস্ব প্রতিবেদক (৩০ মে ২০২৫)। "ঢাকার নবাবদের হীরা 'দরিয়া–ই–নূর'-এর প্যাকেট যাচাই করবে সরকার, কী কী রত্নালংকার থাকার কথা"Prothomalo। সংগ্রহের তারিখ ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  23. 1 2 মজুমদার, আলী ইমাম (২৯ জানুয়ারি ২০১৮)। "'দরিয়া-এ নূর' ও নবাব সলিমুল্লাহর দেনার দায়"Prothomalo। সংগ্রহের তারিখ ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  24. "নবাবদের 'দরিয়া-ই-নূর' হিরা কি সোনালী ব্যাংকের ভল্টে"www.amarbanglabd.com। ১২ মে ২০২৫। সংগ্রহের তারিখ ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  25. "Descendent of prince eyes end to diamond mystery" [প্রিন্স ডিসেন্ডেন্ট হীরার রহস্যের অবসান ঘটাতে চাইছেন]www.taipeitimes.com (ইংরেজি ভাষায়)। ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫। সংগ্রহের তারিখ ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]