বিষয়বস্তুতে চলুন

দক্ষিণ আফ্রিকায় ইসলাম

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
দক্ষিণ আফ্রিকায় ইসলাম
মোট জনসংখ্যা
আনু.~৮৯২,৬৮৫ (২০১৬ গণনা)[]
(মোট জনসংখ্যার ১.৬%) বৃদ্ধি
উল্লেখযোগ্য জনসংখ্যার অঞ্চল
সর্বত্র
ধর্ম
সংখ্যাগুরু: ৯৫% সুন্নি[]
সংখ্যালঘু: ৫% শিয়া ও অন্যান্য
ভাষা
উর্দু, আরবি, আফ্রিকান্স

আঞ্চলিক ভাষা
পাঞ্জাবি, পশতু, সিন্ধি, গুজরাতি, বালুচি, কাশ্মির, তুর্কি, মালয়

ধর্মীয় ও সহ-ভাষা
আরবি[]

দক্ষিণ আফ্রিকা একটি খ্রিস্টান সংখ্যাগরিষ্ঠ রাষ্ট্র এবং ইসলাম সেখানে একটি সংখ্যালঘু ধর্ম হিসেবে পালিত হয়। দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ১.৬% ইসলাম ধর্ম পালন করে। [] দক্ষিণ আফ্রিকায় ইসলাম তিনটি ভিন্ন পর্যায়ে বিকশিত হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে ১৬৫২ থেকে ১৮০০ সাল পর্যন্ত ডাচ ইস্ট ইন্ডিজ থেকে আফ্রিকার কেপ কলোনিতে দাস, কারিগর, রাজনৈতিক বন্দী ও রাজনৈতিক নির্বাসিতদের অনিচ্ছাকৃত অভিবাসনের অংশ হিসেবে মুসলমানদের নিয়ে আসা হয়েছিল। দ্বিতীয় পর্যায়টি ছিল ১৮৬০ থেকে ১৯১১ সাল পর্যন্ত নাটালের আখ-ক্ষেতে কাজ করার জন্য ব্রিটিশ ভারত থেকে চুক্তিবদ্ধ শ্রমিকদের আগমন। নাটাল প্রদেশে নিয়ে আসা প্রথম চালানের প্রায় ১,৭৬,০০ ভারতীয়ের মধ্যে কমপক্ষে ৭-১০% মুসলিম ছিল।

মিডরেন্ডের নিজামিয়া মসজিদে সাজানো ইসলামী গ্রন্থসমূহ।

১৯৯৪ সালে বর্ণবাদের অবসানের পরপর আফ্রিকীয় মুসলিমদের একটি ঢেউ এখানে তৃতীয় পর্যায়ের সূচনা করে। একটি সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান অনুসারে, এই অভিবাসীদের সংখ্যা প্রায় ৭৫,০০০ থেকে ১০০,০০০ এর মধ্যে ছিল। এছাড়াও বিভিন্ন সময় দক্ষিণ এশিয়া থেকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মুসলিম অভিবাসীও দক্ষিণ আফ্রিকায় এসেছিলেন। [] যদিও সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম সুন্নি; তবে অল্প সংখ্যক শিয়াও এতে বসবাস করে; বিশেষ করে কেপটাউনে[] স্থানীয় মুসলিম সমাজে দেওবন্দ আন্দোলন ধর্মীয় শিক্ষায় সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে, যারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে একাধিক মাদ্রাসা গড়ে তুলেছে। প্রতিবছর আফ্রিকার অন্যান্য দেশ থেকে এসব মাদ্রাসায় অনেক মুসলিম শিক্ষার্থী ইসলামি শিক্ষা অর্জন করতে আসে। []

ধর্মতত্ত্ব

[সম্পাদনা]
লেসানিয়া মুসলিম স্কুল।

সম্প্রদায়সমূহ

দক্ষিণ আফ্রিকার অধিকাংশ মুসলিম সুন্নি ইসলামের অনুসারী। তবে এখানে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিয়া ও অন্যান্য ছোট ছোট মুসলিম সম্প্রদায় রয়েছে।

মাযহাব

[সম্পাদনা]

ভারতীয় বংশোদ্ভূত বেশিরভাগ মানুষ হানাফি মাযহাব অনুসরণ করেন, যেখানে মালয়, ভারতীয় কোকনি ও পূর্ব আফ্রিকীয় সম্প্রদায় সাধারণত শাফিঈ মাযহাব অনুসরণ করেন। শাফিঈ মাজহাব মূলত পশ্চিম কেপ অঞ্চলে প্রচলিত। এছাড়াও সাম্প্রতিক মাগরেবী ও পশ্চিম আফ্রিকীয় অভিবাসীরা মালিকি মাযহাব অনুসরণ করে।

ইসলামি শিক্ষাব্যবস্থা

[সম্পাদনা]

দক্ষিণ আফ্রিকার ইসলামি শিক্ষাব্যবস্থা মূলত দক্ষিণ এশীয় প্রতিদ্বন্দ্বী দেওবন্দি ও বেরেলভি ধারার উপর ভিত্তি করে গঠিত, যা বিশেষভাবে ভারতীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রচলিত। []

তবে মালয় সম্প্রদায়ের শিক্ষাধারা তুলনামূলকভাবে বৈচিত্র্যময়। কারণ মালয়রা সাধারণত মিশরের আল-আজহার, মক্কার উম্মুল-কুরা এবং সৌদি আরব ও দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক লাভ করেন। ভারতীয় পণ্ডিতদের অধিকাংশ দেওবন্দি মাদ্রাসা বা বেরেলভী জিয়াউল উলুমের মত প্রতিষ্ঠানে শিক্ষালাভ করেন; যেমন: জামিয়া রাযভিয়া জিয়া উল উলুম (রাওয়ালপিন্ডি, পাকিস্তান)।

দক্ষিণ আফ্রিকার ইউনাইটেড উলামা কাউন্সিল অব সাউথ আফ্রিকা, কেপটাউন উলামা বোর্ড, মুসলিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল ও দারুল ইহসানের আলেমগণ।

দক্ষিণ আফ্রিকার উলামা সংস্থা

[সম্পাদনা]
  • ইউনাইটেড উলামা কাউন্সিল অব সাউথ আফ্রিকা
  • কেপটাউন উলামা বোর্ড
  • মুসলিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল
  • দারুল ইহসানের

বিশিষ্ট ইসলামি পণ্ডিত

[সম্পাদনা]
  • মাওলানা ইব্রাহিম ভাম: (জামিয়াতুল উলামা দক্ষিণ আফ্রিকার মহাসচিব)
  • মুফতি মোহাম্মদ আকবর হাজারভী: (দারুল উলুম প্রিটোরিয়ার প্রধান ও দক্ষিণ আফ্রিকার বর্তমান প্রধান মুফতি)
  • শেখ ইব্রাহিম গ্যাব্রিয়েলস: মুসলিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের সাবেক সভাপতি।
  • মুফতি ইব্রাহিম দেশাই: দারুল ইফতা মাহমুদিয়ার প্রতিষ্ঠাতা।
  • আহমদ দীদাত: আইপসিআই-এর প্রতিষ্ঠাতা।
  • মুফতি সৈয়দ হারুন আল আজহারি: কেপ টাউন উলামা বোর্ডের বর্তমান মুফতি।
  • মাওলানা তাহা কারান: মুসলিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের মুফতি ও স্ট্র্যান্ডের দারুল উলুম আল-আরাবিয়া আল-ইসলামিয়ার প্রধান।
  • মাওলানা রাফিক জাফর (ইসলামে ধর্মান্তরিত)
  • মাওলানা সৈয়দ ইমরান জিয়ায়ী: সুন্নি উলামা কাউন্সিল কেপের সহ-সভাপতি।
  • মাওলানা আলি আদম (ইসলামিয়া একাডেমি)
  • মাওলানা আব্দুর রহমান খান (দারুল তুরাস আল-ইসলামি)
  • মাওলানা আলি গদর (দারুন নাইম)

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. [CS in brief 12 07 2017 (1).cdr (statssa.gov.za) "Community Survey 2016 in Brief"] |ইউআরএল= এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)। ২০১৬। 
  2. "The Future of Global Muslim Population: Projections from 2010 to 2013" ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৩ জুলাই ২০১৩ তারিখে Accessed July 2013.
  3. Al-Jallad, Ahmad (৩০ মে ২০১১)। "Polygenesis in the Arabic Dialects"Encyclopedia of Arabic Language and Linguistics (ইংরেজি ভাষায়)। 
  4. Isilow, Hassan (৭ মে ২০২১)। "Islam has rich, proud history in South Africa: President"Anadolu Agency 
  5. Faizal Dawjee। "Muslims in the Struggle."। সংগ্রহের তারিখ ২৪ মে ২০১৩ 
  6. Abdulkader Tayob (১৯৯৫)। Islamic Resurgence in South Africa: The Muslim Youth Movement। পৃষ্ঠা 104। আইএসবিএন 9780799216127। সংগ্রহের তারিখ ৩১ মে ২০১৪ 
  7. Khalili, Muhammadullah (2016). "Influence of Deoband School of Thought In South Africa". University of KwaZulu-Natal. 
  8. Fleet, Kate (সম্পাদক)। "Encyclopaedia of Islam Three Online"referenceworks (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৫-০৩-১৬