বিষয়বস্তুতে চলুন

দক্ষিণ অয়নান্ত

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
পৃথিবীতে অয়নান্তবিষুবের
ইউটি তারিখ ও সময়[][]
ঘটনাবলী মহাবিষুব উত্তর অয়নান্ত জলবিষুব দক্ষিণ অয়নান্ত
মাস মার্চ জুন সেপ্টেম্বর ডিসেম্বর
বছর
দিনসময়দিনসময়দিনসময়দিনসময়
২০১৪ ২০১৬:৫৭২১১০:৫১২৩০২:২৯২১২৩:০৩
২০১৫ ২০২২:৪৫২১১৬:৩৮২৩০৮:২১২২০৪:৪৮
২০১৬ ২০০৪:৩০২০২২:৩৪২২১৪:২১২১১০:৪৪
২০১৭ ২০১০:২৮২১০৪:২৪২২২০:০২২১১৬:২৮
২০১৮ ২০১৬:১৫২১১০:০৭২৩০১:৫৪২১২২:২৩
২০১৯ ২০২১:৫৮২১১৫:৫৪২৩০৭:৫০২২০৪:১৯
২০২০ ২০০৩:৫০২০২১:৪৪২২১৩:৩১২১১০:০২
২০২১ ২০০৯:৩৭২১০৩:৩২২২১৯:২১২১১৫:৫৯
২০২২ ২০১৫:৩৩২১০৯:১৪২৩০১:০৪২১২১:৪৮
২০২৩ ২০২১:২৪২১১৪:৫৮২৩০৬:৫০২২০৩:২৭
২০২৪ ২০০৩:০৭২০২০:৫১২২১২:৪৪২১০৯:২০

সূর্য তার দক্ষিণায়নকালে জলবিষুবের পর নিরক্ষরেখা অতিক্রম করে মকরক্রান্তি রেখায় অর্থাৎ ২৩.৫° দক্ষিণ অক্ষাংশে গমন করলে এ ঘটনাকে সূর্যের দক্ষিণ অয়নান্ত বলা হয়। প্রতি বছর ২১শে ডিসেম্বরে দক্ষিণ অয়নান্ত ঘটে বলা হলেও এটা আদতে এক গড় হিসাব; সৌর বছরপঞ্জিকা বছরের মধ্য পার্থক্য থাকায় ±১ দিন হেরফের হয়ে থাকে। ডিসেম্বর মাসের ২০ হতে ২২ তারিখের মধ্যে যে কোন দিন দক্ষিণ অয়নান্ত সংঘটিত হতে পারে। উত্তর গোলার্ধে একে শীত সংক্রান্তি বলা হলেও দক্ষিণ গোলার্ধে তা গ্রীষ্ম সংক্রান্তি। দক্ষিণ অয়নান্তের দিন সূর্যের দক্ষিণায়নের সমাপ্তি ঘটে এবং উত্তরায়ণের শুরু হয়। এ সময় উত্তর গোলার্ধে শীতকাল এবং দক্ষিণ গোলার্ধে গ্রীষ্মকাল বিরাজ করে।

দক্ষিণ অয়নান্তের দিন সূর্য কর্তৃক পৃথিবীর উপর আলোকপাত

জলবিষুব সংঘটনান্তে সূর্য নিরক্ষরেখা অতিক্রম করার পর, পৃথিবী যতই তার কক্ষপথে অগ্রসর হয় ততই পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধ সূর্য থেকে দূরে যেতে থাকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধ সূর্যের দিকে ঝুঁকতে। এর ফলে উত্তর গোলার্ধে দিনের দৈর্ঘ্য ক্রমশ হ্রাস পায় এবং রাতের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি পেতে থাকে। অপরদিকে দক্ষিণ গোলার্ধে এর ঠিক বিপরীত অবস্থা চলতে থাকে। এইভাবে উত্তর গোলার্ধ সূর্য থেকে সরে যাওয়ার ফলে ২০-২২ ডিসেম্বরের মধ্যে কোন এক দিন উত্তর গোলার্ধ সূর্য থেকে সর্বাধিক দূরত্বে থাকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধ থাকে সূর্যের সর্বাপেক্ষা নিকটে। অর্থাৎ এদিন সৌরপাদ বিন্দু ২৩.৫° দক্ষিণ অক্ষাংশে থাকে। অন্যভাবে বলা যায়, এদিন সূর্য মকরক্রান্তি রেখার উপরে লম্বভাবে কিরণ দেয় এবং দক্ষিণ গোলার্ধের সর্বাধিক অংশ আলোকিত হয়। ফলে এ দিন উত্তর গোলার্ধে ক্ষুদ্রতম দিন ও দীর্ঘতম রাত্রি সংঘটিত হয় এবং একই সময়ে দক্ষিণ গোলার্ধে হয় এর ঠিক বিপরীত।

এদিন সূর্যের দক্ষিণায়নের শেষ দিন অর্থাৎ এদিন সূর্য মকরক্রান্তি রেখাকে স্পর্শ করে পুনরায় উত্তর গোলার্ধমুখী হয়। একারণে দক্ষিণ অয়নান্তকে মকর সংক্রান্তিও বলা হয়। তবে সিদ্ধান্তভিত্তিক ও বাংলাদেশে সরকারিভাবে গৃহীত উভয় বাংলা পঞ্জিকায় ঐতিহ্যগত ত্রুটির কারণে মকর সংক্রান্তির দিনটি পিছিয়ে গিয়ে বর্তমানে ১৪ – ১৫ জানুয়ারিতে পড়েছে যা সঙ্গত নয়।[]

নিচে নিকট, অতীত এবং ভবিষ্যতে দক্ষিণ অয়নান্ত সংঘটনের আন্তর্জাতিক তারিখ ও সময় উল্লেখ করা হল:[]

তারিখসময়
২০০০-১২-২১১৩:৩৭
২০০১-১২-২১১৯:২১
২০০২-১২-২২০১:১৪
২০০৩-১২-২২০৭:০৪
২০০৪-১২-২১১২:৪২
২০০৫-১২-২১১৮:৩৫
২০০৬-১২-২২০০:২২
২০০৭-১২-২২০৬:০৮
২০০৮-১২-২১১২:০৪
২০০৯-১২-২১১৭:৪৭
২০১০-১২-২১২৩:৩৮
২০১১-১২-২২০৫:৩০
২০১২-১২-২১১১:১২
২০১৩-১২-২১১৭:১১
২০১৪-১২-২১২৩:০৩
২০১৫-১২-২২০৪:৪৮
২০১৬-১২-২১১০:৪৪
২০১৭-১২-২১১৬:২৮
২০১৮-১২-২১২২:২৩
২০১৯-১২-২২০৪:১৯
২০২০-১২-২১১০:০২

সৌরবছর

[সম্পাদনা]

সূর্যের চারদিকে নিজ কক্ষপথে পৃথিবী একটি পূর্ণ পরিক্রমণে যে সময় লাগে সেটিই পৃথিবীর সৌরবছর যার দৈর্ঘ্য ৩৬৫ দিন ঘণ্টা ৪৮ মিনিট ৪৭ সেকেন্ড। দক্ষিণ অয়নান্ত ভিত্তিক সৌরবছর দক্ষিণ অয়নান্তের উপর নির্ভরশীল এবং এর দৈর্ঘ্য হবে পরপর দুটি দক্ষিণ অয়নান্তের মধ্যবর্তী সময়। কিন্তু পৃথিবী তার উপবৃত্তাকার কক্ষপথে ধ্রুব বেগে আবর্তন করে না।[] তাই মকরক্রান্তি রেখার উপর সৌরপাদ বিন্দুর অবস্থান একটি নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর না হয়ে সামান্য ব্যবধানে হয়ে থাকে যা অল্প কয়েক বছরে আপাতদৃষ্টিতে বোঝা না গেলেও কয়েক সহস্রাব্দ অন্তর দৃষ্টিগোচর হয়। ফলস্বরূপ দক্ষিণ অয়নান্ত ভিত্তিক সৌরবছরের দৈর্ঘ্যের পরিবর্তন ঘটে। ৬০০০ খ্রীস্টপূর্বাব্দ থেকে ২০০০ খ্রীস্টাব্দ পর্যন্ত দক্ষিণ অয়নান্ত ভিত্তিক এক একটি সৌরবছরের দৈর্ঘ্য ৩৬৫ দিন ঘণ্টা ৪৯ মিনিট ৩০ সেকেন্ড থেকে ৩৬৫ দিন ঘণ্টা ৫০ মিনিট ০০ সেকেন্ডের মধ্যে অপেক্ষাকৃত স্থিতিশীল ছিল। ২০০০ খ্রীস্টাব্দের পর থেকে দক্ষিণ অয়নান্ত ভিত্তিক সৌরবছরগুলোর দৈর্ঘ্য কমতে শুরু করেছে যা ৪০০০ খ্রিস্টাব্দে হবে ৩৬৫ দিন ঘণ্টা ৪৮ মিনিট ৫২ সেকেন্ড এবং ১০০০০ খ্রীস্টাব্দে হবে ৩৬৫ দিন ঘণ্টা ৪৬ মিনিট ৪৫ সেকেন্ড।[]

দিনের দৈর্ঘ্য

[সম্পাদনা]

লোকসংস্কৃতি

[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. United States Naval Observatory (৪ জানুয়ারি ২০১৮)। "Earth's Seasons and Apsides: Equinoxes, Solstices, Perihelion, and Aphelion"। সংগ্রহের তারিখ ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮
  2. Astro Pixels (২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮)। "Solstices and Equinoxes: 2001 to 2100"। সংগ্রহের তারিখ ২১ ডিসেম্বর ২০১৮
  3. রেবতী নক্ষত্র, অয়নচলন, ‘সূর্য-সিদ্ধান্ত’ ও বাংলা নববর্ষ ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৬ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে, ফারসীম মান্নান মোহাম্মদী
  4. "Earth's Seasons — Naval Oceanography Portal"। ১৩ অক্টোবর ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৯
  5. "June Solstice: Longest and Shortest Day of the Year www.timeanddate.com"। সংগ্রহের তারিখ ৩ জুন ২০২১
  6. Bromberg, Irv। "Solar Year Length Variations on Earth" (পিডিএফ)। University of Toronto, Canada। সংগ্রহের তারিখ ২১ ডিসেম্বর ২০১২