ত্রৈলোক্য বিক্রম শাহ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
জ্যেষ্ঠ যুবরাজ ত্রৈলোক্য
জন্ম(১৮৪৭-১১-৩০)৩০ নভেম্বর ১৮৪৭
হনুমান ঢোকা দরবার, বসন্তপুর, কাঠমান্ডু
মৃত্যু৩০ মার্চ ১৮৭৮(1878-03-30) (বয়স ৩০)
হনুমান ঢোকা দরবার, বসন্তপুর, কাঠমান্ডু
দাম্পত্য সঙ্গীতারা রাজ্য লক্ষ্মী দেবী
ললিতা রাজেশ্বরী রাজ্য লক্ষ্মী দেবী
সোমগর্ভা দিব্যেশ্বরী রাজ্য লক্ষ্মী দেবী
বংশধরপৃথ্বী বীর বিক্রম শাহ
মহারাজকুমারী প্রাণ
মহারাজকুমারী লালপতি
সাহেবজু যক্ষ বিক্রম
সাহেবজু রণ বিক্রম
সাহেবজু ঝরেন্দ্র বিক্রম
সাহেবজু গজেন্দ্র বিক্রম
সাহেবজু বীর বিক্রম (এবং উপপত্নীদের ঘরে আরো কয়েকজন ছিল)
রাজবংশশাহ রাজবংশ
পিতাসুরেন্দ্র বিক্রম শাহ
মাতাত্রৈলোক্য রাজ্য লক্ষ্মী দেবী
ধর্মহিন্দু

জ্যেষ্ঠ যুবরাজ ত্রৈলোক্য বীর বিক্রম শাহ দেব (৩০ নভেম্বর, ১৮৪৭ – ৩০ মার্চ, ১৮৭৮) ছিলেন নেপালি রাজা সুরেন্দ্রর জ্যেষ্ঠ সন্তান এবং নেপালের রাজসিংহাসনের আপাত উত্তরাধিকারী। তাঁর বাবার সামনে তিনি সন্দেহজনক পরিস্থিতিতে মারা গিয়েছিলেন এবং তার যুবক পুত্র পৃথ্বী বীর বিক্রম শাহের সিংহাসনে আরোহণের পথ তৈরি করেছিলেন।

জীবন[সম্পাদনা]

জ্যেষ্ঠ যুবরাজ ত্রৈলোক্য ছিলেন রাজা সুরেন্দ্র বিক্রম শাহ এবং তার দ্বিতীয় স্ত্রী রাণী ত্রৈলোক্য রাজ্য লক্ষ্মী দেবীর প্রথম পুত্র। তিনি ব্যক্তিগতভাবে শিক্ষা গ্রহণ করেছিলেন।

জ্যেষ্ঠ যুবরাজ ত্রৈলোক্য প্রথমে জঙ্গবাহাদুর রানার তিন কন্যাকে বিবাহ করেছিলেন: তারা রাজ্য লক্ষ্মী দেবী, তারপরে ললিতা রাজেশ্বরী রাজ্য লক্ষ্মী দেবী এবং সোমগর্ভ দিব্যেশ্বরী রাজ্য লক্ষ্মী দেবী। তার বড় স্ত্রীরা তার দুই পুত্র ও দুই কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছিল এবং কনিষ্ঠ স্ত্রীরা তার পাঁচ পুত্র এবং বেশ কয়েকটি কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছিল। কনিষ্ঠ স্ত্রীদের মধ্যে কয়েকজন ছিল স্থানীয় আভিজাত গোত্রের কন্যা। উপপত্নীর কোলেও জ্যেষ্ঠ যুবরাজ ত্রৈলোক্যের বেশ কয়েকটি শিশু সন্তানের জন্ম হয়েছিল।

সেই সময় প্রকৃত শাসনক্ষমতার খুব সামান্যই ছিল নেপালের রাজার হাতে, প্রধানমন্ত্রী রানাই কার্যত দেশটিতে শাসন কার্য পরিচালনা করতেন। রাজপরিবারের যে কোনও বাস্তব নেতৃত্ব ছিল একরকম নিরস্ত। ১৮৫৬ সালের দলিল অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী রানা সমস্ত রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার মালিক হয়েছিল। জ্যেষ্ঠ যুবরাজ ত্রৈলোক্য বয়সগত পরিপক্কতায় পৌঁছে ১৮৭৫ সালে রাজকীয় পদগর্বগুলো পুনরুদ্ধার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যা তার বাবা ১৮৫৬ সালে হারিয়েছিল। তার সাহেবজু ভাই গোর্খার নরেন্দ্র বিক্রম মহিলা সাহেবজু এবং জঙ্গ বাহাদুর রানার পুত্র জগৎ জঙ্গের সহায়তায় জ্যেষ্ঠ যুবরাজ একটি পরিকল্পনা তৈরি করেছিলেন যার মাধ্যমে ১৮৫৬ সালে করা সনদ অনুসারে উত্তরাধিকারের আদেশটি জঙ্গ বাহাদুরের মৃত্যুর ঘটনার মধ্য দিয়ে বাদ দেওয়া হবে; এরকম পরিস্থিতিতে যুবরাজ ত্রৈলোক্য রাজা সুরেন্দ্রকে পদত্যাগ করতে এবং জগৎ জঙ্গকে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে নিয়োগ করতে বাধ্য করবেন। দুর্ভাগ্যবশত সেই পরিকল্পনাটি অবশ্য ব্যর্থ হয়েছিল। পাথরঘাটে জঙ্গ বাহাদুর মারা যাওয়ার পরে তার কনিষ্ঠ ভাই ধীর শমসের এই খবর ছড়িয়ে দিয়েছিল যে জঙ্গ বাহাদুর আসলে মারা যায়নি বরং তিনি কেবল গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় আছেন। জ্যেষ্ঠ যুবরাজ ত্রৈলোক্য এবং জগৎ জঙ্গ এই সংবাদ পেয়ে পাথরঘাটে ছুটে যাওয়ার পরে ধীর শমসের রাজা সুরেন্দ্রকে উত্তরসূরি আইন অনুসারে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসাবে রণদীপ সিংহ কুনবারকে নিয়োগ করতে বাধ্য করেন।

ক্রাউন প্রিন্স ত্রৈলোক্য

জ্যেষ্ঠ যুবরাজ ত্রৈলোক্য সন্দেহভাজন পরিস্থিতিতে ১৮৭৮ সালে তার পিতার সামনেই মারা যান, তার পরে তার পুত্র পৃথ্বি বীর সিংহাসনে আরোহণ করেন। তার বড় ছেলে রাজা পৃথ্বীকে নারায়ণহিতি রাজ দরবারে একররম রাজবন্দী ও নামমাত্র সম্রাট হিসাবে রাখা হয়েছিল, তার ছোট ছেলে সাহেবজু ধনকুতা, পাল্পা গৌড়, বীরগঞ্জ এবং ভারত ছাড়াও নেপালের বিভিন্ন জেলায় নির্বাসিত হয়ে হনুমান ঢোকা রাজদরবার থেকেও চলে গিয়েছিলেন।[১]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Bhuwan Lal Joshi; Leo E. Rose (১৯৬৬)। Democratic Innovations in Nepal: A Case Study of Political Acculturation। University of California Press। GGKEY:5N30S3HU9BC।