তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী
তুরস্ক প্রজাতন্ত্রের প্রধানমন্ত্রী | |
---|---|
Türkiye Cumhuriyeti Başbakanı (তুর্কি) | |
সর্বাধিক মেয়াদকাল ইসমত ইনোনু ৩০ অক্টোবর ১৯২৩ – ২২ নভেম্বর ১৯২৪ ৪ মার্চ ১৯২৫ – ২৫ অক্টোবর ১৯৩৭ ২০ নভেম্বর ১৯৬১ – ২০ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৫ | |
তুরস্ক সরকারের নির্বাহী শাখা | |
ধরন | সরকারপ্রধান |
অবস্থা | বিলুপ্ত |
এর সদস্য | তুরস্কের মন্ত্রিসভা জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ |
যার কাছে জবাবদিহি করে | জাতীয় সংসদ |
বাসভবন | প্রধানমন্ত্রী ভবন (১৯২৫–১৯৩৭) প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন (১৯৩৭–২০১৪) চাঁকায়া ম্যানশন (২০১৪–২০১৮) |
নিয়োগকর্তা | তুরস্কের রাষ্ট্রপতি জাতীয় সংসদে ভোটের ভিত্তিতে নিয়োগ |
মেয়াদকাল | ৫ বছর (জাতীয় সংসদের মেয়াদকাল অনুযায়ী) সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা ধরে রাখার শর্তে, মেয়াদকালে কোন সীমাবদ্ধতা নেই। |
গঠনের দলিল | তুরস্কের সংবিধান |
পূর্ববর্তী | উসমানীয় উজিরে আজম |
গঠন | ৩ মে ১৯২০ (আঙ্কারা সরকার) ১ নভেম্বর ১৯২৩ (প্রজাতন্ত্র) |
প্রথম | মোস্তাফা কামাল আতাতুর্ক (আঙ্কারা সরকার) ইসমত ইনোনু (প্রজাতন্ত্র) |
সর্বশেষ | বিনালি ইলদিরিম |
বিলুপ্ত | ৯ জুলাই ২০১৮ |
এ দ্বারা প্রতিস্থাপন | উপরাষ্ট্রপতি |
ডেপুটি | উপপ্রধানমন্ত্রী |
ওয়েবসাইট | www |
তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী (সরকারিভাবে তুরস্ক প্রজাতন্ত্রের প্রধানমন্ত্রী) (তুর্কি: Türkiye Cumhuriyeti Başbakanı), ছিলেন তুরস্ক প্রজাতন্ত্রের সরকারপ্রধান যিনি ১৯২০ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত তুরস্কের মহান জাতীয় সভার একটি রাজনৈতিক জোটের নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং মন্ত্রিসভা পরিচালনা করেছেন। তুরস্কের রাজনৈতিক ইতিহাসে বিভিন্ন সময়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যক্রম ও ক্ষমতার পরিবর্তন হয়েছে। ২০১৭ সালের সংবিধান সংশোধন গণভোটের পর পদটি বিলুপ্ত হওয়ার আগে পর্যন্ত, সাধারণত প্রধানমন্ত্রীই তুরস্কের রাজনীতির প্রধান শক্তি হিসেবে বিবেচিত হতেন এবং তার প্রভাব রাষ্ট্রপতির চেয়েও বেশি ছিল।
উসমানীয় যুগে প্রধানমন্ত্রিত্ব
[সম্পাদনা]উসমানীয় সাম্রাজ্যে, সুলতানের প্রধানমন্ত্রীর পদধারী ব্যক্তিকে উজিরে আজম (তুর্কি: Sadrazam) বলা হতো। তবে ১৯শ শতাব্দীতে কিছু সরকারপ্রধানকে প্রধানমন্ত্রীর পদমর্যাদায় (তুর্কি: Başnazır) নিয়োগ দেওয়া হতো। ১৮৩০ এর দশক থেকে উজিরে আজমরা মন্ত্রিসভার নেতৃত্ব দিতে শুরু করেন। ১৯শ শতাব্দীর তানযিমাত সংস্কারের পর, উজিরে আজমদের ভূমিকা সমকালীন পশ্চিম ইউরোপীয় রাজতন্ত্রের প্রধানমন্ত্রীর মতো হয়ে ওঠে। পরবর্তীতে, ১৮৭৬ সালের উসমানীয় সংবিধান অনুযায়ী একটি সংসদ প্রতিষ্ঠিত হয় যা উজিরে আজমকে তদারকি করত। দ্বিতীয় সাংবিধানিক যুগে গৃহীত সাংবিধানিক সংশোধনীর মাধ্যমে উজিরে আজম সুলতানের পরিবর্তে সংসদের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য করা হয়।
তুরস্কের জাতীয় সংসদ সরকারের প্রধানমন্ত্রিত্ব
[সম্পাদনা]তুর্কি জাতীয় আন্দোলনের মাধ্যমে আঙ্কারায় জাতীয় সংসদ প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর, প্রথম সংসদ "কার্যনির্বাহী মন্ত্রী পরিষদ" (তুর্কি: İcra Vekilleri Heyeti) নামে একটি নতুন সরকার গঠন করে। তখন সংসদের স্পিকার এই পদটি ধারণ করতেন এবং তিনি পদাধিকার বলে মন্ত্রিসভার সভাপতিত্ব করতেন।
প্রজাতন্ত্রে প্রধানমন্ত্রিত্ব
[সম্পাদনা]- একদলীয় সময়কাল (১৯২৩–১৯৪৫)
প্রজাতন্ত্র ঘোষণা করার পর, ১৯২১ সালের বিদ্যমান সংবিধান সংশোধন করা হয়, যার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে নির্বাহী ক্ষমতা এবং সরকারি বিষয়াবলি তদারকি করার অধিকার প্রদান করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর নিয়োগ দেওয়া হত রাষ্ট্রপতি দ্বারা।
যদিও রাষ্ট্রপতি একটি প্রতীকী পদ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং রাষ্ট্রপতি তার কার্যকলাপের জন্য জবাবদিহি করতে বাধ্য ছিলেন না, তবুও রাষ্ট্রপতি মোস্তফা কামাল আতাতুর্ক এবং ইসমত ইনোনু একদলীয় সময়কালে তাদের পার্টির নেতা হিসেবে নির্বাহী ক্ষমতা প্রয়োগ করেছিলেন।
- বহুদলীয় সময়কাল (১৯৪৫–২০১৮)
১৯৫০ তুরস্কের সাধারণ নির্বাচনের আগে, সংবিধান সংশোধন করা হয়েছিল, যাতে নির্বাচিত রাষ্ট্রপতিকে তাদের রাজনৈতিক দলের নেতা হিসেবে থাকতে নিষিদ্ধ করা হয়। এই সংশোধনীগুলির ফলে প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকা তুরস্কের রাজনীতিতে আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠে এবং রাষ্ট্রপতির ভূমিকা অনেকটাই কমে যায়।
১৯৬০ সালের তুরস্কের অভ্যুত্থানের পর, প্রধানমন্ত্রী আদনান মেনডেরেস ক্ষমতাচ্যুত হন এবং নতুনভাবে প্রণীত ১৯৬১ সালের সংবিধান সরকারী ক্ষমতা অনেক কমিয়ে সংসদের তদারকি শক্তি বাড়িয়ে দেয়। এই সংবিধানের ফলস্বরূপ একটি ভাঙাচুরা রাজনৈতিক ব্যবস্থা সৃষ্টি হয় এবং ১৯৮০ সাল পর্যন্ত বহু সময়ে স্বল্পস্থায়ী জোট সরকার গঠিত হয়।
১৯৮০ সালের তুর্কি অভ্যুত্থানের পর, ১৯৮২ সালের সংবিধান (যা এখনও কার্যকর) প্রণীত হয়। যদিও ১৯৮২ সালের সংবিধান পূর্ববর্তী সংবিধানের সঙ্গে অনেকটাই সাদৃশ্যপূর্ণ ছিল, তবুও কিছু নতুন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল যাতে স্বল্পস্থায়ী জোট সরকারের সৃষ্টি প্রতিরোধ করা যায়। এসব ব্যবস্থার মধ্যে ছিল ১০% নির্বাচনী বাধা, একক কক্ষবিশিষ্ট সংসদ এবং শক্তিশালী নির্বাহী ক্ষমতা। প্রধানমন্ত্রীর পদে ব্যাপক নির্বাহী ক্ষমতা প্রদানসহ, মন্ত্রিসভার অধিকার সীমিত করা হয় এবং মন্ত্রীদের প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি তদারকির অধীনে আনা হয়।
পরে, সংবিধানে একাধিক সংশোধনী করা হয়, এর মধ্যে ২০০৭, ২০১০ এবং ২০১৭ সালের সাংবিধানিক গণভোটের] মাধ্যমে অনুমোদিত সংশোধনীগুলি ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। জনগণের ভোটে অনুমোদিত কিছু পরিবর্তন ছিল বেশ বিতর্কিত।
কিছু বিশেষজ্ঞের মতে, ২০১৪ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচন প্রথমবারের মতো সরাসরি রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়ার ফলে একটি অর্ধ-রাষ্ট্রপতিশাসিত শাসনব্যবস্থা তৈরি হয়, যা তুর্কি রাজনীতিতে প্রধানমন্ত্রীর আধিপত্যের অবসান ঘটায়।[১]
২০১৮ সালের সাধারণ নির্বাচনের পর, ২০১৭ সালের গণভোটে অনুমোদিত সাংবিধানিক সংশোধনীগুলি আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর হয়, যা তুরস্কে ৯৮ বছরব্যাপী সংসদীয় শাসনের সমাপ্তি ঘোষণা করে।
সময়রেখা
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ Karagöz, Serdar (২০১৪-০৪-১৪)। "De facto semi-presidential system and Erdoğan"। Daily Sabah (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২০-১১-২৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৯-০৮।
- ↑ "Başbakanlık logosu değişti (Başbakanlığın yeni logosu)"। www.hurriyet.com.tr (তুর্কি ভাষায়)। ২০২০-০৭-১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৭-১২।