তাশি এবং নুংশি মালিক

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মালিক যমজ
তাশি এবং নুংশি মালিক হিমালয় পর্বতের পাদদেশে সহনশীলতা ট্রেক করছেন
জন্ম
তাশি মালিক এবং নুংশি মালিক

২১শে জুন ১৯৯১
পরিচিতির কারণপ্রথম মহিলা যমজ যাঁরা মাউন্ট এভারেস্ট আরোহণ করেছেন এবং প্রথম দুইবোন ও যমজ হিসেবে সপ্তশৃঙ্গ আরোহণ করেছেন
ওয়েবসাইটnungshitashi.com

তাশি এবং নুংশি মালিক (জন্ম ২১শে জুন ১৯৯১)[১] হলেন প্রথম দুই বোন এবং যমজ যাঁরা সপ্তশৃঙ্গ আরোহণ করেছেন। তাঁরা উত্তর ও দক্ষিণ মেরুতে পৌঁছেছেন এবং অ্যাডভেঞ্চারার্স গ্র্যান্ড স্ল্যাম এবং থ্রি পোল চ্যালেঞ্জ সম্পন্ন করেছেন।

প্রাথমিক জীবন[সম্পাদনা]

মালিক যমজ (তাশি এবং নুংশি) মূলত ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের বাসিন্দা।[২] তাঁদের জন্ম হরিয়ানার আনওয়ালি সোনিপথ জেলায় ভারতীয় সেনা অফিসারের ঘরে। তাঁদের বাবার নাম কর্নেল বীরেন্দ্র সিং মালিক এবং মায়ের নাম অঞ্জু থাপা। কর্নেল মালিক ভারতীয় সেনাবাহিনী থেকে অবসর নেওয়ার পর তাঁদের পরিবার দেরাদুনে বসতি স্থাপন করে।[৩]

মেয়েরা মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, তামিলনাড়ু, কেরালা এবং মণিপুর রাজ্যের বেশ কয়েকটি স্কুলে পড়েছেন, এই সঙ্গে তাঁরা উদগমণ্ডলমের কাছে লরেন্স স্কুল, লাভডেলে পড়েছেন। ২০১৩ সালে তাঁরা সিকিম মণিপাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতা এবং গণযোগাযোগে স্নাতক সম্পন্ন করেন। তাঁদের কাছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভার্মন্টের স্কুল অফ ইন্টারন্যাশনাল ট্রেনিং থেকে শান্তি ও দ্বন্দ্ব সমাধানের একটি শংসাপত্র রয়েছে।

পর্বতারোহণ[সম্পাদনা]

মালিক বোনেরা ২০১০ সালে নেহেরু ইনস্টিটিউট অফ মাউন্টেনিয়ারিংয়ে প্রশিক্ষণ নেন।[৩][৪] ২০১৩ সালের ১৯শে মে রবিবার, তাঁরা মাউন্ট এভারেস্টের চূড়ায় আরোহন করেছিলেন। যমজ বোন হিসেবে প্রথম তাঁরাই এই কৃতিত্ব অর্জন করেছেন।[৫][৬] তাঁদের সাথে সামিনা বেগ শীর্ষারোহনে যোগ দিয়েছিলেন এবং তাঁরা শান্তির প্রতীক হিসাবে ভারত ও পাকিস্তানের পতাকা একসাথে স্থাপন করেছিলেন।[৭][৮][৯]

যমজ বোনেরা 'ক্লাইম্বাথন ২০১৩'-এ অংশগ্রহণ করেছিলেন। সেখানে তাঁরা ২০১৩ সালের আগস্টে ২১০০০ ফুট উচ্চতায় একটি অস্পর্শিত শিখর আরোহণ করেছিলেন। এটির অর্থায়ন করেছিল ইন্ডিয়ান মাউন্টেনিয়ারিং ফাউন্ডেশন। এছাড়াও তাঁরাই প্রথম মহিলা যমজ, যাঁরা সবচেয়ে কম বয়সে সপ্তশৃঙ্গ, এক্সপ্লোরার গ্র্যান্ড স্ল্যাম এবং থ্রি পোল চ্যালেঞ্জ সম্পূর্ণ করেছেন।[১০] ২০১৪ সালের ১৬ই ডিসেম্বর, অ্যান্টার্কটিকার মাউন্ট ভিনসন আরোহণের পর, তাঁরা একসাথে 'সপ্তশৃঙ্গ' আরোহণ করা বিশ্বের প্রথম যমজ এবং দুই বোন ছিলেন।[১১][১২]

মাউন্ট ম্যাককিনলি, আলাস্কার শীর্ষে

২০১৩ সালের ১৯শে মে, মাউন্ট এভারেস্ট আরোহণ করার পর তাঁরা মাত্র দুই বছরের মধ্যে ২০১৫ সালের ১৫ই জুলাই এক্সপ্লোরার্স গ্র্যান্ড স্ল্যাম সম্পন্ন করেন।[১৩] তাঁরাই প্রথম ভারতীয় এবং দক্ষিণ এশীয় যাঁরা এক্সপ্লোরার গ্র্যান্ড স্ল্যাম পূর্ণ করতে পেরেছেন।[১৪] ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে, নিউজিল্যান্ডের উচ্চতম চূড়া আওরাকিতে (মাউন্ট কুক) আরোহণ করে তাঁরা প্রথম মহিলা যমজ হয়ে ওঠেন।[১৫] ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে, নুংশি এবং তাশি বিশ্বের সবচেয়ে কঠিন রেস: ইকো-চ্যালেঞ্জ ফিজিতে ভারতীয় 'খুকুরি ওয়ারিয়র্স' দলের নেতৃত্ব দেন। এটি ৩০টি দেশের অ্যাডভেঞ্চার অ্যাথলিটদের ৬৬টি দলের একটি অভিযান ছিল। তাঁরা প্রকৃতির শক্তির বিরুদ্ধে এবং দলগত ভাবে একে অপরের বিরুদ্ধে খেলে ৬৭১ কিমি পথ অতিক্রম করেছিলেন। তাঁরা এই পথে ফিজিয়ান প্রাকৃতিক ভূমি, মহাসমুদ্র, নদী, হ্রদ এবং জঙ্গল পার হয়েছেন কয়েক ডজন দুঃসাহসিক কার্যকলাপ করে। তাঁরা এই বৈশ্বিক অ্যাডভেঞ্চার রেসে অংশগ্রহণকারী প্রথম এবং একমাত্র দক্ষিণ এশীয় ছিলেন।[১৬][১৭]

সপ্তশৃঙ্গ আরোহণের বিস্তারিত [১৮][১৯][সম্পাদনা]

নং. ছবি শিখর উচ্চতা পর্বতমালা মহাদেশ শীর্ষ সম্মেলনের তারিখ
মাউন্ট এভারেস্ট ৮,৮৪৮ মি (২৯,০২৯ ফু) হিমালয় এশিয়া ১৯শে মে ২০১৩
অ্যাকনকাগুয়া ৬,৯৬১ মি (২২,৮৩৮ ফু) আন্দিজ দক্ষিণ আমেরিকা ২৯শে জানুয়ারি ২০১৪
ডেনালি ৬,১৯৪ মি (২০,৩২২ ফু) আলাস্কা রেঞ্জ উত্তর আমেরিকা ৪ঠা জুন, ২০১৪
কিলিমাঞ্জারো ৫,৮৯৫ মি (১৯,৩৪১ ফু) ইস্টার্ন রিফ্ট পাহাড় আফ্রিকা ১৫ই জুলাই, ২০১৫
মাউন্ট এলব্রাস ৫,৬৪২ মি (১৮,৫১০ ফু) ককেশাস পর্বতমালা ইউরোপ ২২শে আগস্ট, ২০১৩
মাউন্ট ভিনসন ৪,৮৯২ মি (১৬,০৫০ ফু) সেন্টিনেল রেঞ্জ অ্যান্টার্কটিকা ১৪ই ডিসেম্বর, ২০১৪
পুনকাক জয়া ৪,৮৮৪ মি (১৬,০২৪ ফু) সুদীরমান রেঞ্জ অস্ট্রেলিয়া ১৯শে মার্চ ২০১৪

উত্তর মেরু এবং দক্ষিণ মেরু[সম্পাদনা]

নং ছবি মেরু বছর
উত্তর মেরু ২১শে এপ্রিল ২০১৫ [২০]
দক্ষিণ মেরু ২৮শে ডিসেম্বর ২০১৪ [১৮]

সম্মান ও পুরস্কার[সম্পাদনা]

রাষ্ট্রপতি শ্রী রাম নাথ কোবিন্দ ২০২০ সালের ৮ই মার্চ তারিখে তাশি মালিককে ২০১৯ নারী শক্তি পুরস্কার প্রদান করছেন

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Up Mt Vinson, twin girls will celebrate as if boy were born - Times of India"indiatimes.com 
  2. "Indian sisters become first twins to climb Everest"The Hindu। ২১ মে ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ২৪ মে ২০১৩ 
  3. "FIRST TWINS EVER TO CLIMB EVEREST"Free Press Journal। ২১ মে ২০১৩। ১০ জুন ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ মে ২০১৩ 
  4. "FIRST TWINS EVER TO CLIMB EVEREST". Free Press Journal. 21 May 2013. Archived from the original on 10 June 2014. Retrieved 24 May 2013.
  5. "Indian sisters first twins to climb Mount Everest"CNN-IBN। ২১ মে ২০১৩। ২১ জুন ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ মে ২০১৩ 
  6. "Indian Is First Female Amputee up Everest"WSJ। ২২ মে ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ২৪ মে ২০১৩ 
  7. "For the record: Woman climber makes Pakistan proud"The Express Tribune। ২০ মে ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ২৪ মে ২০১৩ 
  8. "Everest summiteers set slew of records on sunny Sunday"The Himalayan Times। ১৯ মে ২০১৩। ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ মে ২০১৩ 
  9. "Samina Baig Became the First Pakistani Woman to Scale Mount Everest"Dainik Jagran। ২০ মে ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ২৪ মে ২০১৩ 
  10. Guinness World Records (১০ সেপ্টেম্বর ২০১৫)। Guinness World Records 2016। Guinness World Records। পৃষ্ঠা 195। আইএসবিএন 978-1-910561-03-4 
  11. Jaisinghani, Bella (১৮ ডিসেম্বর ২০১৪)। "Haryanvi twins hit record by conquering Seven Summits"Times of India। সংগ্রহের তারিখ ২৩ এপ্রিল ২০১৫ 
  12. Gusain, Raju (১৮ ডিসেম্বর ২০১৪)। "Dehradun twin sisters Tashi, Nungshi Malik first siblings to scale seven tallest peaks in 7 continents"India Today। সংগ্রহের তারিখ ২৩ এপ্রিল ২০১৫ 
  13. Jaisinghani, Bella (২৩ এপ্রিল ২০১৫)। "Mountaineer twins first to conquer both Poles on skis"Times of India। সংগ্রহের তারিখ ২৬ এপ্রিল ২০১৫ 
  14. "Adventures Grand Slam: Indian twins conquer 7 summits, 2 poles"Hindustan Times। ২৩ এপ্রিল ২০১৩। ২৩ এপ্রিল ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ এপ্রিল ২০১৫ 
  15. Roxburgh, Tracey (৭ ডিসেম্বর ২০১৬)। "Twins peak: a Mt Cook first"Otago Daily Times Online News 
  16. "Bear Grylls set to bring Worlds Toughest Race to OTT world"www.outlookindia.com/। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৯-২৫ 
  17. "Amazon Sets More Than 60 Teams to Compete on 'Eco-Challenge' Reboot From Mark Burnett, Bear Grylls"TheWrap (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৯-০৮-০১। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৯-২৫ 
  18. "Tashi and Nungshi Malik -seven-summits climbing details"www.armadillomerino.com। সংগ্রহের তারিখ ১৬ ডিসেম্বর ২০২১ 
  19. "Tashi and Nungshi Malik -seven-summits climbing details". www.armadillomerino.com. Retrieved 16 December 2021.
  20. Kamal, Sara (২৩ এপ্রিল ২০১৫)। "Nungshi And Tashi Malik: Making Us Proud At The North Pole"Newsmakers। Women's Web। সংগ্রহের তারিখ ১৬ ডিসেম্বর ২০২১ 
  21. "SIT represented at Kiwi Indian Hall of Fame ceremony > Southern Institute of Technology, NZ"www.sit.ac.nz। সংগ্রহের তারিখ ২৮ নভেম্বর ২০১৭ 
  22. "Sisters Nungshi and Tashi Malik inspire Indian women to try mountaineering – Global Sports Mentoring"। সংগ্রহের তারিখ ২৮ নভেম্বর ২০১৭ 
  23. "Sisters Nungshi and Tashi Malik are inspiring Indian girls and women to try mountaineering"। ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ২৮ নভেম্বর ২০১৭ 
  24. "Tashi-Nungshi to get National Adventure Sports Award - Times of India"indiatimes.com 
  25. "Mountaineer Harbhajan gets Tenzing Norgay award" 
  26. "'Everest twins' bag Leif Erikson Explorer Award in Iceland"। ২৯ অক্টোবর ২০১৬। 
পুরস্কার
পূর্বসূরী
জেসিকা ওয়াটসন
লিফ এরিকসন যুব অভিযাত্রী
২০১৬
উত্তরসূরী
অ্যালেক্স বেলিনি

টেমপ্লেট:ভারতীয় পর্বতারোহীরা