তালাল আসাদ
তালাল আসাদ | |
---|---|
জন্ম | এপ্রিল ১৯৩২ (বয়স ৯২) মদিনা, সৌদি আরব |
নাগরিকত্ব | সৌদি আরবি (পূবে)[৭]:৫৫–৬০ পাকিস্তানি[৭] ব্রিটিশ[৭] |
দাম্পত্য সঙ্গী | তানয়া আসাদ[৮] |
পিতা-মাতা |
|
উচ্চশিক্ষায়তনিক পটভূমি | |
মাতৃ-শিক্ষায়তন | |
অভিসন্দর্ভ | দ্যা কাবাবিশ[১] (১৯৬৮) |
ডক্টরাল উপদেষ্টা | ই.ই. ইভান্স-প্রিচার্ড |
যার দ্বারা প্রভাবিত | |
উচ্চশিক্ষায়তনিক কর্ম | |
বিষয় | নৃতত্ত্ব |
উপ-বিষয় | |
বিদ্যালয় বা ঐতিহ্য | |
প্রতিষ্ঠান | |
উল্লেখযোগ্য কাজ | **ফরমেশনস অফ দ্য সেক্যুলার** (২০০৩) |
যাদের প্রভাবিত করেন |
তালাল আসাদ (জন্ম ১৯৩২) একজন সৌদি বংশোদ্ভূত সাংস্কৃতিক নৃবিজ্ঞানী যিনি বর্তমানে নিউইয়র্কের সিটি ইউনিভার্সিটির গ্র্যাজুয়েট সেন্টারে নৃবিজ্ঞান এবং মিডল ইস্টার্ন স্টাডিজের বিশিষ্ট ইমেরিটাস অধ্যাপক। তার বিস্তৃত কাজ প্রধানত ধর্মীয়তা, মধ্যপ্রাচ্যের অধ্যয়ন, উত্তর-ঔপনিবেশিকতা এবং ক্ষমতা, আইন ও শৃঙ্খলার ধারণার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। তিনি ধর্মনিরপেক্ষতার নৃবিজ্ঞানের আহ্বান জানিয়ে লেখার জন্যও পরিচিত।
তালাল আসাদের কাজ তার নিজস্ব শাস্ত্র নৃবিজ্ঞান ছাড়িয়ে গভীর প্রভাব ফেলেছে। ডোনোভান শেফার লিখেছেন:
“আসাদের প্রভাবের মাধ্যাকর্ষণ ক্ষেত্র তার নিজস্ব শাস্ত্র থেকে অনেক দূরে প্রসারিত হয়েছে এবং তার চারপাশের অন্যান্য মানবিক শাস্ত্রের চিত্রপটকে পুনর্গঠন করেছে।”.[৯]
জীবনী
[সম্পাদনা]তালাল আসাদ ১৯৩২ সালের এপ্রিল মাসে সৌদি আরবের মদিনায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা, মুহাম্মদ আসাদ, একজন অস্ট্রিয়ান কূটনীতিক ও লেখক, যিনি ইহুদি ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন, এবং তার মা, মুনিরা হুসেইন আল শাম্মারি, একজন সৌদি মুসলিম। আসাদ সৌদি আরবে জন্মগ্রহণ করলেও মাত্র আট মাস বয়সে তার পরিবার ব্রিটিশ ভারতে চলে আসে, যেখানে তার পিতা পাকিস্তান আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিলেন। তার পিতার তৃতীয় বিয়ের কিছু আগে তার পিতা-মাতার বিচ্ছেদ ঘটে।
তালাল পাকিস্তানে বড় হয়ে ওঠেন এবং একটি খ্রিষ্টান পরিচালিত মিশনারি বোর্ডিং স্কুলে পড়াশোনা করেন। তিনি লাহোরের সেন্ট অ্যান্থনি হাই স্কুলে পড়াশোনা করেছিলেন। ১৮ বছর বয়সে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার জন্য যুক্তরাজ্যে চলে যান এবং আর্কিটেকচারে দুই বছর পড়ার পর নৃবিজ্ঞান বিষয়ে আগ্রহী হন, যা সম্পর্কে তিনি বলেন, "এটা মজা ছিল, কিন্তু আমি তেমন উপযুক্ত ছিলাম না।"
তালাল আসাদ ১৯৫৯ সালে এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নৃবিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। এরপর তিনি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংস্কৃতিক নৃবিজ্ঞানী হিসেবে প্রশিক্ষণ নেন এবং ১৯৬৮ সালে পিএইচডি সম্পন্ন করেন। তার শিক্ষক ছিলেন সমাজ নৃবিজ্ঞানী ই.ই. এভান্স-প্রিচার্ড,যাকে আসাদ তার কাজগুলোতে প্রায়ই উল্লেখ করেছেন। এডিনবার্গে পড়ার সময় তিনি তানিয়া বেকার নামক একজন নৃবিজ্ঞানীকে চিনতে পান, তারা ১৯৬০ সালে বিয়ে করেন এবং পরে অক্সফোর্ডে তাদের পিএইচডি গবেষণা শেষ করেন।
পিএইচডি গবেষণা শেষ করার পর আসাদ সুদানে কাবাবিশ নামে একটি যাযাবর গোষ্ঠীর রাজনৈতিক কাঠামো নিয়ে কাজ করেন এবং ১৯৭০ সালে *The Kababish Arabs: Power, Authority, and Consent in a Nomadic Tribe* বইটি প্রকাশ করেন। আসাদ ধর্ম, শক্তি এবং ওরিয়েন্টালিজমে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। ১৯৬০-এর দশকে তিনি মধ্যপ্রাচ্যের লেখা উপাদান নিয়ে একটি পাঠক গোষ্ঠী গঠন করেন, যেখানে তিনি ওরিয়েন্টালিস্ট লেখার পক্ষপাতিত্ব ও তাত্ত্বিক দারিদ্র্য লক্ষ্য করেন।
তার দীর্ঘ ক্যারিয়ারে আসাদ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ চিন্তাবিদ দ্বারা প্রভাবিত হয়েছেন, যেমন কার্ল মার্ক্স, ই.ই. এভান্স-প্রিচার্ড, আর.জি. কলিংউড, লুডভিগ উইটটেনস্টাইন, এবং মিশেল ফুকো। তিনি তার সমকালীন গবেষকদেরও প্রভাব উল্লেখ করেছেন, যেমন জন মিলব্যাঙ্ক, স্ট্যানলি হাওয়ারওয়াস, এডওয়ার্ড সায়িদ, আলাসডেয়ার ম্যাকইনটায়ার, এবং জুডিথ বাটলার, পাশাপাশি তার প্রাক্তন ছাত্র সাবা মাহমুদ এবং চার্লস হিরশকিন্ড। এই বৈচিত্র্যময় বৌদ্ধিক নেটওয়ার্ক আসাদের দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তুলেছে, যা সমাজবিজ্ঞানে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলেছে।[১০] [১১]
কর্ম জীবন
[সম্পাদনা]তালাল আসাদের প্রথম শিক্ষাদান শুরু হয় সুদানের খার্তুম বিশ্ববিদ্যালয়ে, যেখানে তিনি কয়েক বছর সমাজ নৃবিজ্ঞান বিষয়ে লেকচারার হিসেবে কাজ করেন। ১৯৭০-এর দশকের শুরুর দিকে তিনি যুক্তরাজ্যে ফিরে এসে হল ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষকতা করেন। ১৯৮৯ সালে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান এবং নিউইয়র্ক সিটির নিউ স্কুল ফর সোশ্যাল রিসার্চ ও বালটিমোরের জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটিতে পড়ান। পরে তিনি সিটি ইউনিভার্সিটি অব নিউ ইয়র্কের গ্র্যাজুয়েট সেন্টারে নৃবিজ্ঞানের বিশিষ্ট অধ্যাপক পদে নিযুক্ত হন। এছাড়া তিনি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে কাজ করেছেন, যেমন কায়রোর আইন শামস ইউনিভার্সিটি, রিয়াদের কিং সৌদ বিশ্ববিদ্যালয়, ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, বার্কলি, এবং প্যারিসের একোল দে অটেস এটুডেস ইন সায়ন্সেস সোশিয়ালেস।
তালাল আসাদের লেখার পরিধি ব্যাপক এবং তিনি তার কর্ম জীবনে বিভিন্ন প্রকল্পে জড়িত ছিলেন।
গ্রন্থ
[সম্পাদনা]- অ্যানথ্রোপোলজি অ্যান্ড দ্য কলোনিয়াল এনকাউন্টার
- জিনিয়ালজিজ অব রিলিজিয়ন
- ফর্মেশনস অফ দ্য সেকুলার
- অন স্যুইসাইড বম্বিং (যা ১১ সেপ্টেম্বর ২০০১-এর আক্রমণের প্রতিক্রিয়া হিসেবে লেখা হয়েছিল।)
১৯৮৩ সালে তিনি অর্থনৈতিক ইতিহাসবিদ রজার ওয়েনের সাথে *দ্য সোসিওলজি অব ডেভেলপিং সোসাইটি: দ্য মিডল ইস্ট* বইটির সহ-সম্পাদক ছিলেন। আসাদ বলেছেন যে, তিনি এই প্রকল্পে খুব বেশি আগ্রহী ছিলেন না, তবে এটা তিনি একটি বন্ধুর জন্য করেছেন।
পুরস্কার
[সম্পাদনা]২০২৩ সাল থেকে, ইবন হালদুন বিশ্ববিদ্যালয় সোসিওলজি বিষয়ে শ্রেষ্ঠ গ্র্যাজুয়েট ডিসারটেশন জন্য তালাল আসাদ অ্যাওয়ার্ড প্রদান করে।[১২]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ Asad 1968।
- ↑ Jakobsen 2015, p. 114; Kessler 2012, pp. 203–204.
- ↑ Kessler 2012, pp. 203–204; Mirsepassi 2010, p. 55.
- ↑ ক খ গ Landry 2016, পৃ. 78।
- ↑ Mozumder 2011, p. 7; Uğurlu 2017, p. 5.
- ↑ Mozumder 2011, পৃ. 7।
- ↑ ক খ গ Ovamir Anjum (২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮)। "Interview with Talal Asad"। American Journal of Islamic Social Sciences। International Institute of Islamic Thought (IIIT)। 35 (1): 67–70। ডিওআই:10.35632/ajis.v35i1.812 ।
When I switched my Saudi passport for a Pakistani one it made me a member of the Commonwealth, and that gave me the freedom to move and work as I pleased... But eventually, I think it was when I came back from the Sudan, that I decided to get British Nationality
- ↑ Watson 2011, পৃ. 100।
- ↑ Schaefer, Donovan (২০২০)। "Talal Asad's Challenge to Religious Studies"। Religion and Society। 11 (1): 20–23। ডিওআই:10.3167/arrs.2020.110102 ।
- ↑ Chaghatai, M. Ikram, ed. (2006). Muhammad Asad: Europe's Gift to Islam.
- ↑ Eilts, John (2006). "Talal Asad". *Stanford Presidential Lectures in the Humanities and Arts*. Retrieved 7 May 2020.
- ↑ "Talal Asad Award - For Best Graduate Dissertation"। Ibn Haldun University। ২৪ ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ ডিসেম্বর ২০২৩।