তামা (বিড়াল)

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
তামা
たま
২০০৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে তামা স্টেশন মাস্টারের টুপি পড়ে
জন্ম(১৯৯৯-০৪-২৯)২৯ এপ্রিল ১৯৯৯
কিনোকাওয়া, ওয়াকাইয়ামা, জাপান
মৃত্যু২২ জুন ২০১৫(2015-06-22) (বয়স ১৬)
ইওয়াদে, ওয়াকাইয়ামা, জাপান
পেশাস্টেশন মাস্টার

তামা(たま, এপ্রিল ২৯, ১৯৯৯- জুন ২২, ২০১৫) ছিল একটি স্ত্রী বিড়াল যে জনপ্রিয়তা লাভ করে জাপানের ওয়াকাইয়ামা এলাকার ‘কিশি স্টেশন’ এর স্টেশনমাস্টার এবং পরিচালনা কর্মকর্তা হিসাবে।[১]

প্রাথমিক জীবন এবং দত্তক[সম্পাদনা]

পুরাতন কিশি স্টেশনের ভিতরে তামার কার্যালয় জুন ২০০৮ সালে

তামা জন্মগ্রহণ করে কিনোকাওয়া, ওয়াকাইয়ামাতে, এবং বড় হয় একদল বিপথগামী বিড়ালের সাথে যারা কিশি স্টেশনের পাশেই থাকত। তারা প্রতিদিন যাত্রী এবং সেসময়কার বেসরকারী স্টেশন ম্যানেজার টোশিও কয়ামা এর কাছে থেকে খাবার পেত।[২] অর্থনৈতিক সমস্যার কারণে স্টেশনটি প্রায় বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল ২০০৪ সালে। সেসময় কয়ামা তামাকে দত্তক নেয়। এমনকি স্টেশনটি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত উঠিয়ে নেয়া হয় জনগণের দাবীতে।[৩] এপ্রিল ২০০৬ সালে, ওয়াকাইয়ামা ইলেকট্রিক রেলওয়ে খরচ কমাতে কিশিগাওয়া রেলপথের সকল স্টেশন মাস্টারকে পুনরায় নিয়োগ দেয়। সকল স্টেশনের পাশে আঞ্চলিক ব্যাবসার কর্মীদের থেকে স্টেশন মাস্টার নির্বাচন করা হয়, এবং কয়ামা সরকারীভাবে স্টেশন ম্যানেজার পদ পান। জানুয়ারি ৫, ২০০৭ সালে রেলওয়ে কর্মকর্তারা সিদ্ধান্ত নেন তামাকে সরকারী ভাবে স্টেশন মাস্টার পদটি দিতে।[৪] স্টেশন মাস্টার হিসাবে তার প্রাথমিক দায়িত্ব হল যাত্রীদের সম্ভাষণ করা। পদটি আসে স্টেশন মাস্টারের একটি টুপির সাথে; বেতনের পরিবর্তে রেলওয়ে তামাকে বিড়ালের খাবার প্রদান করে।

স্টেশন মাস্টার পেশা এবং সম্মাননা[সম্পাদনা]

তামা সজ্জিত হয়ে আছে “ওয়াকাইয়ামা ডে নাইট”(একটি জাপানী শ্লেষ ‘এটি হচ্ছে ওয়াকাইয়ামা’) উপস্থাপণ করেন ওয়াকাইয়ামার গভর্ণর।

তামার নিয়োগের প্রচারণায় সে মাসে ১৭% যাত্রী বৃদ্ধি পায় জানুয়ারি ২০০৬ এর তুলনায়; মার্চ ২০০৭ এর পরিসংখ্যান এ দেখা যায় গত অর্থনৈতিক বছরের চেয়ে এ বছর ১০% বৃদ্ধি পায়। একটি অধ্যায়নে দেখা যায় তামার প্রচারণার মাধ্যমে ১.১ বিলিয়ন ইয়েন(জাপানি মুদ্রা) বৃদ্ধিতে আঞ্চলিক অর্থনীতিতে অবদান রেখেছে।[৫] জানুয়ারি ২০০৮ সালে, প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি এবং মেয়রের উপস্থিতে তামা “সুপার স্টেশন মাস্টার” এ পদোন্নতি হয়; তার পদোন্নতিতে সে ছিল একমাত্র মহিলা ব্যাবস্থাপণা পদে প্রতিষ্ঠানটিতে।[৬] তার নতুন পদে একটি কার্যালয়- ছোট বাক্স সম্বিলিত একটি টিকেট বুথ। ২০১০ সালের জানুয়ারিতে রেলওয়ে কর্মকর্তারা তামাকে পরিচালনা কর্মকর্তাতে পদোন্নিত করে। তামা স্টেশন মাস্টারের কাজটি বজায় রাখে নতুন কাজের সাথে, এবং প্রথম বিড়াল হয় যে একজন নির্বাহী হয় রেলপথ কর্পোরেশনে।[৭]

তার সহকারী হিসাবে দুজন বিড়াল স্টেশনমাস্টার ছিল, তামার বোন চিবি (ちび, জন্ম:১২ই মে ২০০০) এবং তামার মা মিকো (ミーコ, ৩ অক্টোবর ১৯৯৮-২০ জুলাই ২০০৯)। তামা বিড়ালদের নিয়ে দুইটি তথ্যচিত্রে আসে ফ্রান্স ভাষার ‘লা ভই দু চ্যাট’ এবং জার্মান ‘কাতজেনলেকনতেন’, যেটি নির্মাণ করেন ইতালীর চলচ্চিত্র নির্মাতা মিরিয়াম টনলট্টো, যেটি প্রচারিত হয় ইউরোপের টেলিভিশন চ্যানেল এআরটিইতে ২০০৯ সালের এপ্রিলে।[৮] তামাকে এনিমেল প্ল্যানেট এর সিরিজ ‘মাস্ট লাভ কেটস’ এ দেখা যায়, যেখানে উপস্থাপক জন ফুল্টন তামাকে সম্মাননা দেন একটি ভ্রমণ এবং গানের মাধ্যমে।[৯]

২০০৯ সালের বসন্তে ওয়াকাইয়ামা ইলেক্ট্রিক রেলওয়ে পরিচয় করিয়ে দেয় একটি নতুন ট্রেন তামা দেনশা(たま電車, তামা রেলগাড়ি) নামে যেটি কাস্টমাইজ করা হয় তামার কার্টুন চিত্রায়ন করে।[১০] ২০১০ সালের আগস্টে কিশির স্টেশন ভবনটি পুনঃনির্মাণ করা হয় একটি নতুন গঠনে যেটি একটি বিড়ালের মুখের অনুরূপ।‘তামা দেনশা’ সংস্কার এবং স্টেশন পুনঃনির্মাণ দেখাশুনা করেন নকশাকারী ইজি মিটোকা[১১]

২০০৫ সালের ৫ জানুয়ারি তামার সরকারি শিক্ষানবিশ উদ্ভূত হয় নিতামা(দ্বিতীয় তামা) নামে।[১২]

তামা মারা যায় ২০১৫ সালের ২২ জুন হৃৎস্পন্দন বন্ধ হয়ে ওয়াকাইয়ামা অঞ্চলের একটি পশু হাসপাতালে ১৬ বিড়ালবর্ষে যেটি মানুষের সাথে ৮০ বছরের সমান।[১৩] তার মৃত্যুতে হাজার হাজার ভক্ত সমগ্র জাপান থেকে আসে তাদের শ্রদ্ধা জানাতে। তাকে শিন্তৌ-ধরনের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া দেয়া হয় স্টেশনে এবং মরণোত্তর সম্মাননা দেয়া হয় ‘অনন্ত অপরিশোধিত স্টেশনমাস্টার’ নামে। তামাকে সমাহিত করা হয় কাছের একটি বিড়াল মন্দিরে ‘তামা ডাইমোজিন’(たま大明神) নামে আগস্টের দিকে।[১৪]

তামাকে অনুসৃত হয় তার সহকারী নিতামা দ্বারা।[১৫]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Wong, Hiufu (২৪ মে ২০১৩)। "The cat that saved a Japanese train station: Meet Tama, Japan's cutest stationmaster, and her adorable cat-shaped station home"CNN Travel। সংগ্রহের তারিখ ২৭ মে ২০১৩ 
  2. Jim Motavalli (২০১০-১০-০৫)। "Cat named stationmaster"। Mother Nature Network। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০২-২৬ 
  3. Lund, Georgia। "Tama the Cat Drums Up Business for Railway in Japan"websiteYahoo! Business। ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ 
  4. "Cat named stationmaster"। Japan Probe। ২০০৭-০১-১৪। ২০০৯-০৭-১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৫-২৯ 
  5. "Tama is the purr-fect antidote to financial gloom: study"Yahoo! News। ২০০৮-১০-০৫। ২০১২-০৭-০১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-১০-০৫  (AFP)
  6. "This conductor's got a cat's tongue"IOL। ২০০৮-০৫-২৪। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৫-২৯ 
  7. "Promotion for Japan's stationmaster cat"। Japan Probe। ২০১০-০১-০৭। ২০১০-০১-১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-০১-২৪ 
  8. "Japanese railway turns to feline 'stationmaster' for help"। ২০০৮-০৫-২৪। ২০১৫-০৬-২৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-০৬-২২  (AFP)
  9. Stationmaster Cat: Must Love Cats Animalplanet.com accessed online June 30, 2015
  10. "Stationmaster cat gets a train"japanprobe.com। ১১ জুলাই ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ জুন ২০১৫ 
  11. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি" 世界的鉄道デザイナー水戸岡鋭治が明かす! 新型新幹線「さくら」と「たま駅舎」の秘密 [Worldwide railway designer Eiji Mitooka reveals the secrets behind the "Sakura" shinkansen and "Tama Station" building]। Nikkei Trendy Net (Japanese ভাষায়)। Japan: Nikkei Business Publications, Inc.। ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১০। পৃষ্ঠা 5। ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ 
  12. "Train station's popular cat mascot meets likely successor"Kyodo News। The Japan Times। ৭ জানুয়ারি ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ 
  13. 「たま駅長」死ぬ―和歌山電鉄の名物駅長、心不全で 16歳、人間なら80歳 28日に社葬 [Stationmaster Tama dies at age of 16]। Sankei West (Japanese ভাষায়)। Japan: The Sankei Shimbun & Sankei Digital। ২০১৫-০৬-২৪। ২০১৫-০৬-২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-০৬-২৪ 
  14. "Tama the cat: 3,000 attend elaborate funeral for Japan's feline stationmaster"The Guardian 
  15. "Tama-chan: The cat's miaow"The Economist। ৩ জুলাই ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ৩ জুলাই ২০১৫ 

বহিঃসংযোগে[সম্পাদনা]