তানজানিয়ায় ইসলাম
মোট জনসংখ্যা | |
---|---|
আনুমানিক ২১ মিলিয়ন (৩৪.১%)[১] | |
উল্লেখযোগ্য জনসংখ্যার অঞ্চল | |
দেশের পূর্বাঞ্চল (উপকূলীয় অঞ্চল) | |
ধর্ম | |
প্রধানত সুন্নি ইসলাম, সংখ্যালঘু শিয়া ইসলাম ও আহমদিয়া |
দেশ অনুযায়ী ইসলাম |
---|
![]() |
![]() |
তানজানিয়া একটি খ্রিস্টান সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ। এখানে ইসলাম দেশটির বৃহত্তম সংখ্যালঘু ধর্ম।[২] পিউ রিসার্চ সেন্টারের ২০২০ সালের হিসাব অনুসারে, মোট জনসংখ্যার ৩৪.১% মুসলমান। এই ধর্মটি সোয়াহিলি উপকূলে আগত বণিকদের মাধ্যমে এসেছিল। কারণ এটি মুসলিমদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত একটি বৃহত্তর সামুদ্রিক বাণিজ্য নেটওয়ার্কের সাথে যুক্ত হয়ে পড়েছিল। এর ফলে স্থানীয়দের ধর্মান্তরিত হওয়া এবং বিদেশি মুসলিমদের সাথে একীভূত হওয়ার ঘটনা ঘটে। ফলে শেষ পর্যন্ত এই অঞ্চলে বেশ কয়েকটি সরকারিভাবে মুসলিম রাজনৈতিক দল গঠনের সুযোগ পায়।[৩][৪] অ্যাসোসিয়েশন অফ রিলিজিয়ন ডেটা আর্কাইভস (এআরডিএ) অনুসারে, ২০২০ সালের হিসাব অনুযায়ী, জনসংখ্যার ৫৫.৩% খ্রিস্টান, ৩১.৫% মুসলিম, ১১.৩% ঐতিহ্যবাহী ধর্ম পালন করে। দেশটিতে জনসংখ্যার ১.৯% ধর্মবিশ্বাসী নয় অথবা অন্য ধর্মের অনুসারী রয়েছে।[৫] এআরডিএ-এর অনুমান অনুযায়ী, ২০২০ সালে তানজানিয়ার বেশিরভাগ মুসলিম সুন্নি। অল্প সংখ্যাক শিয়া সংখ্যালঘু এ দেশে বসবাস করে থাকে।[৩]
মুসলিমরা উপকূলীয় এলাকায় বেশি থাকে। শহরে এবং পুরোনো বাণিজ্য রাস্তার কাছেও মুসলিম আছে। জাঞ্জিবার দ্বীপপুঞ্জের ৯৯% এরও বেশি জনসংখ্যা মুসলিম। তানজানিয়ায় সুন্নি মুসলিমরা বেশি বসবাস করে। এছাড়াও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিয়া এবং আহমদীয়া সংখ্যালঘু মুসলিম আছে। ২০০৮ এবং ২০০৯ সালে পরিচালিত পিউ রিসার্চ সেন্টারের গবেষণা অনুসারে, তানজানিয়ার মুসলিম জনসংখ্যার ৪০% সুন্নি, ২০% শিয়া এবং ১৫% আহমদী হিসেবে নিজেদের পরিচয় দেয়।[৬] এছাড়াও ইবাদি অনুসারীদের একটি ছোট অংশ এবং অসাম্প্রদায়িক মুসলিমরাও রয়েছে।[৭] বেশিরভাগ শিয়া এশিয়ান/ভারতীয় বংশোদ্ভূত।[৮] কিছু আহমদিয়াও দক্ষিণ এশিয়া বংশোদ্ভূত এ দেশে বসবাস করে।[৯]
ইতিহাস
[সম্পাদনা]
তাঞ্জানিয়ার আফ্রিকান গ্রেট লেক অঞ্চলে শাঙ্গা মসজিদের প্রতিষ্ঠার সময় ইসলামের প্রথম প্রমাণ পাওয়া যায়। মসজিদটি পেট দ্বীপে অবস্থিত। সেখানে ৮৩০ খ্রিস্টাব্দের সোনা, রূপা এবং তামার মুদ্রার সন্ধান পাওয়া যায়। সবচেয়ে পুরানো মসজিদ হলো কিজিমকাজি মসজিদ। মসজিদটি ১১শ অথবা ১২শ শতাব্দীতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।[৩]
ইসলামের রাজনৈতিক ইতিহাস শুরু হয় ১০ম শতাব্দীতে। পারস্য রাজপুত্র আলি ইবনে আল-হাসান শিরাজি কিলওয়া এখানে সালতানাত শাসন শুরু করেন। পূর্ব আফ্রিকার উপকূল বরাবর বাণিজ্য কার্যক্রমের মাধ্যমে ইসলাম ছড়ায়। ১৬শ শতাব্দীর মধ্যে এই অঞ্চলে ইসলাম দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়।[৩]
১৯শ শতাব্দীতে তাঞ্জানিয়ার অভ্যন্তরীণ অঞ্চলের সাথে সোয়াহিলি উপকূলের মধ্যে বাণিজ্যিক যোগাযোগ বৃদ্ধি পায়। ফলে সোয়াহিলি সংস্কৃতি এবং ধর্মের প্রভাবকে আরও শক্তিশালী করে তোলে। বাণিজ্যের গুরুত্ব সত্ত্বেও, ইসলামের বিস্তার মূলত সুফি তরিকা, উপকূল থেকে ফিরে আসা মুসলিম এবং উপনিবেশিক সময়ে মুসলিম ধর্মীয় নেতাদের মাধ্যমে ঘটেছিল।[৩][১০]
১৯শ এবং ২০শ শতাব্দীতে কাদিরিয়া এবং শাধিলিয়া মত সুফি তরিকাগুলি বিস্তার লাভ করে এবং ইসলামের শক্তিশালী উপস্থিতি তৈরি হয়। ২০শ শতাব্দীর মাঝামাঝি তানজানিয়ার স্বাধীনতা সংগ্রামে মুসলিমরা সমর্থন দেয়।[১০]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "তানজানিয়ার ধর্মবিশ্বাস | PEW-GRF"। www.globalreligiousfutures.org।
- ↑ "Tanzania"। United States Department of State (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৭-১৭।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ Westerlund, David; Svanberg, Ingvar (১৯৯৯)। "Tanzania"। Islam Outside the Arab World (ইংরেজি ভাষায়)। Psychology Press। পৃষ্ঠা 97–99। আইএসবিএন 978-0-7007-1124-6।
- ↑ Mandivenga, Ephraim (১৯৯০-০৭-০১)। "Islam in Tanzania: a general survey": 311–320। আইএসএসএন 0266-6952। ডিওআই:10.1080/02666959008716174।
- ↑ "National Profiles"।
- ↑ "The World's Muslims: Unity and Diversity" (পিডিএফ)। Pew Forum on Religious & Public life। ৯ আগস্ট ২০১২। পৃষ্ঠা 128। ১১ আগস্ট ২০১২ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ জুন ২০২১।
- ↑ Wortmann, Kimberly T. Omani Religious Networks in Contemporary Tanzania and Beyond. Diss. 2018.
- ↑ https://2001-2009.state.gov/g/drl/rls/irf/2007/90124.htm
- ↑ https://fa.wikishia.net/view/تانزانیا#اقوام_و_مذاهب
- ↑ ক খ Becker, Felicitas (২০১৮-০৬-২৫)। "The History of Islam in East Africa"। Oxford Research Encyclopedia of African History (ইংরেজি ভাষায়)। আইএসবিএন 978-0-19-027773-4। ডিওআই:10.1093/acrefore/9780190277734.013.151। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১২-০২।